অপ্রত্যাশিত

পার্থিব (জুন ২০১৭)

শৈলেন রায়
  • ১০
সময়ের সাথে সব কিছু আস্তে আস্তে সব সম্পর্ক গুলোর রং পরিবর্তন হতে থাকে ! যাকে ছাড়া একদিনও বাঁচবো না এমন মনে হত আগে, সময় যাওয়ার সাথে সাথে তার চেহারাটা কেমন ঝাঁপসা হয়ে আসে ।
আজকে হঠাৎ তার দেওয়া ডায়েরি টা চোখে না পড়লে তার কথা মনেই হত না কিন্তু একটা সময় ছিল কেবল এই দিন নয়, বছরের পুরোটা দিন জুড়ে কেবল সে ই ছিল ! তাকে ছাড়া একটা নিঃশ্বাসও যেন নিতে পারতাম না ! আর আজকে ?
ডায়েরি টা তার কথা মনে করিয়ে দিল ?
কার কথা বলছি ?
বলছি আমার প্রথম প্রেমিকার কথা ! আমার জীবনের প্রথম মেয়েটির কথা যার প্রেমে পড়েছিলাম আশ্চার্য ভাবে প্রথম দেখাতেই ! প্রথম দেখাতে প্রেম যাকে বলে !
সোমা !
সোমা রহমান ! আমার তিন বছরের ছোট, আমার জীবনের প্রথম প্রেম ! আজকে এসেছি তার গল্প করার জন্য !
বানিয়ে বানিয়ে গল্প লিখি বলে দয়া করে এটাও মনে করবেন না যে এইটাও বানানো গল্প !
আমার সেই দিনের কথা এখনও মনে আছে । শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১১ সাল ! আমার ইন্টার 1st ইয়ার পরীক্ষা চলছে, পরীক্ষা দিয়ে মেসে ফিরছি রাস্তায় হঠাৎ ওর সাথে দেখা চিকন গলির রাস্তা ধরে পাশাপশি হাটছি ! দুজন দুজনকে চিনতাম but কোনদিন কথা বলিনি,
আমার মেস ও তার বাসা পাশাপাশি ছিল, মেসের গেটের কাছেই আসতেই ও বলল তোমাকে আমার ভালো লাগে। আমি তো অবাক ! বিশ্বাস করুন আমার কথা একেবারে বন্দ হয়ে গেয়েছিল,
আমি জানি না, আমার বুকের মাঝে কি হল ! কেবল লক্ষ্য করলাম আমার অন্য রকম একটা অনুভুতি হচ্ছে ! বুকটা একটু যেন বেশি জোরে কাঁপছে ! এই অনুভুতি আমার কাছে নতুন ছিল !
ছোট বেলা থেকেই আমি মেয়েদের দিকে একদম তাকাতাম না, কথা তো দুরে থাকুক !
কিন্তু মেয়েটার দিক থেকে চোখ সরাতে পারলাম না !
তার কয়েক দিন পরে মেয়েটির সাথে আমার মুখোমুখি দেখা হয়ে গেল ! একদম মুখোমুখি ! আমি যে স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তাম সেও সেখানে পড়ত ! দেখা হল সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল ! স্যারের বাসায় দরজার কাছে গিয়েছি ঠিক তখনই মেয়েটা এসে হাজির ! একদম মুখোমুখি ! সে কিছুক্ষন চেয়ে রইলো আমি কিছুক্ষন ! সে সেদিন বাদামী রংয়ের কামিজ আর বাদামী ল্যাগিংস পরেছিল ! চুল গুলো একটু যেন ভেজা ভেজা ছিল !
অনেক দ্বিধা দ্বন্দ্ব কাটিয়ে দিলাম প্রেমের প্রস্তাব !
স্যার তখন আসেনি ! একটা কাগজ লিখে পাঠালাম ! আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম যে উত্তর হ্যা আসছে কিন্তু উত্তর এল “না” !
তার বান্ধবী টেনে টেনে বলতে লাগলো “দেখো এখন ও এই সব কোন সম্পর্কে জড়াতে চাচ্ছে না” !
আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম !
ছুটির সময় যখন সাইকেল স্ট্যান্ডে সাইকেল নিতে যাবো দেখি সোমা তার বান্ধবী সহ এসে হাজির ! বলতে গেলে এই প্রথম সে আমার মুখোমুখি হল ! আমি চলে যেতে চাইলে আমার সাইকেল আটকে দাড়ালো !
আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে বলল
-তুমি রাগ করেছ !
আমার তখন মনে হয়েছিল না রাগ করবো কেন ? আমি তো অনেক খুশি হয়েছি ফাজিল মেয়ে !
কিছু বলললাম না !
সে বলল পহেলা বৈশাখের দিন বিকেলে তারা পার্কে বেড়াতে যাবে ! আমি যেন পার্কে দেখা করি !
পহেলা বৈশাখের দিন ওরা চার বান্ধবী আমাদের মেসের সামন দিয়ে রিক্সা করে পার্কে গেল ,আমি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আর একটা রিক্সা নিয়ে ওদের পিছু নিলাম ! পার্কে যাওয়ার পর সোমা একটু দুরে আমাকে ডেকে নিয়ে গেল ! আমি চুপ করে ছিলাম । কি বলবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ! সোমা বলল
