টিক টিক টিক টিক। এক, দুই, তিন, চার, ঘড়িতে সেকেন্ডের কাঁটা সরে সরে যাচ্ছে। দাঁত দিয়ে ঠোঁট কামড়াতে কামড়াতে নীপা অপেক্ষা করছে। অপেক্ষার তিরিশ সেকেন্ডও যে এত দীর্ঘ হতে পারে জানা ছিল না ওর। কিন্তু অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায়ও তো নেই ওর। পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখ দিয়ে মেঝেতে আঁক কাটতে গিয়েও থেমে গেল ও।

“জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে ভারতভাগ্যবিধাতা!
পঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মরাঠা দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ
বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গা উচ্ছল জলধিতরঙ্গ
তব শুভ নামে জাগে, তব শুভ আশিষ মাগে,
গাহে তব জয়গাথা ।

একটি মরজগত যা মানুষ ও অন্য সব মরণশীল প্রাণির জন্য আর অন্যটি আত্মা ও পরমাত্মার অবিনশ্বর জগত। এই দুইয়ের মাঝে আছে আর এক অস্থির বা ট্রানজিট জোন বা জগত আছে। যার নাম প্রেতলোক। এইজগত মৃত্যুর পরের।

মা,
জানি না তুমি দেখতে কেমন। কেমন তোমার চোখ,
নাক, মুখ কিংবা চুল। জানি না কথায় কথায় তোমার
গালে টোল পড়ে কিনা,কিংবা হাসতে হাসতেআমার মত চোখে পানি এনে ফেলো কি না।

চোখ আকাশে ওঠে রেজার। আনন্দে লাফাতে থাকে। রেখা, অন্তরা তাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করতে থাকে আনন্দে- ভিজানো পিঠা? কোথায় পাইলা মা, আব্বা?

আমার কাছে মানুষের মন একটি ছিমছাম ঘরের মত । সে ঘর পূর্ণ থাকে রকমারি ভালবাসায় । একটুও ফাঁকা নেই , নেই শুন্যতা । ঘরের উপরের দিকে সম্ভবত পাটাতনে থাকে কোরান-হাদীস , বেদ , বাইবেল যা কিছু আমরা শ্রদ্ধা করি । চেয়ার-টেবিল , আয়না-চিরুনি , খাট-পালঙ্ক ঘরের প্রতিটি বৃত্তান্তে সাজানো ভালোবাসা , শুধুই ভালোবাসা ।

তামাক সাজতে সাজতে হরমুজ আলী বলল, বুঝলেন ফকির সাব, এ হুঁকোর ওসিলায় আল্লাহ সেদিন প্রাণে বাঁচায়ে দেছেন। খান সেনারা তো আমাকে ও নৌকার মাঝিকে গলুইয়ের উপর দাঁড় করায়ে রেখেছে। হাত উপরে তুলে আল্লাহর নাম স্মরণ করছি। নৌকার মাঝি তো ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।

কষ্টের বিষ লাগে স্মৃতির পাতায় পাতায়,
স্থীরতা কখনও পায় না অশুভ শক্তির উৎসরা
ধ্বংসের নেশায় উনমত্ত অস্থীর চিত্ত চিরকাল,
তবুও আলোর পথের যাত্রীরা খুঁজে পাবেই
হত্যা ক্ষুধামুক্ত স্বর্নরেনু ছড়ানো সোনালী সকাল।

এইটা কি?
-পাওয়ার ব্যাংক।
-কি ব্যাংক?
-পাওয়ার ব্যাংক।
-কি করা হয় এইটা দিয়া?
-মোবাইল চার্জ দেয়া হয়।
-ক্যামনে?

প্রেম ভালোবাসার পথও আর মাড়ায় না সীমন্তি। বাবা-মা'র আদরের সেই ছোট্ট সীমন্তি হয়েই বাকি জীবনটা কাটিয়ে দেবে ঠিক করে। সময়ের সাথে সাথে সব ক্ষতই শুকিয়ে আসে।

শীতল যুদ্ধের সময়ে বিবদমান দুই শক্তির - এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য , জঙ্গিবাদকে উস্কে দেয় ।

স্নানাহার সেরে
নিজ হাতে চা বানালাম!
গায়ে জড়ালাম শার্ট প্যান্ট সু
উদ্দেশ্যহীন এলোমেলো হাঁটা।
ফুটপাত ধরে হাঁটছিলাম!
হঠাৎ পেছন থেকে চিৎকার....
ফিরে দেখি কংক্রিটের কঠিন বুকে
প্রবল ব্যাথায় কাঁতরাচ্ছেন এক মা!

একটু পরে সুহাসিনী পার্কের সামনে দেখা হল।
-চল, একটু চা খাওয়া যাক। সুরেশের আবদার।
-চল, ব্যাপারটা খারাপ হবে না।
চা খাচ্ছি, এমন সময় দেখি শরণ আসছে। আমরা হেসে উঠলাম। শরণ-এর ক্যাবলা মুখখানা দেখলে যে কেউ হেসে গড়িয়ে পড়বে।

চোখ ঝাপসা হয়ে আসে।আপনাআপনি দু ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে। এদিক ওদিক তাকায় কেও দেখে নেওয়ার আগেই হাত দিয় মুছে ফেলে...

ট্রেন এখন চলছে, ষ্টেশন থেকে অনেকক্ষণ আগেই ছেড়েছে, মোমেনা জানালার ধারে বসে বাইরের চলমান দৃশ্যাবলী বিমূগ্ধ নয়নে উপভোগ করছে এখন। কোলে ওর একটুকরো রক্তমাংসের মানব শিশু, যেন আকাশের লাল টকটকে সূর্য, তন্দ্রায় ঢুলুঢুলু চোখ, রক্তগোলাপ কে যেন ছড়িয়ে রেখেছে ওর লাজুক ঠোঁটে।