নোমানের বুকের ভেতরে নিদারুণ কষ্ট অনুভূত করতে লাগলো। এইতো কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সে এমন হয়ে গেল। অথচ এখন থেকে ছয় সাত ঘন্টা পূর্বেতো সে এমন ছিল না। তখন তার মন ছিল ফুর ফুরে, উৎফুল্ল। কিন্তু কেন? কি হয়েছে ওর? কিসের জন্য জন্য এত কষ্ট বুকে চাপা দিয়ে শুয়ে আছে। হ্যাঁ সে ক্ষণিকের জন্য একটি চাঁদ হাতের কাছে পেয়েছিল, কিন্তু তা আবার হারিয়ে গেল। তাইতো তার বুকে এত কষ্ট চাপা দিয়ে আছে। বয়ে গেল তার জীবনে এক কাল বৈশাখী ঝড়। সে ঝড়ে তার হৃদয়টাকে ক্ষত বিক্ষত করে হয়ে গেল।
ক্ষণিকের জন্য ময়না কে কাছে পেয়েছিল নোমান। কিন্তু পরক্ষণেই তার কাছ থেকে নীড়হারা পাখির মতো চলে আসতে হলো। যে নোমান সারাক্ষণ হাসত, বন্ধুদের সাথে গল্প করত; সেই নোমানের কাছ থেকে আজ হাসি সম্পূর্ণ রূপে বিলীন হয়ে গেল। সে তার বুকের মনিকোঠায় রাখতে পরে নি সেই মহামূল্যবান রতœটি। কেন সে আজ সেই রতœটি ধরে রাখতে পারে নি?
নিঃসঙ্গ নোমান বিষন্ন মনে একাকি নিজের বিছানায় শুয়ে আছে। রাত অনেক হলো ঘুম নেই দু’চোখের পাতায়। মা এসে পাশে বসল। মায়ের আদর মাখা কোমল হাতটি নোমানের কপাল স্পর্শ করল। স্নেহের হাত বুলিয়ে বললো, বাবা নোমান এভাবে বিষন্ন মনে শুয়ে আছিস! ঘুমাসনি? অসুখ-টুসুখ করেনিতো?
নোমান বিছানা থেকে উঠে মাকে জাপটে ধরে ঠোঁঠের কোনে এক ঝলক হাসির রেখা টেনে বললো, না মা কিছু হয়নি। এতদূর জার্নি করে আসছিতো তাই খুব ক্লান্ত লাগছে। তাইতো ঘুম আসছে না।
মা চলে যাওয়ার পর আবার বিছানায় গা এলিয়ে ভাবছে নোমান। স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠছে ময়নার সাথে কাটানো সেই সুখের মুহূর্তগুলো। আর কি করেই বা ভুলে যাবে এই সোনালী স্মৃতিগুলো। তা কি ভুলা সম্ভব।
অনেকদিন যাবত নোমান ভাবছে আমিরের সাথে ওদের বাড়ী সিলেট যাবে। আমির তার কলেজ জীবনের প্রথম বন্ধু। কিন্ত যাবে যাবে বলে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। এবারের বসন্তে সিলেট যাবে বলে সিদ্ধান্ত হলো। বসন্তের আগমনে চারদিক মৌ মৌ করছে। আকাশে মেঘের কানাকড়ি নেই। পরিষ্কার নীলাকাশ। গাছে গাছে শিমুল, পলাশ ফুটেছে। ফুটেছে আরো নানা জাত ও রঙের বাসন্তী ফুল। কোকিলের কুহুতানে চারদিক মুখরিত হচ্ছে। এমন সুন্দর পরিবেশে বেড়াতে কারনা ভালোলাগে। তাইতো আর বিলম্ব না করে তড়িগড়ি করে সিলেটের উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে গেল দুই ভ্রমণ বিলাসী সৈনিক। নোমান কোন দিন সিলেটে যায়নি। আজ তার প্রথম ভ্রমণ। গাড়ীর জানালা দিয়ে তাকিয়ে প্রকৃতির সুন্দর দৃশ্য দেখছে নোমান। যতই সে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখছে ততই তার কাছে স্বপ্নের মত মনে হচ্ছে।
প্রকৃতির দৃশ্য দেখতে দেখতে কখন যে গাড়ী সিলেট শহরে পা রেখেছে তার খেয়াল নেই নোমানের। সূর্য যখন বিদায় নেবার আয়োজন সমাপ্ত করল, ঠিক তখনই দু’জন বাসায় গিয়ে পৌঁছল। কলিং বেল টিপতেই দরজা খুলে দিল এক তরুণী। এ আর কেউ নয় আমিরের বোন ময়না। নবম শ্রেণীতে পড়ে। গায়ের রঙ ফর্সা। হালকা পাতলা গড়ন। গোলগাল চেহারা। বেশ সুন্দরী। মায়াবী চোখে তাকিয়ে আমিরকে জিজ্ঞেস করলো, ভাইয়া ওনি কে?
