মনিদা’র লাশ যে খাটিয়ার ওপর রাখা হয়েছে ওটার সাথে তার সখ্য বেশ পুরনো। শুধু স্টিলের এই চকচকে খাটিয়াই নয়, এটি আসার আগে মসজিদের কাঠের তৈরি খাটিয়াতেও তার ঘাম লিপ্ত হয়েছে যুগের পর যুগ। মনিদা হুসেনপুরের অনেকের লাশ খাটিয়ায় বহন করে দাফনের জন্য কবরস্থানে নিয়ে গেছেন। শুধু লাশ বহনেই অগ্রগামী নয়, কোনো মৃত্যুর সংবাদ শুনলেই তিনি সব কাজ ফেলে দ্রুততার সাথে ছুটে যেতেন এবং অন্যান্যদের সাথে কবর খোঁড়ার কাজেও অংশ নিতেন। এখন এসব কাজে অনেকে পারিশ্রমিক নিলেও মনিদা কোনোদিনই কোনো বিনিময়মূল্য চাইতেন না। অবশ্য তিনি দুঃস্থ বলে সম্পন্ন গৃহস্তরা তার প্রতি অন্য সময়ে অন্য কোনোভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিত।
চেয়ারম্যান হাশিম খানের কাছে রাতের বেলায়ই মনিদা’র মৃত্যুসংবাদ পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। শারীরিক দুর্বলতার জন্য তিনি নিজে আসতে পারেননি, তবে ওয়ার্ড-মেম্বার মোহর আলিকে লাশের খোঁজ-খবর নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন। অবশ্য ইউএনও’র অফিসে তিনি সাথে সাথে খবরটি পৌঁছিয়ে দিতে ভুলে যাননি। লাশ দাফনের একটি সময়ও তিনি নিজ দায়িত্বে নির্ধারিত করে দিয়েছেন। তাই জোহরের নামাজের আগেই থানার ওসি কয়েকজন কনস্ট্যাবলকে নিয়ে মড়াবাড়িতে উপস্থিত হয়েছেন। লাশ কবরস্থ করার আগে ইউএনও’র আসার কথা আছে; তিনি না পারলে সরকারের কর্মকর্তা হিসেবে এসি ল্যাণ্ড অবশ্যই আসবেন।
মনিদা’র স্ত্রী ঘাটের মড়া। তার দুই মেয়ে কুলসুম ও রোকেয়া মাস খানেক থেকে বাপের সাথেই ছিল। অবশ্য কুলসুম বিধবা হওয়ার পর থেকে বেশির ভাগ সময় বাপের বাড়িতেই থাকে। মাঝে মাঝে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কিছুদিন থেকে আসে। তার ছেলেটা এখনও চাচাদের কাছে থেকে কলেজে পড়ছে। মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেছে দু’বছর আগে। মনিদা’র মৃত্যুতে তার দুই মেয়ে এবং নাতিপুতিরা হাউমাউ করে কেঁদেছে। কোনো ছেলে না থাকায় মেয়ে দুটিই মনি’দার সব।
নিজের ছেলে না থাকলেও মনিদা’র ভাতিজাসহ অন্যান্য প্রতিবেশীরা মসজিদের ইমাম সাহেবের তত্ত্বাবধানে তার লাশের গোসল করানো, কাফন পরানোসহ আনুষঙ্গিক ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন করেছেন। কাফনের কাপড়, আতর, গোলাপজল, আগরবাতি, সাবান ইত্যাদি মেয়েরাই কিনতে পারতো, কিন্তু চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে মোহর মেম্বার সেগুলো রাতের বেলাই কিনে এনেছে। হাজার হলেও মনিদা আর হাশিম খান একসাথে পাঠশালায় পড়েছেন। বড় হবার পর মত ও পথ বদলে গেলেও শেষ বয়সে এসে মনিদা চেয়ারম্যানের ওপর কিছুটা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলেন।
জোহরের নামাজের পরপর হৈহুল্লোড়ের মধ্যে মনিদা’র জানাজার নামাজ শেষ করতে হয়। ওসির দেওয়া আশ্বাসে সবাই কিছুক্ষণ ইউএনও’র জন্য অপেক্ষা করলেও দূরাগত লোকজন কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয়ে পড়ায় চেয়ারম্যান সাহেবের অনুমতি নিয়ে ইমাম সাহেব নামাজ পড়িয়ে ফেলেন। ওসি ইউএনও স্যারের জন্য আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পক্ষপাতী থাকলেও চেয়ারম্যান সাহেব বলেন, ‘অসুবিধা নাই, জানাজার পর আমরা ইউএনও স্যারের জন্য অপেক্ষা করবো; উনিও ঘটাঘট উনার ডিউটি শেষ কইরা চইলা যাইবেন।’
গাছের ছায়ায় লাশের খাটিয়া রেখে আপনজন এবং পাড়াপ্রতিবেশীরা গুচ্ছ গুচ্ছ হয়ে মনিদা’র স্মৃতি তর্পণ করছেন। কেউ কেউ তার সাদাসিধে ও সরল জীবনযাপন নিয়ে কথা বলছেন, কেউ বলছেন তার পরহিতৈষণা নিয়ে। আবার উপস্থিত দুজন মুক্তিযোদ্ধা, শফিক ও খালেদ, মনিদা’র তারুণ্যদীপ্ত যুদ্ধদিনের কথা স্মরণ করছেন। তখনই বড় রাস্তার ওপর ইউএনও’র পাজেরো গাড়ির মাথা দেখা গেল।
ইউএনওকে স্বাগত জানাতে ওসি ও চেয়ারম্যান সবেগে এগিয়ে যান। মুখে বিরক্তিভাব নিয়ে গাড়ি থেকে নেমেই ইউএনও সাহেব জানতে চান সবকিছু ঠিক আছে কি না।
ওসি বলেন, ‘সব ঠিক আছে স্যার। ফুলের তোড়াও আনিয়ে রেখেছি।’
ইউএনও জিজ্ঞেস করেন, ‘ওনার নাম যেন কী?’
