বাংলা কবিতার পরিক্রমাঃ ছন্দ, অন্ত্যমিল ও গদ্যকবিতা/ এক

Lutful Bari Panna
১৮ আগষ্ট,২০১২

[মূলত সূর্যের অনুপ্রেরণায় এমন একটা লেখার কাজে হাত দেয়া। তবে যে উদ্দেশ্যে শুরু করেছিলাম লিখতে গিয়ে সে উদ্দেশ্যটিই নতুন পথ ধরেছে। ফলে লেখাটাও নতুন ভাবে বিন্যস্ত হয়েছে। এমন অনেক বিষয় চলে এসেছে যাকে আমি কবিতার বর্তমান রূপকে বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় মনে করেছি। কবিতা কে কিভাবে লিখবেন সে বিষয়ে নানা মুনির নানা মত আছে। তবে কবিতার এই ইতিহাসটুকু অন্তত সংক্ষিপ্তভাবে জানলেও কবিতার সূচনালগ্ন থেকে আজকের কবিতার আঙ্গিক পাঠক বুঝতে পারবেন। বিশেষত নতুন লেখকেরা কবিতা রচনার একটা ধারণা পাবেন। যদি কেউ সমস্ত আঙ্গিক ভেঙে নতুন আঙ্গিকে লিখতে চান তার জন্যও এই পুরনো আঙ্গিকগুলো চিনে রাখা জরুরী কারণ কোন দেয়াল ভাংতে চাইলে দেয়ালটি সম্বন্ধে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে। আবার কেউ পুরনো ধারা অনুসরণ করতে চাইলে তিনিও তার পথটি চিনে নিতে পারবেন বলে মনে করি। তবে এখানে পুরো আলোচনাটিই সংক্ষেপে করেছি। যারা উৎসাহী এবং কৌতুহলী তারা নিশ্চয়ই স্বউদ্যোগে পুরো বিষয়টুকু জেনে নেবেন।]

 

অন্যান্য অনেক শিল্প মাধ্যমের সাথে কবিতা তথা সাহিত্য রচনার কিছু মৌলিক পার্থক্য আছে। কারণ এই মাধ্যমটি সৃজনশীল ধারার। প্রত্যেক কবিকেই নতুন কিছু সৃষ্টি করতে হয়। একটি গান অনেক শিল্পী একই সুরে গাইতে পারেন। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির মোনালিসা যে কোন শিল্পীই কপি করতে পারেন। সেক্ষেত্রে সেই ছবি কিংবা গানটির কৃতিত্ব নতুন শিল্পীর জন্যও অনেকটাই বর্তায়। কিন্তু কোন বড় কবির কবিতা লিখে কেউ নিজের কৃতিত্ব বলে কিছু দাবী করতে পারেন না। কবিতায় তাই শেখানোর বিষয় খুবই কম। কবিতা রচনা সুরকারের সুর দেয়ার মত, কিংবা অংকন শিল্পীদের নিজস্ব চিন্তা দিয়ে আঁকা সম্পূর্ণ নতুন ধরণের একটা ছবির মত। তাই কবিদের চিন্তা চেতনার মধ্যে সবসময়ে নতুন কিছু থাকতে হয়। তবে তারপরেও কিছু জানার বিষয় অবশ্যই থাকে। আসলে ’জানতে হবে’ এটা কবিতা লেখার একটা পূর্বশর্তের মত। একজন ন্যাচারাল লিরিকিষ্ট মনের আনন্দে নানান ছন্দে ছড়া বানাতে পারেন। কিন্তু সেই ছড়াগুলো কবিতায় উত্তরণের জন্য কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য ধারণ করতেই হয়।

 