আমির জবাব দিল, আমার বন্ধু নোমান।
ওহ্ ভাইয়া তাহলে আমার কাছে ওনার কথাই বলেছিলে?
মাথা নাড়িয়ে আমির জবাব দিল, হ্যাঁ।
ময়না বললো, আসুন নোমান ভাই। ভিতরে আসুন। বসুন।
দু’জনেই ঘরে প্রবেশ করল। চা বিস্কুট আপ্যায়ন করা হলো। ময়না মাঝে মাঝে আড় চোখে নোমানের দিকে তাকায়, আবার ফিরিয়ে নেয়। যখন চার চোখের মিলন হয়ে যায়, তখন লজ্জায় চোখ নামিয়ে নেয়। নোমানও নিজের অজান্তে ওর দিকে তাকায়। হৃদয়ের গভীর অনুভূতি দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে ওকে। এক পলক দেখে ক্ষণিকের সুখ অনুভূত করে। মাঝে মাঝে দু’চারটি কথা হয়। মিষ্টি মিষ্টি হাসি উপহার দেয়।
এভাবেই কেটে গেল রাত। সকাল হলো। কখন যে মনের অজান্তে দু’জন দু’জনাকে ভালোবেসে ফেলেছে তা বলা যাবে না। কিন্তু মনের ভালোবাসা মনেই রইল। কেউ কাউকে মুখ ফুঁটে বলার সাহস পায়নি। আর পারবেই বা কি করে মাত্র পরিচয়। এত অল্প সময়ে কী প্রেম ভালোবাসা হয়। প্রেম এতো সোজা নয়, যে একদিনের পরিচয়েই হয়ে যাবে। প্রেমের জন্য করতে হয় সাধনা। যে প্রেমের জন্য লায়লী-মজুন, শিরি-ফরহাদ, রাধা-কৃষ্ণ, ইউসুফ-জুলেখা সাধনা করেছিলেন।
ময়না মনে মনে ভাবে নোমান দেখতে মন্দ নয়, স্মার্ট চেহারা। সাহসী যুবক। ভাইয়ার বন্ধু। ওকে যে আমি নিজের অজান্তেই ভালোবেসে ফেললাম। কাল ওকে দেখার পর থেকে ময়নার চলাচল অনেক পরির্বতন হয়ে গেছে। সারা অঙ্গে তার প্রেমের শিখা দংশন করছে, তা কেউ বুঝতে পারে নি। ময়নার এখন আর একা একা থাকতে ভালো লাগে না। এ বায়না ও বায়নায় নোমানের কাছে এসে বসে। একেবারে গা ঘেষে। নোমানও ওকে বাঁধা দেয় না। ওর স্পর্শ যেন ওকে অনাবিল সুখ দেয়। এই সুখের জন্য হয়তো বিধাতা ওকে জীবনের আঠারটি রঙিন বসন্ত পার করে এখানে নিয়ে এসেছে। ক্ষণিকের ভালোলাগার মোহে পড়ে আজ তারা স্বপ্নের জগতে বিচরণ করছে। দু’জন দু’জনাকে নিয়ে রঙিন স্বপ্ন দেখছে।
ময়না এক সময় বললো, নোমান ভাইয়া, চলেন না চা বাগান থেকে ঘুরে আসি। চা বাগান দেখলে আপনার খুব ভালো লাগবে।
নোমান মুচকি হেসে বললো, অবশ্যই যাব। চা বাগান দেখার জন্যইতো তোমাদের এখানে আসা হলো।
