আমাদের সবচেয়ে দুঃখের কথাগুলো

উচ্ছ্বাস (জুন ২০১৪)

ওয়াহিদ মামুন লাভলু
  • ১২
  • ১৩
এক

ম্যাট্রিক পরীক্ষার পর চাষাবাদের কাজ করে, মাছ ধরে, ফুটবল খেলে ও সে খেলা দেখে সময় বেশ ভালোই কাটতে লাগলো ফরিদের।

জুড়ান উদ্দিনের কাছে ঢাকা থেকে চিঠি এলো যে ডাক্তার জালাল উদ্দিনের মেঝ ছেলে মুনু মিয়া-ডাক্তার আব্দুল মজিদের বিয়ে। জোড়দহ গ্রামের আরও অনেককেই দাওয়াত করা হলো। গ্রামের যারা যেতে চায় তাদেরকে গুছিয়ে সঙ্গে করে নেয়ার দায়িত্ব জালাল উদ্দিন ফরিদের বাবা জুড়ান উদ্দিনকেই দিলেন। জুড়ান উদ্দিন ফরিদকেও সঙ্গে নিতে চাইলেন। এর একটা কারণও আছে।

জালাল উদ্দিন গ্রামের প্রতিবেশী জুড়ান উদ্দিনের কাছে একসময়ে কথা দিয়েছিলেন যে কেউ যদি গ্রাম থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে তাহলে তিনি তাকে তার ঢাকার বাড়িতে রেখে পড়াবেন। ফরিদরা একবারে সাতজন ছাত্র ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিয়েছে। সকলেরই যখন পাশ করার কথা, তখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠার আশংকা আছে যে এদের মধ্যে কাকে তিনি তার বাড়িতে রাখবেন। জুড়ান উদ্দিন আশা করছেন যে তার ছেলেকেই তিনি তার বাড়িতে রাখবেন। এ ব্যাপারে কথা পাকাপাকী করে আসাও ফরিদকে সঙ্গে নিতে চাওয়ার অন্যতম কারণ।

মুরুব্বীদের মধ্যে অনেকেই; আর যে ক’জন পরীক্ষা দিয়েছে তাদের মধ্যে আব্দুর রহমান ও ইয়াছিন বাদে আর সকলেই রওনা হলো।

বেড়া থানার পূর্বাংশের সাধুগঞ্জ থেকে ষ্টীমারে ওঠার সময় এক মুরুব্বীর একখানা জুতা হাত থেকে নদীতে পড়ে গেল। এইসব শ্রমজীবী সহজ সরল কৃষকদের বেশীর ভাগেরই জুতা নেই। যাদের আছে এবং বিয়েশাদীতে বা কুটুম বাড়ি যাওয়া বা ঐ ধরণের কোনো বিশেষ উপলক্ষ্যে যারা জুতা কেনেন তারাও সারাপথ তা হাতে করেই চলেন, শুধু কুটুম বাড়ি পাওয়ার আগে জুতা পরে নেন। এই কারণেই মুরুব্বীটির জুতা হাত ফসকে পড়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে। ইদ্রিস, মোজাহার ও আলাউদ্দীন তিনজনই মুরুব্বীটির নাতি। তারা এই জুতা পড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তাকে খুব খেপাতে লাগলো। সকলেই তাকে পরামর্শ দিলো, ‘‘ঐ একখানা জুতা নিয়েই চলো, গোয়ালন্দ বাজার থেকে আর একখানা কিনে নেয়া যাবে; অনেক সময় দোকানে জোড়া ভাঙ্গা একখানা জুতা পাওয়াও যায়।’’ সত্যি সত্যি তিনি ঐ জুতাখানা পরম যত্নে সঙ্গে রাখলেন। জুতা জোড়া তিনি এই বিয়েতে যাওয়া উপলক্ষ্যেই কিনেছেন, একেবারে আনকোরা নতুন। ষ্টীমার গোয়ালন্দ ঘাটে ভিড়বার পর নামার সময় তিন নাতি ঐ জুতার উল্লেখ করে তাকে কি যেন একটা খেপানোর কথা বলতেই উনি খুব রেগে গিয়ে যা-তা বকে উঠলেন এবং সে জুতাখানাও ঢিল মেরে নদীতে ফেলে দিলেন। জুড়ান উদ্দিন ওদেরকে বেশ তিরস্কার ও বকাঝকা করলেন মুরুব্বীর সঙ্গে ওভাবে ঠাট্টা মশকরা করার জন্য। গোয়ালন্দ নেমেই আগে জুতা কেনা হলো। জুতাটা ‘চাকা মার্কা’ রাবারের নাগড়া। জুড়ান উদ্দিন তাকে বললেন যে এরপর থেকে তিনি যেন জুতা সবসময়ে পায়েই রাখেন, অন্ততঃ ঢাকা যাতায়াতে এবং ঢাকাতে থাকতে সব সময়েই।

সন্ধ্যার কিছু পর পূর্ব দিক থেকে বিরাট একটা ষ্টীমার এলো। ঠেলাঠেলি করে ষ্টীমারে উঠলো সবাই। ভোরে ষ্টীমার ছাড়লো।

