আজ পার্থ আর জিনিয়ার বিয়ের দশ বছর পূর্ণ হল। রাত বারোটা। সাড়ে চার বছরের সোহম ঘুমিয়ে কাদা। একটু ঝুঁকে টেবিলের নিচ থেকে দশটা লাল আর একটা সাদা গোলাপ বের করে জিনিয়ার হাতে দিয়ে পার্থ জিজ্ঞেস করলো, “মনে পড়ে?” লাজুক হেসে আলতো করে ঠোঁট কামড়ে জিনিয়া শুধু ঘাড় নাড়ল।

লেখালেখির সুবাদে ’ওর’ সাথে পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকের শেরপুরের পেজে। বর্তমান সময়ে ফেসবুক, ব্লগ, অনলাইন পত্রিকার কারণে লেখালেখি করার সুযোগ বেড়ে গেছে অনেক বেশি। যার কারণে আবাছা ধানে যেমন ’চিটা’ থাকে তেমনি ভালো লেখার সাথে অনেক মানহীন, মন্দ লেখাও বেশ জাঁকিয়ে বসেছে পাঠকের সামনে।

কান্ডটা কেন ঘটছে জানি না। কিন্তু ঘটছে। আমার ঘরের দরজার আড়ালে লুকানো আছে যে আয়নাটা, তার সামনে আমি দাড়ালে কখনও কখনও ছায়া পড়ছে তোমার। আয়না থেকে তুমি সরাসরি তাকিয়ে থাকো আমার দিকে।

তোমাকে ভালোবাসি এ কথাটা বলতে না পারার ব্যাথা-
আজও কুঁরে কুঁরে খায় আমাকে।
কত ছোট বেলা থেকে তোমার-আমার একসাথে চলা ভুলতে বসেছি।
একসাথে স্কুলে যাওয়া, দৌড়াদৌড়ি, অকারণে গায়ে পড়া,

পূর্ব আকাশে শুক তারা রূপে
ফুটেছিল যে দুটি ফুল,"
ভাল বেসে শুধু বেদনা পেয়েছি
এত টুকু মোর ভুল।"

প্রতিদিনের মতই ঠিক সোয়া নয়টার সময় ফার্মগেটে আমার অফিসের একদম কাছে স্টার সেলুনে ঢুকলাম। এখানের সবাই আমার চেনা, আমাকে দেখেই তারা হাসিমুখে এসে আমাকে একটা ফাকা চেয়ারে বসিয়ে দিল।

আজ সকালটা গতকালের থেকে একটুও উন্নত নয়। কামাল ঘুম থেকে সবে মাত্র উঠেছে। মেজাজটা একটু খিট খিটে। গতকাল রাতে কাস্টমারের সাথে তুমুলঝগড়া করেছে। সম্ভবত এ কারনেই রাত্রে ভাল ঘুম হয়নি।

নাঈম এবং নাফিসের বন্ধুত্ব ছোটবেলা থেকে ,তারা একসঙ্গে খেলাধুলা করতো ,মাছ ধরতো , ছোট বেলা সকল খেলাদোলা থেকে শুরু করে এমনকি রাতের আকাশের চাঁদ দেখতো ,আকাশের চাঁদ দেখতে দেখতে নাঈম ,নাফিসের কোলে শুয়ে পড়ে জীবনের নানা স্বপ্নের কথা বলত , নাঈম অসুখ হলে আসিফ কষ্ট পেতো,

সাগরের বিশাল জলরাশির পানে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে সজনী মানসী। তার সাথে রজনী মানসী। চাচাত বোন এবং বাল্যবন্ধু। কিছু দিনের বড়। প্রায় সমবয়সীই বলা চলে। চোখের সামনে সে কী মনোহর দৃশ্য! মাথার উপর সুনীল আকাশ।

শ্রাবনের এক ভেজা সকাল। রাতভর বৃষ্টি হয়েছে রিমঝিম ধারায়। সকাল থেকেও একই ধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। শৈবাল এমনিতেই লেট-রাইজার। আজ ঘুমাতে আরো ভাল লাগছে। বিছানা ছেড়ে উঠতেই ইচ্ছা করছে না।

ভূত দেখার মতো চমকে উঠলাম আমি। ব্যাপারটা পুরোপুরি অপ্রত্যাশিত ছিলো, অন্তত আমার কাছে তো বটেই। সামনের সারিতে বসে থাকা মধ্যবয়েসী মহিলার চেহারায় ক্লান্তির ছাপ তার বয়সটাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে। তবে কুঁচকে থাকা ভ্রু আর ভাঁজ পড়া চামড়ায় খুব চেনা মুখটা ঢাকা পড়েনি। নাওমী এখানে! নিজেকেই প্রশ্ন করলাম।

রোজ ভোরে একটা কাক আমার জানলায়-বেলকনীতে ডাকাডাকি করে। আমার ঘুম ভাঙিয়ে উড়ে যায়! অসহ্য; মাঝে মাঝে "আজ তো‌কে দে‌খে ছাড়ব"- ধর‌নের ইচে‌ছ হয়!
এক বি‌কে‌লে বেরোলাম বজ্জাতটা‌কে দু‌নিয়া ছাড়া করার উদ্দেশ্যে! ওর বাসাটা আগে থে‌কেই চেনা- বাগানে ঢুকে ডান দি‌কের বড় আম গা‌ছের ডগা।

"প্রিয়াকে আমার কেড়েছিস্ তোরা,ভেঙেছিস্ ঘর-বাড়ি;
সে কথা কি আমি জীবনে-মরণে,কখনো ভুলিতে পারি?
আদিম হিংস্র মানবিকতার,যদি আমি কেউ হই;
স্বজন-হারানো শ্মশানে তোদের চিতা আমি তুলবোই !!

অনেকদিন পর ব্ল্যাক কফির মগ হাতে নিয়ে আবির আজ ব্যালকনীতে বসেছে। বাইরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টির হালকা আবেশ আবিরের মুখে এসে লাগছে। বৃষ্টির এই ছোঁয়া আাবিরের খুব পছন্দ। রুমের ভেতর শাওনের ’যদি মন কাঁদে, চলে এসো, চলে এসো এক বরষায়’ গানটি বাজছে। আবিরের খুব পছন্দের একটি গান।

ল্যাম্পপোষ্টের নীচে বসে কাঁদছে ৯ বছরের মনিজা।
মুখে হাত দিয়ে, চাঁপাকান্না!
বলটা গড়িয়ে গড়িয়ে মনিজার পায়ের কাছে এসে ঠেকলো। দূর থেকে বলটা দেয়ার জন্য মনিজাকে ডাকলো রনি, কিন্তুু রনির কথা যেন কানেই বাজছে না মনিজার।
-- কিরে মনিজা, তরে না ডাকতাছি?