আমার আপসে তোমার রক্ত ঝরে
তোমায় লুকিয়ে আমার অগ্রগতি
তোমার চর্চা নেহাৎ অবসরে
অতি পরিচিত আমার এই পদ্ধতি।

ফেব্রুয়ারির একুশ সেদিন
আমার তখন উনিশ
মিটিং মিছিল নিষেধ ছিল
ব্যারিকেডে পুলিশ।

উন্নি শো বায়ান্নোর একুশে ফেব্রুয়ারী,
বাংলার ঘরে ঘরে উঠেছে আহজারী,
রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই শুধু বাংলা চাই,

আমি দেখিনি একুশ, শুনেছি।
আমি দেখিনি বায়ান্ন, জেনেছি।

সেই ৫২’র ভাষার ইতিহাস
শুনেছি অহরহ লোকের মুখে,
বর্বর বাহিনীর পোষা প্রাণী চালিয়েছিল গুলি
অপ্রতিরোধ্য মিছিলের বুকে।

একুশ তুমি ভোরের আগে ভোরের পূর্বাভাস
একুশ তুমি জয়ের আগে বিজয় স্বপ্নচাষ
একুশ তুমি স্বৈরাচারের প্রথম প্রতিবাদ
একুশ তুমি আন্দোলনের প্রথম ক্ষুদ্র স্বাদ

ভাষার সাথে মানবপ্রেম খুঁজে পেলাম এসে,
ইউরোপ নয় আফ্রিকা নয় সোনার বাংলাদেশে।
গোলামিতে কেটে গেল ত্যাগের দুইশ বছর,
পাকিস্তানে পেলাম আবার শোষকের দোসর।

পাঁতিহাঁসেরা জলের ছোঁয়া পেয়ে যেনো আকাশে ডানা মেলছে
ভালোবাসার নাম করে তারা একজন আরেকজনের কামড়ে
দিচ্ছে চুলের মুঠি,
এমনি এক সারস ভাসন্ত সময়ে....
আমি বসন্তের কোকিলের দানাদার আওয়াজ শুনে চমকে উঠি!

বারোশত বছর আগে ছিলাম তোমার পূর্বপুরুষের মুখে..
চর্চ্চাপদ আর পদ্মাবতীর সুখ দুঃখের লোকগাঁথায়.
আমি ছিলাম আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে
ঝাড়খন্ড বিহার মেঘালয় মিজোরাম উড়িষ্যায়…

২১ শে ফেব্রুয়ারী ।
তুমি তখনো ছিলে।
যখন শহীদ মিনারের ফুলগুলো শুকিয়ে নিস্তেজ ছিল।
লাল নীল সবুজে অ আ ক খ আঁকা ছিল।
ফুলের মালা গুলো যখন পথের পাড়ে পড়েছিল ।

বর্ণমালার জন্য, রক্ত দিয়ে ধন্য
শহীদ যত ভাই।
কত কথা বলি, গলায় গানের কলি
বাউল বেশে গাই।
শ্রদ্ধায় শোক গীত, পতাকাও অর্ধনমিত
নগ্ন জোড়া পা'য়।
প্রভাতফেরি প্রাতে, কুসুম হাতে হাতে
শত মিনারে লুটায়।
শিমুল পলাশ কালে, রক্ত লালে লালে
পথে পথে শোক।
ভাষার মাসে মন যে আশে
একুশ অমর হোক।