বেলা ১ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ ঘাটে ষ্টীমার ভিড়লো। দৌড়াদৌড়ি করে সব নেমে গিয়ে রেলগাড়িতে উঠলো। প্রথম রেলগাড়িতে উঠে ফরিদ খুবই আনন্দ পাচ্ছে। প্লাটফরমের মধ্যে দেখলো যে এক লোক বোতলের মত কি যেন কয়েকটা উঁচু করে ধরে দৌড়াচ্ছে আর চিৎকার করছে, ‘‘ব্রোফ জীবনেই, ব্রোফ জীবনেই।’’ ওটা সম্পর্কে জানতে চাইলে লোকটা বললো, ‘‘বরফ লেমনেড।’’ এবার স্পষ্টভাবে কথাটা বোঝা গেল। হঠাৎ ওদিক থেকে কে একজন একইভাবে দৌড়াচ্ছে আর চিৎকার করছে, ‘‘সাগর ক্ল্যা, সাগর ক্ল্যা।’’ সাগর শব্দটি বোঝা গেল, কিন্তু ক্ল্যা কী জিনিস তা বোঝা গেল না। মাথা বের করে ফরিদ দেখলো যে লোকটার হাতে দু-তিন ফানা লম্বা লম্বা কলা।

একটু পরেই বাঁশী বাজিয়ে গাড়ি ছেড়ে দিলো। ক্রমে গাড়ি দ্রুত চলতে লাগলো এবং একটা ছন্দময় শব্দ হতে লাগলো ‘‘ঝ-পা ঝপ, ঝ-পা ঝপ’’ এই রকম।

একজন ফরিদকে লক্ষ্য করে বললো ‘‘গাড়ি কি বলছে জানো?’’
ফরিদ বললো, ‘‘কি বলছে?’’
সে বললো, ‘‘বলছে, ভগ দাদা কাঁথা কাচে, ভগ দাদা কাঁথা কাচে, ভগ দাদা কাঁথা কাচে।’’
পাশ থেকে আরেকজন বললো, ‘‘না, তা নয়; বলছে, ঢাকা আছে কতদূর, ঢাকা আছে কতদূর, ঢাকা আছে কতদূর।’’
এইভাবে চাষাড়া, ফতুল্লা, গেন্ডারিয়া ষ্টেশনগুলো পার হয়ে গেল; একজন আবার বলে উঠলো, ‘‘গাড়ি এখন কি বলছে জানো? বলছে, পেয়ে গেছি, পেয়ে গেছি, পেয়ে গেছি, পেয়ে গেছি, পেয়ে গেছি, পেয়ে গেছি।’’
ফরিদ বুঝলো যে এর পরেই ঢাকা। ফরিদের বাবা বললেন, ‘‘আসলে গাড়ির শব্দের সঙ্গে মিল করে যা মিলানো যায়, তাই মেলে। কেন এটাও তো মেলে, কুছতুম কুছতুম দিঘাপাতা কতদূর, কুছতুম কুছতুম দিঘাপাতা কতদূর।’’
সকলে হেসে উঠলো। এইভাবে হাসি-খুশীর মধ্য দিয়ে ট্রেন চলতে লাগলো।

একসময় বাঁশী বাজিয়ে ফুলবাড়িয়া ষ্টেশনে প্রবেশ করলো। শূলসুধার ম্যানেজার পার্শ্ববর্তী গ্রামের তমিজ মিয়া সকলকে নেয়ার জন্য ষ্টেশনে এসেছে। সকলে কয়েকটা ঘোড়ার গাড়িতে করে ‘‘শূলসুধা ঔষধালয়ে’’ পৌঁছালো।

শূলসুধা। বাংলা-আসামের মধ্যে শূল বেদনার একমাত্র ও অব্যর্থ ঔষধ। এ সেই ঔষধ যা কোনো এক নৌকার মাঝি জালাল উদ্দিনের পিতাকে দিয়েছিলেন তার বাড়ির পাশ দিয়ে নৌকা চালিয়ে যাওয়ার সময় যখন তিনি শূলের ব্যথায় বাড়ির মধ্যে চিৎকার করছিলেন। সেই মাঝি খানিকটা তৈরী ঔষধ তো তাকে খাওয়ায়ে দিয়েছিলেনই যার সাথে সাথেই তার ব্যথা উপশম হয়েছিল, অধিকন্তু এই ঔষধ তৈরী শিখিয়েও দিয়েছিলেন। তখন এ দেশে অম্লনাশক (Antacid) জাতীয় অন্য কোনো ঔষধ ছিল না। অত্যধিক মরিচের ঝাল খাওয়ার কারণে বহু লোকেরই বিশেষ করে পূর্ববঙ্গ ও আসামে বহু লোকেরই অম্লশূল ব্যধী ও পাকাশয় বা অন্ত্রক্ষত রোগ ছিল। জালাল উদ্দিন ঢাকা মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুল থেকে এল. এম. এফ. পাশ করে ত্রিপুরা, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগরে সরকারী ডাক্তার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। তিনি যখন দেখলেন যে ও এলাকায় প্রচুর অম্ল রোগী এবং তার পিতার কাছে যে ঔষধ আছে তা একটি উত্তম অম্লনাশক তখন তিনি ঔষধটা ‘পেটেন্ট’ করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ঔষধটা প্রস্তুত ও বিক্রয়ের পরিকল্পনা করেন। ‘শূলসুধা’ নাম দিয়ে ঔষধটা পেটেন্ট করা হয়। সাত-আটটা ঢেঁকিতে দিনরাত খড়িমাটি গুঁড়া করা হতো। এই খড়িমাটিই শূলসুধার প্রধান উপাদান। ঔষধের ব্যাপক প্রচলন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলিকাতা, চিটাগাং ও আসামে এর শাখা খোলা হয়। ইতিমধ্যে এক সময়ে ঢাকাতে জায়গা কিনে শূলসুধা ঔষধালয়ের দালানটি দেওয়া হয় এবং শূলসুধার কার্যালয় গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় স্থানান্তরিত করা হয়।

