অসময়ে স্বামীকে ঘরে আসতে দেখে সামিয়া খুব অবাক হল। মারুফ মুখ থমথমে। সামিয়া দরজা থেকে সরে দাঁড়ালো। কিছু না বলে মারুফ ঘরে চলে গেল। সামিয়া গেল পিছুপিছু। মারুফ খাটে গিয়ে বসল। সামিয়া বলল, তোমার কি শরীর খারাপ নাকি? এসময়ে এলে যে? অফিস কি ছুটি নিয়েছ?

বাসার সবাই ভালো আছে রে?
-হুম ভালো
হোসনে আরা কেমন আছে?
-হোসনে আরা?? হোসনে আরা তো মারা গেছে!!!
মারা গেছে ???

আজ এই অচেনা শহরে প্রথম দিন। শহরটা একেবারেই অচেনা,অজানা।নিজের দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল দূরের একটি দেশ, যেখানে দাঁড়িয়ে বুক ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে ভাবা যায় না, এটা আমার দেশ, কিংবা যে আকাশের দিকে তাকালে এও মনে হয় না যে এটা আমার আকাশ।

-কি রে! এই ঝড় বৃষ্টির ভিতরেও বাইরে যাইবি মা?
পিছন থেকে আসা হঠাৎ মায়ের কথায়,জুলেখা আঁতকে উঠে! থুথু ছিটায় বুকে। মৃদ্যু রাগ দেখিয়ে বলে-
-মা কতবার বলেছি এভাবে আচমকা এসে কথা বলবে না।

শুধু অনুভব করার চেষ্টা করলাম, ‘ক্ষুধার রাজ্যে অসহায় কতটা ক্ষুধার্ত?’ ‘কতটা তৃপ্তি কামনা করে ক্ষুধার জ্বালা ভুলতে?’

রাস্তার এপাশে দাঁড়িয়ে ভাবছে শৈলেন রায়, ঐপাশে যাবে কিনা। ঐপাশের এলাকাটা, সহজ বাংলায় যাকে বলে বেশ্যাখানা, শুদ্ধ বাংলায় পতিতালয়। শৈলেন এর আজ মন ভালো নেই,

এত‌গু‌লো দিন একা থাকার পর সু‌মি‌তের জীব‌নে নতুন ক‌রে ভা‌লো লাগার জন্ম নি‌য়ে‌ছে। কিন্তু কেন ভা‌লো লাগ‌ছে তার কোন কারন খু‌জে পায়‌নি সু‌মিত। এই তিনটা বছর ছোট্ট বাচ্চা মে‌য়েটা‌কে নি‌য়ে একাই আছে সে।

উত্তেজক ওষুধটা ছাড়া সাবিনার ডেরায় যাবেনা জহুর কিন্তু জিনিসটা কিনতে পারলেতো শালার দোকানিকে কিছুতেই একলা পাওয়া যাচ্ছে না।

এই ঘ‌রের দ‌খি‌নে জানালা নেই তাই প‌শ্চি‌মের খোলা জানালাটা দি‌য়েই হালকা কিন্ত মি‌ষ্টি কা‌মিনী ফু‌লের সুঘ্রাণ মেশা‌নো বাতাস আস‌ছে । এই বাতা‌সের সা‌থে যেমন ভা‌লোবাসা মি‌শে থা‌কে তেম‌নি হাহাকারও মেশা‌নো থা‌কে ।

ইস সাতটা বাজে। আবার এখনো ঘুম থেকে ওঠার নাম নাই। কইগো ওঠো অনেক বেলা হয়েছে। এই লক্ষিটি এবার ওঠো? সাতটা বেজে গেছে যে।
- উম,,,
- ঐ দেখো আবার পাশ ফিরে শুলো। মনে হচ্ছে যেন মাঝ রাতের ঘুম। এই ওঠোনা চা জুড়িয়ে গেল।
- উম, না লক্ষিটি।

এ দিকে রফিকের বাবা খুব বেহুশ। বড় ছেলের আজ পর্যন্ত কোনো খোঁজ নাই, মেঝো ছেলে পৃথিবীতে নাই আর ছোটো ছেলের এ অবস্থা। বেহুশ হয়ে পড়লে সংসার দেখবে কে,

এবার উচ্চমাধ্যমিক পাশ করল নাঈম ও তার মা। ইচ্ছাশক্তি থাকার ফলস্বরুপ তারা ভালো ফলাফল করেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করল।

জালের ঠিক মাঝখানে বসে আছে মাকড়শাটি। কুয়াশাচ্ছন্ন শীতের রাতের ঠাণ্ডার পরিমাণ বোঝা যাচ্ছে মাকড়শাটির জালের গায়ের বিন্দু বিন্দু ছোট-বড় শিশির কণা দেখে।

“কি ভালো আমার লাগলো এই আকাশের দিকে তাকিয়ে,
চারদিক সবুজ পাহাড়ে আঁকাবাঁকা, কুয়াশায় ধোঁয়াটে,
মাঝখানে চিল্কা উঠছে ঝিলকিয়ে!”

বিরক্তিটা গলায় যথাসম্ভব ফুটিয়ে তুলে বলি আমি, কমফর্টারটা আর একটু ভাল করে গায়ে জড়িয়ে নিয়ে। মার্চ পড়ে গেলেও, আজ গুগল ওয়েদারে পনেরো দেখাচ্ছে। সপ্তা'র সবেধন নীলমণি রোব্বার। এইমাত্র টেবিল-ক্লকটা কাঁপতে কাঁপতে আড়াইটের অ্যালার্ম বাজিয়ে শান্ত হয়েছে। আকাশের যা অবস্থা তাতে যেকোন সময় হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টি নামবে।