নোমানের সম্মতি পেয়ে ময়না আজ খুশীতে বাহ্ বাহ্। এমন খুশী হয়তো সে কোনদিন হয়নি। মনের মত একজন বন্ধু পেয়ে ময়না আজ ধন্য। বিকেলে সূর্যের ত্যাজ যখন আস্তে আস্তে বিলীন হতে শুরু করল, ঠিক তখন নোমান, আমির ও ময়না রওয়ানা হয়ে গেল প্রকৃতির ছোঁয়ায় ধন্য সিলেটের চা বাগান দেখতে। সৌন্দর্যের লীলা নিকেতন সিলেটের সবুজ চা বাগান গুলো উচুঁ নিচু পাহাড়ের ঢালুতে অবস্থিত। প্রকৃতির অপরূপ শোভা দেখতে দেখতে এক সময় ওরা হাজির হয়ে গেল সবুজ চা বাগানে। বিকেলের লাল মিষ্টি রোদ এসে সবুজ চা পাতার উপর পড়ে চিক্ চিক্ করছে। এ এক অপরূপ দৃশ্য। চা বাগানের এসব দৃশ্য দেখতে দেখতে ওদের চোখ জুড়ালো। খুব হালকা লাগছে নিজেদেরকে। বিশেষ করে ময়না ও নোমানের মনটা আনন্দে নেচে উঠল। আশিক ভাবতেই পারে না সিলেটে এসে এভাবে ময়নার সাথে ঘুরে বেড়াবে। একটা ফুর ফুরে হাওয়া বয়ে গেল ওদের শরীর দিয়ে। একদম শান্ত পরিবেশ। কোথাও কোলাহল নেই। এ যেন অন্য এক জগত। সেখানে আছে শুধু ভালোবাসার অনুভূতি।
এখানে আর একটি আকর্ষণ হলো উঁচু পাহাড়। পাহাড়ের চূড়ায় উঠার জন্য ভ্রমণ বিলাসী তিনজনই পা অগ্রসর করলো। প্রকৃতির নীরবতা ভেঙ্গে অদৃশ্য শিল্পীর নিপূন হাতে সাজানো অপূর্ব সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের শান্ত পরিবেশে মনে হয় ওরাই আজ প্রথম ভ্রমণবিলাসী। আমির সামনে নোমান মাঝে আর ময়না পিছনে। সারিবদ্ধভাবে পাহাড়েরর চূড়ায় উঠছে ওরা। এমন সময় ময়না পিছন দিক দিয়ে ডেকে বললো, নোমান ভাইয়া আমিতো পরে যাচ্ছি, আহ্হা একটু ধরেন না। এ বলে দু’হাত সামনের দিকে অগ্রসর করে দিল। অমনি নোমান ময়নার হাতকে মুষ্টিবদ্ধ করে ধরল। একি! মুহূর্তে ময়নার শরীর রোমাঞ্চিত হয়ে গেল। গ্রীষ্মের রোদ যেমন লোহাকে গরম করে দেয় ঠিক তেমনি নোমানের স্পর্শে ময়নার শরীর গরম হয়ে গেল। নতুন এক অনাবিল সুখ অনুভব করল ময়না। নোমান কোন দিন কোন মেয়ের শরীর স্পর্শ করেনি। আজ প্রথম তার অভিজ্ঞতা। ময়নাকে ধরার সাথে সাথে ওর দেহের শিরা-উপশিরায় নতুন সুখানুভূতি জন্মালো। আশিক আস্তে আস্তে ময়নাকে টেনে পাহাড়ের চূড়ায় উঠাল।
ময়না আজ হালকা নীল রঙের থ্রিপিছ পরে আসছে। সেম্পু করা চুলগুলো হালকা বাতাসে উড়ছে। পাহাড়ের চূড়ায় উঠার আনন্দে প্রকৃতির রূপ দেখে তারুণ্যের অন্তরালে লুকায়িত কিশোরী ময়নার মনটা পুতুলের মত নেচে উঠল। এই পাহাড় বুঝি তাদের আগমনের জন্যই এতদিন তীর্থের কাকের মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে ছিল। মনে হয় তাদেরকে পেয়ে আজ পাহাড় ধন্য। সবুজ ঘাসে আবৃত উচুঁ-নিচু পথ ধরে ওরা হাঁটছে। কিছুক্ষণের জন্য ওরা হারিয়ে গেল প্রকৃতির সৌন্দর্যের সাগরে।
