বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। জানালার কাছে মাথা নুয়ে বসে আছে সুলেখা। ওর জীবনের প্রতিটা বৃষ্টির দিনই ওর বুকের দগদগে ক্ষতটাকে অনেক বেশি তাজা করে দেয়। যে ক্ষতের সাথে সে কাউকেই পরিচিত করতে পারে নি। এমন কি নিজের পরিবারকেও না। 'একাত্তরে নিজেই আমি মুক্তিবাহিনীদের সাথে মিলে সম্মুখ যুদ্ধ করেছি!'-সবাই এই মিথ্যে কথাটাই জানে। এই মিথ্যেটা বলে সুলেখা সত্যটাকে লুকিয়ে রেখেছে! সে কিছুটা মানসিক স্বস্তি খুঁজে নিতে চেয়েছে। কিন্তু আদৌতে সে সামান্যতম স্বাচ্ছন্দ্য কোথাও খুঁজে পায়নি। কষ্টটাই তো সে ভুলতে পারেনি! যখন ক্ষতটা তাজা হয়ে উঠে;তখন মনে হয় ঘটনাটা ওর জীবনে এইমাত্র ঘটেছে! তিন যুগ আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা ওকে আজও কুরে কুরে খায়! ও বহু কষ্টে সেই ক্ষতে সময়ের প্রলেপ দিয়ে চাপা দিয়ে রেখেছে। কিন্তু এখন শুধু বৃষ্টির দিন নয়। প্রতিদিন ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোও ওকে কিছুই ভুলতে দেয় না। এই যে আজ যেমন সেদিনের সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা মনের মাঝে জ্বলজ্বল করে জ্বলে যাচ্ছে! সবকিছু জীবন্ত ছবির মত মনে করিয়ে দিচ্ছে! ওর মনের মাঝে জ্বালা ধরাচ্ছে সেদিনের সেই ঘটনা- একটা যুদ্ধ...ওর সুখের জীবনটাকে তছনছ করে দিয়েছে। মনে পড়ে সেই সময় এ মুক্তিবাহিনীর সাথে পাকিস্থানি বর্বর বাহিনীদের যুদ্ধ খুব ভয়ংকর রূপ ধারণ করেছিল। যখন পাকিস্থান সরকার বুঝে গেছে তাদের সৈন্যের পরাজয় অবধারিত! তখন বিষয়টি যত স্পষ্ট হয়েছে! ওদের সৈন্যরা তত হিংস্র হয়ে উঠেছে। ওদের কাপুরুষতা আর পশুর আচরণ বেড়েছিল দ্বিগুণ! এখনও সুলেখার মনে আছে স্পষ্ট সেই দিনের কথা- সেদিনও বাইরে তুমুল বৃষ্টি ছিল। বাবা মা আর আট বছরের যমজ দুই ভাইয়ের সাথে বসে মুড়ি খাচ্ছিল তের বছর বয়সের সুলেখা। লেখক বাবা মইন উদ্দিন চৌধুরী দেশের পরিস্থিতির খবর জানার জন্য ট্রানজিস্টার শুনছে। পাকিস্থানি বাহিনী এবং তাদের দোসরদের পৈশাচিক অত্যাচার সম্পর্কে বিবিসির দেয়া খবর প্রচার হচ্ছে। কীভাবে মুক্তিসেনার দল একে একে পাকিস্থানি বাহিনীর অস্ত্রের ভাণ্ডার গুড়িয়ে দিচ্ছে! সেই খবরও বেশ উচ্ছ্বাসের সাথে প্রচার করছে। আনন্দ আর আতঙ্কের দোলাচলে দুলে যাচ্ছে মন। ঘরের মাঝে একটা পিন পতনের শব্দ নেই। শুধুই ট্রানজিস্টারের ঘ্যার ঘ্যার শব্দ আর একজন পুরুষের বলা কাটা কাটা বাংলা কথা শোনা যাচ্ছে। এমন সময় দরজায় 'ধামা ধাম'লাথি মারার শব্দ! সেই শব্দই বিপদের সংকেত দিচ্ছে। বাবা সাথে সাথে ট্রানজিস্টার বন্ধ করে দিয়ে ঠোঁটে আঙুল দিয়ে 'হুসসস' শব্দ করেন। ঘরের সবাই কয়েক মুহূর্তের জন্য একেবারে রক্তশূন্য হয়ে পাঁথরের মত জমে গেছে। কী করবে তা যেন কেউ ভেবে পায় না! তারপর হঠাৎ সুলেখার মা তিন ছেলেমেয়েকে বুকের সাথে একেবারে জাপটে ধরে লুকিয়ে পড়ে খাটের নীচে। বাবা মইন উদ্দিন পা টিপে টিপে কেবল দরজার কাছে গেছেন। এমন সময় দরজা ভেঙ্গে ঘরে আসে অস্ত্র হাতে মিলিটারি! কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই ঠা ঠা গুলির শব্দ! মইন উদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। সুলেখার মা তিন সন্তানকে বাঁচাতে,পিঠ দিয়ে কিছু বুলেট নিজের শরীরে নিয়ে নেন। রক্তে ভেসে যায় সারা ঘর! তারপর মিলিটারিরা সুলেখা আর ওর যমজ ভাইদেরকে ধরে নিয়ে যায় মিলিটারি ক্যাম্পে। সেদিন মিলিটারিদের সাথে আসা পাশের বাড়ির জলিলকে চিনতে, সুলেখার একটুও কষ্ট হয়নি।
ক্যাম্পে নিয়ে ওদের তিন ভাইবোনকে আলাদা করে ফেলে। সেই যে ভাইদের শেষ দেখেছে আর কোনদিন সুলেখা ভাইদেরকে দেখেনি। সেদিন সুলেখার উপর চলেছিল অসহ্য অত্যাচার। সেখানে ছিল আরও অনেক যুবতি,কিশোরী এবং শিশু মেয়ে! যাদের উপরও পাকিস্থানি মিলিটারিরা অমানুষিক অত্যাচার করেছে। কেউ কেউ অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মরে গেছে! সেই লাশটা পর্যন্ত সেখানেই ফেলে রেখেছে। মৃতদেহে পচন ধরে গন্ধ ছড়ালে তারপর সেই লাশ সরিয়েছে। একটা রুমের মাঝে পঞ্চাশ জনের মত নারী-সবাই উলঙ্গ! কেউ কেউ হাত দিয়ে,কেউবা চুল দিয়ে নিজেদের লজ্জা ঢেকেছে! সুলেখার উপর যখন অত্যাচার করত। তখন প্রতিটা মুহূর্ত ওর মনে হয়েছে যুদ্ধ দেশে নয়। যুদ্ধ হচ্ছে ওর শরীরের উপর। যুদ্ধের সরঞ্জামে সজ্জিত ভারী ট্যাঙ্কগুলো যেন রাস্তায় নয়-ওর শরীরের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে! 'উফঃ সে কী বীভৎস যন্ত্রণা!' প্রতিদিন পালা করে একসাথে ছোট বড় মিলে আট থেকে দশজন শকুন সুলেখাকে ছিঁড়ে ফুঁড়ে খেয়েছে! যতক্ষণ ওর চৈতন্য থেকেছে ওরা চালিয়েছে পৈশাচিক অত্যাচার। সৈন্যদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়লেও বন্ধ হয়নি অত্যাচার। মদের বোতল,বেয়োনেট কী না ঢুকিয়েছে...? যন্ত্রণায় চিৎকার দিয়ে উঠেছে সে। কিন্তু মুখ থেকে কোন শব্দ বের হয়নি। ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে শরীরের মাংস! পচন ধরেছে সেই জায়গায়। ব্যথায় বসতেও পারত না সুলেখা। না কোন ওষুধ, না কোন খাওয়া! মাঝে মাঝে মনে হয়েছে এই বিঝি নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে। আর মুক্তি মিলবে এই যন্ত্রণা থেকে। কিন্তু নাহ ও মরেনই আজ! আরও যন্ত্রণা সইতে সে এখনও বেঁচে আছে। স্বীকৃতি হিসাবে সেই যন্ত্রণা সাথে নিয়ে ঘুরছে! সেই থেকে 'ধর্ষণ' শব্দটার প্রতি সুলেখার অনেক ঘৃণা জমা আছে! শত্রুদের থেকে দেশ মুক্তি লাভ করেছে। কিন্তু স্বাধীনতার স্বাদ কোথায়? সেদিনও নারী ধর্ষিত হয়েছে দেশকে বাঁচাতে। আজও নারী ধর্ষিত হয়...কিন্তু কেন? সেদিন বাঙালিকে ভয় দিতে এবং শায়েস্তা করতে ছিল নারীদের উপর ধর্ষণ! কিন্তু এখন কেন এই ধর্ষণ? সুলেখার এখন বয়স হয়েছে তাই সহ্য ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। ঘটনাগুলো শুনলে বুকের ভিতরে প্রচণ্ড ব্যথা করে। ভয়ঙ্কর স্মৃতি মনে পড়লে এখনও গলা শুকিয়ে আসে। বুকের ভিতরে আগুন জ্বলে। প্রতিহিংসার আগুন। কিন্তু সে এখন কিছুই করার ক্ষমতা রাখে না। আগেও সে কিছু করার ক্ষমতা রাখেনি। শুধু সেই সময়ে একটা স্বাধীন দেশের স্বপ্ন দেখে সে অত্যাচার সয়ে গেছে। যে স্বপ্ন লেখক বাবার লেখায় উঠে এসেছিল। যে স্বপ্নকে জীবন দিতে বাবা মা ভাইদেরকে হারাতে হয়েছে। আজকের এই দিন দেখার জন্য,সেদিন হাজার হাজার নারী বর্বরোচিত অসহনীয় অত্যাচার সহ্য করে নি! জীবনকে বিসর্জন দেয়নি...। সব ধর্ষণই জোর জবর দস্তির। শারীরিক মানসিক অসহনীয় যন্ত্রণার...! আজ ছোট্ট নাতনি মিথিলাকে আতঙ্কিত দেখে বৃদ্ধা সুলেখার বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে।
******************************************************************************* গত কয়েকদিন ধরে মিথিলা নিজের রুম থেকেই বের হয়নি। নাওয়া খাওয়া কোন কিছুই ঠিকভাবে করেনি। সারাক্ষণ দিদার বলা গল্পের কথা ভেবেছে। দিদার কাছে শুনেছে তখন কীভাবে পাকিস্থানি সৈন্যদের সাথে বাঙালিরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। যা প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন কাদের সাথে যুদ্ধ করবে? এখানে তো সবাই এই স্বাধীন দেশের বাঙালি নাগরিক! সবাই এই দেশেরই মানুষ। তবুও এই স্বাধীন দেশে কীভাবে এখনও ধর্ষণ হয়? কীসের লোভে বা কাদের শক্তিতে হয়? কীভাবে এখনও মেয়েদের উপর পৈশাচিক নির্যাতন চলে? কেন আজও একজন কিশোরীকেও ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়? হাজারও প্রশ্ন মিথিলার মনের মাঝে শক্ত বরফ হয়ে বুকে চাপ সৃষ্টি করছে। যার উত্তর ওর জানা নেই। হয়ত একজন বীরযোদ্ধা দিদা সুলেখারও জানা নেই!
মিথিলা আজ সোফায় বসে রিমোট নিয়ে একের পর এক টেলিভিশনের চ্যানেল পরিবর্তন করছে। কিন্তু ওর চোখ দুটো টেলিভিশনের স্ক্রিনে নেই। ও গভীর ভাবনায় ডুবে গেছে। মাঝে মাঝেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে। ওর পাশেই ওর গা ঘেঁষে বসে আছে ওর পাঁচ বছর বয়সের বোন আঞ্জিলা। মিথিলা একটু পর পর কেঁপে কেঁপে উঠছে। একটা অজানা ভয়ে ও একেবারে জড়সড় হয়ে আছে। আঞ্জিলা ওর শরীরের সম্পূর্ণ ভার মিথিলার শরীরের উপর দিয়ে বড় বড় চোখ করে আপুকে দেখছে। মিথিলা কেঁপে উঠলে আঞ্জিলার শরীর দুলে উঠছে। ওর চোখ জুড়ে বিস্ময়কর কৌতূহলের হাতছানি...! সে যেন মিথিলার কাছে কিছু জানতে চায়ছে। ওর মনের মাঝে উথাল পাথাল করছে অজানা কিছু! কিন্তু আপুর মুখের দিকে তাকিয়ে,কিছু জানতে চাইবার সাহস সে পাচ্ছে না। আপুর চোখে জল দেখে আঞ্জিলাও ঠোঁট ফুলিয়ে নীরবে কেঁদে যায়।
মিথিলার সবচেয়ে কাছের বান্ধবী ইলা। সেই ছোটবেলা থেকেই ওরা দুজন সব সময় একসাথে স্কুলে যাওয়া আসা করে। একসাথে খেলাধুলা,গল্প করে। এইতো মিথিলাদের পাশের বাড়িটাই ইলাদের বাড়ি। দুজনে কতদিন পড়া ফাঁকি দিয়েছে। চুপিচুপি একজন আরেকজনের বারান্দা টপকে এ বাসা থেকে অন্য বাসায় গেছে। একসাথে কদবেল,তেঁতুল,জাম মাখা আরও কত কি খেয়েছে। দুজনেই এবার ফাইভ গ্রেড শেষ করে সিক্স গ্রেডের সিঁড়িতে পা রেখেছে। ইলা এবং মিথিলা অনেক হাসিখুশি মেয়ে। সারাক্ষণ ওরা দুজন যখন একসাথে থাকে,প্রজাপতির মত উড়ে বেড়ায়। ওদের সে স্বাধীনভাবে উড়ে বেড়ানোয় দৈত্যের নজর লেগেছে। এই স্বাধীন দেশে আজও দৈত্যের বসবাস!
মিথিলা দিদার কাছে শুনেছে মুক্তিযুদ্ধে কত মা বোন নিজেদের ইজ্জত হারিয়েছে। ইজ্জত কী মিথিলা জানে না। কেমন করে যায় তাও সে জানে না। সে জানে পিশাচরা মেয়েদের উপর হিংস্রভাবে হামলা করে! মেয়েদেরকে জোর করে নোংরা করে সুন্দর জীবনটাকে শেষ করে দেয়! ইলা মিথিলাকে বলেছে 'কিছু শয়তান মেয়েদেরকে নষ্ট করতে চায়। মিথিলা ছেলেদের কাছ থেকে খুব সাবধানে থাকতে হবে!' ইলা আর মিথিলা সত্যিই অনেক সাবধানে ছিল। ওদের কোন ছেলে বন্ধু ছিল না। ওরা স্কুল ড্রেস পরে স্কুলে গেছে। কোন খারাপ পোশাকও কখনো পরেনি। তবুও ইলাকে কেন...! আর ভাবতে পারে না মিথিলা...ওর দম বন্ধ হয়ে আসে।
ঐ ঘটনার পর থেকে মিথিলা যেন কেমন হয়ে গেছে। বাইরে বের হতে চায় না। স্কুলেও যেতে চায় না আর। দৈত্যের কালো থাবা ওকে যেন গ্রাস করে রেখেছে। ভয়ে একেবারে কুঁকড়ে থাকে। একটা শব্দ হলেও সে কেঁপে উঠে। বাবা মা ওকে খুব করে বুঝিয়ে বলে-'এর মাঝেই সাবধানে নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখতে হবে!' বাবা মা এক রকম কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে। একমাত্র দিদাই ওর ভয়ের কারণ বুঝতে পারছে। অন্য সবার ভাব দেখে মনে হয় এর জন্য যেন ইলা দায়ী। সারা খবরের শিরোনাম হয়েছে সে! 'হ্যাঁ ইলাই যেন দায়ী।' প্রতিটা টেলিভশনের চ্যানেলগুলো পর্যন্ত দখল করে আছে ইলার ছবি! যে ছেলেগুলো ইলাকে তুলে নিয়ে গেছে তাদের কোন ছবি নেই! মিথিলা খামচি দিয়ে ধরে নিজের দু'গাল। নিজের চুল টেনে ছিঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে হয়। নিজেকে অনেক দায়ী মনে হয়। সেদিন মিথিলা কোচিং ক্লাসে যায় নি। ইলা একা গিয়েছিল। সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল কোচিং শেষ হতে হতে। কোচিং সেন্টার খুব বেশি দূরেও নয়। স্কুল থেকে বাসায় আসার পথেই। এসব কথা ভাবতে ভাবতে মিথিলা টেলিভিশনের স্ক্রিনে ঝাপসা চোখ রাখে। ইলার হাসিমুখ ছবি ভেসে আছে সেখানে। একটা মেয়ে পাঠিকা খবরের শিরোনাম পড়ে' কিশোরী ইলা নামের মেয়েটিকে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে'! জবা ফুলের মত টকটকে লাল হয়ে যাওয়া মিথিলার চোখ দুটো জ্বলে উঠে। কচি একটা হাতের স্পর্শেও সে কেঁপে উঠে! হাতটা চোখের পানি মুছে দেয়। মিথিলা হঠাৎ শুনতে পায়- -আপু...ধর্ষণ কী? চমকে উঠে মিথিলা! একেবারে কুঁকড়ে যায়। জিজ্ঞাসু দৃষ্টি মেলে আঞ্জিলা কৌতূহলী হয়ে বোনের দিকে তাকিয়ে থাকে। বোনকে কুঁকড়ে যেতে দেখে আঞ্জিলা বুঝে নেয় এটা অনেক ভয়ের কিছু! এই প্রশ্নের উত্তর মিথিলা দিতে পারে না...শুধু ওর ঠোঁট দুটো থিরথির করে কেঁপে যায়। মিথিলা শুধু জানে ধর্ষণ মানে ইলাকে হিংস্র পশুগুলো ছিঁড়ে ফুঁড়ে খেয়েছে! সে আর ইলাকে ছুঁয়ে দিতে পারবে না। ওর সাথে আর খুনসুটি করতে পারবে না। মিথিলা ইলাকে কোথাও,আর কোনদিন দেখতে পাবে না। হু হু করে জমে থাকা বরফগুলো গলতে থাকে। আঞ্জিলা খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আপুকে। অজানা আতঙ্কে কেঁদে যায় দু'জন অবুঝ মানব শিশু।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ওয়াহিদ মামুন লাভলু
ভাইদেরকে চিরতরে হারানো, অমানবিকভাবে অত্যাচারিত হওয়া এসব এমন দুঃখ দেয় যার মাত্রা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। চমৎকার লেখনী। শ্রদ্ধা গ্রহণ করবেন। অনেক শুভকামনা রইলো। ভাল থাকবেন।
প্রজ্ঞা মৌসুমী
তলোয়ারের মতো ধারালো এমন একটা প্রশ্ন যা নাড়িয়ে দেবে- অনেক ভেবেও লেখার জন্য খুঁজে পাইনি। আমি যেন সেই প্রশ্নটাই খুঁজে পেলাম এই গল্পে 'আপু...ধর্ষণ কী?' ভীষণ সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে লেখা। একাত্তরের সুলেখা যেন আর বেশি গভীর করে দিলো ব্যথা। যদিও মনে হলো যেটুকু একাত্তরের অভিজ্ঞতা লেখা হলো বৃষ্টিটুকু ছাড়া আর সব বর্ণনা যেন সুলেখার একান্ত ব্যক্তিগত হয়ে উঠেনি, অনেকটা যেন ইতিহাস থেকে আনা সচরাচর তথ্য। হয়তো কিছুদিন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অসাধারণ সব অভিজ্ঞতা পড়ে কাঁদছি, মুগ্ধ হচ্ছি বলেই এরকমটা মনে হলো। পরের পরিচ্ছেদটা বেশ ভালো লেগেছে। আর শেষে এসে মেয়ের মা হিসেবে ছুঁয়ে গেছে কষ্ট। একদিন আমাকেও কী শুনতে হবে-মা ধর্ষণ কী? যুদ্ধ তো ছিল একটা উপলক্ষ্য মাত্র, হাইড্রার কাটা মাথা গজানোর মতো কোন যুগে কখনো কী থেমে ছিল নাকি থেমে যাবে এই পাশবিকতা!... এর আগেও পড়েছি, আপনার গল্পের বোন দুটোর উপর বড়ো মায়া পড়ে গেছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রজ্ঞা মৌসুমী অসাধারণ মন্তব্য করার জন্য। আমরা কৈশোরে যা বুঝিনি এখন শৈশবেই তা নিয়ে বাচ্চাদেরকে ভাবতে হচ্ছে। এবং ভয় পেতে হচ্ছে! ভাবলে সত্যিই কষ্ট লাগে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
মনজুরুল ইসলাম
Only moral and quality education can solve the problems of women unexpected explotion. We have to overcome the tense of lot women like Ila and mila. Presentation is very straight. Thank you.
মাইনুল ইসলাম আলিফ
খুব সুন্দর গল্প।সামাজিক কাঠামোটাই এমন,আমরা দুর্বলেরর উপর শক্তি প্রয়োগে সিদ্ধহস্থ। ইলা মিথিলাদের বুকের এমন ভয়গুলো আমাদের সত্যি খুব ভাবনায় ফেলে দেয়।দারুণ। আমার গল্পে স্বাগতম।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।