সাহিত্যাঙ্গনে আমার পদার্পণ অলৌকিকতাই নয় একেবারে অকল্পনীয় বলা যায়। আমি যেই পরিবেশ থেকে লেখালেখির দুনিয়ায় প্রবেশ করেছি, সেই পরিবেশ থেকে সাহিত্য কি, সাধারণত চিঠিপত্রের ভাষাও আশা করা যায় না। চৌদ্দ পুরুষের বংশনির্ঘণ্ট ঘেঁটে দেখেছি, আমার পূর্বপুরুষগণদের মধ্যে কেউ সাহিত্যিক বা পণ্ডিতমনা ছিলেন কিনা। দেখেছি, মোল্লামৌলবি শিক্ষক-শিক্ষিত অনেকেই ছিলেন কিন্তু সাহিত্য কি, সাহিত্যমনস্কের ধারেকাছেও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে কোত্থেকে যে আমার উপর এ ভূতের আছর নাজিল হল জানি না। ভাবিত মন সব সময় ভাবনার বেড়াজালে আটকে বলে লেখ, আর আমি হিজিবিজি লেখি--কারককে বলি কখনো অকর্মা আবার অকর্মককে বানাই কখনো কর্মবীর। আমার মাঝে এ এক নিষ্ঠার অভাব। কোন্ পথ ধরে চলি তাও ঠিক বুঝে উঠতে পারি না। নিজস্ব ধারা কি তাও বুঝি না। তবে বুঝি, লক্ষ্যহারা হলে সিদ্ধি লাভ করা যায় না।
ছোটবেলায় একটা শখ ছিল ছবি আঁকার। ফুলপাখি হাতিঘোড়া মাছনদী যা এঁকেছি কাগজ থেকেও নয় একেবারে মানস থেকেও মুছে গেছে আজ। মানুষ যা কল্পনা করে তা কখনো ঘটে না আর যা কল্পনা করে না তা সব সময় ঘটে। এ এক আশ্চর্য বিধিবিধান! আল্লাহ্ প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কিছু-না-কিছু অপূর্ণতা বিদ্যমান রেখেছেন। কেননা মানুষ পরিপূর্ণতা লাভ করলে শুধু মানুষকেই নয় সম্ভবত নিজসৃষ্টির মালিক স্রষ্টাকেও তুচ্ছতাচ্ছিল্য ভাবার আশঙ্কা থাকত!
আমি কোনদিন লেখক হব সেই আশা কিংবা স্বপ্ন নিয়ে লেখি না--কথাটা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হলেও আমার মতে এটাই সত্য। তা হলে কেন লেখি? শখ বলতে আমি বুঝি আনন্দের বিষয়। কিন্তু যেখানে আনন্দ নেই সেখানে শখের কোনো অর্থ নেই। অনর্থক এ শব্দটার কাঁধে মিথ্যাবোঝা চেপে পার পাওয়া অযৌক্তিক। আমার মনে হয়, মহা হিমালয়পর্বত ডিঙানো সহজ কিন্তু সামান্য দরদের ময়দান পার হওয়া কঠিন। একটা আঘাত একজন মানুষকে বিরাট পরিবর্তন করে দিতে পারে। আর এ পরিবর্তনের জন্যে বেছে নিতে হয় কোনেকটা মহৎমাধ্যম, তবেই সার্থক মানুষ হওয়া সম্ভব। কিন্তু, যে হাল ছেড়ে দেয় তার বেঁচে থাকা খুব কঠিন। তাই মারাত্মক হতাশায় না ভোগে জীবনের উপায় খুঁজে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
