গন্তব্য

কামনা (আগষ্ট ২০১৭)

রওনক নূর
  • ১৯

এত‌গু‌লো দিন একা থাকার পর সু‌মি‌তের জীব‌নে নতুন ক‌রে ভা‌লো লাগার জন্ম নি‌য়ে‌ছে। কিন্তু কেন ভা‌লো লাগ‌ছে তার কোন কারন খু‌জে পায়‌নি সু‌মিত। এই তিনটা বছর ছোট্ট বাচ্চা মে‌য়েটা‌কে নি‌য়ে একাই আছে সে। রুপা না‌মের মে‌য়ে‌টির সা‌থে ফেসবু‌কে প‌রিচয়। কাছাকা‌ছি বাসা হলেও সরাস‌রি কখনও দেখা হয়‌নি ওদোর। নি‌জের মে‌য়ে‌টি সম্প‌র্কে কিছু ব‌লে‌নি সু‌মিত রুপা‌কে। তার একাকী জীব‌নে রুপা তার নতুন বেঁ‌চে থাকার আশা হ‌য়ে এসের‌ছে। কিন্তু তা‌কে নি‌য়ে কোন স্বপ্ন দে‌খেনা সু‌মিত। তাই তার বাচ্চাটার কথাও জানায়‌নি রুপা‌কে।

বাচ্চাটা প্‌‌তি‌দিন ব‌লে মা এনে দি‌তে। ও তো আর বু‌ঝেনা চাইলেগই কি আর সব‌কিছু পাওয়া যায়। ত‌বে প্র‌তি‌দিনই মে‌য়ে‌কে প্র‌মিজ ক‌রে মা কে এনে‌ দি‌বে। এসব নি‌য়ে খুব ডিস্টার্ব থা‌কে সু‌মিত। পৃ‌থিবীর চা‌রি‌দি‌কে শুধু শূন্যতা তার। আর কত‌দিন মে‌য়ে‌টি‌কে মিথ্যা আশ্বাস দি‌বে। মা‌ঝে মা‌ঝে ম‌নে হয় রুপা‌কে সব‌কিছু শেয়ার কর‌বে। কিন্তু কি‌সের যেন একটা বাঁধা সবসময় সু‌মিত‌কে তাড়া ক‌রে। তাই চাইলেসও সব‌কিছু কর‌তে পা‌রেনা সে।

রোজার ঈদে প্রায় চ‌লে আস‌ছে। রুপা খুব ক‌রে বাইনা ধর‌লো এবার সে সু‌মিত‌কে দেখ‌তে চাই। কিন্তু সু‌মিত কিছু‌তেই রা‌জি নয়। তার ধারনা দেখা হ‌লে তা‌দের সম্পর্ক নষ্ট হ‌য়ে যা‌বে। কিন্তু সু‌মিত সম্পর্কটা‌কে সারা জীবন রাখ‌তে চাই। রুপা তা‌কে অনে ক বুঝাবার চেষ্টা করে যে দেখা হ‌লে সব ভা‌লোই হ‌বে। অব‌শে‌ষে রুপার কথায় হার মে‌নে ঈদেষর তৃতীয় দিন দেখা করার সিদ্ধান্ত নেয় ওরা। রুপা অনেপক বে‌শি এক্সাইটে ড হ‌লেও সু‌মি‌তে মনটা খুবই খারাপ। তার ম‌নে হ‌চ্ছে আর বু‌ঝি সম্পর্কটা এগো ‌বেনা। সব‌কিছুই শেষ হ‌য়ে যা‌বে। ঈদের তৃতীয় দিন ছি‌লো সু‌মি‌তের জন্ম‌দিন কিন্তু সে রুপা‌কে সেটা জানা‌লোনা।

