একটানা কান্নার গুনগুন আওয়াজে মাথাটা ঝিমঝিম করতে থাকে রুবিনা বেগমের।
সম্মিলিত কান্নার আওয়াজটা ভেসে আসছে বাইরের চুলার পাড়ের ওদিকটা থেকেই। গ্রামদেশে এই চল অনেকদিনের। পাড়া প্রতিবেশি কেউ মারা গেলে সবাই দল বেঁধে তার বাড়িতে গিয়ে শোক জানিয়ে আসে। সেই শোকের তীব্র প্রকাশ এই সম্মিলিত কান্না।

মেঘেরও নাকি অভিমান থাকে। অভিমান ধরে রাখতে না পেরে এক সময় বৃষ্টি হয়ে জড়ে। পাহাড় যেমন অঝোর শ্রাবণে নিরিবিলিতে কাঁদে। কে বুঝে পাহাড়ের কতটা কষ্ট? কে জানে মেঘের কেন এতটা অভিমান? কেউ কখনও মেঘকে প্রশ্ন করেনি, পাহাড়ের কাছ থেকে কেউ শুনতে চায়নি!

ছেলেটার যেদিন জম্ম হল সেদিন ছিল মঙ্গলবার৷ তাই সবাই বলাবলি করছিল যে গরিবের ঘরে পূর্নিমার চাঁদ হয়ে আলো করতেই তার জম্ম৷ মায়ের কোলে ছেলেটা হাসি—কান্নায় যাদবপুর গ্রামের এক নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠছিল৷

প্রতি দিনের মত আজও সুই সুতা নিয়ে জয়িতা সেলাইয়ের কাজ করছে আর আমি পূবের জানালাটার পাশে চেয়ারটায় বসে আছি । খালা আজ বাড়ীতে নেই, ডাক্তার দেখাতে গেছেন। হঠাৎ জয়িতা আমার কাছে দৌড়ে এসে দুহাতে আমার গাল চেপে ধরে, মুখের কাছে মুখ এনে বলে কিরে বকুল আমাকে দেখলে তুই এত ভাল হয়ে যাস্ কেন?
তোকে খুব ভাললাগে।

তনয়ার মনে ভয় হল। সন্ধ্যা বেলা অচেনা শহরে। রিক্সায় ওঠার আগে একটা দোকানে জিজ্ঞেস করে নিলে ভালো হত। রিক্সা হর্ন বাজিয়ে চলছে।
‘ভাই, আর কতদূর? আধ মাইল তো পার হয়ে গেছে’।

বাবা বিদেশে থাকতেন বলে খুব মিস করতাম বাবাকে তখন। মাঝে মাঝে খুব অপেক্ষায় থাকতাম বাবার একটা চিঠি পাওয়ার আশায়। আমি বড় ছেলে ছিলাম বলে হয়তোবা বাবা মনে করতেন আমাকে অনেক কিছু জানতে হবে।

সন্ধ্যা থেকে ছাদে বসে আছি। আকাশে আজ চাঁদ থাকার কথা,শুল্ক পক্...

কালে ঘুম ভেঙ্গেই নিলয়ের মনে হলো আজকের সকালটা যেনো কেমন । প্রতিদিন উঠতে দেরী হয়, ফারিয়া ওকে হাজারবার ডেকে তোলে। আজকে সকালে ফারিয়া ডাকেনি।

বেলা বাড়ছিলো ভাটার টানে সমুদ্র দূরে সরে যাচ্ছিলো । তিরের ভেতরে যে রংবেরঙের কোরালগুলো একটা মোহময় স্বর্গীয় পরিবেশের রচনা করেছিলো এই মুহুর্তে তারা যেন নিরাবরন, নিরাভরন হয়ে পরে । একটু আগেই যে ঢেউগুলো সেই রঙ্গিন কোরালের টুকরোগুলো আচল ভরে এনে বারংবার ক্লান্ত সৈকতকে উপহার দিচ্ছিলো, অন্তরা সেইগুলোই একমনে সংগ্রহ করতে ব্যস্ত ।

‘এই, তুই আমার প্লেট নিয়েছিস। রাখ্‌ বললাম।’
‘রাখবো না যা, কী করবি তুই?’

বি‌য়ের দিনে মেয়েদের হাতের মেহেদীর রং তার স্বপ্নগু‌লো বুন‌তে থা‌কে। ছোট্ট থে‌কে যে স্বপ্ন নি‌য়ে একটু একটু ক‌রে এক‌টি মে‌য়ে বড় হয় ,সেই র‌ঙিন স্বপ্নগু‌লো মে‌হেদীর রং‌কে আরো গাঢ় ক‌রে।

জীবনের শেষ সময়ে এসে বড়ই অসহায় লাগে নাজিম প্রামানিকের । স্ত্রী মারা যাওয়ার পরে থেকে একেবারে চুপ করে পরে থাকে । অন্ধকার একাকি কবরের মত ঘরে যেন

বিনীতা সবই মুখ বুজে মেনে নেয় । এ ছাড়া আর উপায় কি ? সংসারে শ্রম আর মন প্রাণ দিয়ে আগলে রাখার কোন দাম নেই । যে আয় উপায় করে আনে সেইই সব।

ঐ কি হইছেরে, অমন কইরা চিৎকার দিলি ক্যান
- দেখ দেখ একই ব্যাডা ঘুমের ভান কইরা আছে, আবার পিট পিট কইরা আমার দিকে তাকায়
- ঐ ব্যাডা, তর লগে মুখ নাই। ট্যাহা না দিলে মুখ দিয়া না কইরা দিবি, অমন বেকনা করছ কেন, অন্য একটি হিজরা মেয়ে বলে
- ট্যাকা না থাকলে আমার কাছ থিইকা নিয়া যা, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি মেয়ে বলে

স্লিপ অব দ্যা টাং । ‘মা’ উপন্যাসের লেখকের নাম বলেছিলাম ম্যাক্সিমাম গোর্কি । বোর্ডের মেম্বাররা খোঁচাখুঁচি করতে পারতেন । না , তেমনটি হোল না । সবচেয়ে বড় কথা , কঠিন কোন প্রশ্নই আমাকে জিজ্ঞেস করা হোল না ।