অচেনা বন্ধন

নতুন (এপ্রিল ২০১২)

নিলাঞ্জনা নীল
  • ১৫
  • ২৬
রাস্তার ধারে ল্যাম্পপোস্ট এর খুব কাছে বসে আছে রহিমা। রহিমার চুল অনেকটাই উস্কখুস্ক, গায়ের কাপড় নোংরা। পথচারীরা পাশ দিয়ে যায়, যাওয়ার সময় ভিক্ষুক ভেবে তাকে পয়সা দিয়ে যায়। রহিমা না করে বলে, "আমি ফকির না, আমার ঘর আছে, সংসার আছে, আর..... আর কিছু বলতে পারেনা..... বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে।

তন্বী রাস্তার উল্টোদিকেই একটি নামী স্কুল এ ক্লাস নাইন এ পড়ে। বেশ অবস্থাপন্ন পরিবারের মেয়ে। রোজ গাড়ি নিয়ে যাওয়া আসা করে। যাতায়াতের পথে রোজ গাড়ি থামিয়ে এক দৃষ্টে চেয়ে থাকে রহিমার দিকে। ড্রাইভার বলে " কি দেখেন আপামনি? মহিলাটা পাগলি!" তন্বী কোনো জবাব দেয় না।

তন্বীর জীবনে কোনো কিছুর অভাব রাখেননি ওর বাবা। কিন্তু একটা জিনিসের খুব অভাব ওর জীবনে তা হলো মাতৃস্নেহ। তন্বীর জন্মের সময় তন্বীর মা মারা যান। মেয়েকে সৎ মার হাতে তুলে দিতে চাননি তাই দ্বিতীয় বিয়ে করলেন না। তন্বীর বাবা মেয়েকে সময় দিতে পারেননা তা নিয়ে তন্বীর মনে কিঞ্চিত অভিমান আছে। কিন্তু তা ও কখনো প্রকাশ করেনা বরং তা নিভৃতে নীরবে অশ্রু হয়ে ঝরে।

রহিমার বিয়ে হয়ে যায় খুব অল্প বয়সে। গ্রামের সদাচঞ্চল প্রাণবন্ত মেয়েটিকে দেখেই ছেলের জন্য পছন্দ করে ফেলেন পাশের গ্রামের মোড়ল। বাবার অমত না থাকায় বিয়ের অর্থ বোঝার আগেই বিয়ে হয়ে যায় রহিমার।

বামীর সংসারে এসে প্রথম প্রথম খুব আদর যত্ন পায় রহিমা। একমাত্র ছেলের বউকে শ্বশুর শ্বাশুরিও যেন চোখে চোখে রাখেন। সে প্রায়ই একটি স্বপ্ন দেখে, একটি মেয়ে তার সামনে বসে খেলছে হাসছে। বিয়ের এক বছর পার হবার পরেও সন্তান হচ্ছে না দেখে ধীরে ধীরে সবার চোখের বিষ হয়ে পড়ে রহিমা। এক সময় তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়।


বাবার সংসারেও জায়গা না পাওয়া রহিমা রাস্তায় নামল। আস্তে আস্তে শহরের জনারণ্যে হারিয়ে গেল রহিমা। স্থায়ী ঠিকানা হলো রাস্তার ধার। কিন্তু পিছু ছাড়লোনা স্বপ্ন মাঝে মাঝেই এসে জ্বালাতে লাগলো ঘুমের ঘোরে। দিশেহারা বোধ করে রহিমা, বোঝেনা এর অর্থ।

তন্বী ক'দিন হলো গাড়ি ব্যবহার করছে না। রিক্সায় যাতায়াত করছে। কারণটা ও কাউকে বলেনি এমনকি বাবাকেও না। তন্বী রহিমার সাথে দেখা করতে যায়। প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে যখন বিকেলে ভিড় কম থাকে রহিমার জন্য টিফিন বাঁচিয়ে নিয়ে যায়। তন্বী জানেনা কি এক অমোঘ আকর্ষণ তাকে টেনে নিয়ে যায় রহিমার দিকে। রহিমা প্রথম প্রথম বুঝতে না পারলেও ধীরে ধীরে তন্বীর প্রতি এক ধরনের মায়া জন্মাতে থাকে। কোথাও না কোথাও রহিমা তন্বীর মাঝে খুঁজে পায় তার স্বপ্নের মেয়েকে। নিজের হাতে কখনো কখনো রহিমা তন্বীকে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। সবার অজান্তে দু'জনের মাঝে গড়ে ওঠে এক অজানা নতুন সম্পর্ক। নামহীন স্বার্থহীন এক মধুর সম্পর্ক। যে সম্পর্কে তন্বী খুঁজে পায় তার নতুন মা কে আর রহিমা খুঁজে পায় তার স্বপ্নের মেয়েকে।

তন্বীর বাবা একদিন গাড়ি থামিয়ে দেখেন দু'জনের এ মধুর দৃশ্য। কিছু বলেন না, চোখ দু'টো অজান্তেই ছল ছল করে ওঠে তার।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
পাঁচ হাজার চমৎকার থিমের একটা গল্প শুধু লেখকের কিপ্টামীর জন্য ডালপালা না ছড়িয়ে উপরে উঠেছে। ভাল লাগা রইল।
ধন্যবাদ পাঁচ হাজার.......
ম্যারিনা নাসরিন সীমা সুন্দর থিম ! ভাল লিখেছ । লিখতে থাকো আরও ভাল হবে । শুভকামনা !
ধন্যবাদ আপু........
আশিক বিন রহিম HAPPY BRITDAY..Apu 17 tarik G.K. bondo cilo tai janate parini..…golpota comotkar
অম্লান অভি ছড়িয়ে থাকা গল্পের বহর কুড়িয়ে নিতে জানলে এমন স্বচ্ছ গল্প লেখা যায়......ভাল লাগল সরলতায়
তানি হক অসাধারণ নিল ..এত সুন্দর লিখেছ ..রিদয় ছোয়া কাহিনী ..খুব ভালো লাগলো ..
ধন্যবাদ তানি.........
আহমেদ সাবের গল্পের বিষয়বস্তুটা চমৎকার - একদিকে মাতৃস্নেহ বর্জিত তন্বী আর অন্যদিকে সর্বহারা রহিমা। গল্পটা মোটামুটি ভালই লাগল।
Lutful Bari Panna খুব সুন্দর...
রোদের ছায়া (select 198766*667891 from DUAL) ভাবনাটা ভিষণ ভালো ......গল্প আরো গোছানো হলে কি যে ভালো হত !! তন্বী , রহিমা সবার জীবন নতুন আলোর দেখা পাক এই হলো চাওয়া /
ধন্যবাদ...... মৌসুমী দি..
মাহবুব খান মানবিক /ভালো লাগলো
পন্ডিত মাহী খুব বেশি নাটকীয় নাটিকীয় হয়ে গেছে। তবে ভাবনাটা জোরালো হচ্ছে... একটা কথা রাস্তার পাশে বসে থাকলে এখন মনে হয় না কেউ তাকা পায়। ঢাকার মানুষ যা ব্যস্ত। পকেটে হাত দেবার সময় কই...
ধন্যবাদ পণ্ডিতমশায়....

০২ জুন - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "পরগাছা”
কবিতার বিষয় "পরগাছা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ জুলাই,২০২৫