তখন চেয়ারম্যান সাহেব এগিয়ে এসে বলেন, ‘ওনার ভাল নাম মনিরুজ্জামান, স্যার। সবাই মনিদা ডাকতো।’
‘ওনার সার্টিফিকেট মানে সনদপত্র-টত্র চেক করেছেন?’ ইউএনও চেয়ারম্যান ও ওসির মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করেন, ‘২০২০ সালের গেজেটে উনার নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে তো?’
চেয়ারম্যান ও ওসি বোকার মতো একে অপরের দিকে তাকান। চেয়ারম্যান সাহেব অতীতে আরও দুজন মুক্তিযোদ্ধার মরণোত্তর আনুষ্ঠানিকতায় উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তখন সরকারি কর্মকর্তারা এসব সনদ-টনদের কথা জিজ্ঞেস করেননি। এসেছেন, ফুলের তোড়া দিয়েছেন, বিউগল বাজিয়েছেন আর স্যালুট দিয়েছেন। বাস্।
মনিদা যে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা একথা এ তল্লাটের কারুর অজানা নয়। তার পায়ের গোছায় যে গুলি লেগেছিল সে দাগ এলাকার ছোটবড় সবাই দেখেছেন। এলাকার অনেকেই তার মুখ থেকে যুদ্ধের কাহিনী শুনেছেন। এমন কি বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান হাশিম খান যিনি একনাগাড়ে পাঁচবার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি আরও ভাল করে মনিদা’র ব্যাপারে জানেন। যদিও ইতিহাসের পাতার ওপর বিভিন্ন রঙের ধুলোর আস্তরণ পড়েছে সত্য তো সত্যই। হাশিম খান যখন রাজাকার ছিলেন তখন মনিদা’র পরিবারকে হেনস্তা করার জন্য তার বাড়িতে গিয়েছেন, তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। শুধু তাই নয় মনিদা’র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের অপরাধে তার পিতাকেও হাশিম খান আর্মির ক্যাম্পে নিয়ে গিয়েছেন। মনিদা’র মুখ্যুসুখ্যু পিতা ক্যাপ্টেনের পায়ে ধরে অনেক কান্নাকাটি করে ছাড়া পেলেও হাশিম খান সারাজীবন নিজেই এর কৃতিত্ব নিয়েছেন।
প্রায় মূর্খ মানুষ মনিদা যুদ্ধের পর যে সনদপত্র নামক একটা কাগজ পেয়েছিলেন তা আর গুছিয়ে রাখার প্রয়োজন বোধ করেননি। কেননা তখন রাম-শ্যাম-যদু-মধু সবার কাছেই এধরনের কাগজ ছিল। এসব কাগজ দিয়ে তখন যে যেমনটি পেরেছে ফায়দা হাসিল করেছে। মনিদা’ও সবার মতো কিছু ত্রাণসামগ্রী পেয়েছেন। এরপর একসময় এসব কাগজ মূল্যহীন হয়ে পড়ে। কিন্তু যখন থেকে দফায় দফায় মুক্তিযোদ্ধা তালিকা তৈরির হিড়িক পড়ে তখন সঙ্কট-জর্জরিত মনিদা জীবনসংগ্রামে এতই বিপর্যস্ত ছিলেন যে তিনি ওসবের খোঁজখবর করার সময় পাননি। শেষবেলায় অন্য এক মুক্তিযোদ্ধার কাছ থেকে যখন সনদের মাহাত্ব্য জানলেন ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধা কমাণ্ডের নেতাদের পেছনে অনেক ঘোরাঘুরি করেও তিনি আর সরকারি তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। তালিকাভুক্তির আক্ষেপ অবশ্য মনিদা’র ততটা ছিল না যতটা ছিল ভাতা না পাওয়ার কষ্ট। চেয়ারম্যান হাশিম খান মূলত রাজাকার হলেও এককালের সহপাঠী মনিদা’র জন্য যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। সেজন্যই হয়তো তিনি মনিদা’র বয়স্কভাতার ব্যবস্থা করেছেন এবং বিভিন্ন সময় দুঃস্থদের জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে আসা ত্রাণ সহায়তা তাকে পাইয়ে দেওয়া নিশ্চিত করে এসেছেন।
