ই-লুসিডা

স্বপ্নলোক (জুন ২০২৫)

মাহাবুব হাসান
১.
“সাগরে সাঁতার কাটা পুকুর বা নদীতে সাঁতার কাটার চাইতে সহজ কেন, জানিস তোরা?
“না স্যার!”
“গাধা একেকটা! সাগরের পানিতে বিভিন্ন লবণ থাকায় এ পানির আপেক্ষিক ঘনত্ব বেশি, প্লবতাও বেশি। তাই সাগরে সাঁতার কাটা সহজ। বুঝলি!”
“তাইলে তো মধুর সমুদ্রে সাঁতার কাটা আরো সহজ হবে, তাই না স্যার?”
“ফাজিলের ফাজিল!”
কমলেশ স্যার সেদিন খুব ক্ষেপেছিলেন। ঘটনাটা মনে হলে রমজানের এখনো হাসি পায়। এই মুহূর্তে অবশ্য মনে পড়ছে ভিন্ন কারণে। সে এখন ভাসছে; তবে পানিতে না, সিলিকনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বলে ভর্তি বাথটাবে।
কসমিক আলোয় পরিপূর্ণ চারপাশ, কানে ভেসে আসছে সুমধুর সুর। রমজানের চোখজোড়া আপনাতেই বুঁজে এলো। সারাদিনের বিশৃঙ্খলায় তপ্ত মস্তিষ্কে এখন চমৎকার শীতলতা ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে। রমজান চেতনার অতলে তলিয়ে যাচ্ছে। মস্তিষ্কের শীতলতা, সুমধুর সুর, মনের প্রশান্তি, প্লবতা সব সে ভুলে যাচ্ছে,…

২.
বাথটাবের পানিতে নাক-অব্দি ডুবিয়ে শুয়ে থাকা রমজান হঠাৎ ধড়মড়িয়ে উঠে বসল। ক’টা বাজে এখন? নিশ্চয়ই অনেক বেলা হয়ে গেছে!
আজ প্রমোশন লেটার ছাড়া হবে। বছরের পর বছর ভালো পারফর্ম করেও কেন জানি রমজান ম্যানেজমেন্টের নেকনজরে পড়ছে না। তাই প্রমোশনও হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও সে প্রমোশনের ক্লেরিকেল টাস্কগুলো যত্ন করে গুছিয়েছে। বস বলেছিল সকালে তার সামনে প্রমোশন লেটারগুলো থাকা চাই। আর হোম মিনিস্টার বলেছে সকাল সকাল বাজার করে তারপর বেরোতে হবে। অথচ আজই কিনা দেরি!
রেডি হতে হতেই বসের ফোন।
“রমজান সাহেব! আপনাকে আজ অফিসে আসতে হবে না!”
রমজান প্রমাদ গুনল। বস ভালোই ক্ষেপেছে। রাশভারী বস কথাগুলো বলেছে হাসতে হাসতে। উনি হেসে হেসে কথা বলেন খুব খুশী হলে, নয়ত মহাখ্যাপা খেপলে। এই মুহূর্তে খুশী হওয়ার কোনো কারণ নেই। অতএব…। রমজান নিশ্চিত হতে পারছে না কথাটা সঠিক শুনেছে কিনা- “আজ অফিসে আসতে হবে না”, নাকি “আর অফিসে আসতে হবে না”?!
রমজান চটজলদি রেডি হয়ে ছুটল অফিসে। কী আশ্চর্য, রাস্তায় আজ এক ফোটা জ্যাম নেই!
অফিসে ঢোকার মুখে দেখা হয়ে গেল বসের সাথে। রমজানকে দেখে তিনি ভ্রূ কুঁচকালেন
“কী ব্যাপার রমজান সাহেব, আপনাকে না বললাম আজ আসার দরকার নেই!”
