আমরা যখন ছোট ছিলাম,তখন পাকিস্তান আমল।গ্রামে গেলে দেখতাম,ছোট ছোট বাচ্চা মেয়েরা খালি গায়ে লাল,সবুজ ডুরে শাড়ি পরে ছোটাছুটি করছে!কী যে সুন্দর লাগতো!কেউ কেউ ফ্রকও পরতো।আমরা শহরের ছোট ছোট মেয়েরা ফ্রক পড়তাম ।কিশোরি মেয়েরা সালোয়ার[-কামিজ-ওড়না।কলেজে উঠে প্রায় বেশিরভাগ মেয়েই শাড়ি ধরতো।আমরা অবশ্য কলেজে সালোয়ার-কামিজ,বেলবটম প্যান্টের সাথে শার্টও পরেছি!তখন অবাঙালি মহিলারা সালোয়ার-কামিজ পরতেন আবার শাড়িও পরতেন।হিন্দু মেয়েদের যেমন সিঁথিতে সিঁদুর দেখলে বোঝা যেতো বিবাহিতা,তেমনি বাঙালি মুসলমান মেয়েরা বিয়ের পর সবাই শাড়ি ছাড়া অন্য পোশাক পরতো না।
দেশ স্বাধীন হলো।স্বাধীন বাংলাদেশ।আস্তে আস্তে পরিবর্তন দেখতে লাগলাম চোখের সামনেই!যুগের সাথে,সময়ের সাথে সাথে সারা পৃথিবী জুড়েই মানুষের খাদ্য,পোশাক,ফ্যাসন,চালচলন,সাহিত্য-সংস্কৃতি,জীবনাচারে পরিবর্তন আসবেই।এটা মানতে হবে।তবে ফ্যাসন করতে গিয়ে যদি অন্যের চোখ মনকে পীড়া দেয়,কুরুচিপূর্ণ মনে হয়,তবে সেটা আর ফ্যাসন থাকে না।যা কিছু চোখ মনকে প্রশান্তি দেয় তাই তো সৌন্দর্য!আজকাল আমাদের মেয়েরা জিন্স,টি-শার্ট,ফতুয়া,স্কার্ট-টপ,শার্ট,ব্লেজার পরছে,ভালোই তো লাগছে।কিন্তু যখন কোন স্থূলদেহী তরুণী টি-শার্ট,টাইট জিন্স পরে ঘুরে বেড়ায়,তা যেমন দৃষ্টিকটূ দেখায়,তেমনি মানুষের চোখের কৌতুহলী দৃষ্টিতে সে নিজেও বিব্রত আস্বস্তি বোধ করে!পাশ্চাত্যের মেয়েরা ক্ষীনদেহী,,তাই তাদের সবরকম পোশাকেই মানিয়ে যায়।
সালোয়ার-কামিজ পরতো এবং এখনও পরে,ভারত পাকিস্তানের হিন্দু-মুসলিম ,অন্য ধরমালম্বী প্রায় সব সম্প্রদায়ের মেয়ে ও বয়স্ক মহিলারা।হঠাৎ দেখলাম,পাকিস্তান আমলেও যে কথা শুনিনি,এই স্বাধীন বাংলায় কেউ কেউ বলতে লাগলো,শাড়ি নাকি হিন্দুয়ানি পোশাক আর সালোয়ার-কামিজ মুসলিম পোশাক!এতে শরীর ঢাকা থাকে,পর্দা হয়,কাজকর্ম করতে সুবিধা!শাড়ি তো সেই অনেক কাল আগে থেকেই দুই বাংলার মুসলমান-হিন্দু নির্বিশেষে সব মেয়েদেরই পোশাক ছিলো।বাঙালি মেয়েদের শারিরীক গঠন এমন যে,যে কোন বয়সে,যে কোন গঠন প্রকৃতির মহিলাদের অন্য সব পোশাকে না মানালেও ,শাড়িতে সবাইকেই মানিয়ে যায়্!যখন দেখি মোটা-সোটা বয়স্ক মহিলারা,পর্দা আর কাজের সুবিধার নামে,কাপড়ের পানাতে বেড় পায়না,বালিশের খোলের মতো কামিজ পরে,জীবন্ত কোলবালিশ হয়ে হাঁসফাঁস করে বাইরে ঘুরে বেড়াচ্ছে,তখন অবাকই হই!!এরা কি নিজেদের দিকে চেয়ে দেখে না?এ কোন কালচার?!শাড়ি হলো বাঙালি নারীদের জন্য সবচেয়ে সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন পোশাক।কই আমাদের দাদী-নানী,মা-খালা-ফুপুরা তো এই শাড়ি পরেই রাজ্যের কাজ করেছেন!আমরাও এই শাড়ি পরেই ঘরে,বাইরে কর্মস্থলে খুব সহজভাবে,আরামেই কাজ করতে পেরেছি।একজন বাঙালি রমনীকে শাড়ি পরা,আঁচলে ঘোমটা টানা অবস্থায় কি কখনও বেপর্দা মনে হয়?আমার তো মনে হয় এর চেয়ে পর্দাসীন পোশাক আর কিছুই হতে পারেনা।শাড়ি শ্বাশ্বত বাঙালি ললনার সৌন্দর্য সংস্কৃতি ফ্যাসনের সাথে মিশে আছে এবং থাকুক চিরকাল ।
২৩ এপ্রিল - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৪৮ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