ইউএনও’র অনুসন্ধানের জবাব ওসি দিতে না পেরে জড়সড় হয়ে যান। তখন চেয়ারম্যান সাহেব এগিয়ে এসে বলেন, ‘ঘটনা হইছে কি স্যার, মনিরুজ্জামান যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিল তা আমার ইউনিয়নের সবাই জানে। ছোটবেলায় আমরা কিছুদিন একসাথে লেখাপড়াও করছি।’
ইউএনও বলেন, ‘ছোটবেলার কথা বলে তো লাভ নেই। আর তিনি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন ভাল কথা, কিন্তু আমাদের তো একটা রেকর্ড থাকা চাই।’
চেয়ারম্যান বলেন, ‘মূর্খ আর সরল মানুষ স্যার, সময়মতো তালিকায় নাম উঠাইতে পারে নাই। পরে আমিও চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু পারি নাই।’
‘পারেন নাই কেন?’, ইউএনও জিজ্ঞেস করেন।
চেয়ারম্যান বলেন, ‘তার তো পুরানা কোনো কাগজই ছিল না। তাই কেউ পাত্তা দেয় নাই।’ চেয়ারম্যান অবশ্যই একথা বলেননি যে মুক্তিযোদ্ধাদের বিপক্ষশক্তি হওয়ার কারণে তিনি জোর গলায় কিছু বলতেও পারেননি।
তখন মুক্তিযোদ্ধা শফিক এগিয়ে এসে বলেন, ‘স্যার আমিও একজন মুক্তিযোদ্ধা। মনিদা’র ব্যাপার নিয়া অনেক জাগায় আমিও দৌড়াদৌড়ি করছি। কিন্তু একটা না একটা প্যাচ বাইজ্জা যায়। আর মনিদা গরিব মানুষ, পয়সা-কড়িও ঢালতে পারে নাই…’
‘পয়সা-কড়ি মানে?’ ইউএনও উত্তেজিত স্বরে বলেন, ‘পয়সা-কড়ি লাগবে কেন?’
শফিক বেফাঁস কথা বলে কাঁচুমাচু হয়ে যান। তিনি আমতা আমতা করে বলেন, ‘না স্যার। বিভিন্ন অফিসে ছোটাছুটি করতে খরচপাতি লাগে। সে কুলাইতে পারে নাই।’
ইউএনও’র চোখ দেখে বোঝা যায় পয়সা-কড়ির প্রসঙ্গ তোলায় তিনি বিব্রত হয়েছেন এবং রাগও করেছেন। খরচাপাতি না করলে যে এদেশে কোনো কাজই হাসিল করা যায় না ইউএনও’র চেয়ে আর ভাল কে জানবে? তিনি রাগতস্বরে ওসিকে বলেন, ‘আপনারা কী করেন? নথিপত্র চেক না করেই লাফ দিয়ে চলে আসলেন। জানেন না এসব কাজ মুখের কথায় হয় না?’
ইউএনও’র কথায় উপস্থিত সবাই চুপ হয়ে যায়। শফিক কিছু বলতে চেয়েও না বলে পেছন দিকে সরে যান। অপর মুক্তিযোদ্ধা খালেদের সাথে তিনি গুনগুন করে কীসব কথা বলেন। খালেদের মুখও শুকনো দেখা যায়। কবরে যাওয়ার আগে মনিদা'র মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় নিয়ে এমন বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা কারুর ভালো লাগার কথা নয়, তাদেরও লাগছে না।
ইতিমধ্যে এলাকার কিছু তরুণ ছেলে অতি উৎসাহে একটি ফুলের ডালা নিয়ে তড়িঘড়ি করে ছুটে আসে। এরাও মনিদা’র কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প শুনেছে। তাদের ইচ্ছা ছিল ইউএনও সাহেব ফুলের তোড়া দেওয়ার পরপরই তারা লাশের পিছন দিকে ফুলের ডালাটি রেখে শ্রদ্ধা জানাবে। কিন্তু চলমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তারা থ মেরে দাঁড়িয়ে পড়ে।
মুক্তিযুদ্ধের রেকর্ড নিয়ে টানা হেচঁড়া করতে করতে অনেক দেরি হয়ে যায়। যারা মনিদাকে কবর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল তাদেরও বেশ কয়েকজন ধীরে ধীরে পিছু হটে। দেরি দেখে কিছু না বুঝে বাড়ির মেয়ে মানুষেরাও আহাজারি করতে থাকে।
তখনই কুলসুমের ছেলে আবুল কায়েস হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে চেয়ারম্যানকে কানে কানে বলে, ‘নানা, এসব ঝামেলা বাদ দিযা দেন। মা বলছে লাশের কষ্ট হইতছে, তাড়াতাড়ি কবর দিতে অইব।’
চেয়ারম্যানও সে কথাই ভাবছিলেন। কিন্তু ইউএনও’র কাছে একথা পাড়বে কে?
