চোর পুকুরচোর

স্বপ্ন (জানুয়ারী ২০১৮)

শরীফ মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান
  • ১২
দোকা‌নে কিছু খাবার চু‌রি করার অপরা‌ধে রানা কে ক‌ষে বেঁ‌ধে পু‌লিশ থানায় নি‌য়ে আস‌লো।রানা অসহায় মানুষ,‌দিনমজু‌রি ক‌রে তার দিন কা‌টে। ভাত জোগার করা ছাড়া তার জীবনে আর কোনো স্বপ্ন নাই । গতকাল কোথাও কাজ না পে‌য়ে বাধ্য হ‌য়েই একটা খাবার দোকান থে‌কে গোপ‌নে কিছু খাবার চু‌রি ক‌রে পালা‌তে গি‌য়ে ধরা প‌ড়ে‌ছিল রানা।চু‌রি কর‌তে চাইছিল না রানা'র মন কিন্তু না ক‌রেও সে পা‌রে‌নি কারণ তার ছে‌লে‌টি খাবার জন্য কান্নাকা‌টি কর‌ছিল।‌ছে‌লের মু‌খের আহার জোগাড় কর‌তে গি‌য়ে সে এই ভুল কাজ‌টি ক‌রে ফে‌লে‌ছে।

‌দোকানদার লোকটা পাষাণ রানার ম‌তে,‌কেননা সারারাত তা‌কে বেঁ‌ধে রে‌খে আজ‌কে তা‌কে পু‌লি‌শের কা‌ছে সোপর্দ ক‌রে‌ছে দোকানদার।আর এই সম‌য়ের ম‌ধ্যে নির্দয় লোকটা কো‌নো দানাপা‌নি দেয়‌নি রানা‌কে।রানা ক্ষুধার তাড়নায় সারারাত কষ্ট পে‌য়ে‌ছে।ক্ষুধার জ্বালা বড় জ্বালা এই দু‌নিয়ায়।
সকাল বেলা রানা‌কে থানায় দে‌খে বড় কর্তা খুব রাগ কর‌লো অফিসার‌দের ওপর। সে চিৎকার ক‌রে বলল,‌কি সব ছিচ‌কে চোর ধ‌রে নি‌য়ে আসেন আপনারা বু‌ঝিনা।
একজন পু‌লিশ কর্মকর্তা বলল,স্যার যে দোকা‌নে চু‌রি ক‌রে‌ছে তার মা‌লিক আমা‌দের‌কে খুব রি‌কো‌য়েষ্ট কর‌লো তাই নি‌য়ে এসেছি। ক‌য়েক‌দিন লকা‌পে রাখ‌লেই ঠিক হ‌য়ে যা‌বে।
‌সে তো বুঝলাম শুধু রি‌কো‌য়েষ্টই কি ক‌রে‌ছে না‌কি মালপা‌নি কিছু ছে‌ড়ে‌ছে। বড় কর্তা জান‌তে চাইল।
‌জ্বি স্যার সে আর বল‌তে,না হ‌লে কি আসা‌মি থানায় আনি। বড় কর্তার কথার জবা‌বে পু‌লিশ কর্মকর্তা বলল।
গুড,আমার ভাগ পা‌ঠি‌য়ে দি‌য়েন।ক‌য়েক‌দিন হয় মে‌য়েটা চাইনিজ খে‌তে চাইছিল কিন্তু বড় দানই তো পা‌চ্ছি না।আপনারা বড় আসা‌মি দে‌খে ধর‌তে পা‌রেন না।দুই একটা খু‌নের মামলার আসা‌মি ধরার চেষ্টা ক‌রেন।বড় কর্তা সব অফিসার‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল।
পু‌লি‌শের কথা শু‌নে রানা আশ্চর্য্য হ‌য়ে গেল। সে কখ‌নো থানায় আসেনি আর এরকম খোলা‌মেলা চু‌রির ক‌থোপকথোন জীব‌নেও শো‌নে‌নি।ম‌নে ম‌নে হে‌সে হে‌সে রানা শুধু বলল আমি‌তো শুধু এক‌দি‌নের চোর আর এরা!