জুড়ান উদ্দিনের সাথে জালাল উদ্দিনের কথা হয়ে গেল এবং ঠিক হলো যে ফরিদ ঢাকাতেই পড়বে এবং কাজী আলাউদ্দীন রোডে জালাল উদ্দিনের ‘‘শূলসুধা ঔষধালয়’’ নামক বাড়িতেই থাকবে।

দুই

ঢাকাতে ৫ দিন থাকার পর বাড়ি এসেই ফরিদ শুনলো যে পরীক্ষার ফল নাকি শীঘ্রই বের হবে। ফুটো হয়ে যাওয়া বেলুনের মত এক মুহূর্তেই চুপসে গেল সে। পরীক্ষার পর থেকে যে একটা নতুন আনন্দ, উদ্দীপনা ও উন্মাদনায় উদ্দীপিত হয়ে উঠেছিল, ঢাকা থেকে যে আরও একটি নতুন আনন্দ নিয়ে এসেছিল তা যেন মুহূর্তেই উবে গেল! যদি পাশ না করে? জীবনের প্রথম পরীক্ষার ফল বের হওয়ার আগের এই উৎকণ্ঠাপূর্ণ দিনগুলি কী মধূর! আশা, আশংকা ও ভয় মিশ্রিত দিনগুলি! সাতজন পরীক্ষার্থীর কেউই বেড়া যেতে সাহস পায় না, কী জানি কী খবর যেন আসে। ভাত পর্যন্ত খেতে পারে না, রাত্রে ঘুমও হয় না ভালোভাবে।

এক রাত্রে ফরিদ স্বপ্ন দেখলো যে বেশ লম্বা এক অজ্ঞাত দালানের বারান্দা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে সঙ্গে আরও তিন/চারজন। সেটা সম্ভবতঃ কোনো কলেজ। সেই কলেজে যেন সে ভর্তি হয়েছে। আহা! স্বপ্নটা যদি সত্যি হতো! কিন্তু যদি তা না হয়! ভালো স্বপ্নের কথা নাকি কাউকে বলতে হয় না; ফরিদও কাউকে বললো না।

জালাল উদ্দিনের গ্রামের বাড়ির বৈঠকখানা ঘরের গাড়ি বারান্দায় ফরিদদের আড্ডা। সকালে ভাত খেয়ে ওখানে গিয়ে বসে সকলে মিলে। তাস খেলে অথবা ক্যারাম খেলে সময় কাটে। বাড়ি থেকে প্রায় পৌনে এক মাইল দূরের বেড়ার পাকা রাস্তায় পৌঁছানো পর্যন্ত রাস্তা নেই; আছে একটা হালট। এখন বর্ষাকাল। গ্রামের মধ্যে ও বেড়ার রাস্তা পর্যন্ত পানি। গ্রামের লোকেরা বেড়া বাজারে যায়, ফিরে আসে। ওরা কোনো না কোনো খবর পাওয়ার আশায় থাকে; কিন্তু খবর আসে না। দুপুর পর্যন্ত এইভাবেই কাটে। তারপর যার যার বাড়িতে যায় খাওয়ার জন্য। তারপরই আবার আড্ডায় গিয়ে বসে, খেলা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত, আর প্রতিক্ষায় থাকা। কোনো কোনোদিন হয়তো নিজেদের মধ্যে থেকেই কাউকে পাঠায় স্কুলে। একদিন খবর পেল যে দু-একদিনের মধ্যেই নাকি ‘সিনেট’ হবে। বাংলা, আসাম ও বিহার প্রদেশ কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে; ম্যাট্রিক পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ই নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সিনেট’ এর সভায় রেজাল্ট ঠিক করে তারপর প্রকাশ করা হয়। রেজাল্ট ডাকে আসে কেন্দ্রে, আর ওদের কেন্দ্রও পাবনা শহরে। সুতরাং রেজাল্ট আসতে পাঁচ-সাতদিন সময় লেগে যায়। শুধু এদিকের যারা কলিকাতায় থাকে তারাই টেলিগ্রাম করে স্কুলে জানিয়ে দেয়। সময় আর কিছুতেই কাটতে চাচ্ছে না, কোনো খেলাই ভালো লাগে না, শুধু হাঁ করে চেয়ে থাকে বেড়ার দিকে, যে কোনো খবর কেঊ হয়তো নিয়ে আসে। মাঝে মধ্যে নিজেরা যে দু-একজন স্কুলে যেত, ভয়ে তাও আর যায় না। জুড়ান উদ্দিন কিন্তু দৈনিকই প্রায় এ বেলা, ও বেলা বেড়া যায় খবরের জন্য; তার এই অত আগ্রহ দেখেও আরও ভয় লাগে ফরিদের, নিজের জন্য যতটা না, তার চেয়ে বেশী বাবার জন্য। বুড়ো মানুষ, তার সমগ্র জীবনের স্বপ্ন হলো ফরিদ, ফরিদের ম্যাট্রিক পাশ করা। যদি তার আজন্ম লালিত সেই স্বপ্ন সফল না হয়?

