গায়ের দরিদ্র পরিবারের সন্তান সুমন। দারিদ্রতার কারণে লেখা পড়াও করতে পারেনি। চার ভাই দু'বোনের মধ্যে সে সবার বড়। কিছুদিন আগে বাবা মারা গিয়েছে তাই সংসারের সব দায়িত্ব এখন সুমনের কাধে। নিজেদের এক খন্ড জমির উপর ভিটে বাড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। ঠিক মতো তিন বেলা খাবার জোটেনা তাদের ভাগ্যে। চিন্তায় এখন সুমনের চোখে ঘুম নেই। গ্রামে আয়ের কোনো উত্স নেই। কৃষি কাজ করার জন্য নিজেদের জমি নেই। গরু-ছাগল নেই। এখন বিধবা মা-ভাই বোনদের নিয়ে বাচবে কিভাবে? একজনের পরামর্শে সুমন ঢাকায় আসে একটি চাকরির আশায়। কিন্তূ কোথাও কর্ম খালি নেই। ঢাকায় আগে থেকেই মানুষের ভীর। যানজট, নষ্ট পরিবেশ নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে সুমনের। রাত যাপন করার ঠাই হিসেবে বেছে নিতে হয় রাজধানীর ফুটপাথ। একটি প্রতিষ্ঠানে দারোয়ান পদে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যায় সে। নিজের নাম পর্যন্ত লিখতে জানে না তাই চাকরিটা হয় না তার। বাইরে বেরিয়ে আসে সুমন। পথে হেটেই চলছে। মাথায় অনেক চিন্তা। কী করবে এখন? হাটতে হাটতে একটি গলির ভিতর প্রবেশ করে সে। লক্ষ্য করে গলিতিতে চা-সিগারেটের কোনো দোকান নেই। তাত্ক্ষণিক ভাবে তার মনে হয় এই গলিতে একটি চায়ের দোকান দিলে ভালোই বেচাকেনা হবে। মহল্লার ক'জনকে নিজের দুঃখের কথা বলে সুমন। মহল্লার লোকজনদের দয়া হয়। তারা সুমনকে চা-সিগারেটের দোকান বসানোর অনুমতি দেয়। গায়ে গিয়ে নিজেদের ভিটে বাড়ি চেয়ারম্যানের কাছে বন্ধকী রেখে কিছু টাকা ধার নিয়ে আবার ঢাকায় আসে সুমন। সেই টাকা দিয়ে মহল্লার গলিতে একটি চায়ের দোকান দেয় সুমন। প্রথম দিন থেকেই জমজমাট হয়ে উঠে তার দোকান। এক মাসের মধ্যেই চেয়ারম্যানের পাওনা টাকা পরিশোধ করে ভিটে বাড়ি ছাড়িয়ে নেয়। দু'মাস পর ঈদে গায়ে যায় সুমন। যাওয়ার সময় মায়ের জন্য শাড়ি। ভাই বোনদের জন্য নতুন জামা-কাপড় কিনে নিয়ে যায়। বিধবা মা শাড়ি পেয়ে খুব খুশি হয়। ছেলের জন্য দোয়া করতে থাকে। এছাড়াও ভাই-বোনরাও নতুন জামা-কাপড় পেয়ে খুব খুশি। আনন্দে মন ভোরে যায় সুমনের। ঈদ শেষে মা ভাই-বোন সবাইকে ঢাকা নিয়ে আশে। ভাই-বোনদের স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সুমন তার চায়ের দোকানটি আরেকটু বড় করে। মহল্লার সবার সাথে এখন তার ভালো সম্পর্ক। কিভাবে ঢাকায় টিকে থাকতে হয় সব জানা হয়ে গিয়েছে। প্রথম প্রথম বাকিতে বিক্রি করলেও এখন দু'একজন মহল্লার সন্ত্রাসী ছাড়া কাউকে বাকি দেয় না। দু'বছর পর অন্য জায়গায় একটি বিশাল বড় মুদির দোকান দেয় সুমন। দোকানের ভাড়াও খুব বেশি না। আগের চায়ের দোকানও থাকবে। অভাব দূর হয়ে যায় তার। কয়েক বছর পর আরও দু'টি দোকান হয়। এখন বিস্তর টাকার মালিক সুমন। ঢাকার স্থায়ী পরিবারের এক মেয়েকে বিয়ে করে। শশুরের নিজের বাড়ি। বিশাল টাকার মালিক। শশুরের বুদ্ধিতে নিজে একটি বাড়ি কিনে ঢাকায়। সুমনের ব্যবসা এখন অনেক বড়। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রতিদিন আকর্ষনীয় সব অফার নিয়ে আসে ব্যাংক কর্মীরা সুমনের কাছে। লোন দেয়ার জন্য। তাদের প্রস্তাবে ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে সুমন। প্রয়োজনীয় সব কাগজ পত্রে সাইন করতে ব্যাংকে যায়। ব্যাংক ম্যানেজার সব কাগজ পত্র পড়ে স্বাক্ষর করতে বলে। সুমন বলে পড়ার প্রয়োজন নেই আমি পড়তে জানিনা কালি দিন টিপসই করে দিচ্ছি। আরে বলেন কী? আপনি এত ধনী মানুষ আর পড়তে লিখতে জানেন না। ম্যানেজার কিছুটা আশ্চর্য হোন। জবাবে সুমন বললো,পড়তে লিখতে জানি না বলেই আজ আমি এত ধনী। যদি পড়তে লিখতে জানতাম তাহলে আজ আমি দারোয়ানের চাকরি করতাম।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নৈশতরী
জটিল ! গল্পের কিছু বিষয় অস্পষ্ট যেগুলো বিষাদ বর্ণনা দাবি করে ! আর সব থেকে বড় কথা এত ছোট গল্প তবুও মিলের ব্যপার টা কিন্তু আমার খুব ভালো লেগেছে ! এগিয়ে যান বন্ধু শুভকামনা রইলো !
আহমেদ সাবের
যদি কল্প-কাহিনী হয়, তাহলে ঠিক আছে। যেহেতু এটা কল্প-কাহিনী নয়, গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠা অস্বাভাবিক কিছু নয়। বেশ ঝরঝরে লেখা। ভাল লাগল গল্প।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।