কেমন আছে জানতে চাইলে দাদু বলেন- ভালো নাইরে, বাতের ব্যথায় বড় কষ্ট পাচ্ছি। দাদী বলেন- আর বলিসনা ভাই, কোমরের ব্যথায় চোখে ঘুম নাই। ছাত্র বলে- স্যার, কালকে প্রচণ্ড পেট ব্যথা ছিল তাই আসতে পারি নাই। ছাত্রী বলে- স্যার, আজ আমার মাথা ব্যথা করছে তো, তাই আম্মু বলেছে পড়তে হবে না।
সেদিন হঠাৎ এক ছাত্রীর এপেণ্ডিসাইটিসের ব্যথা উঠল, দুই তিন ঘন্টার মধ্যে অপারেশন করাতে হল। এক ছাত্রের চাচা হঠাৎ বুকের ব্যথা বলতে বলতে মরে গেল। ডাক্তার বলল হার্ট ফেইল করেছে। এদিকে হেনার বিরহ ব্যথায় কাতর মোস্তফাকে স্বান্তনা দিতে গিয়ে বন্ধুরা আপ্রাণ চেষ্টা করছে। প্রসব ব্যথায় গ্রামে কষ্ট পাচ্ছে রহিমের বোন মেহেরুন। গ্রাম্য ধাত্রী ব্যর্থ হয়ে শহরের হাসপাতালে নিতে বলেছে। বাঁচবে কি না কে জানে।
ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ে ব্যথা পেয়েছে পল্টু। ক্রিকেটের বল হাতে লেগে হাতের ব্যথায় শুয়ে আছে মন্টু। প্রতিদিন দুইবার বাজারের সবচেয়ে ভালো পেষ্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করেও দাঁতের ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছে ন্যান্সি। অনুষ্ঠানের মহড়া দিতে গিয়ে গলা (কণ্ঠ) ব্যথা হয়ে গেছে মল্লিকার। পিঠের ব্যথায় বিছানায় গড়াগড়ি দিচ্ছে নৃত্যশিল্পী বিউটি। জনসভায় বিরোধী দলের বক্তা বলেছে জনগণের সমস্যা নিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যথা নাই।
পাড়ার ছেলের হাত ধরে পালিয়ে গিয়ে আদরের মেয়ে মুনা ব্যথা দিল বাবা- মাকে। দুষ্টু ছেলেরা ঢিল ছুড়ে ব্যথা দিল ডোবার ব্যঙকে। রান্নাঘরে ঢোকার অপরাধে গৃহস্থ লাঠিপেটা করে ব্যথা দিল বিড়াল অথবা কুকুরটাকে। গাছের ডাল ভেঙে পথিক ব্যথা দিল গাছকে।
এই ব্যথা পাওয়া ও দেওয়ার পদ্ধতির অন্ত নেই। তাই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কৃষ্ণ বলেছেন নিষ্কাম কর্মের কথা অর্থাৎ ফলের আশা না করে শুধু কর্তব্য বোধে কর্ম করলে ব্যথা থেকে মুক্ত হওয়া যায়। বুদ্ধ দিয়েছেন বেদনা অনুদর্শন নামক নির্দেশনা। বলেছেন ব্যথার উৎস অনুসরণ করতে, সাক্ষী হিসেবে তা নিরীক্ষণ করতে, এর মাধ্যমে যে জ্ঞান অর্জিত হবে তা ব্যথা থেকে মুক্তি দিবে। যীশু বলেছেন বিশ্বাস করার কথা। অর্থাৎ আমি ব্যথা থেকে মুক্ত এই বিশ্বাসই ব্যথা থেকে মুক্তি দিবে। নবী বলেছেন আত্মসমর্পনের কথা অর্থাৎ নিজেকে পরিপূর্ণভাবে সমর্পন করলে ব্যথা বোধ থাকবে না। বিভিন্ন মনীষী বিভিন্নভাবে মানুষকে ব্যথা থেকে মুক্তি দেওয়ার উপায় বলেছেন।
ব্যথা যেহেতু উপলব্ধির বিষয়, এটা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে ব্যথিতের বোধের উপর। জলে বাস করে বলে ব্যঙের যেমন সর্দি লাগে না। তেমনি জন্ম থেকে যারা জ্বলছে তারাও সহজে ব্যথিত হয় না। যারা সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মায় তারা অল্পতেই ব্যথা পায়। তেমনি যাদের বোধ যত প্রখর তাদের ব্যথা তত বেশি। তারা পত্রিকায় গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ লিখে মানুষের মাঝে ব্যথার সংক্রমন ঘটায়। ব্যথাশিল্পীরা নতুন নতুন ব্যথার জন্ম দেয়। স্বাভাবিক বিষয়কে মানবিক, দানবিক, পাশবিক নাম দিয়ে ব্যথার প্রকারভেদ করে। চিন্তার জগতে ঘটায় আন্দোলন। ব্যথাকে পুঁজি করে হয়ে যায় পুঁজিপতি। হয়ে যায় বিখ্যাত ও জনপ্রিয়। তবুও যার ব্যথা শুধু সে-ই জানে। বুঝবে কি তা অন্যজনে?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক
ব্যথাশিল্পীরা নতুন নতুন ব্যথার জন্ম দেয়...খুব ভালো লাগলো প্রবীর ভাই...ব্যাথার চিরাচরিক মহড়া...সেই সাথে নিবন্ধধর্মী লেকাটা মন ছুঁয়ে গেলো,,,শুভকামনা,,,,
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি
তাই ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে কৃষ্ণ বলেছেন নিষ্কাম কর্মের কথা অর্থাৎ ফলের আশা না করে শুধু কর্তব্য বোধে কর্ম করলে ব্যথা থেকে মুক্ত হওয়া যায়। বুদ্ধ দিয়েছেন বেদনা অনুদর্শন নামক নির্দেশনা। বলেছেন ব্যথার উৎস অনুসরণ করতে, সাক্ষী হিসেবে তা নিরীক্ষণ করতে, এর মাধ্যমে যে জ্ঞান অর্জিত হবে তা ব্যথা থেকে মুক্তি দিবে। যীশু বলেছেন বিশ্বাস করার কথা। অর্থাৎ আমি ব্যথা থেকে মুক্ত এই বিশ্বাসই ব্যথা থেকে মুক্তি দিবে। নবী বলেছেন আত্মসমর্পনের কথা অর্থাৎ নিজেকে পরিপূর্ণভাবে সমর্পন করলে ব্যথা বোধ থাকবে না। .......// ব্যথা নিয়ে রিতিমত ফিচারে রুপ পেয়েছে....ভীষণ ভাল ...শিক্ষনীয়ও বটে...অনেক ধন্যবাদ .....
মনজুরুল ইসলাম
nice presentation within a very short sentence.\real picture of our common life.good luck and invitig to read my first story posted here.\batha by manjurul islam.
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।