অবশেষে বহু প্রতীক্ষার অবসানের সেই শুভদিনটি এলো। ওরা যথারীতি বেড়ার দিকে তাকিয়ে দুপুর পর্যন্ত বসে থেকে নিরাশ হয়ে যার যার বাড়ি গেল। খাওয়া দাওয়া করে ও নামাজ পড়ে আবার আড্ডা স্থলে গেল সবাই। খেলতে চেষ্টা করে কিন্তু খেলায় মন বসে না। ক্রমে বিকাল হয়ে গেল। দূরে ‘শেওড়া গাছের’ কাছে দু’জন বৃদ্ধ লোককে দেখা গেল হাঁটু পর্যন্ত কাপড় তুলে পানি ভেঙ্গে খুব জোরে হেঁটে আসছে গ্রামের দিকে। খেয়াল করে দেখলো যে ফরিদের বাবা আর গ্রামের হাজী সাহেব। তারা কেন এত তাড়াতাড়ি আসছেন? তবে কি রেজাল্ট নিয়েই আসছেন? ওরা সব একসাথে ঘর থেকে নেমে ভলি বল খেলার মাঠের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলো। ততক্ষণে ওনারা অনেক এগিয়ে এসেছেন। ওখান থেকেই দু’জন, বিশেষ করে ফরিদের বাবা অতি উৎসাহে বাঁ হাতে কাপড় ধরে ডান হাত উঁচু করে নেড়ে ওদেরকে যেন জানিয়ে দিলেন, ‘‘আনন্দ করো, সূখবর!’’ বাবা যখন অত খুশী হয়েছেন তখন ফরিদের খবর যে ভালো অত দূর থেকেই সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হলো ফরিদ। কিন্তু অন্যদের কার খবর কি? ওরাও প্রায় দৌড়ে গেল, ওনারাও প্রায় দৌড়েই এগিয়ে এলেন, ওনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো। তার আগেই ওনারা বলতে শুরু করেছেন, ‘‘তোমরা ছ’জন পাশ করেছো, একমাত্র ফরিদই ফার্স্ট ডিভিশনে।’’ ফরিদের বাবা আর বলতে পারলেন না, আনন্দে কেঁদে ফেললেন। বাবাকে কোনোদিন কোনো ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত হতে দেখে নি ফরিদ কিন্তু আজ দেখলো, ফরিদের চোখেও পানি এলো। বাবার সারাজীবনের আশা পূরণ হয়েছে। কি আনন্দ! ফরিদ ভাবলো, জিলিম উদ্দীন, তোমেজ, আফছার এদের কথা কি বাবার মনে হলো? যারা মাত্র চৌদ্দ-পনের বছর বয়সে মারা গেছে এইট-নাইন-টেনে উঠে ঠিক ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেওয়ার মুখে, তার আজন্ম লালিত স্বপ্নকে ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়ে? মনে হলো কি জোড়দহ গ্রামের পাঠশালার জন্য তিনি যে পরিশ্রম করেছেন শুধু গ্রামটিকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য সেই পরিশ্রমের কথা? আজ কি তিনি তৃপ্ত, সন্তুষ্ট? ফরিদের মাধ্যমে এবং একবারে গ্রাম থেকে আরও ক’টি ছেলের ম্যাট্রিক পাশ করার মাধ্যমে তার স্বপ্ন কি সফল হলো? জোড়দহ গ্রামের ইতিহাসের সেই বদনাম, গ্রাম থেকে একটা ছেলে-মেয়েরও ম্যাট্রিক পাশ করে বের না হওয়ার সেই কলংক কি দূরীভূত হলো? প্রায় হাঁটু পানির মধ্যেই বাবা ও হাজী সাহেবের পায়ে হাত দিয়ে সালাম করলো ফরিদ, তারাও অশ্রুসজল চোখে ওদেরকে আশীর্বাদ করলেন, দোয়া করলেন। গ্রাম থেকে ফরিদ, গফুর, ইয়াছিন, আলাউদ্দীন, মোজাহার ও আব্দুর রহমান পাশ করেছে; ফরিদ ছাড়া আর সব থার্ড ডিভিশনে পাশ করেছে। রাত্রে এবং তারপর আরও দু-তিনদিন ওরা ইদ্রিসকে পাহারা দিয়ে রাখলো; কী জানি ফেল করার দুঃখে আত্মহত্যা করে ফেলে কিনা। ফল শুনে ফরিদদের বাড়ির সকলেই এবং আত্মীয়-স্বজনেরাও খুব আনন্দিত হলো, খোদার কাছে শুকরিয়া জানালো ফরিদ। ফরিদের বাবা একটা গরু জবাই করে লোকজনকে খাওয়ালেন।