সমস্যা হল এই বৈশিষ্ট্যগুলো কি, সে নিয়ে কোন সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন নেই। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত বা লিখিত ফরম্যাট বা ধরণগুলোকে আমরা গাইড লাইন বলে বিবেচনা করতে পারি। কিন্তু এইসব ধারার বাইরে গিয়েও কোন কোন নতুন কবি আমাদের চমকে দিয়ে নতুন কিছু নিয়ে আসতেই পারেন। কবিতার মত রহস্যময় একটা বিষয় নিয়ে তাই কোন সুনির্দিষ্ট ধারণায় স্থির না হওয়াই ভাল। অন্ধের হস্তিদর্শনের মত নির্দিষ্ট কোন ধারণায় রুদ্ধ হয়ে গেলে আমরা মিস করে বসতে পারি অনাগত কোন কবির অভূতপূর্ব কোন সৃষ্টিকে। কবিতার যে রূপ এখনো আমাদের দেখা হয়নি, সেই মোহিনী রূপ দেখার জন্য কবিতা পাঠককে মোহমুক্ত একটা মন নিয়ে অপেক্ষা করে থাকতে হয়।

 

প্রাচীন যুগ

একটা সময় ছিল বাংলা ভাষায় ছন্দ অন্ত্যমিল ছাড়া কবিতাকে কেউ কবিতা বলেই গণ্য করতেন না। কবিতার সংজ্ঞার সাথে তাই এ দুটো ব্যাপার ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল। আমরা সবাই জানি বাংলাভাষার সবচাইতে প্রাচীন লিখিত কাব্যরূপ হল চর্যাপদ। বাংলায় মুসলমান আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবার আগে ব্রাহ্মণ্য হিন্দুসমাজের পীড়নে এবং মুসলমান শাসনে ধর্মচ্যুত হবার আশংকায় বাংলার বৌদ্ধগণ তাঁদের ধর্মীয় পুঁথিপত্র নিয়ে শিষ্যদেরকে সঙ্গী করে নেপাল, ভুটান ও তিব্বতে পলায়ন করেছিলেন– এই ধারণার বশবর্তী হয়ে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চারবার নেপাল পরিভ্রমণ করেন। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে তৃতীয়বার নেপাল ভ্রমণকালে চর্যাচর্যবিনিশ্চয় নামক একটি পুঁথি নেপাল রাজদরবারের অভিলিপিশালায় আবিষ্কার করেন। কেউ অবশ্য বলেন এর নাম চর্য্যাশ্চর্য্যাবিনিশ্চয়। পরবর্তীকালে একে চর্যাপদ নামকরণ করা হয়। চর্যাপদ-এর সবগুলো কবিতা ছন্দে রচিত, পঙক্তির শেষে অন্ত্যমিল। মোট সারে ছেচল্লিশটি পদ বা কবিতা সংকলিত চর্যাপদের কবিতাগুলো আসলে ছিল গান। তাই কবিরা প্রতিটি কবিতার শুরুতে কোন সুরে কবিতাটি গাওয়া হবে, তার উল্লেখ করেছেন। এমন কয়েকটি সুর বা রাগের নাম: রাগ পটমঞ্জরী, রাগ অরু, রাগ ভৈরবী। মূলত বাংলা কবিতায় ১৮০০ সালের আগে যা কিছু রচিত হয়েছে, সবই রচিত হয়েছে গাওয়ার উদ্দেশ্যে। আর গানের সাথে তাল-লয়, ছন্দ-মাত্রার যোগাযোগ থাকতেই হয়।

 

চর্যাপদের কবিতাগুলোর ভাষার দাবীদার আরো অনেকে ছিল। তবে গবেষকগণ এতে বাংলার ছাঁচ পেয়েছেন। তবে অন্যেরাও বঞ্চিত নয়। মূলত বাংলাসহ বেশ কিছু ভাষার আদি ভাষাই চর্যাপদের ভাষা।

 

এখানে চর্যাপদের দুটা কবিতাংশ অর্থসহ উদাহরণ হিসেবে দেয়া হল।

চর্যাপদের কবিতা :০১
নগর বাহিরেঁ রে ডোম্বী তোহারি কুড়িআ
ছোট ছোট জোহ সো বাক্ষ্মণ নাড়িআ ।।

