কৃপণ ফজর আলী

কৃপণ (নভেম্বর ২০১৮)

Mohammad Abdullah Mozumder
  • ৯৯
ফজর আলী একজন ব্যবসায়ী। গ্রামে তার একটি দোকানও আছে। মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মধ্যে তার দোকানে নেই এমন কিছুই নেই। দোকানে একজন কর্মচারীও আছে। দোকানের কর্মচারির বেতনও তিনি খুব কম দেন। এতে কর্মচারীও খুব অখুশি। অন্য কোথাও কাজ না পেয়ে নিরুপায় হয়ে তার দোকানেই কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকার একমাত্র দোকান হওয়ায় তার দোকানে বেচা বিক্রিও ভালো। এ দোকানের আয় দিয়ে খুব অল্প দিনেই তিনি এলাকার ধনী লোকে পরিণত হয়েছেন।
তবে খবই কৃপণ এ ফজর আলী। কৃপণতার কারণে বিপুল অর্থ সম্পদ থাকা সত্বেও তার পরিবারের সদস্যরা খুবই নিন্মামনের জীবনযাপন করে। ভালো পোশাক পুষ্টিকর খাবার থেকেও তারা বঞ্চিত। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে তাদের দু’জনকেও তিনি খুব ধনী পরিবার দেখে বিয়ে দিয়েছেন। তার উদ্দেশ্য হলো আত্মীয় স্বজন ধনী থাকলে নিজের তেমন টাকা পয়সা খরচ হয়না। আত্মীয় স্বজনের বাড়ি থেকেও অনেক উপহার আসে। সেগুলো দিয়েই কোন রকম পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে যায়। ছেলে মেয়েদের জন্যও খরচ করতে চাননা এ কৃপণ ফজর আলী। ছেলের বিয়ের সময়ও তার শ্বশুর বাড়ি থেকে যৌতুক নিয়েছেন তিনি। মাঝে মাঝে ছেলের প্রয়োজনীয় খরচের টাকাও তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে এনে খরচ করার জন্য বলেন। এজন্য তার পরিবারের সদস্যরাও তার উপর খুবই অসন্তুষ্ট ও অখুশি।
নিজের জন্যও কোন খরচ করতে চাননা ফজর আলী। তার একটি জামার মধ্যে দশ বছরে ১৪ টি সেলাই করতে হয়েছে। তবুও তিনি নতুন জামা কিনতে নারাজ। দশ বছরের পুরোনো জুতাকেও আবার জোড়া তালি দিয়ে পরার চেষ্টা করেন। কৃপণতা করতে করতে তিনি প্রায় বুড়ো হয়ে গেছেন। বুড়ো হবার ফলে তার চুলগুলোও একদম সাদা হয়ে গেছে। কিন্তু টাকা খরচ হয়ে যাবার ভয়ে তিনি চুলার কয়লা গুড়ো করে সঙ্গে পানি মিশিয়ে চুল কালো করেন। তারপরও একটি চুলের কলম কিনেন না। অথচ চুলের কলম তিনি তার দোকানেই বিক্রি করেন। সেখান থেকেও একটি নিজের জন্য নেন না।
একবার সোনা রূপাসহ অনেকগুলো টাকা তিনি ঘরের সিন্দুকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। প্রতিদিন তিনি সকাল বিকেল দু’বার করে তার সোনা রূপা ও টাকাগুলো দেখে রাখতেন। কিছুদিন যাবার পর তার সব সোনারূপা ও টাকা চুরি হয়ে যায়। এরপর তার দীর্ঘ দিনের সঞ্চয় চুরি হয়ে যাবার কারণে তিনি খুব দুঃখ পেলেন। দু’চার দিন কান্নাকাটিও করেছেন বহু। কিন্তু তার কৃপণতা তবুও থেমে নেই।
এরপর তিনি সেসব হারানোর গ্লানি ভুলে আবার সোনারূপা ও টাকা জমাতে শুরু করলেন। কিছুদিন পর আবারও অনেকগুলো টাকা ও সোনারূপা জমে গেল। সেগুলোও তিনি সিন্দুকে জমা রেখে দেন। আবার আগের মতো দিনে দু’বার করে সেগুলো দেখে রাখেন। কিন্তু সেগুলোও কিছুদিন পর চোর চুরি করে নিয়ে যায়। এভাবে বহুবার তার জমাকরা ধন সম্পদ চুরি হয়ে যায়। তবুও তিনি পরিবার বা নিজের জন্য একটি কড়িও খরচ করেননা।