বহু প্রতীক্ষিত ফল বের হলো; প্রথম বিভাগে পাশও করলো। কিন্তু মনের মধ্যে যে একটা পূর্ণতার আনন্দ আসবে বলে আশা করেছিল ফরিদ তা যেন এলো না। বরং পাশের খবরের আগে ভয় ও আশা মিশ্রিত যে একটা ‘আনন্দ’ সমগ্র মনকে ভরে রেখেছিল খবর পাওয়ার মাধ্যমে সে আনন্দ যখন আর রইলো না তখন হঠাৎ করে সমগ্র মনটাই যেন একটা শূন্যতায় ভরে গেল, সবকিছু খালি খালি মনে হতে লাগলো। ‘‘গন্তব্যে পৌঁছার চেয়ে গন্তব্যে পৌঁছার আশা নিয়ে পথাতিক্রমের যে আনন্দ তাই অনেক বেশী ও মধূর।’’ কথাটির সত্যতা উপলব্ধি করলো ফরিদ। ম্যাট্রিক পাশ করাটাই যখন লক্ষ্য ছিল-পরিশ্রম ও প্রয়াস-প্রচেষ্টার যে আনন্দ এবং পরীক্ষা দেওয়ার পর আশা, ভয় ও উৎকণ্ঠা নিয়ে দিন কাটানোর যে আনন্দ, তার তুলনায় পাশ করার আনন্দটা যেন তুচ্ছ ও ম্লান হয়ে গেল। বোধহয় এ একমই হয়। পাওয়া দ্বারা পাওয়ার তৃষ্ণা নিবৃত্তির যে আনন্দ তা সব সময়েই পাওয়ার তৃষ্ণাজনিত আনন্দের কাছে তুচ্ছ ও নগণ্যই হয়। পাওয়ার আনন্দের চেয়ে না পাওয়ার ব্যথাটাই কি মধূর? মিলনের চেয়ে বিরহের? এ কারণেই কি কবি বলেন, ‘‘Our sweetest songs are those that tells us of our saddest thoughts?’’-আমাদের সবচেয়ে মধুরতম সঙ্গীত সেগুলোই যেগুলোতে বলা হয় আমাদের সবচেয়ে দুঃখের কথাগুলো।

পরীক্ষার ফল বের হওয়ার আগের দিনগুলো কাটছিল না কিন্তু পরের দিনগুলো খুব দ্রুত কাটতে লাগলো। ঢাকাতে পড়া তো একরকম ঠিক হয়েই গেছে কিন্তু কবে, কিভাবে, কার সঙ্গে যাবে এসব তো কিছুই জানে না ফরিদ। গ্রামে এমন কেউ নাইও যে কিনা কলেজে পড়েছে এবং যার কাছ থেকে জানতে পারবে যে কলেজে ভর্তি হতে হলে কি করতে হয়, কি লাগে, কত টাকা লাগে এবং সর্বোপরি কিভাবে কি করতে হয়। এইসব চিন্তা-ভাবনা করছে ঠিক এমনি সময়ে একদিন তমিজ মিয়া হঠাৎ করে বাড়ি এলেন। নির্দিষ্ট দিনে ওনার সাথে ঢাকা রওয়ানা হলো ফরিদ ও মোজাহার। ওরা যাচ্ছে ঢাকাতে পড়ার জন্য।

ফরিদের সঙ্গে আছে ওর তোষক, চাদর ও বালিশ এবং একটা সূটকেস যার মধ্যে আছে দুটো লুঙ্গী, গামছা, একটা পায়জামা ও একটা শার্ট। একটা পায়জামা ও একটা শার্ট ওর পরনেই আছে। শার্ট পায়জামাগুলো নতুনই, মাত্র পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পূর্বে তৈরী করেছিল।

বেড়া থেকে একটা ভাড়াটিয়া নৌকায় উঠলো। সাধুগঞ্জ গিয়ে শোনা গেল যে কী এক অনিবার্য কারণবশতঃ দু-দিন ষ্টীমার বন্ধ। অবশেষে বেড়া থেকে আসা নৌকাতেই তারা গোয়ালন্দ রওনা হলো। এত দীর্ঘ পথে ও এত বড় নদীর বুক দিয়ে নৌকা ভ্রমণ ফরিদের জীবনে এই প্রথম। এক অদ্ভূত ও আনন্দময় অভিজ্ঞতা হলো।