“কিন্তু স্যার আজ যে আর্জেন্ট কাজ…”
“আরে রাখেন আপনার কাজ! কালই তো বললেন কয়েকদিন ধরে ব্যাকপেইন হচ্ছে, ছুটি লাগবে… আচ্ছা এসেই যেহেতু পড়েছেন, আমার চেম্বারে একটু আসুন”
বসের পেছন পেছন রমজান চেম্বারে ঢুকল। বস সিটে বসেই ইন্টারকমে কার সাথে যেন কথা বললেন
“রেডি আছে? আচ্ছা রেডি করে দিয়ে যান। আর হাবিবকে আসতে বলেন”
অফিস সহকারী হাবিব চেম্বারে নাস্তা দিয়ে গেল। বসের সাথে সাথে রমজানের জন্যেও নাস্তা এলো। রমজান অবাক। বস কখনো অধঃস্তন কাউকে তার চেম্বারে বসিয়ে চা পর্যন্ত খাওয়ান না। সেখানে তার জন্যে নাস্তা! তবে ভালোই হয়েছে, সকালে ব্রেকফাস্ট হয় নি, ক্ষুধায় পেট চো চো করছিল।
নাস্তা শেষ হতেই নায়লা চেম্বারে এলো। ওর হাতে একটা খাম। খামটা বসের হাতের দিলো। বস সেটা দিলো রমজানের হাতে
“কনগ্রাচুলেশনস রমজান সাহেব!”
খামের ভেতর মহা-আরাধ্য প্রমোশন লেটার! শুধু প্রমোশনই হয় নি, নতুন গ্রেডে এক্সট্রা তিনটা ইনক্রিমেন্টও হয়েছে।
রমজান গায়ে চিমটি কেটে দেখল ব্যথা লাগছে। তার মানে সে স্বপ্ন দেখছে না!
“থ্যাংক ইউ স্যার!”
“আমাকে থ্যাংক ইউ বলছেন কেন? এটা তো আপনার পারফরম্যান্সের পুরস্কার! দিনের পর দিন এত শ্রম-ঘাম প্রতিষ্ঠানকে দিয়েছেন, তার জন্যে তো প্রমোশন আপনার প্রাপ্যই। আপনার জন্যে আরেকটা গুড নিউজ আছে। এবার আপনি বেস্ট এমপ্লয়ীর অ্যাওয়ার্ড পেতে যাচ্ছেন। টু বেসিক পে অ্যান্ড থাইল্যান্ড ট্রিপ উইথ ফ্যামেলি- প্লেনের টিকিট, থাকা খাওয়া সবকিছু কোম্পানী বিয়ার করবে। যান, ঘুরে আসুন!”
“কিন্তু স্যার হাতে এত কাজ জমে আছে…”
“উফ! খালি কাজ কাজ কাজ… অফিসের জন্যে জান দিয়ে দেবেন নাকি? নিজের দিকেও তো তাকাতে হবে! আপনি যান, আগামী ১৫ দিন আর এমুখো হবেন না!”
রমজানের কাছে সবকিছু স্বপ্নের মতো লাগছে। গত ছয় বছরে বসকে সে কখনো এতটা কেয়ারিং দেখে নি। আর অফিসের অন্য কলিগরা তো এই মুহূর্তে তাকে হিঃসা করার কথা! কিন্তু তারাও কত আন্তরিকভাবে কনগ্রাচুলেট করছে! নায়লার মতো ডাটওয়ালা মেয়ে তার ডেস্কে এসে হ্যান্ডশেক করে শুভকামনা জানিয়ে গেছে। সেই আল্টা-মডার্ন নায়লা, যে রমজানকে পাত্তা পর্যন্ত দিত না।

৩.
দরজায় বিশাল একটা তালা ঝুলছে। রমজান অবাক হলো। হাফসা এই সময় গেল কোথায়? রমজান ডুপ্লিকেট চাবি দিয়ে দরজা খুলল। এলোমেলো ঘরগুলো এখন ঝক ঝক তক তক করছে।
রমজান হাফসাকে কল দিতে ফোনটা বের করল। ১১টা মিসকল! আর একটা হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ। রমজান আবারো প্রমাদ গুনল। এতবার ফোন দিয়ে পায় নি, হাফসা যে গরম হয়ে আছে তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু মেসেজ পড়ে রমজান ঠান্ডা!