আমার ব্যর্থতার কথা চিন্তা করলে কোনো সমাধান পাওয়া যাবে না এবং কেউ সফল হতে পারবে না। আমি দুঃখের মাঝে অনেক লম্বা সফর অতিক্রম করে এসে গেছি এবং দুঃখের মাঝেই অবশিষ্ট রাস্তা শেষ হবে জানি। এপর্যন্ত কোথাও যখন সার্থক হতে পারলাম না তবে কোনো কাজে আর সফল হতে যে পারব না এটা নিশ্চিত। অতএব আমার মতো লোকে যুদ্ধের ময়দান জয় করার সাহস রাখতে পারে কিন্তু সাহিত্যের মতো কঠিন ক্ষেত্রে বিচরণ করার দুঃসাহস করতে পারে না। কারণ আমার বিলম্ব বেশি সাধনা খুব কম। আমি আজ জীবনমাঠের শেষসীমায়, যেখান থেকে দাঁড়িয়ে দেখলে স্পষ্ট দেখা যায় আমার গন্তব্যঠিকানা।
লেখালেখিতে বুঝি না আমি নুন-মরিচ, বুঝি না স্তর-স্তবক, ছন্দ-ঝঙ্কার-অলঙ্কার, মাত্রা-অমাত্রা, মিত্র-অমিত্রাক্ষর। যা মনে আসে, মন বলে বল, তাই আমি বলি--আকাশকে নির্ঝর, বাতাসকে নিরন্তর, মাটিকে ধারক, ঈশ্বরকে কারক। এতটুকু তবে বুঝি, কাকে অনুকরণ করা যায় না। হাঁ, তবে ক্ষেত্রবিশেষে কিছুটা অনুসরণ করা যায়। কারণ অনুকরণ আর অনুসরণের মধ্যে বেশি পার্থক্য না থাকলেও কিছুটা ব্যবধান ত আছেই। অনুসরণ করে কারও রাস্তা ধরে কিছু দূর হাঁটা যায় তবে গন্তব্য পাওয়া যায় না। কিন্তু অনুকরণ করে কিছু দূর ত দূরের কথা, প্রথম কদমেই ফোটা যাবে কাঁটা। এসব আমার ঢের জানা। তার পরেও চলার পথে যেমন অনেকের সাক্ষাৎ মিলে, লেখালেখির জগতেও লিখতে লিখতে কোনেক লিখায় নিজের অজান্তেই কারও ভাবছায়া চলে আসে তবে ওটাকে বর্জন করা উত্তম। কারণ এটা যেমন হৃদয়গ্রাহী হয় না তেমন অবিস্মরণীয়ও কখনো হতে পারে না। তাই লেখালেখিতে নিজস্ব একটা স্বতন্ত্র ভাবধারা তৈরি করা একান্ত দরকার। নাহয় নিজের প্রতিভাকে ঠকানো হয়। আমরা জেনেশুনে কখনো বিষ পান করে ফেলি। এ বিষক্রিয়ায় দরদ না হলেও মৃত্যু অনিবার্য।
আমার এক শিক্ষাগুরু বলতেন, ভাইবন্ধু থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন পর্যন্ত সংসারে এমন কোনো লোক নেই তোকে ভালবাসে না। তা প্রমাণ করতে চাস? তবে এমন সময় এমন এক বিপদ দেখাস, যেই বিপদ থেকে তোর উত্তোলন সহজই নয় একেবারে অসম্ভব বলা যায়। তখন বুঝতে পারবে ভালবাসার রং।
বহু বছর আগে ‘খুনি’ নামক একটা কবিতা লিখেছিলেম। কবিতাটি সেই প্রথমদিকের রচনা এবং ভয়ঙ্কর এক পরিস্থিতির মধ্যে লিখা। কবিতাটির পুরো রচনা শেষ হলে ‘খুনি’ নাম পরিবর্তন করে ‘দেশদ্রোহী’ নামে নামাঙ্কিত করি। কথা হচ্ছে, কবিতাটিতে নিজের অজান্তেই একটা অপরাধ হয়ে যায়। কবিতাটির শুরু এবং শেষ যেমনই হোক কিন্তু মধ্যিখানে এসেই ‘আমি’ শব্দটা বারবার উচ্চারণের কারণে কিছুটা নজরুলের বিদ্রোহী কবিতাকে স্মরণ করে দেয়। তবে ‘আমি’ শব্দটা ছাড়া নজরুলের ব্যবহারিত কোনেকটা শব্দ কবিতাটিতে ব্যবহার করা