-কখনো কুকুর দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন? ভদ্রলোক হঠাৎ প্রশ্ন করে বসলেন। -গত কাল রাতেই তো এমনটা হলো। দেখলাম, আমাকে ঘিরে কয়েকটা কুকুর ঘুরছে। কুকুরগুলো একটা একটা করে পানিতে নেমে গেলো। আর উঠলো না। কুকুররা আত্মহত্যা করে জানতাম না। কেনো বলুন তো? -আপনি জল কুকুর চেনেন? -না। সেটা কি? -জল কুকুর কি তা এখনো ঠিক জানি না। কয়েকটা কিংবদন্তী গল্প আছে এটা নিয়ে। -জলকুকুর নিয়ে কিংবদন্তী? ভূতুড়ে? -হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। সাইন্স ফিকেশন হতে পারে। -জল কুকুর আসলে কি? . আমি প্রশ্নটা করে ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। লোকটা নিরবতা রক্ষা করে গেলেন। মাঘ মাসের শীত। কয়েকহাত দূরেই কুয়াশা। একটা ক্ষীণ কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি। গা ছমছম করা পরিবেশ। হঠাৎ নিজের সিদ্ধান্তকে পাগলামি মনে হলো। পদ্মা নদীর বুকে মাঝে মধ্যেই রাত বিরাতে কান্নার আওয়াজ শোনা যায়। আঞ্চলিক কিংবদন্তী আছে, এই কান্না স্বয়ং নদীর। আমি আছি নদীর ঠিক মাঝে। উদ্দেশ্য, নদীর কান্না শুনবো। সাথে একজন কোট- টাই পরা ভদ্রলোক। ঘাটের শেষ নৌকা বলে একরকম বাধ্য হয়েই লোকটা আমায় সাথে নিলো। -কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন? ভদ্রলোক প্রশ্ন করলেন। আমার হয়ে মাঝি জবাব দিল। -ওইযে কাঁদছে। নদীর কান্না? -উহু। কুকুরের কান্না। ওরা হলো জল কুকুর। জলে থাকে, জলে কাঁদে। এতবছর নৌকো বাও, এটা জানো না? . মাঝির চোখ ঢাসা আতঙ্কে। ভদ্রলোক নির্লিপ্ত। একটা সিগারেট ধরালেন। কান্নার আওয়াজ ঘনিয়ে আসছে। গত বেশ কয়েকবছর মাঝিদের গায়েব হয়ে যাওয়ার কারন এটা হতে পারে। . নৌকার শেষ মাথায় একটা কুকুরের মত অবয়ব দেখা দিল। ঠিক কুকুর না, তারচেয়ে বড়। এই মাঝ নদীতে কুকুর, রীতিমত অবাক করা বিষয়। ঘন কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে চারপাশ থেকে। ভদ্রলোক হঠাৎ আমাদের চমকে দিয়ে একটা পিস্তল তাক করলেন আমার দিকে। চোখজোড়া হিম শীতল। -এবার কুকুর গুলো অনেক খাবার পাবে, কি বলেন? দু দুটো মানুষের লাশ। লোকটার মুখে কুঠিল হাসি। . এমন ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। ঠিক তখনই কুকুরের অবয়বটা ঝাপিয়ে পড়ল লোকটার উপর। হাত কামড়ে ধরলো। পিস্তলটা হাত থেকে পড়ে গেল। -বাস্টার্ড! ব্লাডি ইডিয়েট! . ভদ্রলোক গালি দিতে দিতে দ্রুত হাতে পিস্তল খুজলেন। -ভেবো না বেঁচে যাচ্ছ। মাঝে মাঝে পাগলামি করলেও কুকুরগুলো আমার কথা শোনে। পোষা কুকুর। . কুকুরটা গায়েব হয়ে গেছে। আমি ভদ্রলোকের দিকে তাকালাম। লোকটার শরীর থরথর করে কাঁপছে। মাঝি জ্ঞান হারিয়েছে কিছুক্ষন হল। -আপনি নাৎসি বাহিনীর সাথে কোনো ভাবে সম্পৃক্ত? লোকটা কিঞ্চিৎ অবাক হলেন। -ছিলাম না। দাদাজান নাৎসিদের হয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতেন। কুকুরকে কিভাবে জল কুকুর বানানো যায়। দাদাজান সফল হয়েছিলন। কিন্তু হিটলারের কাছে জল কুকুর বিষয়টা অযৌক্তিক মনে হয়েছিল। -আর এরপর তিনি কুকুরগুলো এই নদীতে ছেড়ে দেন? - যুগ যুগ ধরে ওদের লালন করছি আমরা। মানুষের মাংস দরকার। গত দশ বছর ওদেরকে মানুষের মাংস সাপ্লাই দিচ্ছি। আজও দিব। . গত কয়েক বছরে মাঝিদের নৌকা থেকে গায়েব হয়ে যাওয়ার রহস্যের সমাধান পাওয়া গেল। কুকুরের কান্নার আওয়াজ এখন সয়ে গেছে। দূরে পানিতে সেই বড় কুকুর দাড়িয়ে আছে মনে হল। -জল কুকুর পানিতে দাড়াতেও পারে! -কই, নাতো। ভদ্রলোক চমকে উঠে সেই অবয়বটার দিকে তাকালেন। সেই কুকুরটা। লোকটার মুখখানিতে হঠাৎ তীব্র আতংক দেখা দিল। আমার এখন কি করা উচিৎ বুঝতে পারছি না। লোকটার মনযোগ অন্যদিকে। সুযোগের ব্যাবহার করে ভদ্রলোককে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলে দেয়া যেতে পারে। কিন্তু তা করতে হলো না। ভদ্রলোক নিজেই পানিতে লাফ দিলেন। কয়েকটা ক্ষুদার্থ জল কুকুর তার উপর ঝাপিয়ে পড়লো। আলো থাকলে পানিতে রক্ত স্পষ্ট বুঝা যেত। এখন সবই কালো। . মাঝির জ্ঞান ফিরেছে। আমরা তীরের দিকে ছুটে চললাম। এদিকে গ্রামীনের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়। সুহানা অনলাইনে। বললাম, -তোমার বাবা সুইসাইড করেছেন। -বড় কুকুরটা এসেছিল? -হ্যা। -এটা আমাদের পরিবারের রিচুয়্যাল। বড় কুকুরটাকে যখন দেখা দিবে, যে দেখবে, তাকে সুইসাইড করতে হবে। বড় চাচা, দাদা যেমনটা করলেন। আগে ভাবতাম ওটা হ্যালুসিনেশন। আজ তো আপনিও দেখলেন। -এসব তো আগে বলো নি। -প্রয়োজন মনে করি নি। -খারাপ লাগছে? -না। জানতাম এমন হবে। -আমিও কুকুরটাকে দেখেছি। এখন কি আমার সুইসাইড করা উচিৎ? -ইচ্ছা। . আমি পানির দিকে তাকালাম। কালো পানি। এবং মহালোকের মত গভীর।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ওয়াহিদ মামুন লাভলু
লেখাটা পড়ে আমার মনেও প্রশ্ন থেকে গেল। লেখায় খুব রহসের গন্ধ পেলাম, বিশেষ করে সুইসাইডের ব্যাপারটায়। বেশ ভাল লেখা। শ্রদ্ধা জানবেন। শুভেচ্ছা। ভাল থাকবেন সবসময়।
আমারা জানি কবিতা প্রথম দুই প্রকার. ১ মন্নয় বা গীতি কবিতা ( Subjective poetry) 2 তন্নয় বা বস্তুুনিষ্ঠ কবিতা ( objective poetry) .... আপার উওর যে কবিতা পড়ছেন সে কবিতা নাম হলো জীবন শোক গীতি , এই কবিতা তখন পযন্ত লিখা যায় যতখন। আপনার জীবন কথা গুলো কবিতা আনায়তে তুলে ধরতে পাড়ছেন।
আমারা জানি কবিতা প্রথম দুই প্রকার. ১ মন্নয় বা গীতি কবিতা ( Subjective poetry) 2 তন্নয় বা বস্তুুনিষ্ঠ কবিতা ( objective poetry) .... আপার উওর যে কবিতা পড়ছেন সে কবিতা নাম হলো জীবন শোক গীতি , এই কবিতা তখন পযন্ত লিখা যায় যতখন। আপনার জীবন কথা গুলো কবিতা আনায়তে তুলে ধরতে পাড়ছেন।
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী
ভাবতে ছিলাম গল্পটা শেষের দিকে অবয়ব কিছু একটা ঘটনা ঘটবে, তবে ঘটেও গেছে। আর একটা জিনিস খুজেছিলাম, সোহানার পরিবার বলতে যারা জলকুকুরকে দেখে সুইসাইড করেছেন, কেনই বা করলেন....? এর ভিতরে কিছু রহস্য খুজেছি, তা পাইনি!! যা হোক, গল্পটা একটানে পড়তে পেরেছি, এতেই ভালো লেগেছে। শুভকামনা সহ শুভেচ্ছা রইল ভাই....
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।