আবেগ ধরে না রাখতে পেরে তুমি বলে ফেললাম।
__আমি আরও অনেক কিছু জানি। বাদ দাও। আমার একটু কাজ আছে গেলাম।
__ভালো থেকো।

বিকেল হতে ছাদে উঠে এলো মুনা।তার মনটা আজ ভীষণ খারাপ,এখন তার ভাঙ্গা মন।এ মনে সে আর শক্তি খুঁজে পাচ্ছে না।পরাগকে সে এতো ভালোবাসে কিন্তু পরাগ তার ভালোবাসা বুঝতে পারে না।

তারপর তুরাগে জল গড়িয়েছে অনেক। সায়রা এসে বকবক করলেও রাহিল জানালায় দাঁড়িয়ে আর গেরাম দেখে না। নিপার গোয়েন্দাগিরিও নিষ্ফল । নিপা ধরে নিয়েছে তার ভাষণে ভাই সাইজ হয়ে গেছে। হয়ত পড়াশোনার চাপ থাকতে পারে। তাছাড়া পড়াশোনার বাইরেওতো তার অনেক ব্যস্ততা আছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হয়েছে বলে কীসব প্রতিষ্ঠানের সাথে এখন রক্ত সংগ্রহ করে বেড়ায়।

গভীর রজনীতে শয্যায় শুয়ে থেকেও বীপার যেন দুটি লোচনে নিদ আসছেনা। ক্রান্তের শত স্মৃতি তার মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।পরিপার্শ্বে কোথাও যেন কোন সাড়া শব্দ নেই।পাশের রুমের সকলেই নিদের রাজ্যে এমনকি নিজের রুমে পাশের বেডে শুয়ে থাকা বান্ধবী বিন্দিও তাতে অংশ নিয়েছে। রুমের লাইট, ফ্যান সব বন্ধ।

কাদেরের সঙ্গে অফিসের প্রথম দিনই আমার ভাব হয়ে গেল । বেচারা যেন কাউকে খুঁজছিল একটু প্রানখুলে শ্বাস নেয়ার জন্য । আমার আসাতে সেটা হয়তো সম্ভব হল ।
তবে কাদেরের সাথে প্রথম সাক্ষাতেই ভাব হওয়াটা প্রকৃতির নিয়মবিরুদ্ধই বলা যেতে পারে ।

এখনও ভোরের আলো ফোটে নি। রাত্রির অবস্থান মধ্যগগন পেরিয়েছে। চাঁদের আলোয় আলোকিত হয়েছে প্রকৃতি। কাছে, দূরে, কোথাও কোনো ধরনের শব্দ শ্রুত হচ্ছে না।

সামনের গাড়িটা থেমে যাওয়ার সাথে সাথে আমি প্রচন্ড জোরে হার্ডব্রেক করলাম। ক্যাচ করে শব্দ হয়ে গাড়িটা থেমে গেল। পাশের সারিতে রিকশায় বসা মেয়েটা পিছনে একবার তাকিয়ে ভুরু কুঁচকে তার সঙ্গীকে কিছু বলল। হয়তো আমার সম্বন্ধেই বলছেঃ ‘ বড়লোক বাপের বখে যাওয়া ছেলে—গাড়িতে উঠলেই হাই স্পিড উঠায় ফেলে!

হ্যাঁ আমি তোমাকে ছুঁয়ে থাকি ;
যেমন করে রঙের খাতায় আকাশ ছোঁয়া যায়।
হ্যাঁ আমি তোমাকে দেখি;
যেমন করে জলের আয়নায় চাঁদকে কাছে পায়।।

দীপ যেমন নেভার আগে দপ করে জ্বলে ওঠে তেমনি এক ভীষণ ইচ্ছে শীলাকে বেয়ে ক্রমাগত উঠছে।
তাই গত সাত দিন ধরে শীলা নীলক্ষেতের মোড়ে দাঁড়িয়ে স্বামীর জন্য মেয়ে খুঁজতে আরম্ভ করেছে।

ডাকটা শুনে প্রায় চমকে উঠলেন সুচেতা। আজকাল অন্যমনস্কতায় প্রায়শই শুনছেন এই ডাক। সদ্য স্নান সেরে অভ্যাস মত বারান্দায় ভিজে কাপড়গুলো তারে মেলে দিচ্ছিলেন তিনি। এমন সময় তন্ময়তা ভাঙা ‘মা’ ডাকটা কানে এল তাঁর। সাড়া দেবার আগে পেছন ফিরে তাকালেন। তখনি সব কথা আবার মনে পড়ল।সাড়া আর দেওয়া হল না। কদিন আগে হলেও স্নান সেরে পুজোয় বসতেন তিনি।