হয়নি। তবু আমি নিজেও সন্দিহান এবং বিনষ্টপূর্বে কার কী অভিমত ও অনুভূতি কেমন জানার মনস্থ করে সম্পূর্ণ অবগত হওয়ার লক্ষ্যে কবিতাটি বেশ কয়েকটি ব্লগে পোস্ট করি। গল্পকবিতাব্লগে ও অন্যান্যব্লগে তেমন কোনো বিরূপ মন্তব্য দেখলাম না। গল্পকবিতাব্লগে দুজন সুহৃৎ বন্ধু তাঁদের বাড়তি সময় নষ্ট করে কবিতাটির পঙ্ক্তিগণনা হতে শুরু করে এমনকি শব্দগণনা পর্যন্ত শেষ করেছে; যা আমি নিজেও কখনো কল্পনা করিনি। কবিতাটিতে এক হাজার কত জানি শব্দ ছিল এবং দুই শ আটত্রিশ কত জানি পঙ্ক্তি ছিল। বলতে গেলে এটা বন্ধুদ্বয়ের ভালবাসা ও মহৎগুণের প্রমাণ। মানুষ ত সবাই কিন্তু মহান খুব কমই হয়। একথা শুনে কেউ যদি মনে করে, আমি সাবাশিকে সাদরে বরণ করি এবং আনন্দের সঙ্গে স্বাগত জানাই তা হলে বলব--তাঁরা ভুল। প্রশংসায় আমি কখনো পঞ্চমুখ হতে পারিনি এবং পারব বলেও মনে হয় না। ‘নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভাল...’ যে আমার সমালোচনা করে আমি মনে করি তিনি আমার উপকারক, আমি তাঁকে সব সময় বন্ধু ভাবি। আমি মনে করি, আঘাত ছাড়া কেউ কখনো বড় হতে পারে না। থাক, অর্থহীন কথাবার্তা। এবার কবিতার কথায় আসি। বড় কবিতা লিখা তখন খুব শখ ছিল এবং ধীরে ধীরে শখের গণ্ডি পার হয়ে একসময় আদতে পরিণত হয়ে গেছিল। কী লেখি? কেমন লেখি? সেটা বড় কথা মনে করি না। বড় কথা মনে করি, বিধাতায় অপদার্থকে পদার্থ করার কেন যে চেষ্টা করে বুঝি না। থাক, সেসব কথাও। এখন বিশেষ কথা হল, সেদিন প্রথম-আলো-ব্লগে প্রায়ই সাত পৃষ্ঠার এ কবিতাটিতে দুয়েকজনের মন্তব্য দেখে আমি হতাশই নয় একেবারে নির্বাক! মানুষ মানুষকে এত অধম ভাবতে পারে তা আমার আগে জানা ছিল না। এক ভদ্রলোক দেখি ইংলিশে অনেক বড় গালি দিয়ে গেলেন! জানি না তিনি কত বড় ইংরেজপাকা হবেন? ভদ্রলোক মানুষ হোক। তবে ইংরেজ মানুষ কেমন অমানুষ হয় আমার জানা নেই। না হলে প্রার্থনা করব, পুনর্জন্মে তিনি পাকা ইংরেজ হয়ে জন্মুক।
বন্ধু, আমি কারও ঘৃণা পেতে এ পৃথিবীতে আসিনি, না এসেছি কাকে ঘৃণা করতে। আমি কারও ভালবাসা পাই বা নাপাই, আমার মাঝে যা কিছু সুন্দর যত ভালবাসা উজাড় করে দিয়ে যেতে চাই। আমার সৃষ্টিকারক আমাকে সৃষ্টি করেছেন সুন্দর ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। সুতরাং আমি যদি কারও ভাল করতে নাও পারি, করব না অনিষ্টের সাধনা। আমার মালিক কত রূপে বিচরণ করে সৃষ্টিতে--এ পৃথিবীতে। হয়তো তাঁরই একরূপ আমার মাঝে--আমার এ মনে। আমার অন্তরে মানবপ্রেমের কী অপূর্ব ঢেউ খেলে--আন্দোলিত হয়, যদি প্রকাশ্যে দেখাতে পারতাম তা হলে বোধহয় তামাম বিশ্বে আমিই হতাম ভালবাসার একমাত্র রাজা। আমি খুব গরিবপরিবারে জন্ম নিয়েছি, গরিবিকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। তাই হয়তো আমার ভাষায়, কথাবার্তায়, চালচলনে ও কল্পনায় গরিবি গরিবি ভাব। তাই হয়তো বুঝি না আমি ধনীদের হাবভাব। বুঝি না তাদের ভাষাভঙ্গিমা নিয়মনীতি শৌখিনতা। কী করি বন্ধু! নিয়তি আমাকে কুঁড়ের ঘরে দিয়েছে যে ঠাঁই। তাই কথা বলি নিঃস্বের, কথা বলি দরদের। এতে আমার আনন্দ ঢের, আমি হতে পেরেছি নিঃস্বদের।
আমার শিক্ষাযোগ্যতা শূন্য তাই বলে আমি নগণ্য? আমার মন মানসীর সঙ্গে সব সময় কথা বলে, ‘পথের শেষ আছে পথচলা শেষ নেই, তুমি যেই রাস্তায় চলছ তার শেষে তোমার কোনো গন্তব্য নেই। এখনো পথ অনেক বাকি, শান্ত হয়ে যাও--হয়ে যাও ধীরস্থির; বৃথা অপচয় করো না সুদিন--সুসময়, গিরিপর্বত ঠেলতে যেয়ো না মুসাফির। সব কাজ সব মানুষকে দিয়ে হয় না। কিছু জিনিস পাওয়ার আনন্দের চেয়ে না পাওয়ার বেদনাই ভাল। যে সম্মান বেশি চায় সে প্রায়ই অসম্মানের দরদ পায়’। আমি কোনো মন্তব্য করি না কারণ মনের তৃপ্তি যে তাই। একজন সাধক হাসি-মাতি-আড্ডায় দৈনন্দিনজীবনে সাধারণ মানুষের খোলসে হয়তো আবৃত কিন্তু ভিতরে ভয়াবহরকমের নিঃসঙ্গতায় ভোগেন এবং আশ্চর্যরকমের দরদ নিয়ে প্রতিটি মানুষের দরদে নীরবে কাঁদেন। তাঁর এরূপ দেখা বা বোঝার ক্ষমতা সাধারণ কারও আছে বলে মনে হয় না।
বন্ধু, তুমি যেমন কারও কাছে ভাল ব্যবহার আশা কর তদ্রূপ তুমিও ভাল আচরণ করো। কারও মনের ভেদ না জেনে অন্ধমন্তব্য করা কি আদৌ যৌক্তিক? পৃথিবীতে অনেক রথী-মহারথী এসেছিল এবং চলে গেল। কেউ স্থান পেল হয়তো কেউ পেল না। তবু যার যতটুকু কর্তব্য সাধন করে গেছে। সব বৃক্ষ যে ফল দিবে এমন কথা ত নয়। কিছু কিছু বৃক্ষ প্রকৃতির অগাধ সৌন্দর্য বাড়াবে, প্রাণবায়ু প্রবাহিত করবে--পরিবেশ বাঁচাবে। সেরূপ পৃথিবীর সৌন্দর্য বাড়াতে হলে এবং পরিবেশ বাঁচাতে হলে প্রত্যেক মানুষকেও চলতে হবে ন্যায়ের সঙ্গে এবং করতে হবে নিষ্ঠের সাধনা। যাঁরা এমন নিষ্ঠ ও সুন্দরের বাহক তাঁদের নাম ‘কবিলেখক’।