সন্ধ্যায় গোয়ালন্দ পৌঁছালো। তারপর স্বাভাবিক পথে তারা ঢাকা গেল।

ফরিদ ঢাকা কলেজে আই. এস-সি.-তে ও মোজাহার জগন্নাথ কলেজে আই. কম.-এ ভর্তি হলো। নীচ তলায় মসজিদের দিকে ভিতরের যে ঘরটিতে শূলসুধার বিদ্যুৎ মিটার ও মেইন সূইচ, সেই ঘরটিতে ফরিদের থাকার ব্যবস্থা করা হলো; একটা চৌকী ও চেয়ার-টেবিলও দেওয়া হলো। বাড়িতেও এ পর্যন্ত কোনোদিন একা এক ঘরে রাত কাটায় নি ফরিদ। এখানে ঘরে একা থাকতে প্রথম দু-একদিন ভয় পেলেও শীঘ্রই অভ্যাস হয়ে গেল। এ ব্যাপারে পাশের গ্রামের বাবর আলীর সাহায্য ও সহৃদয়তা কম না। বেশ অনেক রাত পর্যন্ত তিনি ফরিদের ঘরে বসে থাকেন। এখনও ক্লাস আরম্ভ হয় নি বলে পড়াশোনাও শুরু হয় নি, তাই বেশ গল্প করা যায়। বাবর আলী শূলসুধায় চাকরি করেন এবং এখানেই থাকেন। ফরিদের ঘড়ি নেই, শূলসুধার ‘হল কামরায়’ যে একটি দেয়াল ঘড়ি আছে তারই ঘণ্টা শুনে সময় জানতে পারে সে।

ফরিদের ভর্তির ব্যাপারে মুনু মিয়া খুব উৎসাহী ও আগ্রহী ছিলেন এবং তিনি তার জন্য দৌড়াদৌড়ীও করেছেন। তার সাহায্যের কথা আজীবন মনে থাকবে ফরিদের। কিন্তু তার বড় ভাই ডাক্তার আব্দুল করিম অন্যরকম। ফরিদ যে তাদের বাসায় থেকে পড়তে এসেছে এটাই দেখতে পারেন না, প্রি-মেডিকেল কোর্স নিয়ে আই. এস-সি.-তে ভর্তি হওয়া তো আরও পছন্দ করেন নি। তিনি এম. বি., বি. এস. পাশ করে মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলে চাকরি করেন। তাদের বাসায় থেকে ফরিদের পড়াটা যে আব্দুল করিম সহ তার আরও দু-একজন মেয়ে দেখতে পারেন না, এ কথাটা জালাল উদ্দিন লক্ষ্য করলেন এবং সে সম্বন্ধে সচেতন হলেন।

একদিন খাওয়ার টেবিলে এই ধরণের একটা কথা তুলে তার ম্যাট্রিক পরীক্ষার ফি দেওয়ার একটা ঘটনা তিনি সবাইকে বললেন। ঘটনাটা ফরিদ তার বাবার কাছে আগেই শুনেছিল।

