আমি তখন অনেক ছোট। ক্লাস থ্রি কি ফোরে পড়ি। আমি শহরের বাসা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেছি। বেড়াতে যাওয়া মানে আমন ধান কাটার সময় । অর্থাৎ অক্টোবর মাস। নবান্ন ততদিনে শেষ। পড়ালেখার খাতিরে ক্লাস ওয়ান থেকেই আমার শহরের বাসায় থেকে পড়া। আমার পৰে বা মায়ের পৰে একা থাকা সম্ভব হয়েছিল কারণ আমার ছোট একটা ভাই ছিল। শুরুর দিকে প্রতিদিনই এক ঘণ্টা করে কেঁদেছি জানালা ধরে। কার কান্না কে শোনে। এভাবেই আস্তে আস্তে ওয়ান থেকে টু, টু থেকে থ্রিতে উঠা। তবে এখন যে কাঁদি না তা নয়। মা এর কথা মনে হলে বুক ডুকরে ওঠে। আমি যেহেতু গ্রাম থেকে উঠে এসেছি তাই আমি কাঁদলে মা আমাকে তার বুকে টেনে নেয় না বা আমি কাঁদার জন্য মায়ের বুকে যেতে পারি না। আরও ছোট বেলায় হয়ত পেরেছি। তাছাড়া যৌথ পরিবারে এটা হয়েও ওঠে না।
আমন ধানের সময় ধান ৰেতে অনেক ধানের শীষ পড়ে থাকে। কাজেই ছোট বেলায় ধানের শীষ কুড়ানোটা গ্রামের ছেলে-মেয়েদের অনেক আনন্দের। কারণ এর পুরোটাই যার যার অর্থাৎ নিজেদের। সমস্যা হলো যখন ছেলে-মেয়েরা শীষ কুড়াতে যায় তখন তারা সুযোগ খোঁজে সাজানো ধান থেকে ধানের শীষ কুড়াতে। তাই সাজানো ধান পাহারা দেয়া ভাল। মা আমাকে তাই করতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি তা না করে আমার শীষ কুড়ানো ধান পা দিয়ে মাড়াচ্ছিলাম। আর অমনি মা আমাকে পাট কাঠি দিয়ে দুটা মার দিল । দিয়ে নিজেই কাঁদতে লাগল আর বলতে থাকল আমি কখনো তোকে মেরেছি। এম.এস-সি শেষ, চাকরি করছি আজ অবধি মা আর আমাকে মারে নি। সত্যি মা গো, তুমি অনেক ভাল। সন্তানের জন্যে তুমিই যে কেবল কাঁদতে পার।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
নাজমুল হাসান নিরো
গল্প-কবিতা একটি গল্প ও কবিতা প্রকাশের প্লাটফর্ম। এখানে ডায়েরী কথন বা ব্লগ টাইপের লেখা না ছাপানোর জন্য অনুরোধ করছি। তবে হ্যাঁ সেগুলোকে গল্পের আদল দিয়ে প্রকাশ করলে দোষের কিছু নেই।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।