বড় কর্তা এবার রানার দি‌কে নজর দিল।
‌সে একজন কে বলল,কই চোরটা‌কে আমার সাম‌নে নি‌য়ে আসো,‌দে‌খি কথা ব‌লে কেমন ধর‌ণের চোর এইটা।
রানা‌কে বাঁধা অবস্থায় বড় কর্তা যে চেয়া‌রে ব‌সে‌ছিল তার সাম‌নে এনে ব‌সি‌য়ে দেয়া হ‌লো।
রানা নিশ্চুপ ব‌সে রইল। বড় কর্তা রানা‌কে জি‌গ্যেস করল,‌কি‌রে মাদার‌চোদ চু‌রি কর‌ছিস ক্যা‌রে?
জবা‌বে রানা বলল,না ছার আমিতো চোর না,ঠ্যাকায় পইড়া কাইল কিছু খাবার চু‌রি কর‌ছিলাম পোলাডা কা‌ন্দে হে‌রে খাওন দি‌তে পা‌রিনাই তাই ভুল কর‌ছি। আমিতো দিনমজুর লোক,‌রোজ কামলা খা‌টি।কাম কাইজ না পাইলে হেইদিন অসু‌বিধায় পইড়া যাই।
তা চু‌রি কর‌লি ক্যা,কা‌রো কা‌ছে কিছু চাইয়া নি‌লেই তো পার‌তি। বড় কর্তা রানা‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল।
‌হেই চেষ্টাও কর‌ছিলাম কেউই সাহায্য ক‌রতে রা‌জি হয় নাই,ভুল কর‌ছি আমি ছার। আর করমুনা।রানা বলল।
তা বল‌লে কি আর হ‌বে।থানায় আসছো যখন কয়‌দিন হাজত খাইটা যা,চ‌রিত্র ঠিক হ‌য়ে যা‌বে।বড় কর্তা রানা‌কে কয়‌দিন হাজত খাটার শা‌স্তির কথা বলোল।
বড় কর্তার কথ‌া শুনে রানা বলল,না ছার আমা‌রে মাফ ক‌রেন।আমি আর চু‌রি করমু না,আমি হাজ‌তে থাক‌লে বউ পোলাডা না খাইয়া মর‌বো।আমা‌রে ছাইড়া দেন।
রানার কথা শু‌নে বড় কর্তা ধমক দি‌য়ে রানা‌কে বলল,ঐ মরণ কি অত সোজা। যা বল‌ছি তাই কর‌তে হ‌বে কয়‌দিন হাজ‌তে থাক তারপ‌রে তো‌রে ছে‌ড়ে দেব।
রানা নিশ্চুপ হ‌য়ে ব‌সে রইল। ‌সে আর কিছু যে বল‌বে তার সাহস কিছু‌তেই আর হ‌লো না।ম‌নে ম‌নে সে ভাবল দে‌হি একটু অপেক্ষা ক‌ইরা বড় ছা‌রের মাথা ঠান্ডা হই‌লে না হয় আবার কমু।
বড় কর্তা আবার রানা‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল,তা তোর বউ ছে‌লে কোথায় থা‌কে?
জবা‌বে রানা বলল,আমার শাশু‌ড়ির ল‌গে ঐ ব‌স্তি‌তে থা‌কে।‌হেরা খুব অসহায় ছার।
আবার বড় কর্তা কিছু বল‌তে যা‌বে এমন সময় একজন পু‌লিশ কর্মকর্তা তাকে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল,স্যার চোরটার স‌ঙ্গে কথা বলা বন্ধ ক‌রেন,মন্ত্রী সা‌হেব আমা‌দের থানায় আস‌বেন এখনই ঐ তো দে‌খেন গে‌টে এসে গে‌ছেন। দ্রুত যান তা‌কে রি‌সিভ ক‌রে নি‌য়ে আসেন।নই‌লে রক্ষা নাই আর।
বড় কর্তার মাথায় যেন বাজ প‌ড়ে‌ছে।‌কো‌নো ইনফর‌মেশন ছাড়াই মন্ত্রী সা‌হেব কেন এলেন সেটাই বুঝ‌তে পার‌ছে না বড় কর্তা । দ্রুত গি‌য়ে মন্ত্রী সা‌হেব‌কে রি‌সিভ ক‌রে ভিত‌রে নি‌য়ে এলো বড় কর্তা।

চোর রানা লক্ষ্য কর‌লো সব‌দিক চুপচাপ হ‌য়ে গে‌ছে।কা‌রো মু‌খে যেন কো‌নো ধর‌নের কথা আর ফুট‌ছে না।‌ কেউ যেন আর কথা বল‌তেই জা‌নে না । মন্ত্রী সা‌হে‌বের হঠাৎ আগম‌নে নিশ্চুপ হ‌য়ে গে‌ছে চা‌রি‌দিক,থানায় একটা টু শব্দও আর হ‌চ্ছে না । মন্ত্রী সা‌হেব বড় কর্তার চেম্বা‌রে ব‌সে‌ছে। দ্রুত তা‌কে আপ্যায়‌নের ব্যবস্থা করা হ‌চ্ছে।
রানা কান সজাগ ক‌রে শুন‌তে লাগ‌লো বড় কর্তার রু‌মের কথাবার্তা।মন্ত্রী বড় কর্তা‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বল‌ছে,‌শো‌নো যে কার‌ণে এসে‌ছি আমার ছে‌লের না‌মে ক‌য়েকটা কেস হ‌য়ে‌ছে তোমার থানায় । ‌কি তাই না ?
‌জ্বি স্যার । বড় কর্তা মন্ত্রীর কথায় সায় দিল।
‌কেসগু‌লো কে‌নো নিলা ? মন্ত্রী জান‌তে চাইল।
জবা‌বে থানার বড় কর্তা বলল,স্যার,স্যার না নিয়া উপায় ছিল না। আমরা আপনার ছে‌লের বিরু‌দ্ধে কো‌নো কেস ফাইল কর‌তে চাইনি, ‌কিন্তু পা‌রি‌নি । কারণ ধর্ষণ ক‌রে খুন ,তারপ‌রে চাদাবা‌জি,ব্যাংক লু‌টের মামলা বড় ভয়ানক কেস তবুও নি‌তে বাধ্য হ‌য়ে‌ছি।
‌কেন ? মন্ত্রী জান‌তে চাইল ।
জবা‌বে বড় কর্তা বলল,স্যার বি‌রোধী দ‌লের এক নেতা এসে‌ছিল,এসে‌ছিল টি‌ভি,খব‌রের কাগ‌জের সাংবা‌দিক। তারা লাইভ প্রচার কর‌ছিল সব‌কিছু , সুতরাং কেস না নি‌লে আমার অবস্থা কি হ‌তো একবার ভে‌বে দেখুন প্লিজ স্যার।
বুঝ‌ছি তোমা‌রে রাঙ্গামা‌টি বদ‌লি কর‌তে হ‌বে । মন্ত্রী সা‌হেব হুম‌কি দি‌য়ে বড় কর্তা‌কে বলল ।
স্যার দয়া ক‌রেন,আমার ছে‌লে মে‌য়ে গু‌লো‌রে মানুষ কর‌তে হ‌বে শহ‌রে থে‌কে। আমা‌রে বদ‌লি কর‌বেন না প্লিজ স্যার । থানার বড় কর্তা কাকু‌তি মিন‌তি ক‌রে মন্ত্রী সা‌হেব‌কে বল‌তে লাগল।
এবার মন্ত্রী সা‌হেব একটু ন‌ড়েচ‌ড়ে ব‌সে বড় কর্তা‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল,আচ্ছা দে‌খি,তা এখন কি কর‌তে চাও আমার ছ‌ে‌লের ব্যাপা‌রে।
এবার বড় কর্তা হাত কচলা‌তে কচলা‌তে বলল,স্যার স্যার আপ‌নি যেভা‌বে যা কর‌তে ব‌ল‌বেন সেভা‌বেই সব‌কিছু করবো।
এবার মন্ত্রী সাহেব বলল,আচ্ছা,আচ্ছা ঠিক আ‌ছে আমার নি‌র্দেশ ম‌তো তাহ‌লে কাজ ক‌রো।
‌জ্বি স্যার অবশ্যই আপ‌নি বলুন কি কর‌তে হ‌বে। বড় কর্তা অনুগত দা‌সের ম‌তো জান‌তে চাইল মন্ত্রী সা‌হে‌বের কা‌ছে।
এবার মন্ত্রী সা‌হেব নি‌র্দেশ দি‌য়ে বলল,‌শো‌নো কেসগু‌লো সবই থাকুক সমস্যা নাই,তু‌মি শুধু আমার ছে‌লে‌কে খুঁ‌জে পা‌বে না । ‌সে তোমার চো‌খের সাম‌নে ঘুর‌লেও তু‌মি মি‌ডিয়া‌কে বলবা আসা‌মি ফেরারী হ‌য়ে‌ছে তা‌কে কোথাও খুঁ‌জে পাওয়া যা‌চ্ছে না। তু‌মি তা‌কে গ্রেফতার করার জন্য স‌র্বোচ্চ চেষ্টা ক‌রে যাচ্ছ। ব্যস হ‌য়ে গেল।বুঝ‌তে পারছো।
‌জ্বি স্যার আপ‌নি যেমন ব‌লে‌ছেন তেমনই হ‌বে।বড় কর্তা মন্ত্রী সা‌হে‌বের কথা মে‌নে নি‌লেন।