“তোমাকে অনেকবার ফোন দিলাম, ধরলে না। নিশ্চয়ই অফিসে অনেক ব্যস্ত! পরে সময় করে ফোন দিও। আমি বাবুকে নিয়ে একটু ওর নানাবাড়ি যাচ্ছি। খাবার রান্না করে ফ্রিজে রেখেছি, এই কয়দিন তোমার কোনো অসুবিধা হবে না। আমাদের জন্যে চিন্তা করো না। নিজের খেয়াল রেখো”
রমজান কী রিপ্লাই দেবে ভেবে পাচ্ছে না। অন্যান্য সময় ফোন দিয়ে না পেলে হাফসা তুলকালাম বাধায়, অফিসে কাজের মধ্যে ছিল বলেও পার পায় না। সেই হাফসাই এখন কত পোলাইট-কনসিডারেট-সিম্প্যাথেটিক!
ফ্রিজে অনেক ধরণের খাবার। হাফসার বিফ-মাটন খাওয়া নিষেধ বলে কোরবানির ঈদ ছাড়া এসব বাসায় রান্না হয় না। কিন্তু ফ্রিজে আজ বিফও দেখা যাচ্ছে!
আজ দিনটা শুরু হয়েছে স্বপ্নের মতো। রমজানের মনে হচ্ছে একটা ঘোরের মধ্যে আছে, ঘোর কেটে গেলেই সেই বসের ক্যাচ ক্যাচ, বউয়ের খটমট, রাজ্যের ঝুটঝামেলা…
একই এলাকায় রমজানের ৩ বাল্যবন্ধুর বাসা। মেসে একসাথে থাকতে কত রাত ওরা তাস পিটিয়ে কাটিয়েছে! রমজান বিয়ে করার আগপর্যন্তও প্রতি উইক-এন্ডে ওর বাসায় লেট-নাইট পিকনিক হতো। এখন দেখাসাক্ষাৎ হাই-হ্যালো পর্যন্তই। সকলেই ব্যতিব্যস্ত সংসার বৌ-বাচ্চা নিয়ে। তবু রমজান একটু ধাতস্থ হয়ে ওদের ফোন দিলো। সবাই যেন ওর ফোনের জন্যেই অপেক্ষা করছিল!
বহুদিন বাদে বাসায় তাসের আসর বসেছে। সাথে হালকা লাল পানির ব্যবস্থা করেছে আজমল। রমজান এক ঢোক মুখে দিয়েছে, এরমধ্যেই ফোন। হাফসা! রমজান ঠোঁটে আঙুল দিয়ে বাকিদের চুপ করিয়ে ফোন রিসিভ করল
“কোথায়?”
“বাসায়”
“কী করো একা একা?”
“একা না। আনিস, রাব্বি আর আজমল এসেছে”
রমজান ভেবেছিল মিথ্যে বলবে। কিন্তু মুখ দিয়ে সত্যিটা বেরিয়ে গেছে। বলেই সে জিভে কামড় দিলো। না জানি কী উল্টোসিধা শুনতে হয়। কিন্তু ওই পাশে উচ্ছ্বাস
“তাই নাকি! ভাইয়ারা অনেক দিন পর এলেন। ঠিক আছে, তুমি ওনাদের সময় দাও। দয়া করো সারা রাত জেগো না। আর ওষুধটা খেয়ে আমাকে উদ্ধার করো। রাখি”
ফোন রেখে রমজান তবদা খেয়ে বসে রইল। আজমল ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করল
“কী হইছে? ভাবী বেশি গালিগালাজ করছে?”
“আমাকে একটা চিমটি দে তো”
আজমল রমজানকে চিমটি কাটল
“দূর! এত জোরে দিতে বলছি?... নাহ, আমি তাইলে স্বপ্ন দেখতেছি না!”
বাকি তিনজন একে অন্যের মুখ চাওয়াচাওয়ি করল কথাটা শুনে।
রমজান অবশ্য হাফসার কথাটা রাখতে পারল না। তাসের মধ্যে এতটাই ডুবে গেছিল, হুঁশ ফিরেছে ফজরের আজান শুনে। তিনজন ঘুমাতে গেল। ঘুম ভাঙল জুম্মার আজান শুনে। সাতসকালে বৌয়ের ডাকাডাকি, কন্যার হাউকাউ, বসের কচকচানিবিহীন একটা পরম আরাধ্য সকাল! এমন সকালে না ঘুমালে চলে?

৪.
