বন্ধু(?): বন্ধ! উহ্!

বন্ধু (জুলাই ২০১১)

প্রদ্যোত
  • ২৫
  • 0
  • ১৮
সেই শৈশব থেকেই কেউ না কেউ একান্ত কাছের হয়ে থাকতো। একান্ত কাছের ছাড়াও মহল্লা এবং ক্লাসের সবার সাথে ভালোই ভাব থাকতো। আশেপাশের সবারই ভালবাসা পেতাম। কতগুলো কারন ছিল এর পেছনে। মেধাগত ভাবে জেলা স্কুলে সব সময় প্রথম তিন এর মধ্যেই থাকতাম বলে ক্লাস ক্যাপটেইন এর দায়িত্ব থাকতই। স্কাউটিং করতাম এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সবধরনের কর্মকান্ডে অংশগ্রহন থাকতো। তাছাড়া কথা এবং বিবিধ কর্মকান্ড দিয়ে মোটামুটি সবারই মনে স্থান করে নিয়েছিলাম (যে অভ্যাস এখনও ধরে রেখেছি)।
কিণ্তু কোনো বন্ধুই আমার ‘আমি’টাকে তৃপ্ত করতে পারতনা বা পারেনি। তাই একান্ত কাছের হয়ে থাকা সংঙ্গীরা খুব ঘনঘন পরিবর্তন হতো। তবে পুরানো কারো সাথেই সম্পর্ক ছিন্ন হতোনা। ওগুলো সাবসিডিয়ারি বিষয় হয়ে থাকত। তারা আমার কাছে আসতো। আমিও সময় দিতাম। ওরা আসতো মজা নিতে। দিতাম উজাড় করে।
আমার কল্পনায় একজন সঙ্গী ছিল। তার সাথে যাদের কিছু মিল পেতাম তারাই বন্ধু হতো। কিণ্তু অল্প দিন যেতে না যেতেই ওদের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতাম। আমার কল্পনার সঙ্গীর সাথে বিস্তর তফাৎ ওদের। খুব ছোট বেলা থেকেই অন্যায়, মিথ্যা, কটুকথা, মৌলবাদিতা, পরনিণ্দা, পরচর্চা, হিংসা, দেশদ্রোহিতা, পাকিস্তান-প্রীতি এই সব বিষয়গুলো সহ্য করতে পারতাম না। সামান্য বাকবিতন্ডায় যখন প্রিয় বন্ধু দের মুখ থেকে (“মালাউন”, “নোমো”, “আকাটা”, “হিন্দু হিন্দু তুলশিপাতা, হিন্দুরা খায় গরুর মাথা”) – এসব শব্দ উচ্চারিত হতো, অসম্ভব কষ্ট পেতাম। হিনমন্যতায়ও ভূগতাম কখনও। নিভৃতে কতোযে কেঁদেছি!
আমার একটা নিজের জগৎ তৈরী হলো। ডাকটিকিট সংগ্রহ করতাম (এখনও বিশাল সংগ্রহ আছে, আধুনিক ভাবে সংরক্ষীত), ডিএক্সিং করতাম (বিদেশী বেতার/রেডিও শুনে রিপোর্টিং করা; ওরা অনেক উপহার পাঠাতো: ডাকটিকিট, ভিউকার্ড, ব্যাজ, স্টিকার, আরো অনেক মজার মজার জিনিস), কবিতা লিখতাম (তবে পরিবার বা বন্ধুদের উৎসাহ পেতাম না, বরং হিংসা বা অবিশ্বাসের শিকার হতাম)।
শৈশব-কৈশোর পেড়িয়ে যখন তরুন। মনে হল কয়েকজন সাথী হলে হয়তো চলার পথটা সাচ্ছন্দময় হেবে। আমি, শান্তনু, লেনিন, সাকিল, খসরু, মাহমুদ –এই ছয় জন মিলে একটা মজবুত টিম হল। ক্লাসের সেরা ছয়। বাঁদরামিতেও সেরা ছয়। সিক্স অলরাউডারস। এক সাথে খেলতাম, লাইব্রেরীতে যেতাম, একই ব্যাঁচে স্যারদের কাছে পড়তাম। গ্রুপটার একটা নাম ছিল ICF (International Click Federation)। পিরোজপুর শহরের সবাই চিনতো। স্কুল ও কলেজের এমন কোনো ভালো কাজ বা খারাপ কাজ নাই যা আমরা করিনি। আমার জীবনের বন্ধুত্বের শ্রেষ্ঠ সময় ওটা। কলেজ পেড়িয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম। ওরা সবাই স্বস্বক্ষেত্রে সফল। আমিও গর্বিত ওদের সাফল্যে।