কবিতার অর্থ :
নগরের বাইরে ডোম্বী তোমার ঘর ।
ব্রাক্ষ্মণরা খুব যত্নে সে ঘর তোমার এড়িয়ে চলে।

চর্যাপদের কবিতা :০২
উঁচা উঁচা পাবত তঁহি বসই শবরী বালী।
মোরঙ্গি পীচ্ছ পরহিণ শবরী গিবত গুঞ্জরী মালী।।
উমত শবরো পাগল শবরো মা কর গুলী গুহাড়া তোহৌরি।
ণিঅ ঘরণী সহজ সুন্দরী ।।

কবিতার অর্থ :
উঁচু উঁচু পর্বতমালায় বাস করে এক শবরী-বালিকা ;
ময়ূরপুচ্ছপরিহিতা সেই শবরী ,গলায় ওর গুঞ্জার মালা।
উন্মত্ত শবর, পাগল শবর, গোল করিও না----
তোমার ঘরের, তোমার নিজ গৃহিণী সহজ সুন্দরী ।

 

মধ্যযুগ

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ বিবেচনা করা হয় ১২০০ সাল থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত সময়কালকে। বিতর্কিত হলেও কেউ কেউ অবশ্য ১২০০ থেকে ১৩৫০ সাল পর্যন্ত সাহিত্যের অন্ধকার যুগ বলে বিবেচনা করেন। কারণ এ সময়ের কোন সাহিত্য নিদর্শন পাওয়া যায় নি। ১২০৪ খ্রিস্টাব্দে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি সেন বংশের শাসক লক্ষণ সেনের রাজধানী বিনা বাধায় জয় করে দেশে মুসলমান শাসনের সূত্রপাত করেন। ১৩৪২ সালে শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহ গৌড়ের সিংহাসন দখল করে দিল্লীর শাসনভুক্ত রাষ্ট্রের  প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর পুত্র সেকান্দর শাহের আমলে বড়ু চণ্ডীদাসের আবির্ভাব হয়। বড়ু চণ্ডীদাসের কাব্য “শ্রীকৃষ্ণকীর্তন মধ্যযুগের প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন। এছাড়া মধ্যযুগের অন্যান্য সাহিত্যিক নিদর্শন সমূহ হচ্ছে কীচকবধ, বৈষ্ণব পদাবলী, রামচরিত, শূন্যপূরাণ প্রভৃতি। মধ্যযুগের সাহিত্যধারা দুইভাগে বিভক্ত- মৌলিক সাহিত্যের ধারা ও অনুবাদ সাহিত্যের ধারা। মৌলিক সাহিত্যধারার মাঝে ছয় ধরনের সাহিত্যকর্ম অন্তর্ভুক্ত। যেমনঃ পদাবলী সাহিত্য, মঙ্গলকাব্য, নাথ সাহিত্য, দোভাষী, পুঁথি সাহিত্য, সত্য নারায়ণের পাঁচালী এবং অনুবাদ সাহিত্য ধারায় উল্লেখযোগ্য কাব্য হলঃ রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান, রামায়ণ, মহাভারত, শ্রীকৃষ্ণবিজয়, রসূল বিজয় ইত্যাদি।

বড়ু চন্ডিদাসের সময়ে বাংলা ভাষা আর বানান রূপ ভিন্ন ছিল। তবে তার মোহন ছন্দের দু একটা উদাহরণ দিতেই হয়।

 

"আকুল করিতেঁ কিবা কহ্মার মন।
বাজাএ সুসর বাঁশী নান্দের নন্দন।।
পাখী নহোঁ তাঁর ঠাই উড়ী পাড়ি জাঁও।
মেদনী বিদায় কেউ পসিআঁ লুকাওঁ।।
বন পোড়ে আগ বড়ায়ি জগজনে জাণী।"
মোর মন পোড়ে যেহ্ন কুম্ভারের পণী।।
(কে না বাঁশী বাএ বাড়ায়ি/ বড়– চণ্ডীদাস)

 

ষোড়শ শতকে জ্ঞানদাসের পদগুলো পড়লে মনে হয় এই সময়ের মধ্যে বাংলা কবিতার ভাষা এবং ছন্দ অনেক ফাইনেস্ট হয়ে এসেছে।

"রূপ লাগি আঁখি ঝুরে গুণে মন ভোর।
প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর।।"

 

(ক্রমশ)

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক এ ধরনের লেখা...জানি খুবই কষ্টের এবং তথ্য সমৃদ্ধ লেখাগুলো অনেক শ্রম..সাধনা..এবং জ্ঞানের ফসল...আমার অনেক ভালো লাগলো আর কিছু শেখার জন্য শিকড়ের সন্ধান জানা আরো জরুরি...আপনার ধারাবাহিকগুলো অনেক কাজে আসবে....
অষ্টবসু আধুনিক যুগে ছন্দ কবিতার গুরুত্ত কি কমে যাচ্ছে?আমি বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিনে লেখা পাঠাই,একটি ওয়েব ম্যাগাজিনে নিয়মাবলিতে দেখলাম ‘ছন্দ মিলের কোন কবিতা গ্রহন করা হবে না’।স্বভাবতই প্রশ্ন আসে তাহলে কি ছন্দ মিল বা অন্ত মিল কবিতাকে আর কবিতা বলেই ধরা হচ্ছে না, নাকি বর্তমান কবিরা ছন্দের বিষয়বস্তু/ছন্দ সেইভাবে উপহার দিতে পাচ্ছেন না যেভাবে রবীন্দ্র, সত্যেন্দ্রনাথ যুগে আমরা পেয়েছি।যদিও ওইসব মহান কবির সাথে তুলনা মুর্খামি।কালের পরিক্রমায় ছন্দের বিষয়বস্তুর পরিবর্ত্ন হয়েছে,শরৎকাল দেখে রবীঠাকুর বলছেন ‘এসেছে শরৎ হিমের পরস লেগেছে হাওয়ার পরে’।সেখানে শঙ্খ ঘোস বলছেন “লোকে আমায় মন্দ বলে দিব্যি চলনই,দোসের মধ্যে একটু নাকি মিথ্যে কথা কই” আসলে শরৎকাল আর সেই প্রকৃতিক দৃশ্যতো আর নেই, “পূর্নিমার চাঁদ ঝলসানো রুটি” এই ‘বিষয়’ সেই সময়েরই দান, আবার আপনার কবিতা দেখুন “তুই ছিলি কি? তোর সাথে যে অনেক দিনের আড়ি”, অর্থাৎ বিষয় বস্তুর পরিবর্তন সময়পযোগী হলে নিশ্চয় তা সাদরে গ্রহন হবে,কারন শব্দ ব্যক্তিগত সম্পত্তি না,বিষয় মানুষ অনেকদিন মনে রাখে।
Lutful Bari Panna সত্যি বলতে কি আমি রোহন কুদ্দুসের মত খুঁতখুঁতে সম্পাদকের সৃষ্টির মত ওয়েবজিনেও ছন্দ অন্ত্যমিলের কবিতা দিয়েছি সে ছেপেছে। কোন কোন ওয়েবজিন হয়ত ছন্দের কবিতা নেয় না আবার কোন কোন ওয়েবজিন আছে যারা ছন্দ ছাড়া কবিতা নেয় না। তারা শুধু ছন্দ অন্ত্যমিল থাকলেই ছাপে। আর বর্তমান কবিদের ছন্দজ্ঞান নিয়ে কি বলব, আল মাহমুদ, শক্তি চট্টোপাধ্যায়, শঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামী তো আমার প্রিয় কবিদের তালিকায়ই পড়ে। কিন্তু আমি শ্রীজাতর লেখার মুগ্ধ ভক্ত। ছন্দ আর অন্ত্যমিলে কত রকম ভ্যারিয়েশন হতে পারে এসব মনে হয় সেযুগের কবিরা কল্পনায়ও আনতে