মুক্তিযোদ্ধা খালেদ কথা কম বললেও তার সাহস আছে। তিনি ইউএনওকে শুনিয়ে শুনিয়ে চেয়ারম্যানকে বলেন, ‘চেয়ারম্যান সাব, লাশের পচন ধরছে। আপনারা দয়া কইরা ছাইড়া দেন। আমরা দাফনের কাজটা শেষ করি।’
ইউএনও সাহেব এমনিতেই রেগে আছেন। এখানে এসে তার অনর্থক সময় নষ্ট হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা খালেদের কথায় এখন তিনি কিছুটা বিব্রত হয়ে পড়েন। তিনি প্রশ্নবোধক চোখে ওসির দিকে তাকান।
ওসি হড়বড় করে বলেন, ‘স্যার, তাইলে কি আমরা…?’, ওসি সিদ্ধান্তমূলক কিছু না বলেই থেমে যান।
ইউএনও সাহেব গলাখাঁকারি দিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন। তারপর উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, আমরা আইনের ঊর্ধ্বে নই। আপনারা বলছেন, আমিও মানি, ইনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু দুঃখিত আমরা রাষ্ট্রীয়ভাবে উনার জন্য কিছুই করতে পারছি না।’
চেয়ারম্যান সাহেব থতমত হয়ে আছেন। তিনি হয়তো তার যুদ্ধকালীন ভূমিকার জন্য সরব হতে পারছেন না। তবে ইউএনওর কথা শেষ হলে ওসি ত্রস্ত হয়ে বলেন, ‘স্যার, ফুলটা না হয় দিয়ে দেন। গার্ড অব ওনার না হয় না-ই দিলাম।’
মুক্তিযোদ্ধা খালেদ দ্রুত এগিয়ে এসে বলেন, ‘এইসবের কোনো দরকার নাই; আপনারা দয়া কইরা লাশটা ছাইড়া দেন। যা করার আমরা করব।’
এতক্ষণে চেয়ারম্যান সাহেব এগিয়ে এসে বলেন, ‘ওসি সাহেব ভাল কথা বলছেন; অন্তত ফুলটা দেওয়া হোক।’
মুক্তিযোদ্ধা শফিক মৃদুভাষী মানুষ। তিনি এবার চেয়ারম্যানের কথায় বাধা দিয়ে বলেন, ‘চেয়ারম্যান সাহেব, আমরা এই দেশের জন্য কে কী করছি পুরা দেশ জানে। আপনি জানেন না? আপনারা চেয়ারম্যান-মেম্বার হইছেন, কিন্তু দেশ স্বাধীন করার জন্য আমরা রক্ত দিছি।’ একথা বলে শফিক লাশের খাটিয়ার একটি হাতল ধরেন। তার দেখাদেখি খালেদসহ অন্যরা এগিয়ে আসেন। ঠিক তখনই তরুণরা তাদের নিয়ে আসা ফুলের ডালাটি মনিদা’র বুকের উপর স্থাপন করে।
গ্রামবাসীরা খাটিয়া কাঁধে নিয়ে সামনে কদম ফেললে ওসি সিদ্ধান্তহীনতায় টাকি মাছের মতো লাফাতে থাকেন।
স্বাধীনতার মিছিল গোরস্থানের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে ইউএনও মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকেন। আর মনিদা’র আত্মা খাটিয়ার ওপরে দাঁড়িয়ে খিলখিল করে হাসতে থাকে।
লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা
ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য
মনিদা’র লাশ যে খাটিয়ার ওপর রাখা হয়েছে ওটার সাথে তার সখ্য বেশ পুরনো।
১৯ নভেম্বর - ২০১৭
গল্প/কবিতা:
১৬৭ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
বিজ্ঞপ্তি
“ ” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ , থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।
প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী