তখন আমার প্রেমে পড়ার বয়স। মেয়ে দেখলেই প্রেমে পড়ে যাই। যাকে দেখি তাকেই ভালো লাগে। পাশের ফ্লাটের ডলি ভাবির কিঙ্কিণি হাসি ভালো লাগে।

বালিকা-
তোমায় নিয়ে কবিতা লিখবো ভাবছি,
কিন্তু কোন শব্দালঙ্কারে তোমায় সাজাবো বলোতো?
অনেকটা অজানার মধ্যে সবটুকু জানা
কিছুটা না বোঝার আর বাকিটুকু বোঝার।

আধা ঘন্টা যাবত হাসান বিজয় সরণীর সিগনা‌লের জ্যা‌মে। বা‌সের ‌পেছ‌নের দি‌কে, জানালার পা‌শের একটা সি‌টে ব‌সে দরদর ক‌রে ঘাম‌ছে আর ঝিমা‌চ্ছে।
আজ প্রচন্ড গরম প‌ড়ে‌ছে। গত ক‌য়েক বছ‌রে কেন, হাসা‌নের ৩৬ বছ‌রের জীব‌নে কখনও এত গরম প‌ড়ে‌নি। মধ্য দুপু‌রের কাঠফাটা রোদ এখন। মানুষজ‌নের প্রান প্রায় ওষ্ঠাগত। গত কয়‌দি‌নের গর‌মে অনে‌কেরই হিট স্ট্রোক হ‌চ্ছে।

সুরমার ছেলে বাবর দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে ছুটে এসে খবর দিলো,
‘ও মা, তোমার বাপজানের নাকি মেলা অসুখ! আর নাকি বাঁচবো না। তোমারে ডাইকা পাঠাইছে। বাপজান কইলো তোমারে গিয়া শিগগির খবর দিতে।’
সুরমা ছেলের কথা শুনে অনেকক্ষণ কোনো কথা বলতে পারলো না।

পৃথিবীর কোন কিছুই ছোট বা বড় করে দেখার মত কিছুই না।
তাঁর অবস্থানই তাঁর উত্তর বলে দিতে পারে
হতে পারে ভাল মন্দ দুইটাই মানুষ এবং মানুষের ছাঁয়ার মতো কাঁছাকাঁছি।

নিতাই বাবু হাতে সুটকেস নিয়ে অফিসে যাবার জন্য বাস স্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায়।
এমন সময় উস্কোখুস্কো চেহারা, কুণ্ডলী বেষ্টিত চুল, ক্ষিপ্ত উন্মাদ পাগল এসে তার পাশে দাঁড়ায়।

আচ্ছা জানিস আর্য তোর সাথে আমার দেখা হয়নি অনেক দিন । কত কত
সন্ধ্যে ঝিলের ধারে
একা একা বসে কাটিয়েছি
শুধু তোর অপেক্ষায় ।

সকাল বেলা বাবার কথা ভুলেই গেছি। ঘুম ভাঙলো বৌয়ের ক্যাচক্যাঁচানি শুনে। অনেক কষ্টে হাতড়ে চশমাটা খুঁজে চোখে দিয়ে আৎকে উঠলাম। দেখলাম একটা বেশ বড়সড় রামছাগল আমার ঘরময় ছুটে বেরাচ্ছে আর ভ্যাভ্যা করে যাচ্ছে। বুঝলাম ছালা-বাবার কেরামতি।

মিতু একটু পর পর টিস্যু দিয়ে ঘাম মুছসে। এসি রুমের মধ্যে বসেও সে প্রচন্ড ঘামছে। এর মধ্যেই অনিন্দ্য এসে তার বিখ্যাত গা জ্বালানো হাসি দিয়ে অতিষ্ট করে দিচ্ছে। ওরা সবাই মেডিকেল প্রথম বর্ষের ছাত্র।

অনেক পরিকল্পনা করে সাজানো-গোছানো কথাগুলো উপস্থাপন করার সময় মনোযোগী শ্রোতার আগ্রহ ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছিল। তাই তার আত্মবিশ্বাস বেড়ে তিনগুণ হয়ে উঠল। কিন্তু কথা শেষে যখন বললেন ‘আপনার উদ্দেশ্য কী?’ তখন মোন্তাজুর রহমানের ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।

আরে যাও যাও!!
“বাবা,এইডা আমার স্বামীর ভিডা, এই ভিডা ছাইড়া কই যামু!! আমার যে তিন কূলে কেউই নাই!
আমারে এই ভাবে ভিডা ছাড়াকইরো না বাপ !
এই বুইরা বয়সে আমার যাওনের যে আর কোনো যায় গানাই!!”
বলতে বলতে ডুকরে কেঁদেওঠে মজিরনবেওয়া।

ছেলেটির নাম ধ্রুব আহসান।বাবা মার একমাত্র সন্তান।পুরনো ঢাকার ছয় তলা একটা বাড়িতে খুব গোছানো একটা ফ্ল্যাট এ মা বাবা আর ধ্রুব তিন জন মাত্র মানুষ।তবু সবসময় বাড়িটা একাই মাতিয়ে রাখে ধ্রুব।

ঝাটা দিয়ে আইজকে তোর দুইধে মুখ সুজা কইরে দেব।হারামজাদা,এত্ত বড় বাইড় বাইড়ছে,আমার মুখের উপর কথা কইস।দাড়া আইজকে তোর বাপের নাম ভুলাই দেবরে শুয়োর।
ও কাকা,ও কাকা আমার কোন দোষ নেই,তালেবরে আমি ফেইলে দিইনি,ও একলা একলাই পইড়ে গেছে।

সুজন এখন মেঘনা নদীর মাঝি। বাবার ইনকামের নগণ্যতার কারনে সুজনকে স্কুলের মুখ দেখাতে পারলো না। বাবা মেঘনা নদীর রহিম মাঝি নামে লোক সম্মুখে পরিচিত।