লাশের লালসায় আঁধার জাগে
জিবন্ত মানুষের ক্ষতে বৈশাখী ঝড়ে
দিনে-দুপুরে নিশাচরের আনাগোনা,
দূর্বৃত্তের হাতে আলোর মশাল।

আরিফের ঘুম ভাঙ্গে হট্টগোলের শব্দে। বেলা ৭টা হবে হয়তো। গত রাতে দম দেয়া ঘড়িটা অচল হয়ে আছে। সময় দেখাচ্ছে দুটো- এর মানে হলো রাত দুটোর দিকে ঘড়ির দমটা শেষ হয়েছে। চৌমাথার চায়ের দোকানটায় না যাওয়া পর্যন্ত সময় মেলানো যাবে না।

জল্লাদের মতো একটা সেপাই এগিয়ে এসে একটি মুষ্ঠি চুল টেনে ধরল তার। অকথ্য গালি-গালাজ তার মুখে। দীপার দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। তবু সেপাইটি তার চুল ছাড়ছে না। আরেকজন পুলিশ তার দেহে পোড়া সিগারেট চেপে ধরে বলল,‘‘পুলিশকে তোরা গালি দিস, আজ দেখিয়ে ছাড়ব পুলিশ কী জিনিসি।’’

ছুটির ঘন্টা পড়তেই ছেলে মিয়ে গুলো দৌড়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে আসলো, তাদের বাধভাঙ্গা উচ্ছ্বাসের ঢেউ ছরিয়ে পড়ছে চারিদিকে। প্রত্যন্ত গ্রামের ছোটবড় গাছের ভিড়ে নদীর কাছে এই স্কুলটারর চারদিক তাদের কোলাহলে প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। বই গুল হাতে নিয়ে দল বেধে গল্প করতে করতে বাড়ির পথ ধরে ছোট ছেলে মিয়ে গুলো।

ধোঁয়া ওঠা গনগনে গরম হারিসের প্লেটের দিকে কেবল হাত বাড়িয়েছি,'আংকেল' বলে একটা নরম মেয়েলী ডাক শুনে মাঝপথেই হাতটা থেমে গেলো। আস্তে করে হাতটা নিজের দিকে টেনে নিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকালাম। মখমলের পর্দা সরিয়ে একটা মুখ মজলিশের দিকে ঝুঁকে আছে। শরীরের বাকি অংশ পর্দার পেছনে। মেয়েটার মাথায় কালো হিজাব। হিজাবের কড়া শাসনের বেঁড়া ডিঙিয়ে এক গোছা লালচে বাদামী চুল কপালের এক পাশে ছড়িয়ে আছে।

ডিসি সাহেব বলেন ,' সামাজিকীকরণের জন্য পার্ক আর খেলার মাঠ খুব প্রয়োজন ।যেসব পার্ক আর খেলার মাঠ দখল হয়ে গেছে সেগুলো উদ্ধার করতে হবে । বাংলাদেশের প্রতিটি শহরেই পার্ক আর খেলার মাঠ থাকা প্রয়োজন ।

রমিজ মিয়া রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার, পাকিস্থানী মেজর সাহেবকে অন্যের মেয়েকে ধরে আনার খোজ দেওয়া,মুক্তিবাহিনীর সন্ধান দেওয়া তার কাজ। অথচ তার নিজের ছেলে মেয়েরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে । সে স্বপ্ন দেখে মেজর সাহেবকে জামাই বানানোর অথচ মেজর সাহেব তার মেয়েকেও একরাতের জন্য চায়-----------

মেঝেতে কালচে হয়ে জমে থাকা নিজের রক্তের দিকে এখন আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাকিয়ে থাকতে পারি।
এই ঘরে ছোট্ট একটা জানালা আছে, তাও সারাদিন বন্ধ থাকে।
একসময় অবাক হয়ে আকাশের লাল রঙ দেখতাম, আর এখন নিজের কালচে রক্ত দেখি।
অনেক বদলে গেছি আমি।

রক্ত ঝরিয়েই স্বাধীনতা অর্জন করতে হয় বুঝলে রবিন।মতিন মাষ্টার তার সহযোদ্ধা রবিনের নানা প্রশ্নের উত্তরে কথাগুলো বলল।
কিন্তু ভাই আপনি বলতে পারেন আমরা আর কতোদিন এইভাবে রক্ত ঝরিয়ে যাব।প্রায় ছয় মাস হয়ে গেল আমরা বিভিন্ন রনাঙ্গনে যুদ্ধ করে যাচ্ছি কিন্তু স্বাধীনতা আর কতদূর

শোন মিয়া। এই যে দেশের মাটিতে আজ দাঁড়ায় আছো! গলাবাজি,টাউটগিরি করে গুষ্টির বারোটা বাজাচ্ছো! এই মাটি যে অপবিত্র করতেছো- তা কি একবারও ভাবিছো?" গ্রামের মুদি দোকানে বসে আমি এভাবেই সবাইকে কথা শুনাচ্ছি! কিন্তু প্রচণ্ড কাশি আমাকে ভীষণ জ্বালাচ্ছে।