# রাজা জানতে চেয়েছিল---দেশের মানুষের অবস্থা কিরুপ ? প্রধান উজির বললেন---, মানুষ বড় মিথ্যাবাদী হয়ে গেছে । তারা এখন মিথ্যা দিয়ে জীবনকে এগিয়ে নিতে ব্যাস্ত হয়ে পরেছে । চারিদিকে মিথ্যা আর প্রতারনার তীব্র গোঙ্গানীর আওয়াজ বেড়েই চলেছে ।
রাজা ফরমান জারি করলেন---, প্রধান প্রধান শহরের প্রবেশ মুখে শূল বসাও । আর যারা মিথ্যাকথা বলবে---তাদেরকে শূলে চড়াও । এ আদেশ পাওয়া মাত্র রাজ-প্রহরীরা জনগনকে ধরে ধরে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞেস করতো । সেগুলি মিথ্যা বলে মনে হলে ধরে ধরে শূলে চড়াতো । সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের কোনো যন্ত্র না থাকায় রাজ-প্রহরীদের ইচ্ছার আলোকেই সত্য-মিথ্যা নিরুপিত হতে লাগলো । এই সুযোগে রাজ প্রহরীরাও--- " টাকা দে--, নইলে তুই মিথ্যবাদী "--এই আতংক ছড়িয়ে দিয়ে অনেক টাকা কামিয়ে নিতে থাকলো । দেশের অবস্থা ভয়ানক খারাপের দিকে যেতে লাগলো ।
প্রয়োজনের তাগিদে একদিন ঐ পথে গোপালভার যাচ্ছিলেন । প্রহরীদের প্রধান জিজ্ঞেস করলো ঃ যাচ্ছেন কোধায় ? এ কথা শুনে গোপালভার ভ্যাপাচ্যাকা খেয়ে গেলেন । তিনি ভাবলেন---যত সত্য কথাই বলা হউক না কেন---, এরা মিথ্যা সাব্যস্ত করলে সেটাই মিথ্যা হিসাবে বিবেচিত হবে । কোনো অনুনয়,বিনয় আর যুক্তি কাজে লাগবে না । শাহী হুকুমের চেয়েও এখন সৈন্যদের হুকুমের দাপট অনেক বেশী । সত্যা-মিথ্যা আর ন্যায়-অন্যায়ের মালিক এখন তারাই । তারা যা বলবে---তাই হবে । জীবন বাঁচানো এখন কঠিন হয়ে পরেছে ।
অনেক ভেবেচিন্তে গোপালভার উত্তর দিল---, আজ্ঞে--, আমিতো ঐ শূলে চড়তে যাচ্ছি । এরকম উত্তর শুনে প্রহরীরা হতভম্ব হয়ে গেল । তারা ভাবতে লাগলো---, এর কথাকে মিথ্যা ভেবে যদি শূলে চড়ানো হয় , তাহলেতো এর কথাই সত্য প্রমানীত হয় । আর এর এই কথাকেতো সত্য মনে করারও কোনো কারন নাই । তাহলে এখন উপায়---? তাহলে কি রাজার আদেশের মধ্যেই গলদ আছে ? যদি থাকে---, তাহলেতো এই শাহী গলদ খুবই মারাত্মক !
অন্য কোনো উপায় না পেয়ে--, তারা গোপালভারকে তারমতো যেতে দিতে বাধ্য হলেন । হাসতে হাসতে গোপালভার চলে গেলেন । সেই হাসির আওয়াজ জনতার হৃদয় ছুঁয়ে ছুঁয়ে যে অট্রহাসির সৃষ্টি করেছিল---, তার প্রবল ঝাঁকুনিতে জনগন জেগে উঠলো । মুক্তির পতাকা পতপত করে উড়তে লাগলো ।।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।