নোমানের সাথে ছিল ক্যামেরা। বন্ধি করলো তাদের স্মরণীয় স্মৃতিগুলো। ময়নার সাথে নোমান চা বাগানে ও পাহাড়ের চূড়ায় অনেকগুলো ছবি তুলল। নানা ভঙ্গিমায় ওরা তিনজনই ক্যামেরায় বন্ধি করল অসংখ্য ছবি। এরি মাঝ দিয়ে কখন যে, সূর্যি মামা পশ্চিমাকাশে অস্ত গেল তার খেয়াল নেই। আর থাকা যাবে না। তাইতো বাড়িতে ফিরতে হবে। মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বাড়ীর দিকে পা বাড়ালো ওরা।
পরদিন সকাল বেলা ভালো খাবারের আয়োজন করা হলো। ডাইনিং টেবিলে ময়না ও নোমান পাশাপাশি বসলো। দু’জন দু’জনার পা স্পর্শ করছে। ময়না তরকারী বেড়ে নোমানের প্লেটে দিচ্ছে। নোমান অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ময়নার দিকে। ময়না এক সময় বলেই ফেলল, কি ভাইয়া, অমন করে তাকিয়ে কি দেখছেন?
নোমান ধ্যান ভেঙ্গে বললো, কেন তোমাকে?
তখন ময়নার দু’ঠোটের মাঝখান থেকে একটি শব্দ উচ্চারণ করলো দুষ্টু!
এভাবে কেটে গেল কয়েকদিন। নোমান শাহ্জালাল (র) এর মাজার, জাফলং ও বিভিন্ন জায়গায় ময়নাকে নিয়ে ঘুরল। আর দু‘জনেই মনে মনে ভালোবাসার জাল বুনল। কিন্তু কেউ কাউকে মুখ ফুটে বলল না। না বলা কথাগুলো দু’জনেই বুকের মধ্যে চাপা দিয়ে রাখছে। বিদায়ের ক্ষণটি ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে। নোমান চলে যাবে মায়ার জাল ছিন্ন করে নিজ গন্তব্যস্থলে। রেখে যাবে অসংখ্য স্মৃতি আর ক্ষণিকের ভালোবাসা। এই স্মৃতি হৃদয়ে আঠার মত লেগে থাকবে। বিলীন হবে না কোনদিন। হৃদয়ের মনি কোঠায় থাকবে অনন্তকাল।
ময়নার মুখ মুহূর্তে কালো হয়ে গেল। যেমনি করে আকাশে মেঘ জমলে প্রকৃতি কালো হয়ে যায়। কোথা হতে যেন একগুচ্ছ কালি এসে পড়ল তার চোখে-মুখে। বিদায়ের ঘন্টা বেজে উঠল। শুরু হল দু’টি হৃদয়ের মাঝে কালবৈশাখী ঝড়। ঘন্টায় ষাট কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইছে ওদের অবাধ্য হৃদয়ে। এই ঝড় আজ তাদের দু’টি হৃদয়কে ছিন্ন-ভিন্ন করে দিবে। পাঠিয়ে দিবে দু’জনকে দুই মেরুর দুই প্রান্তে।
নোমান আজ ময়নাকে ছেড়ে চলে যাবে এ কথা ভাবতেই ওর মনটা বিষন্নতায় ভরে উঠল। হাহাকার করে উঠল হৃদয়টা। তার হৃদয় ব্যাংকে জমা না বলা কথাগুলো ময়নাকে বলতে পারেনি। তেমনিভাবে ময়নার হৃদয় ব্যাংকে জমা না বলা কথাগুলোও নোমানকে বলতে পারে নি। দু’জনের হৃদয়ে হাকারের সুর বেজে উঠল।
