গল্প-কবিতা : ফেক ও সিন্ডিকেট প্রসঙ্গ

আহমেদ সাবের
১৮ জানুয়ারী,২০১৩

এ ধরনের একটা লেখা লিখবার ইচ্ছা আমার অনেক দিনের। গল্প-কবিতায় শত শত কবি প্রতি মাসে দুর্দান্ত সব কবিতা লিখে যাচ্ছেন। তাদের বেশীর ভাগেরই লক্ষ্য, একটা পুরষ্কার পাওয়া। মাসের শেষে তাদের বেশীর ভাগের আশার গুড়ে বালি মিশিয়ে অন্য কেউ পুরষ্কার জিতে যাচ্ছেন। পুরষ্কার না পেয়ে অনেকেই হয়তো ভাবেন, অসদুপায় উপায় অবলম্বন করে (তার নিজের কবিতার চেয়ে) নিম্ন মানের কবিতা তার প্রাপ্য পুরষ্কারটা ছিনিয়ে নিলো। এ ক্ষেত্রে কেউ কেউ সিন্ডিকেট বা ফেক ভোটের আওয়াজ তোলেন।


এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, ফেক ভোট কাকে বলবেন? কেউ একজন ( ধরুন বসুন্ধরা ) একটা কবিতা লিখলেন। তার দশ/পনেরো জন বন্ধু বা আত্মীয়কে অনুরোধ করলেন, কবিতাটা দেখবার জন্যে। সেই বন্ধু বা আত্মীয়রা গল্প-কবিতায় যোগ দিয়ে বসুন্ধরার কবিতায় মন্তব্য করে ভোট দিয়ে গেলেন এবং সাথে সাথে যখন পারলেন, অন্য কারো লেখায়ও মন্তব্য বা ভোট করে গেলেন। অনেকের লেখায় ব্যাপারটা আমি লক্ষ্য করেছি এবং দু'এক যায়গায় মন্তব্যও করেছি। এটাকে কি ফেক ভোট বলা যায়? আমার মতে নয়।


এ গ্রুপের সদস্যদের পেছনে লোক আছে বলে তারা প্রোফাইলে ছবি দিতে পারেন এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে দিয়েও থাকেন।


আরেক ধরনের লেখক আছেন, যারা নিজেই দশ/পনেরোটা আইডি খোলেন। আইডিগুলোর যথার্থতা প্রমাণের জন্য সব আইডি থেকে লেখা জমা দেন; নিজেই বিভিন্ন নামে লগইন করে কমেন্ট করেন। তবে, ভোটের ক্ষেত্রে নিজের আইডি গুলো থেকে জমা দেওয়া লেখাগুলোকে ৫ করে ভোট দিয়ে অন্যের (ধরুন দিনলিপির) অসাধারণ লেখায় ১ করে ভোট দেন। এর ফল দেখুন -

 

ফেক ভোট জমার আগে (১০ জন ভোট দিয়েছেন) -

দিনলিপির ভোট - ,,,,,,,,,( গড় = ৩৯/১০ = ., পাঠক স্কোর = .৩৪ )

বসুন্ধরার ভোট - ,,,,,,,,,( গড় = ৩৪/১০ = ., পাঠক স্কোর = .০৪ )

 

এখন দিনলিপি আর বসুন্ধরার ভোটের সাথে ১০ জন ফেক ভোটারের ভোট যোগ হলো। এখন মোট ভোটার ২০ জন।

দিনলিপির ভোট - ৩৯ + ১০ ( গড় = ৪৯/২০ = .৪৫, পাঠক স্কোর = .৪৭ )

বসুন্ধরার ভোট - ৩৪ + ৫০ ( গড় = ৮৪/২০ = ., পাঠক স্কোর = .৫২ )

 

আশা করি অনেক অসাধারণ লেখায় কেন পাঠক স্কোর ২ এর নীচে সেটা বুঝাতে পেরেছি। এর ফলে অনেক অসাধারণ লেখা সেরা ২৫শে আসতে পারে না আর আসলেও নিম্ন পাঠক স্কোরের কারণে পুরষ্কার পায় না।


এ গ্রুপের সদস্যদের পেছনে কোন রক্ত-মাংসের লোক নেই বলে তারা প্রোফাইলে ছবি দিতে পারে না এবং এজন্য বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে অন্য লোকের বা বস্তুর ছবি দিয়ে থাকে। তবে তার মানে এ নয় যে, প্রোফাইলে যাদের নিজের ছবি নেই, তারা সবাই ফেক। ছবি-বিহীন অনেকের সাথে গল্প-কবিতার অন্য সদস্যের ব্যাক্তিগত, -মেইল বা ফোন যোগাযোগ আছে। যারা পারিবারিক বা সামাজিক কারণে প্রোফাইলে নিজের ছবি দিতে চান না, তারা হয়তো অন্য সদস্যের সাথে অন্য কোন ভাবে যোগাযোগ রেখে নিজের উপস্থিতি জানান দিতে পারেন। তাতে দোষের কিছু দেখি না।