-আমাকে কিছু বলতে চাও না ?
-না !
-তোমার কিছু বলার নেই ?
-আছে তো !
-তাহলে বল না কেন ?
-মুখে কিভাবে বলবো ? লিখে দেই ?
শুনতে হাস্যকর হলেও সেদিন এই কথাটাই বলেছিলাম !
তারপর কাগজে লিখলাম
ডু ইউ লাভ মি ? ইয়েস / নো !
সে আমার হাত থেকে কলম টা নিয়ে ইয়েস এ টিক দিয়ে নো টা কেটে দিল !
পুরাই মাল্টিপল চয়েজ প্রোপোজ !
তারপর ও মাথার খোপা থেকে ছোট একটা সাদা ফুল আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বান্ধবীদের কাছে গেল !
তখন মনের ভিতর কি পরিমান আনন্দ হচ্ছিল বলে বোঝানো যাবে না !
যখন রুমে ফিরে এলাম তখন আমি যেন অন্য জগতে ছিলাম !
এর পরেই আমার অন্য রকম একটা জীবন শুরু হল ! সোমার সাথে মোট ১৪ মাস রিলেশন ছিল ! বলতে কোন বাঁধা নেই কোন দ্বিধা নেই ১৪ টি মাসের প্রতিদিনই আমি আমি কাটিয়েছি অন্য এক জগতে ! জীবনে অন্য রকম একটা আনন্দময় সময় ছিল সেটা !
ওকে চিঠি লিখতাম খুব বেশি ! এত্তবড় বড় সব চিঠি ! সোমাও লিখত ! তখন আমাদের মোবাইল ছিল না ।
ওকে নিয়ে সাইকেল ভ্রমনে যেতাম প্রায়ই ! দুইজনের বিকালের প্রাইভেট কামাই দিয়ে চলে যেতাম যেদিকে চোখ যায় !
মাঝে মাঝে এমনও হয়েছে আমাদের দেখাই হয় নি ! ও আমাকে এক জায়গায় দাড়াতে বলেছে আমি বুঝি নি, দাড়িয়ে রয়েছি অন্য জায়গায় ! ও রাগ করে আছে আমিও রাগ করে আছি !
এরকম কত স্মৃতি যে আমাদের রয়েছে । কতদিন হয়ে গেল তবুও যেন চোখের সামনে যেন সব ভাসে !
ওর সাথে সম্পর্কের পুরোটা সময়ে আমি আসলেই অন্য এক জগতে ছিলাম ! ছোট ছোট অনেক ঘটনা ইচ্ছে করলে বর্ণনা করা যায় তাহলে আজকে আর শেষ হবে না !
একটা সময় নিজেদের ভুলের কারনে সম্পর্কটা নষ্ট হয়ে যায় ! দোষ ছিল দুজনেরই ! কারও বেশি কারও কম ! কে বেশি দোষী ছিল সেটা আজকে আর নাই বলি !
সেই কবেকার কথা ! প্রথম প্রেম ছিল, কোন চিন্তা ভাবনা ছিল না কেবল আবেগ ছিল ! আজও আছে মনের কোথাও ! আজও তাকে মনে পড়ে !
হয়তো আজকে আমাকে আর আগের মত মনে পড়ে না ! মনের গভীরে কোথাও আমার স্মৃতি গুলো ফেলে রেখেছো অবহেলায় ! তবে এই টুকু নিশ্চিত জানি আমাকে তুমি মনে রেখেছো ! মনের কোথাও না কোথাও আমার কথা কোন এক বিষন্ন বিকেলে ঠিকই মনে পড়ে তোমার ! যেমন টি আমার মনে পড়ে !
সবার শেষে তার কয়েকটা লাইন দিয়ে শেষ করি ! সে একটা চিঠিতে আমাকে লিখেছিল !
When I will Die,
Come to my grave
No Cry, No pray
On just Say “I love you”
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী চমৎকার লিখছেন। তবে লেখার গভীরতা আরও বাড়াতে হবে। শুভকামনা রইলো....
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) Aro likhte thakun. Lekhar dhoron valo. Joti chinner bebohare shotorko hote hobe. Pray protita bakker seshe ! Chinner bebohar khub drishtikotu ebong porar madhurjoke mlan kore dey. Shuvo kamona.
শৈলেন রায় সবাই কে ধন্যবাদ
রুহুল আমীন রাজু বেশ ভাল লাগলো ...। শুভ কামনা । ( আমার পাতায় আমন্ত্রন রইল )
নাদিম ইবনে নাছির খান আমার পাতায় আমন্রন রইল,,,
নাদিম ইবনে নাছির খান সুন্দর হয়েছে,,, ভাললাগলো,,,, আমার প্রিয় কবি,,,,Accourding to P.B Sheli,,,"When I will die,, you go to my grave, don't cry only pray" অনেক দিন পর,,,,,,, তার কবিতা মনে পড়ল,,,

১৪ মে - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