ছেলেটা সাহিত্যানুরাগী। মেয়েটাও সাহিত্য চর্চা করে। এ পথে ও পথে ঘুরে ঘুরে বহু খাতায়, বইয়ের পাতায় চোখ মেলে অবশেষে দুজনার দেখা হয়ে যায়। এক সাহিত্যমঞ্চে। মেয়েটি সেখানে নিয়মিত হাত মেলে ধরে।

সময়টি ভরা বসন্তের। ভোরের কুয়াশা কেটে গেছে। সূর্য কেবলই উঠেছে। পাখিরা শব্দে মাতিয়ে রেখেছে প্রকৃতিকে। মাঝে মাঝে দু’একটি কাকও উড়োউড়ি করছে। মূল রাস্তায় কিছু লোককে হাঁটতে দেখা যাচ্ছে।

প্রতিবার তোফায়রাই আর্কিমিডিসের ইউরেকার মতো জানান দিত বিড়ালের খোঁজ- জুতোর বাক্স, লোহার গাইল, আধভাঙা তবলা, পুরনো দোলনা, টব, বালতি, পেঁয়াজের টুকরি, মুড়ি ভাঁজার হাঁড়ি।

রাত প্রায় বার টা। ঘুম নেই কারো চোখে। ফারিহা ও ফারিয়া খুবই টেনশিত। অফিসের একটু ঝামেলায় বাবা ঘরে ফিরে নি এখনো। জিসরিন শহরে রাত দশটার পরে বাইরে থাকা নিরাপদ নয়। সাত আট বছর থেকে যুদ্ধ চলছে সিরিয়ায়।

একটা হিন্দু মেয়ে নাম তার মায়া। সেও যেমন খুব মোটা ছিল তেমনি আমিও ছিলাম তার থেকে বেশি মোটা। ফলে তখন অন্যান্য ছেলে মেয়েরা আমাদের দুজনকেই বেশি ক্ষ্যাপাত।

‘এই, তুই আমার প্লেট নিয়েছিস। রাখ্‌ বললাম।’
‘রাখবো না যা, কী করবি তুই?’

অর্চি ঘুমিয়ে গেলে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে - তোমার সুখের দিন গুলোতে আমি ছিলাম সবচেয়ে কাছের

ঐ কি হইছেরে, অমন কইরা চিৎকার দিলি ক্যান
- দেখ দেখ একই ব্যাডা ঘুমের ভান কইরা আছে, আবার পিট পিট কইরা আমার দিকে তাকায়
- ঐ ব্যাডা, তর লগে মুখ নাই। ট্যাহা না দিলে মুখ দিয়া না কইরা দিবি, অমন বেকনা করছ কেন, অন্য একটি হিজরা মেয়ে বলে
- ট্যাকা না থাকলে আমার কাছ থিইকা নিয়া যা, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি মেয়ে বলে

প্রতি দিনের মত আজও সুই সুতা নিয়ে জয়িতা সেলাইয়ের কাজ করছে আর আমি পূবের জানালাটার পাশে চেয়ারটায় বসে আছি । খালা আজ বাড়ীতে নেই, ডাক্তার দেখাতে গেছেন। হঠাৎ জয়িতা আমার কাছে দৌড়ে এসে দুহাতে আমার গাল চেপে ধরে, মুখের কাছে মুখ এনে বলে কিরে বকুল আমাকে দেখলে তুই এত ভাল হয়ে যাস্ কেন?
তোকে খুব ভাললাগে।

ফুটফুটে মেয়েটিকে দেখলেই মায়া লেগে যায়। ইচ্ছে হয় একটু ছুঁয়ে দেখি! পিঠের উপর নিয়ে খেলা করি আর দুষ্টুমিতে মাতিয়ে তুলে তার খিলখিল করা হাসি দেখি সারাক্ষণ!

তোমার চোখের সরলতায়
আমি উদাস হই,

স্লিপ অব দ্যা টাং । ‘মা’ উপন্যাসের লেখকের নাম বলেছিলাম ম্যাক্সিমাম গোর্কি । বোর্ডের মেম্বাররা খোঁচাখুঁচি করতে পারতেন । না , তেমনটি হোল না । সবচেয়ে বড় কথা , কঠিন কোন প্রশ্নই আমাকে জিজ্ঞেস করা হোল না ।

মাঝে মাঝেই আমাকে পেশাগত কাজে এদেশে, অর্থাৎ ক্যানাডার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে যেতে হয়। এর মধ্যে হ্যাল্টন হিল এর গ্রাম্য অংশটা আমার বেশ পরিচিতি।

বিনীতা সবই মুখ বুজে মেনে নেয় । এ ছাড়া আর উপায় কি ? সংসারে শ্রম আর মন প্রাণ দিয়ে আগলে রাখার কোন দাম নেই । যে আয় উপায় করে আনে সেইই সব।

চেনা মানুষের ভিড়ে হারিয়ে গেছে সেসব ভদ্রলোক, যারা আমার মুখে ছিঃ ছিঃ করে থুঃ ফেলে। কিন্তু অন্ধকারে আদর করে, তাদের অমূল্য কিছু ফেলে যায় আমার গর্ভাশয়ে। আমিই শুধু মা হয়েছি। বাপ হয়নি তাদের কেউই....