ফেক ভোটের কথা বলা হলো। এবার সিণ্ডিকেটের কথায় আসি। গল্প-কবিতায় দীর্ঘ দিনের পরিচিতির কারণে কিছু সদস্যের মধ্যে সত্যিকার বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। এ ধরনের ৩/৪টা গ্রুপের অস্তিত্ব আমি লক্ষ্য করেছি। বিভিন্ন সাহিত্য বিষয়ক কর্মকাণ্ডে এরা একে অপরকে সাহায্য করেন। এই পরিচিতির সামান্য কিছুটা প্রভাব ব্যক্তিগত ভোটের ক্ষেত্রে পড়া অস্বাভাবিক নয়। অন্যদের লেখায় ভোট দেবার আগে, তারা প্রথমেই নিজেদের পরিচিত বন্ধুদের লেখায় ভোট দেন। এই পরিচিতির গণ্ডীকে অনেকে সিন্ডিকেট বলে ভুল করে থাকেন। তবে এসব গ্রুপ কারো পুরষ্কার পাবার ব্যাপারে কোন প্রভাব ফেলতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না।



চোখ রাখুন ব্লগের পাতায়। পরের লেখায় আসছে, আমার দৃষ্টিতে গত দু সংখ্যার পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখাগুলোর মূল্যায়ন।