“মামা দাঁড়ান দাঁড়ান…”
মৌয়ের কথা শুনে রিকশাওয়ালার সাথে সাথে রমজানও থেমে গেল। ও হেঁটে হেঁটে রমনার দিকে যাচ্ছিল। উলটো দিক থেকে আসা চলন্ত রিকশায় বসা মৌ-ই ওকে আগে নোটিস করেছে
“কেমন আছ মৌ?”
“উঠে আসো”
“কিন্তু আমি…”
“কোনো ‘কিন্তু’ না! আসো”
রমজান রিকশায় উঠে বসল। রিকশার নতুন গন্তব্য ‘অন্তরা কফি পার্লার’। অর্ধযুগ আগের দিনগুলোতে দুজন এই ছোট্ট দোকানটার কর্নার কেবিনে অন্তরঙ্গ সময় কাটাত। দুজনার দুটি পথ একদিকেই যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষটায় পরিবারের চাপে পড়ে এক মার্কিন প্রবাসীকে বিয়ে করে মৌ। রমজান তখনো বেকার বলে মৌ বাসায় কিছু বলতে পারে নি।
‘স্বর্গদেশে’ যাওয়ার পর মৌ রমজানের সাথে একটিবারও যোগাযোগ করে নি। আজ তবে ওকে মৌয়ের কী প্রয়োজন?
হৃদয়ের সাথে মৌয়ের সংসারটা জমে নি। বিয়ের পরও হৃদয় ডেভিডের সাথে এক দশকের ইন্টিমেট রিলেশনটা ছেদ করতে পারে নি, অথবা চায় নি। মৌ অনেক চেষ্টা করেছিল হৃদয়কে পথে ফেরাতে। না পেরে নিজেই ফিরে এসেছে।
“রমি! আমরা কি আবার নতুন করে শুরু করতে পারি না?”
রমজান মুচকি হেসে পকেট থেকে স্মার্টফোন বের করে আনলক করল। ওয়াল পেপারে বিনুর ছবি।
“তোমার মেয়ে?”
“না, আমার স্বর্গ! হাফসার সাথে আমার মনোমালিন্য হয় না, তা না। কিন্তু বিনু সাঁকো হয়ে আমাদের জুড়ে রাখে সবসময়। এই হাসিমুখগুলোকে আমি ম্লান হতে দেবো না কিছুতেই। ভালো থেকো। চলি”
আশাহত মৌকে পেছনে ফেলে রমজান কফি পার্লার থেকে বেরিয়ে এলো। আজ ওর মোরাল ভিক্টরি হয়েছে।
মৌকে হারিয়ে রমজান মনে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছিল। আঘাতটা যখন সয়ে আসছিল তখনই জানতে পারে আসল সত্য- বিয়েটা মৌয়ের নিজের ইচ্ছাতেই হয়েছে! খুবই বাস্তববাদী মেয়ে, ও জানত বেকার ছেলের সাথে প্রেম করা যায়, সংসার না।
রমজানের বহুদিনের স্বপ্ন ছিল, যেভাবে সে একদিন প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল সেভাবেই যদি ও মৌকে প্রত্যাখ্যান করতে পারত! অধরা স্বপ্নটা আজ পূরণ হয়েছে।

৫.
কফিশপে থাকতেই হাফসা আর বিনুর কথা খুব মনে পড়ছিল রমজানের। বহুদিন ভেবেছে, বাসায় ওরা না থাকলে স্বাধীনভাবে ক’টা দিন বাঁচা যাবে। এক সপ্তাহও যায় নি, এরমধ্যেই রমজান হাঁপিয়ে উঠেছে।
অফিস দুই সপ্তাহের ছুটি দিয়েছে। ছুটির জন্যে রমজান আগে আকুলিবিকুলি করত, ছুটি পেত না। কাজের চাপে পিষ্ট হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন অফিসের কাজগুলোকে ভীষণ মিস করছে সে। মিস করছে উদয়াস্ত পরিশ্রমের সুশৃংখল দিনগুলোকে।
অন্ধকারের মধ্যে অস্থির পায়চারী করতে করতে রমজানের মনে পড়ল সেই মুহূর্তটার কথা- কসমিক রে, সিলিকন বল, সুদিং মিউজিক, ইলেক্ট্রোড, বাথটাব…
রমজান ছুটে গেল বাথরুমে। বাথটাবে শুয়ে চোখ বুজে পানিতে গা নাকঅব্দি ঢুবিয়ে দিলো। পানিতে গোলাপ ফুলের গন্ধ। রমজানের অবসন্ন নিস্তেজ শরীরটা ঢুবে যাচ্ছে অতলান্তে। আস্তে আস্তে সে বিস্মৃত হয়ে যাচ্ছে চারপাশের জগতটা।
কতক্ষণ কাটল রমজান জানে না। আস্তে আস্তে তার মস্তিষ্কের শীতল ভাবটা কেটে যাচ্ছে। বহুদূর থেকে ভেসে আসছে মিষ্টি ধ্বনি। ঠিক তখনই রোবটিক কণ্ঠ যেন তার মাথার ভেতর কথা বলে উঠল
“ইউ হ্যাভ থার্টি মিনিটস মোর; ডু ইউ ওয়ান্ট টু ওয়েক আপ ফ্রম ইউর লুসিড ড্রিম রাইট নাউ?”
