নরীর চোখে দেশ

দেশপ্রেম (ডিসেম্বর ২০১১)

মোঃ শরীফুল ইসলাম শামীম
  • ১৫
  • 0
  • ১৬
ক্রমগত ভাবে প্রায় দুইমাস হয়ে গেল। কেউ কেউ মাটি গর্ত করে আশ্রয় নিচ্ছে। কেউ ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে বসে থাকে। কেউ দেশ প্রেম নিয়ে ঝাপিয়ে পরে। আবার কেউ জন্ম ভূমি ত্যাগ করে ভারতে চলে যাচ্ছে। কেউ যুদ্ধ আওয়ার জন্য মুক্তিবাহিনী গড়ে তুলছে।
বাতাসে কান্না হাই মাই আওয়াজ ভেসে আসছে রহিমার স্বামী সন্তানকে পাক বাহিনীরা বেঁধে মারছে। রহিমা পাকবাহিনীর হাতপা ধরে কান্নাকাটি করে বলছে- আমার স্বাঈ সন্তান রে ছাইড়া দেন। রহিমা কোন কথা না শুনে। তারা সামনে তার স্বামী সন্তানকে গুলি করতে থাকে। রহিমা বজ্রের মত চিৎকার দিয়ে উঠে। তার বজ্র কন্ঠের স্বরে গাছের পাতা অকালে ঝরে মাটিতে লুটি পরে। পাখি গান গাওয়া বন্ধ করে দেয়। গগনে কুহেলিয়া অন্ধকারাচ্ছন হয়ে পরে। রহিমা কে পাকবাহিনী জোর করে নিয়ে যায় তাদের কুড়ে ঘরে।
চারি দিকে হিঃস্র প্রনীর গর্জন শোনা যাচ্ছে। রক্তের গন্ধে অনেক পশুপাখি ছুটে আসে। শুকুনিরা তাদের মৃত দেহ ব্যবচ্ছেদ করছে শিয়াল এসে মৃত দেহের পা ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। আর রহিমা ঘর থেকে এখানে বেড় হয়নি। প্রায় দুই দিন পর ছিন্ন বস্ত্র নিয়ে দাওয়ায় এসে দাড়িয়ে ঝাপসা ঝাপসা চোখে তাকিয়ে রক্তের ছাপায় তার স্বামী সন্তানের সাদৃশ্য দেখছে। মনে হচ্ছে সে দিনের স্মৃতি পাতা। স্বামী কৃষি কাজ করে ঘরে ফিরে এসে আলোকিত হাসি দিয়ে কথা বলছে। তার ছেলে রতন যেন কিরনের মত হাসি ছড়িয়ে তার মা কে বুকে জড়িয়ে ধরে। নানান কথা বলছে। মায়েরও তার সাথে বুঝি দৃষ্টিমিতে কথা বলছে। মায়েরও তার সাথে বুঝি দুষ্টিমিতে মেতে উঠে। বাবা ছেলে যেন মজার কথা বলে পাহাড় থেকে ঝর্ণার মত মাটিতে লুটে পরছে। হা... হা... করে। আর মা যেন তা দেখে মৃদু হাসি থামিয়ে দিচ্ছে। সেই স্মৃতি আজ রহিমার চোখের পাতায় এসে ভীর করেছে। চিৎকার করে যে কাঁদবে সেই শক্তি আজ তার গায়ে নেই। নেই তার পালায় কথা বলার মত শব্দসমূহ। শুধু অশ্রু ধারা পরছে তার দুই আখি থেকে কয়েকটি দিন ধরে ও ভাবেই বসে আছে। মানুষ নয়, পাথরের মূর্তি বুঝি দাওয়ায় রক্ষন আছে। তাকে মশা কামড় দিচ্ছে, মাছি এসে সামনে দিয়ে ঘুর ঘুর করছে। পিপিলিকা দলবদ্ধ হয়ে চলছে। তাদের মধ্যে একটি পিপিলিকা তার ওজনের চেয়ে বেশি ওজনের একটি খাদ্রবস্তু নিয়ে টানছে। রহিমা তা দেখে একটু নড়েচড়ে উঠল মননে হল তার মনে বেঁচে থাকার জন্য স্পৃহা বেড়ে যাচ্ছে। একটি পিপিলিকা তার বেঁচে থাকার স্বপ্ন জাগিয়ে তুলে দিয়েছে। রাতের আধারে কে যেন পাক বাহিনীর চোখে ফাকি দিয়ে মুক্তি বাহিনীর খাটে গিয়েছে । মুক্তি বাহিনী পায়ের শব্দ পেয়ে নড়ে চড়ে প্রস্তুত হয়ে উঠে অপরেশনের জন্য। ফায়ার করবে এমন সময় জোৎসনার আলোতে একটি মেয়ের সাদৃশ্য লক্ষ দেখতে