একদিন ফজর আলী খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার ছেলে মেয়ে আত্মীয় স্বজন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তার জন্য ঔষধ ও ভালো পুষ্টিকর খাবার আনতে লাগলেন। তখনও তিনি তার জমাকৃত টাকা থেকে তার জন্য খরচ করার জন্য বার বার নিষেদ করেন। তবুও তার পরিবারের সদস্যরা তার চিকিৎসায় কোন ত্রুটি করেনি। তাদের যার যার নিজস্ব টাকায় তার চিকিৎসা ও ঔষধের খরচ চালিয়ে যান। ফজর আলীর টাকা থেকে তারা একটি কড়িও খরচ করেননি।
হঠাৎ একদিন ফজর আলী মারা যায়। থেকে যায় তার জমাকৃত অনেক সম্পদও। অঢেল ধন সম্পদের মালিক হওয়া সত্বেও তিনি জীবনে কোনদিন ভালো কোন খাবার খাননি। কোনদিন ভালো পোশাক পরেননি। তার উপার্জিত কোন সম্পদ তার কোন কাজে আসেনি। তার পরিবারের কারও কাজে লাগেনি এসব ধন সম্পদ। বরং কয়েকবার তার সীমাহীন পরিশ্রমে অর্জিত সম্পদ চোর তার কাজে লাগিয়েছে।
ফজর আলী প্রমাণ করে দিল কৃপণের জমাকৃত সম্পদ তার নিজের এবং তার কোন আপনজনেরও কাজে লাগেনা। শুধুমাত্র কৃপণতা করে সম্পদের স্তুপ করে তা রেখে যায়। আর সারা জীবন ধরে শুধুমাত্র মানুষের অভিশাপ লাভ করে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মুহাম্মাদ লুকমান রাকীব প্রিয় কবি/লেখক. অাপনাদের জন্য নতুন ওয়েব সাইট www.kobitagolpo.com তৈরি করা হয়েছে নতুন অাঙিকে। এখানে বর্তমান প্রতিযোগীতার জন্য নির্ধারিত “বাবা-মা” শিরোনামে লেখা জমা দেয়ার জন্য অামন্ত্রণ করা হচ্ছে। অাগ্রহীগণ ২৫ নভেম্বরের মধ্যে www.kobitagolpo.com এ লিখা জমা দিন। প্রতিযোগীতায় সেরা নির্বাচিত ৬ জনকে সম্মাননা দেয়া হবে।।।
ধন্যবাদ ভাই
নাজমুল হুসাইন গল্পের শেষটা হঠাৎ করে শেষ করে দেবার মাঝেই গল্পকারের মুলশিয়ানার প্রকাশ হয় বলে বোধ করি।শেষের দু তিন লাইন না লেখাটাই বোধ হয় বেটার ছিল।বাকি অংশ ভালো লিখেছেন।আমার গল্প পড়ার আমন্ত্রণ রইলো,আসবেন।ধন্যবাদ।
ভাই এখনো ততো দূরদর্শী হতে পারিনি। আপনাদের সহযোগিতা কাম্য
Arshad Beeg ভাল গল্প
শামীম আহমেদ শুভ কামনা আর ভোট রইল।আসবেন আমার পাতায়,আমন্ত্রণ রইল।
কৃতজ্ঞ ভাই
মাইনুল ইসলাম আলিফ হ্যা তিনি জীবিত থাকতে তার সম্পদ তার এবং তার পরিবার পরিজনের কোন কাজে লাগেনি,তিনি মারা যাবার পর তার স্বজনেরা এর সুফল পাবে বটে! এর কতটা মূল্য আছে,প্রশ্ন জাগে ।তাই না? দারুণ লিখেছেন ভাই ।শুভ কামনা রইল।আসবেন আমার পাতায়,আমন্ত্রণ রইল।
ও হ্যা ভোট ও দিয়ে গেলাম।ভাল থাকবেন।
ধন্যবাদ ভাই , পরস্পরের ভালোবাসাই আমাদের এগিয়ে চলার পুঁজি
প্রজ্ঞা মৌসুমী এই যে অঢেল সম্পদ রেখে গেলেন, সেগুলো তো আপনজনেরাই পাবে। তার কোন আপনজনেরও কাজে লাগেনা- কতাটা কতটুকু সত্যি। চুড়ান্ত রকম কৃপণতা নিয়ে আপনার লেখার চেষ্টাকে সাধুবাদ। চর্চায় আরও ভালো হবে। শুভকামনা
জ্বি তা তো লাগবেই। কিন্তু তার জমাকৃত সম্পদ তার জীবকে সমৃদ্ধ করতে পারেনি। বরং কৃপণের পরিচয় নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিল

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

কৃপণ বিষয়টির সঙ্গে এ গল্পটি সমঞ্জস্যপূর্ণ

০২ অক্টোবর - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