রাকার এই কবিতাটা না আনলে রাকার পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতা টের পাওয়া যাবে না। সচরাচর অন্ত্যমিল ছন্দে স্বাচ্ছন্দ রাকা গদ্যছন্দে কতটা পরিপক্ক, শব্দ ব্যবহারে তার দক্ষতা কতখানি গভীর, উপমার বুনন তার হাতে কিরকম শিল্পিত হয়ে ওঠে জানা যাবে না কিছুতেই।
এমনিতে সহজ লেখা, সহজ গাঁথুনি। তারপরও কিছু অপ্রচলিত শব্দের ব্যবহার কবিতাটির শরীরকে কোমল উজ্জ্বল করে তুলেছে। সরল শব্দের ব্যবহার অথচ তার ভেতরেই নিপুণ শিল্পসৃজন, পরিমিতিবোধ, সৃষ্টিশীল উপমার কারুকাজ কবিতাটি পড়ার সময় আচ্ছন্ন করে রাখে মুগ্ধতাবোধে।
কোন পঞ্চদশীকে
রাকা দাশগুপ্তা
কি করে বোঝাব তোকে মিতাক্ষরা মেয়ে
অস্যার্থে বালিকা তুই অন্য অর্থে অভিমানী মেঘ
কৃষ্ণবেণী সন্ধ্যাবেলা ছাদের কার্নিশ ঘেঁষে একা
কাঁদছিলি না চুপি চুপি, দেখি মুখ তোল
আর শোন
আমাকে এ ঘরে দেখে ইতিহাস বই দিয়ে কি চাপা দিলিরে তখন
ওগো কন্যে, এমন উজান আমি অনেক শ্রাবণ আগে পেরিয়ে এসেছি
আমারো অনেক নূড়ি আনমনে ভেসে গেছে খরস্রোতা তিস্তার জলে
একটা কথা বলি শোন।
খোলা জানলায় তোর জেগে থাকা কবিতার রাত,
মনের গভীরে এই মন্দ্রসপ্তক ছুঁয়ে আছড়ে পড়া কোমল নিষাদ
এসব ছেলেমানুষী আর কটা দিন বল? দেখবি এরপর
সবকিছু কিরকম পড়ে যাচ্ছে পরিপাটি চতুস্কোন জ্যামিতিক ছাঁচে।
মিতছন্দা কন্যে, তোকে আরো আমি বলে দিতে পারি
আজ হোক, কাল হোক, তোর এই ছন্দগুলো
টুপটাপ খসে পড়বে সামিয়ানা থেকে
লুকোনো কান্নারা তোকে একে একে ছেড়ে চলে যাবে
অভিযোজনের পথে তুইও প্রত্যয়ী পায়ে এগোবি ক্রমশ
যদিও সেদিনও তোর পদচিহ্ন ঘিরে
দুই পাড়ে ফুটে উঠবে অজস্র কবিতা------
সেসব পিছনে ফেলে নির্জলা গদ্যের ঢেউয়ে বহুদূরে ভেসে যাবি শুধু একা তুই
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।