আগামীকাল দেখা হ‌বে সু‌মিত আর রুপার। সারারাত ঘুম হলনা দুজ‌নের। কেমন যেন অজানা ভা‌লোলাগা রুপার ম‌নে, আর সু‌মিতের ম‌নে ভয়। হা‌রি‌য়ে ফেলার ভয়, না পাওয়ার ভয়। সু‌মি‌তের মা ওকের নি‌য়ে প্রায়ই এক‌টি কথা ব‌লে, " অভাগা যে‌দি‌কে চাই সাগর সু‌খি‌য়ে যায়।" তাই শুষ্ক জ‌মি‌নে ভা‌লোবাসার সামান্য জ্ব‌লে ভি‌জেনা। জানালার দি‌কে তা‌কি‌য়েই ছি‌লো সু‌মিত। হঠাৎ কি যেন ম‌নে হওয়া‌তে মে‌য়ে‌টির ঘ‌রে গে‌লো । মে‌য়ে‌টি দা‌দিকে জ‌ড়ি‌য়ে ঘু‌মি‌য়ে আছে।। কা‌ছে যে‌য়ে সু‌মিত বাচ্চা‌টির কপা‌লে চুমু দি‌লো। কিছু না ভে‌বেই সু‌মি‌তের চোখ দি‌য়ে জ্বল গ‌ড়ি‌য়ে পড়‌লো। মা আর মে‌য়ের পা‌শে কিছুক্ষন ব‌সে থাক‌লো সু‌মিত। নি‌জে‌কে খুব অপরা‌ধি লাগ‌ছে তার, য‌দিও জে‌নে শু‌নে সে কখনও কোন অন্যায় ক‌রেনা।

ধবধ‌বে সাদা র‌ঙের পাঞ্জাবী প‌রে‌ছে সু‌মিত। মা তা‌কে খু‌শি দে‌খে পা‌য়েশ এনেখ মু‌খে খাই‌য়ে দি‌তে দি‌তে ব‌লে, " শোন বাবা, ম‌নে যা চায়‌বে তাই কর‌বি। নি‌জের ভা‌লোলাগা আর ভা‌লোথাকা নি‌য়ে কোন আপোষ কর‌বিনা।" মা‌য়ের কথা শু‌নে হেঁ‌সে ফেল‌লো সু‌মিত। ম‌নে ম‌নে ভাব‌লো মা কি কিছু আন্দাজ কর‌ছে। কিছু না ব‌লেই বাসা থে‌কে বের হ‌লো সু‌মিত।

শহ‌রের এক‌টি ক্যা‌ফে‌তে ওদে র দেখা হবার কথা। সু‌মিত আগে ই পৌ‌ছে গে‌লো সেখা‌তে। কিন্তু তার আগেুই পৌ‌ছে গে‌ছে রুপা। সাদা আর গোলা‌পি র‌ঙের শা‌ড়ি পরা এক সাদা প‌রি আগেভই অপেলক্ষা কর‌ছি‌লো। কা‌ছে যে‌তেই সু‌মিত অবাক হলো। প‌রিটার হা‌তে অনেসকগু‌লো রজনীগন্ধার ‌স্টিক। সু‌মিত‌কে দে‌খেই চিন‌তে পে‌রে দৌ‌ড়ে ওর হাত ধ‌রে টান‌তে টান‌তে এক‌টি টে‌বি‌লে নি‌য়ে বসা‌লো। টে‌বি‌লের উপ‌রে অনেুকগু‌লো মোমবা‌তি আর কেক। রুপা তো তার জন্ম‌দি‌নের কথা জা‌নেনা, তাহ‌লে কিভা‌বে এগু‌লো কর‌লো। শুধু মুগ্ধতা নি‌য়েই তা‌কি‌য়ে ছি‌লো, সব‌কিছু তার স্ব‌প্নের মত লাগ‌ছি‌লো।

জন্ম‌দি‌নের কথা কিভা‌বে জে‌নে‌ছে এ প্রশ্ন‌টি করার শ‌ক্তিও ছি‌লোনা সু‌মি‌তের। রুপা তার হা‌তের ফুলগু‌লি সু‌মিত‌কে এগিা‌য়ে দি‌লো সা‌থে এক‌টি গিফ্ট বক্স। ত‌বে গিফ্ট বক্স‌টি বাসায় নি‌য়ে খুল‌তে ব‌লে। সু‌মিত আর রুপা দুজন দুজনার দি‌কে মুগ্ধ হ‌য়ে তা‌কি‌য়ে আছেপ। যেন দুজনই যা আশা ক‌রে‌ছি‌লো তার থে‌কে অনেরক বে‌শি কিছু পে‌য়ে‌ছে। কেক কাটা হ‌লো, দুজন একসা‌থে দুপু‌রের খাবার খে‌লো। বিকা‌লে সু‌মিত রুপা‌কে রিক্সায় ক‌রে বাসায় পৌ‌ছে দেয়। রুপা খুবই খু‌শি কিন্তু সু‌মিত সব হারা‌নোর ভ‌য়ে আরো বে‌শি আত‌ঙ্কিত হ‌লো কারন জীবন বারবারই তা‌কে শুধু ফা‌কি দি‌য়ে‌ছে।