এবার মন্ত্রী সা‌হে‌বের জন্য বি‌শেষ বি‌শেষ খাবার আনা হ‌লো তার সম্মু‌খে । তার সাঙ্গপাঙ্গ নি‌য়ে গোগ্রা‌সে খাওয়া শুরু কর‌লো মন্ত্রী সা‌হেব । ‌খে‌তে খে‌তে সে আবার পুনরায় বড় কর্তা‌কে ধর‌লো আরেকটা বিষয় নি‌য়ে । ‌সে থানার বড় কর্তা‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল,তা শুনলাম আদনান সা‌হেব না‌কি এসেছিল ক‌য়েকবার তোমার কা‌ছে আমার না‌মে কেস করার জন্য।
বড় কর্তা জবা‌বে বলল , ‌জ্বি স্যার স‌ত্যি শু‌নে‌ছেন । ‌সে ব‌লে বেড়া‌চ্ছে আপ‌নি না‌কি পুকুর‌চোর, ঠ‌কি‌য়ে আপ‌নি না‌কি তার দেড়শ শতাংশ জ‌মি দখ‌লে নি‌য়ে নি‌য়ে‌ছেন। সে আপনা‌কে লকআপে ভড়‌তে চায়।আপনার বিরু‌দ্ধে জা‌লিয়া‌তি মামলা কর‌তে চায়।আমি অবশ্য মামলা নেই নাই । তা‌কে ব‌লে‌ছি প্রমাণ নি‌য়ে আস‌তে তারপ‌রে মামলা নেব । ‌সে আমা‌কে হুম‌কি দিয়ে গে‌ছে স্যার। বলে‌ছে প্রমান নি‌য়েই আসব।
খাওয়া শেষ ক‌রে বড় কর্তা‌কে উদ্দেশ্য ক‌রে মন্ত্রী সা‌হেব বলল,‌কি বললা প্রমান নি‌য়ে আস‌লে মামলা নেবা,‌তোমার মাথা খারাপ হই‌ছে।‌কো‌নো অবস্থায়ই কো‌নো ধর‌ণের মামলা আমার বিরু‌দ্ধে নেয়া যা‌বে না ঠিক আছে।
এবার বড় কর্তা বলল,‌জ্বি স্যার আমার ভুল হ‌য়ে গে‌ছে,মাফ ক‌রে দেন। কো‌নো দিনও কো‌নো ব্যাপা‌রে আপনার বিরু‌দ্ধে কোনো কেস হ‌বে না,‌ঠিক আছে স্যার।
রাইট।সাবধা‌নে আমার কথা ম‌তো চলবা।আমার অনুম‌তি ছাড়া আমার বা আমার প‌রিবা‌রের কা‌রো বিরু‌দ্ধে কিছু করবা না,ম‌নে থাক‌বে।মন্ত্রী সা‌হে‌ব হুকু‌মের সু‌রে থানার বড় কর্তা‌কে সাবধান ক‌রে দিল।
বড় কর্তা ভ‌য়ে ভ‌য়ে বলল,‌জ্বি স্যার সবসময় ম‌নে থাক‌বে।
এবার মন্ত্রী সা‌হেব বিদায় নি‌য়ে বলল,আসলাম তাহ‌লে।
মন্ত্রী সা‌হেব চ‌লে গেল।আর থানার সবাই হাফ ছে‌ড়ে বাঁচল। বড় কর্তার ওপ‌রে এতক্ষণ বি‌শেষ এক ঝড় ব‌য়ে গেল।