কাপড়-ছোপড় পড়ে নোমান যখন বাড়ি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত; ঠিক তখনি ময়না এসে তার সামনে দাঁড়ালো। ওর বিদায়ের ক্ষণ মুহূর্তে ময়নার হৃদয়টা ছিঁড়ে ফানা ফানা হয়ে যাচ্ছে। মনে মনে বলছে, নোমান ভাই আপনি আর কতটা দিন থেকে যান। আমার হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা না বলা কথাগুলো বলে মনটাকে হালকা করি। তা না হলে যে আমি শান্তি পাব না। কিন্তু কে শুনে তার হৃদয়ের আকুতি। শুন্যে মিশে হাওয়া হয়ে যায় তার এ সমস্ত কথাগুলো। ময়নার বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে কিন্তু মুখ ফোঁটে বের হচ্ছে না। শুধু চাতক পাখির মত নোমানের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। বোবা কান্নায় হৃদয়টা চুরমার হয়ে যাচ্ছে। আবার সে খোদার কাছে প্রার্থনা করে, হে রাহমানুর রাহিম! আমি যদি তাকে ভালোবাসার কথা না বলতেই পারলাম তাহলে কেন এই ক্ষণিকের ভালোবাসা দেয়ার জন্য তাকে আমার কাছে পাঠালে? কেন সে ভালোবাসা এখন আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে? ময়না আবার তার দৃষ্টি নোমানের দিকে নিক্ষেপ করে বলল, নোমান ভাইয়া আপনি যদি চলেই যাবেন তাহলে কেন আমাকে ক্ষণিকের ভালোবাসা দেয়ার জন্য আসলেন?
এ প্রশ্নের জবাব দেয়া বড়ই কঠিন। নোমানের কাছে এ প্রশ্নের জবাব নেই। মুখের ভাষা কে যেন কেড়ে নিল। এরি মাঝ দিয়ে ময়নার চোখ বেয়ে একটু ফোঁটা বেদনাশ্রু টপ করে মাটিতে গড়িয়ে পড়লো। মুহূর্তে চোখ দু’টোকে ওর দৃষ্টি থেকে নামিয়ে ওড়নার আঁচল দিয়ে মুছে ফেলল।
যেতে নাহি দিব হায়, তবু যেতে দিতে হয়, তবুও চলে যায়- কবির সেই মূল্যবান পংক্তিকে ধারণ করে নোমান সামনের দিকে পা বাড়ালো। এক পা দু’পা করে সামনে এগুচ্ছে আর ঘাড় ফিরিয়ে ময়নাকে দেখছে। ময়না অপলক দৃষ্টিতে তার গমনাপথের দিকে চেয়ে রইল। এই চাওয়ার যেন শেষ নেই। কে জানে এভাবে কতক্ষণ নোমানের জন্য দাঁড়িয়ে রইল। নোমান হাঁটতে হাঁটতে গাড়ীতে এসে উঠল। সে বিষন্ন মনে বাড়ী ফিরল।
ময়না বিছানায় শুয়ে মুখ গুজে ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। নোমান যাবার বেলা রেখে গেল ময়নার জন্য একগুচ্ছ স্মৃতি। আর নোমান বিছানায় শুয়ে ফেলে আসা ঐসব স্মৃতিগুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে নিজের অজান্তে ঘুমিয়ে পড়লো তা টেরও পেল না।
১৬ আগষ্ট - ২০১৩
গল্প/কবিতা:
২১ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