তিন

জালাল উদ্দিন বেড়া স্কুলে পড়াশোনা করতেন। তিনি ফরিদের বাবার চেয়ে দু-চার বছরের বড়। ফরিদের বাবা ক্ষেতে কাজ করেন। সেদিনও গ্রামের প্রায় ১ মাইল দক্ষিণে বাগিচার কাছে চাষ করছিলেন; দুপুর প্রায় হয়ে এসেছে, বাড়ি ফিরবেন। এমন সময় দেখলেন যে সেখান থেকে আরও প্রায় ১ মাইল দক্ষিণের চাকলা গ্রামের দিক থেকে একজন লোক ক্ষেতের মধ্য দিয়ে উত্তর দিকে আসছেন। জামা-কাপড় পরা দেখে লোকটাকে তার মত মাঠের লোক বলে মনে হলো না। তাই কৌতূহলী হয়ে লোকটার আসা পর্যন্ত অপেক্ষাই করলেন জুড়ান উদ্দিন। চেনার মত দূরত্বের মধ্যে এলে দেখলেন যে লোকটা তাদেরই মিয়া ভাই জালাল উদ্দিন। ক্লান্ত হয়ে এসে একেবারে তার কাছে বসে পড়লেন। সেও লাঙ্গল খাড়া করে রেখে তার কাছে গিয়ে বসলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘কোথায় গিয়েছিলেন, এ অসময়ে?’’
‘‘গিয়েছিলাম চাকলাতেই, খুব ভোরে।’’ জালাল উদ্দিন জবাব দিলেন।
‘‘কেন?’’ জুড়ান উদ্দিন প্রশ্ন করলেন।
‘‘সে অনেক কথা, জুড়ান-খুব দুঃখের কথা।’’ জালাল উদ্দিন একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন। ‘‘আগামীকাল আমার ম্যাট্রিক পরীক্ষার ফি দাখিল করার শেষ তারিখ। কাল ফি দিতে না পারলে এই দশ বছর যত পরিশ্রম করেছি সব বৃথা হয়ে যাবে। তুমি তো জানই আমার বাবার অবস্থা কেমন! জমি-জমা কিছুই নাই শুধু মোল্লাকী করে আমাদের সকলের পেটের ভাতই যোগাড় করতে পারেন না! চাকলার বেলাত প্রমাণিক সাহেব কিছু টাকা দিতে চেয়েছিলেন তাই সকালে তার কাছেই গিয়েছিলাম। তিনি যেন কোথায় চলে গিয়েছিলেন। বহুক্ষণ অপেক্ষা করার পর যদিও তিনি এলেন, কিন্তু টাকাটা তিনি আর আমাকে দিলেন না, তার কাছে নাকি টাকা নাই। তাই ভাবছি-আর ভাবতে ভাবতে আসছি-এখন কি করি? খোদা কি আমার দিকে মুখ তুলে চাইবেন?’’ চোখ দুটো যেন তার পানিতে ভরে এলো।
জুড়ান উদ্দিন হঠাৎ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘‘আচ্ছা, কত লাগবে আপনার ফি দিতে?’’
জালাল উদ্দিনের মুখটা যেন ক্ষণিকের জন্য উজ্জ্বল হয়ে উঠলো, তিনি যেন একটু আশার আলো দেখতে পেলেন। তবুও কিছুটা নিরাশার ভাব নিয়েই উদাসভাবেই বললেন, ‘‘ফি তো লাগে মাত্র পনের টাকা, তবে বেতন সহ বিশ টাকার মত হলেই হয়।’’
‘‘তো চলেন যাই, আল্লাহ্‌ ভরসা, দেখা যাক।’’ এই কথা বলেই জুড়ান উদ্দিন উঠে লাঙ্গল ছেড়ে দিলেন এবং লাঙ্গল কাঁধে করে গরু নিয়ে বাড়ির দিকে রওয়ানা হলেন, জালাল উদ্দিনও সাথে সাথেই এলেন। জুড়ান উদ্দিনের বাড়ির কাছে এসে জালাল উদ্দিন যখন উত্তরে তার বাড়ির দিকে পা বাড়াবেন জুড়ান উদ্দিন তখন তাকে তার সাথেই আসতে বললেন। এখন হয়তো ওনাদের বাড়িতে খাওয়ার কোনো ব্যবস্থাই নাই।

তারপর জুড়ান উদ্দিন একটু জিরিয়ে নিয়ে ওনাকে সাথে করে পুকুর থেকে গোসল করে এলেন এবং এক সঙ্গেই খেলেন। জুড়ান উদ্দিনের মা তাদেরকে খাওয়ালেন, জুড়ান উদ্দিন বিয়ে করেন নি। খাওয়ার পর উনি বাড়ি যেতে চাইলেন কিন্তু জুড়ান উদ্দিন বললেন, ‘‘এখনই নয়, বিকালে যাবেন।’’

দুপুরের বিশ্রামের পর জুড়ান উদ্দিন তার মাকে সব কথা বললেন এবং মা’র কাছে টাকা চাইলেন। মা টাকার টোপলাটা জুড়ান উদ্দিনকে দিলেন। তিনি সিকি, আধূলী, এক পয়সা এবং দু’চারটা এক টাকা দিয়ে বিশটা টাকা এনে বললেন, ‘‘এই নিন বিশ টাকা। কালই আপনার ফি দিয়ে দিবেন।’’
টাকাগুলি দেখে জালাল উদ্দিন হাউ-হাউ করে কেঁদে উঠলেন এবং কাঁদতেই লাগলেন, কোনো কথাই বলতে পারলেন না। অবশেষে জুড়ান উদ্দিনই টাকাগুলি তুলে তার হাতে দিলেন, তিনি ওগুলি তার ধূতির কোঁচরে রাখলেন। জালাল উদ্দিন হয়তো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের জন্য কিছু বলতে চাইলেন কিন্তু জুড়ান উদ্দিন তাকে সে সুযোগ না দিয়ে ঠেলে তার বাড়ির দিকে পাঠিয়ে দিলেন; তাদের বাড়ি জুড়ান উদ্দিনের বাড়ির উত্তরেই। মনে কি ধরণের যে একটা তৃপ্তি ও আনন্দ পেলেন জুড়ান উদ্দিন তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। তার ভাগ্যে লেখাপড়া হয় নি, কিন্তু একজন ছাত্রের পরীক্ষার ফি’র সামান্য ক’টা টাকা দিতে পেরে যেন নিজেকে ধন্য মনে করলেন।

জালাল উদ্দিন সেবার ম্যাট্রিক পাশ করেন এবং ঢাকা মিটফোর্ড মেডিকেল স্কুলে ভর্তি হন।

একসময় ঢাকাতে তিনি এত সুন্দর ও মজবুত বাড়িটা করেন। জুড়ান উদ্দিনের দেওয়া সেই বিশ টাকার ঋণ তিনি সব সময়েই স্বীকার করেছেন এবং সেটাকে তিনি এত বড় ও অশোধ্য বলে মনে করতেন যে সেটা শোধ দেওয়ার কথা তিনি কোনোদিনই বলেন নি।