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
গাজী তারেক আজিজ ধন্যবাদ সাবের ভাই সময়োপযোগী এই লেখার জন্য। তবে আমার মত হচ্ছে- প্রথমেই পাঠক ভোটে ২৫ জন লেখককে বাছাই না করে যদি সবগুলো লেখা থেকে বিচারকের অভিমতের ভিত্তিতে ২৫ জনের লেখা নির্বাচিত করে একই সাথে ২৫(বিচারক কর্তৃক নির্বাচিত)+২৫(পাঠক কর্তৃক নির্বাচিত)= প্রতি বিভাগ থেকে সর্বমোট ৫০ জন লেখকের লেখা বাছাই করে প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ করছি। তারপর স্কোরের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান। এতে করে স্বচ্ছতা রক্ষা হবে বলে আমার মনে হয়। অন্তত পক্ষে ভালো লেখা কিংবা লেখক হারাবে না।
কামরুল হাছান মাসুক গাজী তারেক অাজিজ ভাই অাপনার সাথে অামি একমত। অামারও মনে হয় প্রথম থেকেই বিচারকদের বাছাই করা লেখা নিয়ে ২৫ টি স্থান দেওয়া হোক। সাবের ভাই দুর্ধান্ত লিখেছেন। অামার মনে হয় প্রথম অবস্থায় পাঠকরা সঠিক লেখাটিকে নির্বাচন করতে পারে না।বিচারকরা অবশ্যই পারবেন। কারণ বিচারকরা অনেক অভিজ্ঞ হবেন। তারা সাহিত্যর মানদন্ড বুঝেবন। এখানে একজন পাঠক নতুন করে রেজিষ্টেশন করেই মন্তব্য করে যারা দেখা যায় সাহিত্যর কোন জ্ঞানই নেই। এভাবে ভাল লেখা এবং লেখক নির্বাচন করা যায় না। ভাল লেখা এবং লেখক নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই বিজ্ঞ কোন সাহিত্যক লাগবে।
ভালো লাগেনি ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩
এফ, আই , জুয়েল # অনেক সুন্দর । তবে ব্যাপার আরো আছে । ধীরে ধীরে প্রকাশ পাবে বলে মনে হয় ।। = আপনাকে ধন্যবাদ ।।
শাহ আকরাম রিয়াদ যাদের মন-মানসিকতা ফেক ভোটের মাধ্যমে বিজয়ীর হওয়ার... তারা আর যাই হোক কখনও নিজের সামনে নিজে দাঁড়াতে পারবে না। তাদের বিবেকের আয়না তাদের দাঁড়াতে দেবে না। তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে সে কামনা করি। লেখাটির জন্য সাবের ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।
রাশেদুল ফরহাদ সবেমাত্র এই ব্লগে প্রবেশ করেছি। এ লেখাটাই এখানে আমার পড়া প্রথম কোন পোষ্ট। ভোট বাণিজ্য সর্বত্রই, গ্রামের মাতবর, চেয়ারম্যান, মহল্লার কমিশনার, সিটি করপোরেশনের মেয়র মশাই, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী যেখানে ভোটের দৌড়ে পিছু হটেন না; সেখানে সাহিত্যের বর্তমান বাণিজ্যিকরণের কালে ভোটাভুটির খেলা দরকার আছে বৈকি! লেখাটা পড়ে ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।
কনিকা রহমান লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো....জটিল একটা ব্যাপার এভাবে গুছিয়ে লিখার জন্য ধন্যবাদ |
Dr. Zayed Bin Zakir (Shawon) অসাধারণ সবের ভাই অসাধারণ লিখেছেন! অনেক অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর লেখাটার জন্য
তানি হক অনেক অনেক ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় সাবের কাকা কে পোস্ট টির জন্য ..ফেক আইডির বিরুদ্ধে ত্রিব্ব প্রতিবাদ জানাচ্ছি ..যারা এই কাজ করছেন তারা সাহিত্য ..গল্পকবিতার সকল মেম্বার এবং নিজের ভেতরের পবিত্র আত্মা কে প্রতারণা ও অপবিত্র করছেন ..দোয়া করি যারা ..নিজেদের লিখাকে ফেক আইডি দ্বারা পুরস্কৃত করতে চায় এবং অন্য মেম্বারদের অপমানকর ও খারাপ মন্তব্য করে তাদের অপমানিত করেন ..তারা যেন আলোর পথে সত্যের পথে ফিরে আসে ..কারণ কেউ তাদের চিনতে পারুক আর নাই পারুক ..তার আপন সৃষ্টি কর্তা তাকে ঠিক মতই চিনেন এবং জানেন ..আর সৃষ্টি কর্তা তার শাস্তি প্রদানে ভীষণ ভীষণ কঠোর ..আর তার শাস্তি থেকে বেচে থাকার কোনই পথ নেই ..আল্লাহ তাদের তার আগেই হেদায়েত দান করুন এই কামনা করি .. গল্পকবিতার অ্যাডমিন বরাবর বিনীত অনুরোধ ফেক আইডির ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্তা নেয়া হোক ..ধন্যবাদ সাবের কাকা.. আপনার পরবর্তী পোস্টির অপেক্ষাতে রইলাম ..
সূর্য যতখুশি ছদ্ম নামে লিখুক কোন আপত্তি নেই, তবে সমস্যা বাধে যখন একজনের একাধিক আইডির ভোটগুলো লেনদেন হয়। নিজের আইডিগুলোর লেখায় ৪/৫ করে ভোট দেয়া আর অন্যদের পিছিয়ে দিতে ১/২ ভোট দেয়া কোন ভাবেই সুস্থ্য সাহিত্য চর্চা হতে পারে না। যে কোন আলোচনায়, ব্লগে নিয়মিত থাকার ফলে অনেকের সাথে বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠেই এবং এতে যদি কোন লেখক মনে করে তার লেখাগুলোর প্রকৃত সমালোচনা পাচ্ছেন না তখন তিনি ছদ্ম নামে লিখতেই পারেন। তবে নিজের লেখাগুলো সেরা পচিশে আনার জন্য নিজের লেখায় নিজেই ভোট দেয়াটা একটা অসুস্থতা, আর যারা এটা করেন তাদের বোধ হয় সয়ং সৃষ্টিকর্তাও বুঝাতে পারবেন না এটা একটা ভন্ডামী। আর এটা এই ব্লগে কখনো থামবে না যতক্ষন পর্যন্ত বছর শেষে প্রকাশিত বইয়ে ছাপার যোগ্যতা শুধুমাত্র জয়ী লেখাগুলোই অর্জন করবে। সুস্থ সাহিত্য চর্চার জয় হোক। সাবের ভাইকে কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ জানাই সময়োপযোগি একটা ব্লগ লেখার জন্য।
ওবাইদুল হক অনেক ধন্যবাদ দাদা সুন্দর বলেছেন তবে তাদেরকে দোয়া করেন ।
রোদের ছায়া এরকম একটা লেখা জরুরি ছিল সবের ভাই , আমি সব সময় ফেক ভোটের বিরুদ্ধে বলেছি । সেটা নিজের লাভের জন্য না , গল্পকবিতার পরিবেশ ভালো থাকবে সেই আশায় । আর আপনার পরের অংশের অপেক্ষায় থাকলাম ....ধন্যবাদ ।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

মার্চ ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i