আজ থেকে ১৫ বছর আগের ঘটনা। আমি তখন ক্লাস নাইনের ছাত্র। গ্রামের আর ১০টা ছেলেদের মত হইহুল্লর করে সময় পার করতাম।
দল বেধে নদীতে সাঁতার কাটা, বৃষ্টির দিনের কাদাজলে ফুটবল খেলা, নদীতে সখ করে মাছ ধরা, সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে বিকালে ফিরে আসা।

ঢাকায় অনেক আত্মীয়স্বজন থাকা সত্ত্বেও অলোক তাদের ওখানে যায়নি। যদিও তারা তাকে অনেক কাঙ্খিত মনে করে, তারপরও দারস্ত হওয়া তার একদম পছন্দ নয়।

কয়েকদিন যাবৎ মোবাইল বাজলেই মিথিলার বুকের মধ্যে ছ্যাৎ করে ওঠে। শুধু মিথিলা নয়, বাড়ির প্রতিটি লোকই এখন মোবাইলাতংকে দিন কাটাচ্ছে। বাড়ীর মধ্যে মিথিলার মা রাহেলা বেগমই ফোন রিসিভ করেন। এ-বাড়ীর লোকজন ভয়ে কল রিসিভ করাই ছেড়ে দিয়েছে!

‘বাহ‍‍‍! তুমি দেখছি এলাহি কাণ্ড ঘটিয়ে বসে আছো! গ্রামের মধ্যেই এত বড় কাজ আর আমরা জানিই না! কাগজে তোমার ছবি দেখে তো চোখের পলক আর পড়ে না...’
‘আসলে স্যার গ্রামের শেষ মাথায় তো, আর আসতেও নদী পাড় হতে হয়... বসুন স্যার, গাছ-তলাতেই। খুব ঠাণ্ডা-ছায়া লিচু গাছের। আমি সারাদিন এখানেই কাটিয়ে দেই।’

রাত্রি। পৃথিবীতে পরিচয় দেবার মতো তার এখন আর কিছুই নেই। একসময় ছিল। মা-বোনের সাথে সুন্দর একটা জীবন ছিল। ধন-দৌলত, টাকা পয়সা না থাকলেও নিজের নামটা কাউকে বলতে গর্ব হতো রাত্রির।

ঝিঁঝিঁ পোকাদের ঘুম ভাঙলো তাহলে। কী যে ওরা! ছেড়ে যায় না যেন কিছুই।
আজকাল আমার বড্ড বিরক্তি লাগে কেন জানি! অন্ধকারের প্রতি!
মনুষ্য সম্প্রদায়ের কেমন লাগে? অন্ধকারকে! কিংবা আমাকেই!

সামনের গলিটা পার করো।
- যদি কেউ...
সে কথা শেষ করতে পারে না।
- কিছু হবে না। দুজন ধরাধরি করে সামনে এগোয়।

শাকুর আলী আজ কার মুখ দেখে ঘুম থেকে উঠেছে মনে করতে পারলো না। তার বিশ বছরের ঠিকাদারি জীবনে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটে নাই।

অনুপমা কিরে মা অনেক সকাল হয়ে গেলো উঠবিত। হে তোমর আদরের মেয়ে আজ খুব সকালে উঠছে। কিরে অনুপমা তুই আজ এত সকাল সকাল উঠেছিস? মা ফুলের সাজি হাতে এগিয়ে এলো ওর কাছে। আকাশে সূর্যের হালকা উঁকিঝুঁকি, নীলচে কার্পেটে যেন কমলার ছোপ।

তু‌মি আমা‌কে এত ‌ভালবাস‌ো?
‌মি‌লির কপ‌া‌লের অবাধ্য চুলগুলাে সরি‌য়ে দি‌তে দি‌তে বল‌লো আনিস।