পশুকূলে শিয়ালকে কেউ পন্ঠিত ভাবে কী না, শিয়ালের কাছে এরুপ তথ্য নেই।কিন্তু মনুষ্যকূলে যে,তাকে পন্ঠিত বলে সম্বোধন করে, এটা তার ভালো ভাবেই জানা আছে।অনেক বছর শিয়াল নেই;ইহজগত ছেড়ে চলে গেছে।তার জায়গায় তার সহধর্মিনী শিয়ালনি জায়গা করে নিয়েছে।
ঘাত-প্রতিঘাত,দুঃখ-কষ্ট সহ্য করে এমন কী কেখনো কখনো আনন্দ করেই কেটেছে শিয়ালনির এতকাল।কুটবুদ্ধিতে শিয়ালের মত শিয়ালনিও কম নয়।কুটবুদ্ধি প্রয়োগ করে,পুশু প্রধানের দায়িত্বও পালন করেছে বেশ কয়েক বছর।আজ আর সে,সে জায়গায় নেই।পশু প্রধানের দায়িত্বে রয়েছে এখন বাঘিনী।এখানেই যত গন্ডগোল!
অনেক দিন ধরেই শিয়ালনী একটার পর একটা কৌশল তৈরি করেছে,বাঘিনীকে পশু প্রধান থেকে কিভাবে সরানো যায়।কিন্তু কোনো কৌশলই তার কাজে আসেনি।হঠাৎ করেই সে সুযোগ এসে গেল শিয়ালনরি কাছে।হরীণ সমপ্রদায়কে নিরীহ প্রাণি বলে,গালিগালাজ করেছে,বয়সে কম,অথচ বুদ্ধিতে পাকা কিছু যুবক পশু।হরীণ সমপ্রদায়কে, কে আর রুখে,হরীণ সমপ্রদায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়ে বসল।শিয়ালিনী কী আর বসে থাকে,সে হরীণ সম্প্রদায়ের পাশে গিয়ে দাঁড়ল।বলল,সব রকমের সহযোগিতা করা হবে।কিন্তু আমার লাশ চাই;হাজার হাজার লাশ।কিন্তু বোকা হরীণ সম্প্রদায় কী আর শিয়ালনীর কুট বুদ্ধির রহস্যটা জানত!
হরীণ সম্প্রদায়কে নিরীহ প্রাণি বলে গালিগালাজ আসলে ছিল একটা ইসু মাত্র।এর পিছনে অন্য একটা ঘটনা আছে।
কিছু কুকুর নিজ গৃহ মনিব ছেড়ে,অন্য গৃহ মনিবের গৃহে অবস্থান নেই।তারা নিজ গৃহটাকেই শত্রু গৃহ বলে ঘোষণা করে বসে।অবশেষে লাঠালাঠি,ফাটাফাটি,ঘেউ ঘেউ। এর পর ঐ সব কুকুর গুলো পরাজিত-এই পারাজিত কুকুরদের বিচার হচ্ছে।যেহেতু তারা নিজ গৃহ মনিবের সঙ্গ ত্যাগ করে অন্য গৃহ মনিবের পাশে দাঁড়িয়েছে,তাদের বিচার হওয়াই স্বাভাবিক।কিছুকিছু কুকুরের বিচারের রায় ও হয়েছে।কিন্তু শাখারী বাজারের ঠ্যাটারী কুকুরের রায় নিয়েই যত বিপত্তি।তার রায় টা যুব পশুদের কাছে গ্রহনযোগ্য হল না।তারা জমায়েত হতে লাগল এবং ঠ্যাটারী কুকুরের এ জঙ্গল হতে চিরতরে বিদায় দাবী করে বসল।দাবীটা যখন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে লাগল তখন কুকুর সম্প্রদায়,হরীণ সম্প্রদায়কে বল,এই যুব পশুরা,তোমাদের নিরীহ পশু বলে গালিগালাজ করেছে।
হরীণ সম্প্রদায়কে কে আর ঠেকায়।হরীণ সম্প্রদায়ের নেতা,যুব পশুদের বলে বসল,তোমরা পশু নামের কলঙ্ক!তোমরা নাপশু!
জঙ্গলের মধ্যে একটা অরজগতা শুরু হয়ে গেল।এটা নিয়ে বাঁদর সমপ্রদায়ের মধ্যে রসাল যুক্তিতর্ক শুরু হয়ে গেল।প্রতিদিনের গরম খবর হয়ে উঠল এ সমস্ত বিষয় নিয়ে।বাঁদরদের বাঁদরামি আরও বৃদ্ধি পেল।
কচ্ছপ নিরীহ প্রাণি। ধীর গতিতে চলতে অভ্যাস্ত।তারা ভালোতেও নেই;মন্দতেও নেই।তাদের মধ্যে হতাশার ছাপ স্পষ্ট হতে লাগল।তারাও বলতে শুরু করল,জঙ্গলে এ কোন অরজগতা শুরু হল।তারা বলাবালি শুরু করল,দেশে এত পুরুষ পশু থাকতে,কেন যে সকলে নারী পশুকে প্রধান করল!
দিন যতই যায়,হরীণদের মহাসমাবেশ ততই এগিয়ে আসতে লাগল।অবশেষে মহাসমাবেশের দিন এসে গেল।হরীণদের মহাসমাবেশ শুরু হয়ে গেল।কথা ছিল,সন্ধ্যের আগেই মহাসমাবেশ শেষ করে,হরীণরা,যে যার জায়গা,সে সে রকমভাবে ফিরে যাবে।কিন্তু ভেজাল বাধিয়ে বসল শিয়ালনী।সে বলে বসল,মহাসমাবেশ শেষ করা যাবে না,যতক্ষণ দাবী মানা না হচ্ছে।হরীণ সম্প্রদায় বলল,আমরা ত দাবীই ঠিক করিনি। শিয়ালনী বলল,অত কিছু ভাবনা তোমাদের নয়;তোমরা শুধু বলতে থাক,আমাদের দাবী মানতে হবে,মানতে হবে।বাকিটা যা করার আমি করব।
সন্ধ্যের আগে মহাসমাবেশ শেষ হল না।সন্ধ্যার পর রাত এল।অন্ধকার ঘনিয়ে এল।যত রাত বাড়ে,অন্ধকারের তিব্রতাও বাড়ে।যত অন্ধকারের তীব্রতা বাড়ে,বাঘিনীর মস্তিস্ক ততই গরম হয়ে ওঠে।
অবশেষে গভীর রাতে,গভীর অন্ধকারে,বাঘিনী গর্জণ করে উঠল।তার গর্জণ এতই বৃদ্ধি পেল যে, জঙ্গলের ঘুমন্ত পশুর ঘুম ভেঙ্গে গেল।হরীণদের মধ্যে তালগোল পেকে গেল।তারা দিশেহারা হয়ে,যে যেদিকে পারল,পালিয়ে গেল।বাঘিনী মনে মনে বলল,শিয়ালনী জেনে রাখ, ওস্তাদের মার,অন্ধকার রাতে……………………………………!!!!!!!!!!!
২৯ জানুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৩৫ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