বাসায় ফি‌রে খুব বে‌শি অপরাধ বোধ হ‌চ্ছে সু‌মি‌তের। য‌দিও আজ‌কের দিন‌টি তার জীবনের সব‌থে‌কে সেরা দিন। কিন্তু সে রুপার সা‌থে অন্যায় ক‌রে‌ছে। রুপা‌কে তার মে‌য়ের কথা, পেছ‌নে ফে‌লে আসা দু‌র্বিসহ দি‌নের কথা জানা‌নো হয়‌নি। জানা‌নো হয়‌নি সু‌মি‌তের সেই ভুল করা ভা‌লোবাসার কথা, যে সু‌মিত‌কে আর বাচ্চাটা‌কে একা ক‌রে অন্য কোথাও চ‌লে গে‌ছে। নি‌জে‌কে খুব বে‌শি অপরাধী লাগ‌ছে ওর। একবার ভাব‌লো সব কিছু ফোন দি‌য়ে বল‌বে, আবার ভাব‌লো সব জান‌লে রুপা য‌দি ওকের ঘৃণা ক‌রে। শে‌ষে সিদ্ধান্ত নি‌লো রুপা‌কে না জা‌নি‌য়ে অনে ক দু‌রে চ‌লে যা‌বে সে।

রা‌তের খাবার খাওয়া শে‌ষে রুপার দেওয়া উপহা‌রের বক্স‌টি খু‌লে সু‌মিত। উপহার‌টি দে‌খে সু‌মি‌তের চো‌খে বাঁধভাঙা আনন্দ অশ্রু চলে আসে । রুপা এক‌টি শো‌পিচ দি‌য়ে‌ছে তা‌কে। মা-বাবার সা‌থে ছোট্ট এক‌টি মে‌য়ে। আর এক‌টি কাগ‌জে লি‌খে দি‌য়ে‌ছে, " তু‌মি, আমিা আর আমা‌দের ছোট্ট মে‌য়ে। আমিস ওর মা হ‌তে চাই।"‌
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ আক্তারুজ্জামান খুব সুন্দর লিখেছেন। কিছু ভুল বানান না দেখতে পারলে আরো ভালো লাগতো। যেমন জল হয়ে গেছে জ্বল! অনেক অনেক শুভকামনা।
জসিম উদ্দিন আহমেদ গল্পের থিমটা ভাল তবে খুব সংক্ষিপ্ত হয়েছে। আমি যদিও আপনাকে উপদেশ/পরামর্শ“ দেওয়ার যোগ্য নই, তারপরেও নিজের কর্তব্য মনে করে একজন পাঠকের দায় থেকে বলছি, গল্পে আমার কাছে কিছু অসঙ্গতি চোখে পড়েছে। যেমন-আপনি দু’জায়গায় লিখেছেন “চাই” কিন্তু আসলে শব্দটা মনে হয় “চায়” হবে। তাছাড়া “সু‌মিত আগে ই পৌ‌ছে গে‌লো সেখা‌তে। কিন্তু তার আগেুই পৌ‌ছে গে‌ছে রুপা।”-আসলে কে আগে পৌঁছাল?। ... নিরন্তুর শুভকামনা।
মোঃ মোখলেছুর রহমান লেখা আরও বড় করা প্রয়োজন,ভোট রইল।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী গল্পটি খুব ভালো লাগলো। তবে জানিনা কাগজের লেখাটুকু সত্যি হয় কি না। অনেক গুলো লেখা এলোমেলো হয়ে গেছে। দুরো, গল্প যদি মনের মত হয়; এলোমেলো শব্দ কোনো ব্যাপারই না। পাঠক সহজে বোঝে নিবে। যা হোক, অনেক শুভকামনা সহ ভোট রইলো।

১৩ নভেম্বর - ২০১৬ গল্প/কবিতা: ৩৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“জানুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ জানুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী