কোন এক হরিৎ বিকেলে স্মিত হাসিতে ভরবে উঠোন

বাবা (জুন ২০১২)

মৃন্ময় মিজান
  • ৩৫
  • ১৮
(উৎসর্গ: গুম হয়ে যাওয়া ভোরের ঘ্রাণ,চাঁদের নৈকট্য হারানো জ্যোৎস্না এবং পিতৃহীন নিস্তব্ধ হৃদয়)

সপ্তর্ষি প্রেমে অবাক জলস্রোতের নতজানু একাঙ্কিকা থেমে গেলে স্থানু সময় ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকে এক অকৃত্রিম মহীরূহ। যার সফেদ রেশম চিকচিকে হাসিকান্নার আলোয়ানে খেলা করে গুচ্ছ গুচ্ছ স্বপ্নকথিকা। বালকবেলার দোমড়ানো হাহাকার ঘিরে বসে থাকে একরাশ উঠোন-গোধূলি; আমি যার আধো আধো স্মৃতির ওপিঠে নিরলস এঁকে যাই একটি মুখ- রোগাটে, বিবর্ণ এবং জংধরা সূর্যের পিঠে আলো ঝলমল অপার আঁধার।

আমাদের শৈশব সেই আধো জাগরণগন্ধী সুপুরুষ সন্তময় হয়ে বেয়ারী বিলের ছনক্ষেতে ঝরে পড়ে হঠাৎ শালিখ হয়ে হেসে ওঠে, সুর তোলে, গেয়ে যায় ঘুমপাড়ানী স্বপ্নময় বাস্তবতা। একটি কাগজের পিঠে বিমান ওড়াতে যেয়ে পবিত্র মন্দির কবুতরের গন্ধে সোঁদা হয়ে উঠলে ঘামঝরা বিকেলের অধর কেঁপে কেঁপে ওঠে তার অজস্র চুম্বনে।

মোল্লাপুকুরের নরম তরল জলাধার গাঢ় বিকেলের রঙ হয়ে ভেসে থাকে। হঠাৎ অজানা সাম্পানে তার পলায়ন ভীত হয়ে আমাদের ঘরে ঢুকে পড়লে ভুলে যাই সকালের মৃদু আওয়াজ, মেহেদীর ভালবাসা আর চাপিলা মাছের নাদুস নুদুস ঘ্রাণ। একরত্তি ডাহুক বিকেলে ডাকের ছেঁড়া তারে আসে ডাওরীর জলে ভেসে থাকা কবিতা এফোঁড় ওফোঁড় বুলেটে।

সেই সব বিকেলের রঙ মুছে দিয়ে স্মৃতিরা চলে যায় নিজস্ব ব্যারাকে। এখানে আলের পিঠে সুর বাঁধে ঘাসের রঙ, পুকুরের তরলে গাছের পাতা আর মেঠো পথের ধূলোর ফাঁকে ফাঁকে খেলা করে রঙিন প্রজাপতি, ঘাস ফড়িঙের দল। স্কুলঘরের বারান্দা পেরোতে শোকগুলো কাব্যময় অজস্র চুম্বনে আঁকে খামখেয়ালী আলো আঁধারীর বিবিধ বয়ন। চুমুর আবেশ ভাটা মাছের পিঠে চড়ে পাড়ি দেয় সমুদ্র প্রভাত। সাদা সাদা অজস্র ঘোড়ার পিঠে ভেসে ওঠে রূপালী জ্যোৎস্নার ভীষণ মায়াবী আলখেল্লা।

যদিও জানি কোন এক হরিৎ বিকেলে একজন সাদামুখ বয়সী সন্ত স্মিত হাসিতে ভরিয়ে দেবে উঠোন। আমরা অবাক হতে হতে ভুলে যাব বিগত জীবন। নাকের পরতে ঘুমিয়ে থাকা সেই ঘ্রাণ চিনিয়ে দেবে সন্তকে- চোখ যার পুকুরের নির্লোভ তরঙ্গ, হাতের তালুতে খেলা করে শৈশবের তুমুল কোলাহল আর বুকের গহীন নিবিড়ে লেগে আছে আমাদের স্মৃতিময় গতায়ত বালকবেলা।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আবু ওয়াফা মোঃ মুফতি চরম কাব্যিক! পাঁচ প্যারার স্থলে দু প্যারায় উপস্থাপন করতে পারলে আরো চমত্কার হত বলে মনে হয়|
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি স্কুলঘরের বারান্দা পেরোতে শোকগুলো কাব্যময় অজস্র চুম্বনে আঁকে খামখেয়ালী আলো আঁধারীর বিবিধ বয়ন। চুমুর আবেশ ভাটা মাছের পিঠে চড়ে পাড়ি দেয় সমুদ্র প্রভাত। সাদা সাদা অজস্র ঘোড়ার পিঠে ভেসে ওঠে রূপালী জ্যোৎস্নার ভীষণ মায়াবী আলখেল্লা। // valo laglo tobe kobita no to mone holo jeno sobder vandar........MIJAN suvechha apnake..............
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ মিজান ভাই আপনার উৎসর্গের প্রেমে পড়ে গেলাম । তারপর গল্পের । তারপর শব্দ চয়ন ও বাক্য বিন্যাসের । অভিনন্দন ।
জাকিয়া জেসমিন যূথী ভালো লাগলো ভিন্ন ঢং এর রাবিন্দ্রিক (নিচের ব্যাখ্যা হতে জানলাম) কবিতা আর ভালো লাগলো সবচেয়ে বেশি… “মেহেদীর ভালবাসা আর চাপিলা মাছের নাদুস নুদুস ঘ্রাণ। একরত্তি ডাহুক বিকেলে ডাকের ছেঁড়া তারে আসে ডাওরীর জলে ভেসে থাকা কবিতা এফোঁড় ওফোঁড় বুলেটে”। শুভকামনা রইলো ভিন্নধারার কবিকে।
প্রজ্ঞা মৌসুমী নাম থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি লাইনে কবিতার ছোঁয়া। পড়লেই বোঝা যায় কবিতা পড়ছি। মুগ্ধ হলাম শব্দের কাজ, উপমা দেখে। প্রকৃতিকে দারুণভাবে পেলাম। বাবাকে নিয়ে বলে ভেবে নিলাম বাবাকে নিয়ে মাছ ধরার গল্প, একজায়গায় ভাবলাম বাবা বোধহয় স্কুলমাষ্টার। এর কোনটা ঠিক হলো কিনা জানিনা... ঠিক না হলেও ক্ষতি নেই। কবির সবটা না বুঝলেও কবিতা ভালো লেগেই যায়। আচ্ছা এরকম প্যারা করে লেখার উদ্দেশ্যটা কি? প্যারা দেখে প্রথমে গল্প ভেবেছিলাম...
প্রথমত প্যারা করে লেখা মানে গদ্য ধরনের উপস্থাপনের কারণটা বলি। আমি চেয়েছিলাম পুরো কবিতায় কোথাও কোন যতি চিহ্ন, প্যারা ব্যবহার করবনা। কিন্তু তা হলোনা। হলো অনেক বড় বড় লাইন।একেক লাইনে ঢুকে গেল অনেক বিষয়।এগুলোকে ভেংগে কবিতার আদলে দাঁড় করাতে দেখা গেল পড়তে ভাল লাগছেনা। কেটে কেটে যাচ্ছে । তখন মনে হল এমন প্যারা করে দিলেই বরং পড়ার মজাটা বেশি পাওয়া যাবে। আর সামনে তো লিপিকার উদাহরণ ছিলই। ছিল এখনকার লিটল ম্যাগগুলোতে এই আদলে কবিতা লেখার প্রচলিত উদাহরণ। তাই এভাবেই দিলাম। এবার কবিতার ভেতরের গল্পটা বলি, বাবাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ আছে। বাবা গুম হয়ে যান একদিন। তাতে 'ভুলে যাই সকালের মৃদু আওয়াজ, মেহেদীর ভালবাসা আর চাপিলা মাছের নাদুস নুদুস ঘ্রাণ।' বাবার লাশ পাওয়া যায় 'ডাওরীর জলে ভেসে থাকা কবিতা এফোঁড় ওফোঁড় বুলেটে।' কবিতা-ই বাবা।বার বার মনে হয় হয়তো বাবা একদিন ঠিকই ফিরে আসবেন।
মিলন বনিক "নাকের পরতে ঘুমিয়ে থাকা সেই ঘ্রাণ চিনিয়ে দেবে সন্তকে- চোখ যার পুকুরের নির্লোভ তরঙ্গ, হাতের তালুতে খেলা করে শৈশবের তুমুল কোলাহল আর বুকের গহীন নিবিড়ে লেগে আছে আমাদের স্মৃতিময় গতায়ত বালকবেলা।" অসাধারণ বর্ণনা মিজান ভাই..প্রতিটা শব্দ যেন অন্তরে গেথে গেল...শুভ কামনা...
মোঃ আক্তারুজ্জামান আচ্ছন্ন করে রাখার চমত্কার জাদুকরী কাব্যময়তায় ভরা কবিতা- অসাধারণ লাগলো| ভাই অনেক অনেক শুভ কামনা|
সেলিনা ইসলাম খুব ভাল লাগল ধন্যবাদ কবি
নীলকণ্ঠ অরণি চমত্কার দৃশ্যকল্প আর শব্দশৈলী...বারবার পড়তে ইচ্ছা হয়...কিন্তু এই গদ্য ভঙ্গিতে পদ্য লেখা কি খুবই জরুরি? পিড়াদায়ক।
মন্তব্যটা পুরো বুঝতে পারলাম বলে মনে হচ্ছেনা। যতটুকু বুঝেছি বলে মনে হল তার প্রেক্ষিতে বলছি -রবীন্দ্রনাথের পায়ে চলার পথ যদি কবিতা হয় এবং উনি যদি এত আগে এই ভংগীতে কবিতা লিখতে পারেন আমাদের তো এখন আরো নতুন নতুন নিরীক্ষা চালানোর সময়। আর যেটুকু মনে হয় বুঝিনি সে সম্পর্কে সাক্ষাতে বুঝে নিয়ে আলাপ করার ইচ্ছে রইল।

১০ এপ্রিল - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১২ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