পেলে। মুক্তি বাহিনীর দলনেতা গুলি করতে নিষেধ করে। মেয়েটি এসে বলে - আমি রহিমা আমি আপনাগো সাথে যুদ্ধ করুম, সবাই মেয়েটির কথা শুনে রসিকতা স্বরে হেসে উঠে। রহামা অনেক বলল আমি যুদ্ধ করতে পারব। কিন্তু তারা তাকে ঝামেলা মনে করে নানা কথা বলে। অবশেষে সে সেখান থেকে ফিরে আসে। সে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য অনেক মুক্তিবাহিনীর কাছে গেলে তারা কেউ বলে- গোপন খবর এনে দিতে, কেউ বলে মুক্তিবাহিনীর রান্নাবান্না করে দিতে। এসব করতে পারলে তাদের সাথে থাকতে বলেছে। কিন্তু নহিমা অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করবে। তাই সে তাদের কথায় রাজি না হয়ে ছেলেদের পোশাক পরিধান করে যুদ্ধ করতে শুরু করে একটি দরের সাথে কয়েকটি ঘাটি দখল করে সে একাই। একের পর এক অপারেশনে সাফল্য লাভ করে ফিরে আসে।এক একটি গুলি বারুধ তার সন্তান স্বামীর কথা মনে করিয়ে দেয়। সেই ইচ্ছা শক্তি দিয়ে সে এগিয়ে যেতে লাগে প্রতি অপারেশনে। থেমে গেল গোলা বারুদের শব্দ। গগনে সাদা মেঘের ভেলা ভেসে ভেসে তার গন্তব্য স্হান যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছে। এক ঝাক পাখি উড়ছে মুক্ত আকাশে। লাল সবুজের নিশান উড়ছে,সবার জন্য কেউ না কেউ অপেক্ষা করছে। আবার কার ও জন্য অপেক্ষা করার মত কেউ নেই। তাদের মধ্যে রহিমা ও আছে। অশ্রু চোখে আজ স্বাধীনতার গল্প বানি নিয়ে ঘরে ফিরছে। কিন্তু সেই স্বাধীনতার গল্প শোনার মত কেউ নেই। তবু তার মনে বেঁচে থাকার স্বপ্ন আছে। দেশ কে নিয়ে। এদেশ আজ তার স্বামী সন্তান। বছেরর পর বছর কেটে গেল পরিবর্তন হয়ে গেল সমাজ ও দেশ এবং কি দেশের মানুষ আজ গ্রাম ,গ্রাম নেই, শহর আর শহর নেই সবই উন্নতির শিকড়ে পৌচ্ছেছে। কিন্তু ঐ রহিমার কিছুই পরিবর্তন হয় নি। তার সেই কুড়ে ঘর। সেই কুড়ে ঘরই রয়েছে। তার সেই মন, সেই মনই রয়েছে।শুধু আগের চেয়ে কুঁড়ে ঘরের অবস্থা বেহাল হয়েছে। আজ চাল দিয়ে বৃষ্টির পানি পরে। বেড়া নেই । নেই রহিমার ঔষধ কিনার টাকা। অথচ তার পাশে আজ ইটের বাড়ী। সে আজ অন্ন পায় না। অন্যের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কয়েক মুঠ চাউল খুজে আনে। পেট কে দিয়ে বেঁচে থাকার জন্য। যাকে এক কথায় বলা হয় ভিক্ষা করা। আজ সে ভিক্ষা করে খায়। অসুস্থ শরীর নিয়ে অন্ন্য জোগানোর জন্য ভিক্ষা করতে বেড়িয়ে পরে কাশতে কাশতে। পথের মধ্যে এক পথচারী তাকে তিস্কার করে বলে উঠে ওরে বুড়ি ,এত দেশ দেশ কও ,এই দেশ তোমারে কি দিয়েছে। তুমি বলে যুদ্ধ করছ। রহিমা হাসি দিয়ে বলে ওরে গোলামের ঘরে গোলাম। দেশ কি দিব দেশের কি হাত পা আছে। দেশ যে কিছু দিব। আর কিছু পাই নাই , দেশ বেঁচে থাকার জন্য স্বপ্নের বীজ দিয়েছে, এটাই তো সব চেয়ে বড় পাওয়া। পথচারি নিতি কথা শুনতে চায় না । তাই কথা বলার মধ্যেই চলে যায়। আর রহিমা তার অন্ন্যের সন্ধানে চলে যায় আর এটাই তার.......