এতক্ষণ সব‌কিছু ম‌নো‌যোগ দি‌য়ে শু‌নে‌ছে সামান্য এক‌দি‌নের খাবার চোর রানা।তার খাবার চু‌রির অপরা‌ধে তা‌কে কি নির্মম ভা‌বে বেঁ‌ধে এনেছে এই আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বা‌হিনী।আর চো‌খের সাম‌নে দি‌য়ে এভা‌বে বীরদ‌র্পে চল‌ছে বড় বড় পুকুর‌চোর । তা‌দের বিরু‌দ্ধে সামান্য কথা বলারও এতটুকু সাহস নেই থানার বড় কর্তা‌দের।দুঃ‌খে ক‌লিজা ফে‌টে যা‌চ্ছিল দিনমজুর সামান্য ছিচকে চোর রানা'র।‌ ম‌নে ম‌নে রানা বলল হায় দু‌নিয়া চোর আর পুকুরচো‌রে ভ‌রে গে‌ছে তোমার জ‌মিন।


বড় কর্তা নি‌জের চেম্বার ছে‌ড়ে আবার রানা'র সাম‌নে এসে হা‌জির হ‌লো। ‌সে রানা কে কিছু বল‌তে যা‌বে তার আগেই রানা তাকে উদ্দেশ্য ক‌রে বলল,স্যার একটা প্রশ্ন করমু কিছু ম‌নে কই‌রেন না।
বড় কর্তা বলল,য‌া বলবা সং‌ক্ষে‌পে বলবা,‌বে‌শি কিছু জি‌গ্যেস করবা না। মাথা এখন গরম আছে বুঝলা মিয়া।
রানা এবার বড় কর্তা‌কে জি‌গ্যেস করল,‌জ্বি ছার ছোট্ট কইরাই কমু,কথা হই‌ছে এই আপনারা আমার ম‌তো চোর‌রে এত শক্ত
কইরা বাইন্ধা আনেন । আর ঐ বড় বড় পুকুরচোর গুলা‌রে চো‌খের সাম‌নে দিয়া চল‌তে দেন ক্যান,আর এত্ত এত্ত ছার ছার ক‌রেন ক্যান? ওগো একটা‌রেও ধ‌রেন না ক্যান ? ভাগ বা‌টোয়ারা কইরা এক‌যো‌গে খাই‌বেন বইলা ? এতটুকু ব‌লে রানা চুপ করল।
এই কথা শু‌নে তে‌লে বেগু‌নে জ্ব‌লে উঠল থানার বড় কর্তা।‌জোড়‌সে এক লা‌থি ব‌সি‌য়ে দি‌লো রানার গা‌য়ে।তারপ‌রে চিৎকার দি‌য়ে বড় কর্তা বলল,‌কি বল‌লি শু‌য়ো‌রের বাচ্চা।এক‌যো‌গে খাই আমরা।এই কে আছিস এই কুত্তার বাচ্চার বাঁধন খু‌লে দে। ওরে ছাইড়াদে ,ও স‌ত্যি কথা বইলা আমার চাকু‌রিটা শেষ করব । যা এখান থে‌কে তো‌রে জা‌নি কো‌নো‌দিন থানার ধা‌রে কা‌ছে না দে‌খি।
একজন পু‌লিশ কর্মকর্তা রানা'র সমস্ত বাঁধন খু‌লে দিল । রানা মু‌ক্তি পে‌য়ে গেল ।

ধীরপ‌দে রানা থানা থে‌কে বের হ‌য়ে আস‌লো।‌চো‌খের পা‌নি মুছ‌তে মুছ‌তে সে ভাব‌লো দু‌নিয়াটা চোর আর পুকুর‌চো‌রে ভ‌রে গে‌ছে। আমা‌দের ম‌তো সাধারণ মানু‌ষের সব স্বপ্ন চু‌রি হ‌য়ে গে‌ছে,সব স্বপ্ন আজ পুকুর চোর‌দের প‌কে‌টে‌ চলে গে‌ছে।তারা এক‌যো‌গে দু‌নিয়ার ক্ষমতা গ্রহণ ক‌রে‌ছে।‌কেউ কেউ ই‌চ্ছে ম‌তো নি‌জের ক্ষমতার অপব্যবহার কর‌ছে,আবার কেউ কেউ ঘু‌ষের দোকান খু‌লে ব‌সে‌ছে,তারা স্বপ্ন দে‌খে তা‌দের সন্তান‌দের চাই‌নিজ খাওয়া‌নোর।রানা'র সন্তান এর কপা‌লে ভাতই জো‌টেনা। অতএব তার অথবা আমজনতার জীব‌নের সব স্বপ্ন একেবা‌রে চু‌রি হ‌য়ে গে‌ছে।সব স্বপ্ন আর সব‌কিছু পাওয়ার অধিকার হয়‌তো পুকুর চোর‌দের দখ‌লে চ‌লে গে‌ছে । রানা ভে‌বে ভে‌বে চরমভা‌বে ব্য‌থিত হ‌লো।