তিরিশ মিনিটের গুল্লি মারি! আর তিরিশ সেকেন্ডও না- রমজান স্বপ্নের জাল ছিন্ন করে পুরোপুরি চেতনায় ফিরে এলো। সিলিকন বলে ভর্তি বাথটাবে শুয়ে ভেসে থাকার অনুভূতি হচ্ছে। ড্রিম স্টুডিওর মনোরম কসমিক লাইটিং আর সুদিং মিউজিক এখন স্পষ্ট। রমজান কারো অপেক্ষায় না থেকে মাথায় লাগানো ইলেক্ট্রোডগুলো নিজেই টেনে টেনে খুলে ফেলল। তারপর গায়ে জড়ানো রোবটা খুলে নিজের পোশাক পড়ে একছুটে বাইরে বেরিয়ে এলো।
E-LUCIDA : Make Your Own Lucid Dreams- বহুতল ভবনের সাইনবোর্ডে কোম্পানির নামের সাথে থাকা ট্যাগলাইনটা সার্থক। স্বপ্নলোক ভ্রমণে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচা হলেও দারুণ একটা এক্সপেরিয়েন্স হয়। তবে এই মুহূর্তে রমজানকে টানছে মর্ত্যলোক- প্রিয়তমা স্ত্রীর হাসিমুখ, কলিজার টুকরো মেয়ের হাতের স্পর্শ, অফিসের কর্মব্যস্ততা…
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নেমেছে। ই-লুসিডার উল্টোদিকে রাস্তার ওপর একজন ফুচকা বিক্রি করছে। রমজান এক প্লেট ফুচকা অর্ডার করল। প্লেটভর্তি ফুচকা থেকে একটা ফুচকা মুখে দিতে যেতেই রমজানের মনে হলো কেউ যেন তার মাথার ভেতরে বসে বলছে, “ভাজাপোড়া একদমই খাবে না, তোমার লিভারের অবস্থা কিন্তু খুব খারাপ!”
বলছে বলুক! বহুদিন পর স্বাধীনতা পাওয়ার আনন্দে রমজান টক-ঝাল-মিষ্টি রসে ভর্তি একটা ফুচকা মুখে পুরল। কিন্তু কোথায় স্বাদ! সুস্বাদু বা বিস্বাদ কোনো অনুভূতিই হচ্ছে না। এতক্ষণ চারপাশে যে জিনিসটা মিসিং লাগছিল, রমজান সেটা এবার বুঝতে পারল- রঙ! ব্যাগের পকেট হাতড়ে একটা ইয়েলো হাইলাইটার বের করল। কিন্তু এটা তো হলুদ নয়!
হতভম্ব রমজানের মনে পড়ল কমলেশ স্যারের কথাটা- স্বপ্নে কখনো কিছুর স্বাদ পাওয়া যায় না, রঙ দেখা যায় না…
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

সাগরে সাঁতার কাটা পুকুর বা নদীতে সাঁতার কাটার চাইতে সহজ কেন, জানিস তোরা?

৩০ সেপ্টেম্বর - ২০২৩ গল্প/কবিতা: ৩৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "পদত্যাগ”
কবিতার বিষয় "পদত্যাগ”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুন,২০২৫