এরপর আমি একা। অনেকের মধ্যেই খূঁজেছি আমাকে। পাইনি। অতঃপর নিসঙ্গতাকেই সংগী করে অচেনা গন্তব্যের পথে অন্তহীন যাত্রা (After passing a long passage of friendship, I’ve discovered that I, myself is the one and only friend of mine!)।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নিলাঞ্জনা নীল সারা জীবনে কত মানুষের সাথে দেখা হয় কথা হয় তার মাঝে প্রকৃত বন্ধু পাওয়া কঠিন এবং দুষ্প্রাপ্য....
ভালো লাগেনি ১৯ জানুয়ারী, ২০১২
মোঃ আক্তারুজ্জামান I’ve discovered that I, myself is the one and only friend of mine!- আমার নিজের অনুভূতিটাই যেন প্রকাশ পেল আপনার লেখায়, চমত্কার|
মিজানুর রহমান রানা আত্মকথন বা স্মৃতিকখনের মতোই মনে হলো। গল্পের মতো পরিপূর্ণতায় প্রকাশ করতে আরো খানিকটা বিস্তৃত করলে ভালো লাগতো। ধন্যবাদ, শুভ কামনা থাকলো।
junaidal বন্ধু আমরা মানুষ ছিলাম একা। আসছি একা। যাব একা। কিন্তু মাঝে একটু অন্যের সাথে দেখা। এটাই তো চিরাচিত সত্য বাস্তব।
প্রজাপতি মন কষ্ট লাগলো আপনার জন্য, অবশ্য সেই অর্থে বলতে গেলে মানুষ মাত্রই একা, আর মানুষ নিজেই তার শ্রেষ্ঠ বন্ধু. তবু বলব চলার পথে একজন ভালো বন্ধুর খুব প্রয়োজন যে সুখে-দুখে আপনার পাশে থাকবে.
বিন আরফান. বন্ধু গল্পটি ভালো লাগলো বিশেষ করে স্কাউটিং মানুষকে তার যথাযথ কর্তব্য পালনে + দেশ ও মানব প্রেম জাগ্রত করা + কঠোর পরিশ্রমে অভ্যস্ত করা সহ ভালোর দিকে ধাবিত করে. ব্যাডেন পাওয়েল আমার প্রিয় ব্যক্তিদের একজন. তার গড়া স্কাউটিং এর কথা গল্পে দেখে অতীতে ফিরে গেলাম. পিআরএস করার সময় যে স্লোক গুলো বলেছিলাম তাও মনে এসে গেল আর মিটি মিটি হাসলাম সে সময়ের বন্ধু + একতা এখন আর দেখি না. হুক্কাহুয়া আমি বলতাম সকলে বলত ওয়া ওয়া কিযে ভালো লাগত ! সে জন্য গল্পটি আমার হৃদয় কেড়েছে. তবে ইংরজি মিশ্রণ বাংলা গল্পে আমার ভালো লাগেনা. আগামীতে সতর্কিত হবেন বলে বিশ্বাস. আদাব
আহমেদ সাবের আমাদের সবারই এমন একটা দিন ছিল। ধন্যবাদ, মনে করিয়ে দেবার জন্য।
রনীল After passing a long passage of friendship, I’ve discovered that I, myself is the one and only friend of mine!... খুব সুন্দর লিখেছেন... কল্পনার চরিত্রের সাথে বাস্তবের কখনো মিল হয়না... আপনার লেখায় উল্লেখিত কষ্টের সাথে আমি পরিচিত... এটা অত্যন্ত অমানবিক এবং লজ্জার একটা ব্যাপার আমাদের জন্য... এখন ও এরকম অনেক অসংগতি দেখি... কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারিনা... ভালো থাকবেন।
উপকুল দেহলভি সৃষ্টি কর্তাকে বন্ধু বানিয়ে ফেলুন দেখবেন, অন্য কপট বন্ধুদের দেয়া কষ্টকে আর কষ্ট মনে হচ্ছেনা. আপনার ভোটের জায়গায় লেখাটা খুব সুন্দর. এগিয়ে যান সোনালী আগামীর পথে, শুভ কামনা রইলো.
খন্দকার নাহিদ হোসেন আপনার মতই এক সত্য কথন আমি আমার কবিতায় দিয়েছি। আসলে আমাদের সবার-ই নিজস্ব কিছু কথন থাকে, মন চায় কেউ জানুক। ভালো থাকুন।

৩১ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৫৯ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