পারেননি। আমি ছন্দ অন্ত্যমিলের দিক থেকে একালের কবিদেরকেই এগিয়ে রাখব। শ্রীজাতর মত চেনা কবি শুধু নয়- অনেক অখ্যাত অপ্রকাশিত কবিও আছেন এ তালিকায় যারা নেট জগতের কল্যাণে আমাদের পরিচিত। কয়েকজনের ছন্দজ্ঞানে আমি রীতিমত মুগ্ধ এক্ষুণি কয়েকটা নাম বলছি- বিনয়ভূণ মিত্র, নির্মাল্য ভট্টাচার্য, নির্মাল্য ব্যানার্জী, সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, অমিত ত্রিবেদী, রাকা দাসগুপ্তা, শ্রীদর্শিনী চক্রবর্তী, ঋতম সেন। (বয়সের ক্রম অনুযায়ী নামগুলো লিখলাম।)
Lutful Bari Panna অন্তত শ্রীজাতর কথা বলতে পারি- এই পুরো একটা পেশাদার জগতে কেউ কবিতা লেখাকে পেশা হিসেবে নিতে পারে এ উদাহরণ শ্রীজাতই সৃষ্টি করছেন। সাধারণ পাঠক তাকে না নিলে এ দুঃসাহস তিনি নিশ্চয়ই করতে পারতেন না। যতদূর জানি ওই বঙ্গে তার কবিতা তুমুল জনপ্রিয়। আপনি নিশ্চয়ই ভাল বরতে পারবেন। আমি প্রথম তার সন্ধান পেয়েছি আমার ওপাড় বাংলার লেখক বন্ধু শুভর কাছে।
তানি হক অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়াকে এই লিখাটির জন্য ..অনেক কিছু জানলাম ..শিখলাম ..///মৌলিক সাহিত্যধারার মাঝে ছয় ধরনের সাহিত্যকর্ম অন্তর্ভুক্ত। যেমনঃ পদাবলী সাহিত্য, মঙ্গলকাব্য, নাথ সাহিত্য, দোভাষী পুঁথি সাহিত্য, সত্য নারায়ণের পাঁচালী, এবং অনুবাদ সাহিত্য ধারায় উল্লেখযোগ্য কাব্য হলঃ রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান, রামায়ণ, মহাভারত, শ্রীকৃষ্ণবিজয়, রসূল বিজয় ইত্যাদি।//.......এখানে( রসূল বিজয় ) মানে কি ? ..এটাকি ..আমাদের নবীকে নিয়ে লিখা কাব্য ? ভাইয়ার কাছে প্রশ্ন রাখলাম ..জানালে অত্যন্ত খুসি হব ....ধন্যবাদ ও সুভেচ্ছা রইলো
Lutful Bari Panna সেসময় পর্যন্ত প্রচুর ধর্মীয় লেখা বাজারে ছিল। তবে উপমহাদেশ মূলত মুসলমান অরিজিন নয় যে কারণে হিন্দু মিথ নিয়ে সেসময় প্রচুর মৌলিক সাহিত্য রচিত হলেও মুসলমানগণ প্রথম পর্যায়ে অনুবাদ নির্ভর ছিলেন ধর্মীয় রচনায়। রসুল বিজয় এরকম একটি ধর্মীয় কাহিনীই বটে। যদিও বিস্তারিত চাইলে এই মুহূর্তে দিতে পারব না।
তানি হক ধন্যবাদ ভাইয়া জানানোর জন্য .. এই মুহূর্তে নয় ,,, পরবর্তিতে বিস্তারিত জানার আগ্রহ প্রকাশ করছি ...আপনাকে ধন্যবাদ
রনীল কবিতায় শেখার বিষয় খুবই কম- গল্পের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কেমন?