কী হবে এসব ব্লগে লিখে বা না লিখে? কে দেখে এসব ব্লগের লেখাগুলো? বিখ্যাত কোনো সাহিত্যবিশ্লেষক নাকি সমালোচক? একটি ব্লগ একজন লেখককে কখনো মসনদে বসাতে পারে না। তা হলে? নিয়তির লেখা যেমন দেখা যায় না, কলঙ্কের দাগ তেমন মুছে ফেলা যায় না। সবকিছুতে আমি নীরবতাই ভাল মনে করি। আমি দুঃখ পেয়ে নির্জনে কাঁদতে পারি কিন্তু কাকে দুঃখ দিতে পারি না। আমার এত যে শ্রীহীন কাণ্ড, আমি লজ্জায় নিজেকে ফাঁসি দিতে পারি কিন্তু কাকে অশ্রু দেখাতে পারি না। আমি খুব রাগী মানুষও বটে তবে রাগটা যে নীরবে হজম করতে পারি এটাই মনে করি আমার আমিত্ব। আমি আর কোনো শ্রেষ্ঠত্ব চাই না। কারণ, আমি জানি, রাগের বশে মানুষ হিতাহিত জ্ঞানহারা হয়। বড় কথা বা গালাগালি খুব তুচ্ছ ব্যাপার কিন্তু রাগের বশে মানুষ অনেক কিছু করতে পারে, এমনকি প্রাণপ্রিয় স্ত্রী-সন্তান হত্যাও; সেখানে আমি ধৈর্যশীল। তাই মনে করি, এটাই আমার কৃতিত্ব, এটাই আমার নিষ্ঠা, এটাই আমার শ্রেষ্ঠত্ব।
ভদ্রজনের মন্তব্য দেখে সঙ্গে সঙ্গে কবিতাটি সমস্ত ব্লগ থেকেই নয় এমনকি আমার ফাইল সেইভ থেকেও মুছে দিই। কবিতাটিতে অনেকের সুমন্তব্য থাকলেও কবিতাটি মুছে দেওয়ার পক্ষপাতি আমি। কারণ হৃদয়গ্রাহী বলেও কথা। তবে একটি লেখা ভাল হোক অথবা মন্দ একজন লেখকের কাছে সন্তানতুল্য। আর একজন রচয়িতাকে বোঝতে হলে তাঁর বেশ কিছু রচনা পাঠ করা জরুরি। এক বা একাধিক লেখা দিয়ে একজন লেখকের মানদণ্ড বিচার করা যায় না।
প্রথম-আলো-ব্লগে দুয়েকজন বন্ধুর মন্তব্যে মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না--বন্ধুদের আন্তরিক ধন্যবাদ। তাঁরা উপদেশমুলক কথা বলেছেন। উপদেশ আমি আজীবন গ্রহণ করে আসছি। একজন বললেন ‘আমি’ শব্দটা বাদ দেওয়া যায় কিনা ভেবে দেখবেন। অন্য জন বললেন ‘হৃদয়গ্রাহী’র কথা। কোনো রচনায় অন্যের ছায়া এলে...‘এটা বাস্তব’। বাকি কথাগুলো চমৎকার। কিন্তু আমি মনে করলাম, সবকিছুরই ত একদিন বিনাশ আছে। তাই পুরো কবিতাটাই বাদ দিলাম। কারণ যেই সৃষ্টি স্রষ্টাকে লাঞ্ছিত করে সেই সৃষ্টি বিনষ্ট করা উত্তম।
পরিশেষে পড়ে গেলাম দ্বন্দ্বে। মনের প্রশ্ন শোনতে হল ধ্যানে--অশান্ত, কার বিরুদ্ধে তোমার এ লড়াই? কোন্ ন্যায় বা নৈতিক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রক্তের এ লেখালেখি? যারা মর্যাদা বুঝে না তাদেরকে মর্যাদাহানির গল্প শোনানো বোকামি। শুধু ব্লগেইবা কেন, জীবনে আর কোনো লেখালেখি করো না। কী হবে এসব লিখে? বিবেক বলল, একজন সাধক অনেক সাধনাপরে গন্তব্য পায়। শিশুর মুতে আছাড় খেয়ে যদি বলে তার সাধনা এখানে শেষ! তা হলে গন্তব্য কোথায়? বড় যে বলে জানি সে খুব ছোট মনের মানুষ। জীবনে মানুষ হতে হলে মন বড় রাখা খুব জরুরি, নাহয় মানুষ হিসেবে গণনায় আসা কঠিন। দুর্বল মনের বাদশা হওয়ার চেয়ে সবল মনের ভিখারি হওয়া অনেক ভাল। আজ থেকে আমি বাকরুদ্ধ...