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সূর্য বাক্যগঠন দুর্বল, আর বেঠিক শব্দ ব্যবহার খুব চোখে লাগছে [। রহিমা কোন কথা না শুনে। >এই বাক্যে কিছু বুঝার উপায় আছে? মানুষ নয়, পাথরের মূর্তি বুঝি দাওয়ায় """রক্ষন""" আছে। এখানে রক্ষন কেন হবে রক্ষিত হতে পারে অথবা লিখতে পার <মানুষ নয়, যেন একটি পাথরের মূর্তি দাওয়ায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে> । আরেকটু মমত্ব দেখাও না ভাই। অনেক অনেক শুভকামনা রইল। আর উৎসাহে যেন ভাটা না পড়ে তার জন্য ভোটও থাকলো।
sakil সকলের মন্তব্য দেখো সেগুলো থেকে শিখা নেও . আশা করি তুমি এরচেয়ে ভালো লিখবে
M.A.HALIM চমৎকার একটি গল্প। বন্ধুর জন্য শুভ কামনা রইলো।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি কাঁচা হাতের লেখা তবে মনের জোর অনেকটা প্রবল বলে মনে হল ।কিছুটা কল্পনার প্রভাব লক্ষ্র্র্য রকলাম। তাই মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস আরো ভালো করে জানা দরকার।লেখককে ধন্যবাদ......
মামুন ম. আজিজ দেশ যে কিছু দিব। আর কিছু পাই নাই , দেশ বেঁচে থাকার জন্য স্বপ্নের বীজ দিয়েছে, এটাই তো সব চেয়ে বড় পাওয়া। .....................জটিল বলেছ
ওয়াছিম গল্পের প্রতিটি লাইন আলাদা ভাবে একটি অর্থ বহন করে বলে আমার মনে হল......... ভাল লেগেছে শেষ আংশ টুকু। তবে লাইন গুলো ছাড়া ছাড়া মনে কল।
রোদের ছায়া কাহিনী খুব ভালো,.......কিন্তু বাক্য গঠনে আরো যত্নবান হতে হবে , বানানের দিকেও খেয়াল থাকে যেন/ গল্পের শেষ ২তি লাইন খুব ভালো কিন্তু প্রথম লাইনটি যেন একটু খাপছাড়া হয়ে গেল / (সমালোচনা করলাম কিছু মনে করোনা,) যার গল্পকবিতার সংখা ৩২ তার কাছে কিন্তু আরো সাবলীল লেখা আশা করে সবাই /
প্রজ্ঞা মৌসুমী বানান এদিক-ওদিক হয়েছে অনেকটাই; হয়তো লেখাটা তাড়াহুড়ো করে শেষ করতে হয়েছে। গল্পের থিমটা সুন্দর ছিল। "সবাই মেয়েটির কথা শুনে রসিকতা স্বরে হেসে উঠে।" ওঁদের এই মানসিকতা ছিল মানতে পারছি না। মুক্তিবাহিনীর নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, আস্থা এতটা কম বোধহয় ছিল না। ট্রেনিংটাই আসল; অস্ত্রহাতে অনেক নারীই যুদ্ধ করার সুযোগ পেয়েছে। "সেই স্বাধীনতার গল্প শোনার মত কেউ নেই" খারাপ লাগলো। আমরা কিন্তু সত্যিকারের একাত্তরের ইতিহাস জানতে চাই। কোন কাজই তো ছোট নয়। তাই চাই প্রতিটি মুক্তিযোদ্ধা যে পেশাতেই থাকুক তারা তাদের প্রাপ্য সম্মান আর মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকুক। আপনার ভাবনা সুন্দর। চেষ্টা থাকলে ভালো করবেন- শুভ কামনা থাকলো।
পাঁচ হাজার মোটামোটি ভালই। তার মধ্যেও বিশেষ করে "দেশ বেঁচে থাকার জন্য স্বপ্নের বীজ দিয়েছে। এটাই তো সবচেয়ে বড় পাওয়া।" এই লাইনটা তো অসাধারণ।

৩১ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