জালাল উদ্দিন খাওয়ার টেবিলে সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, ‘‘সেদিন জুড়ান যদি সেই টাকা ক’টা না দিত তাহলে আমার পরীক্ষা দেওয়াই হতো না এবং আজ আমারা সকলেই যা হয়েছি তা না হয়ে অন্য কিছু হতাম। শূলসুধার প্রতিটি ইট খুলে দিলেও জুড়ানের ঋণ শোধ হবে না।’’

লজ্জায় ফরিদের মাথা হেঁট হয়ে গেল। এই কথা শোনার পর থেকে মুনু মিয়া ফরিদের প্রতি আরও সহানুভূতিশীল হলেও আব্দুল করিমের মনোভাবের কিছুমাত্র পরিবর্তন হয়েছে বলে ফরিদের মনে হলো না বরং হীনমন্যতার কারণে ভিতরে ভিতরে তিনি আরও বেশী অসহিষ্ণু হয়েছেন।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সকাল রয় দুর্দান্ত এই গল্পটি বিজয়ী হবে বলে আশা করছি।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
মিলন বনিক খুব সুন্দর আর নিটোল বর্ণনা...খুব কাছে থেকে দেখা চরিত্রগুলো একেবারে জীবন্ত.....খুব ভালো লাগলো...শুভ কামনা...
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
মামুন ম. আজিজ বেশ পরিপক্ক
আপনার ছোট্ট অথচ খুব সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ। সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন।
সহিদুল হক গল্পটিতে সম্ভবত প্রাক-স্বাধীন বাংলার একটা খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সে সময় মানুষের নেমক-হালালির যে দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে তা খুবই হৃদয়গ্রাগী হয়েছে। --শুভ কামনা জানাই।
আপনি সঠিক কথা লিখেছেন। আপনার মূল্যবান ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসীম ধন্যবাদ। আপনার জন্যও অনেক শুভকামনা রইলো। সালাম, কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন।
ঝরা পাতা শূলসুধার প্রতিটি ইট খুলে দিলেও জুড়ানের ঋণ শোধ হবে না।---- এভাবে উপকার স্বীকার করার মানসিকতা যদি সবার থাকত! খুব ভাল লাগল গল্পটা... শ্রদ্ধা :)
ভালো লাগা জানানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
এবার কবিতা দিলেন না ভাই?? আপনার আগের কবিতাটা ভাল লেগেছিল...:)
এবার খুব ঝামেলায় ছিলাম। তাই দিতে পারি নি। আপনার মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
সুগত সরকার খুব ভাল । Our sweetest songs are those that tells us of our saddest thoughts? পি বি শেলি -এর লাইনটা সুন্দর ব্যবহার করেছেন । আনেক শুভকামনা রইল ।
গল্পটি পড়ার জন্য এবং সুন্দর, অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে সীমাহীন ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন।
প্রজ্ঞা মৌসুমী আপনার গল্পের এই যে ছোট ছোট ভ্রমণ অভিজ্ঞতাগুলো থাকে খুব ভালো লাগে আর সেই সাথে 'তাহাদের সময়' ধরে আনাটা। ভাবছিলাম সময় বদলেছে তবে পরীক্ষার ফল বা কলেজ ভর্তি নিয়ে সেই একই দুশ্চিন্তা, একই রকম উচ্ছ্বাস... এইসব অনুভূতিগুলো মিলেমিশে চিরন্তন হয়ে গেছে। আপনার গল্পের শেষ পড়লে মনে হয় এখানেই শেষ নয়... ভালো লেগেছে গল্প। অনেক শুভ কামনা। আনকোরা এবং নতুন একই অর্থ বহন করেল; 'আনকোরা নতুন' বলাটা বাহুল্যতা নয় কি?
আপনার সুন্দর, বড়, বিশ্লেণাত্মক মন্তব্যে খুব উৎসাহ পেলাম। আপনার মূল্যবান পরামর্শে উপকৃত হলাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
ক্যায়স বেশ চমত্কার কথামালায় সাজানো একটি গল্প উপহার দিয়েছেন ওয়াহিদ ভাই.. আজকালের দিনে বেশের ভাগ মানুষই মনে হয় উপকারীর উপকার স্বীকার করেননা, কেউ কেউ করলেও তাদের সংখ্যা অতি নগণ্য। দুনিয়াটা কেমন যেন স্বার্থপর মানুষজনে ভরে যাচ্ছে। যাই হোক ভালো থাকবেন।
সঠিক কথা বলেছেন। আপনার দীর্ঘ, সুন্দর, অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্যের জন্য আপনাকে সীমাহীন ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন।
মিনতি গোস্বামী valo lagai prothom dinei vot dilam.
প্রথম দিনেই ভোট ও সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। শ্রদ্ধা জানবেন।
মিনতি গোস্বামী বেশ ভালো গল্প হয়েছে দাদা.সুভেচ্ছা রইলো.
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা জানবেন।

১৮ আগষ্ট - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