Lutful Bari Panna আসলে একসময় গল্পও রচিত হত কবিতার ফরম্যাটে- ছন্দ অন্ত্যমিল সহযোগে। যেগুলো মহাকাব্য বলে পরিচিতি পেত। দিন দিন মানুষ লেখার আঙ্গিক বদল করেছে। তার বেশীরভাগই কিন্তু একঘেয়েমি থেকে বাচার জন্য। ধর এই সময় যদি কেউ কবিতার মত করে গল্প লেখে সেটাই হবে প্রতিষ্ঠিত ধারার ব্যতিক্রম। যেটা সে সময় ছিল উল্টো। তবে একবার আসাদ চৌধূরীর সাথে মুখোমুখি আলাপে চমৎকার একটা কথা বলেছিলেন। ছন্দে লিখিত হওয়ার কারণে আমাদের পক্ষে মনে রাখা সহজ হয়। আমিও ভেবে দেখলাম ছোটবেলাকার পুথি পড়ার কথা। তখন কেবল পড়াশোনা শুরু করেছি অথচ এখনো কাহিনী মনে করতে পারছি ছন্দের কারণেই। আমার তো মনে হয় এই সময়ে যদি কেউ আবার ছন্দে গল্প লেখার চেষ্টা করে সেটা একটা নতুনত্বের উদাহরণ হয়ে থাকবে। সে যাক আসলে শেখা বলতে আমি বুঝিয়েছি এমন যে- ভাষার ব্যবহার শেখা যায়, কি করলে অল্প কথায় কাহিনী সু্ন্দর করে প্রকাশ করা যায় সেটাও শেখা যায়। মূলত এই বিষয়গুলো অভিনিবেশের বিষয়। কে কতটা মনোযোগী তার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু আমি একটা কাহিনী লিখব- সেই কাহিনী নির্বাচন, কাহিনীর আঙ্গিক, বর্ণনা কৌশল এটা একেবারেই সৃজনশীল একটা বিষয়। সবটাই নির্ভর করবে আমার ব্যক্তিগত চিন্তা চেতনার ওপর। এটার ওপর কারো হাত নেই। কারো সাধ্য নেই আমাকে শেখায়। যদি না আমি নিজে ধারণ করতে পারি। এজন্যেই আর একজন হুমায়ুন আহমেদ হতে পারেন না। বড় জোর একজন নকলবাজ হতে পারেন। আর একজন রনীলও হতে পারে না.. (এইখানে কঠিন একটা ইমো হইবে)। প্রত্যেকেই যে যার মত বিশিষ্ট। পাঠক কাকে বেশী নেবে সেটা একান্তই পাঠখের বিষয়।
রনীল প্রত্যেকেই যে যার মত বিশিষ্ট- কথাটা খুব মনে ধরলো... তবে আমাকে শেখানোর যে একেবারে কারোরই সাধ্য নেই- তা কিন্তু নয়... অন্তত আমার ক্ষেত্রে নয়... আমি খুব সহজেই আরেকজনের লেখা, আচরণ, স্টাইল দেখে প্রভাবিত হই... সেটা আমার লেখাতে ও চলে আসে... এটা কি একধরনের শেখানো নয়!
Lutful Bari Panna অবশ্যই শেখা। তবে স্বশিক্ষা রনীল। আমি আসলে এটাই বোঝাতে চেয়েছিলাম- যে অন্য কেউ শেখাতে পারে না। নিজে নিজে শিখে নিতে হয়। কেউ ধরে ধরে শেকাতে পারে না। অর্থাৎ কেউ তোমাকে বলে কয়ে শেখাতে পারবে না। শেখার বিষয় যদি নাই থাকে তাহলে সবাইই তো কবি সাহিত্যিক হয়ে যেত। এজন্যই দেখ শুরু থেকেই জানতে বলেছি। পড়তেও বলেছি বোধ হয়। সামনের পর্বগুেলাতে আরো আসছে।
রনীল বুঝেছি... একমত.

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

অক্টোবর ২০২৪ সংখ্যার বিজয়ী কবি ও লেখকদের অভিনন্দন!i