সুতরাং রানা'র ম‌তো ছিচ‌কে চো‌রের ঠাঁই নাই এই দু‌নিয়ায়।পথ চল‌তে চল‌তে রান‌া তাই একটা সিদ্ধান্ত নি‌য়ে নি‌লো যে‌হেতু তার জীব‌নে কো‌নো স্বপ্ন নাই,নাই কো‌নো চাওয়া পাওয়া আর নাই কো‌নো আশা ভরসা অতএব না খে‌য়ে সবাই ম‌রে গে‌লেও সে আর কো‌নো‌দিন চু‌রি কর‌বে না।

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ নুরেআলম সিদ্দিকী দারুণ মর্মান্তিক গল্প। আজকালকার আইন শুধু গরীবদের জন্য, বড় লোকের জন্য কোন আইন নেই; যদিও বলে আইন সবার জন্য সমান, কিন্তু এর আদৌ কি সত্যিকার প্রমাণ দিতে পেরেছে......? মোটেও পারেনি। বেশ ভালো লেগেছে। আর আপনি মনে হয় মোবাইলে গল্প লেখেন, কিংবা অভ্রতে লেখেন; কারণ বানানে একটু সমস্যা দেখেছি তো তাই.... অক্ষর লেখার পরে (ে,ো,ৈৌ) সহ এ ধরনের যাবতীয় জিনিস গুলো ব্যবহার করবেন, তাহলে আশা করি ঠিক হয়ে যাবে....শুভকামনা রইল...
ছবি আনসারী valo legechechhe golpo . sotyi kothar vat nai jogote .
ম নি র মো হা ম্ম দ .ভালো লেগেছে আমার কবিতায় আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলাম।ভাল থাকুন।
অনেক ধন‌্যবাদ।শুভেচ্ছা রইল।ভালো থাকবেন।
ওয়াহিদ মামুন লাভলু ঠ্যাকায় পড়ে রানা খাবার চুরি করেছিল। তার জন্য তাকে অনেক কষ্ট পেতে হলো। গল্পের শেষে মূল্যবান শিক্ষণীয় বিষয় আছে। না খেয়ে সবাই মরে গেলেও আর কোনোদিন চুরি না করার সিদ্ধান্তটা অনুসরণীয়। ভালো লিখেছেন। শ্রদ্ধা গ্রহণ করবেন। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো। আমার জন্য দোয়া করবেন প্লিজ। ভালো থাকবেন। নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা নিবেন০।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৮
অনেক অনেক ধন‌্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা আর দোয়া রইল।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৮
মাইনুল ইসলাম আলিফ দারুণ শিক্ষনীয় সুন্দর গল্প।অসাধারণ।শুভ কামনা আর ভোট রইল,পছন্দও।আমার পাতায় আমন্ত্রণ রইল,আসবেন সময় করে।
ভালো লাগেনি ১৬ জানুয়ারী, ২০১৮
ধন্যবাদ অশেষ। শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লাগেনি ১৬ জানুয়ারী, ২০১৮
%3C%21-- %3C%21-- khub koshto hocche eshob pukur chor der kotha bhebe. vote rekhe gelam :) bhalo thakben.
মোঃ মোখলেছুর রহমান সব স্বপ্ন আজ পুকুর চোরদের পকেটে চলে গেছে,,,,অসাধারন।
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৮
ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
ভালো লাগেনি ৯ জানুয়ারী, ২০১৮
জসীম উদ্দীন মুহম্মদ সাবলীল ভাষায় চমতকার গল্প।।
ভালো লাগেনি ৬ জানুয়ারী, ২০১৮
অনেক ধন্যবাদ।শুভেচ্ছা রইল।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৮
নূরনবী ভালো লাগলো, ভোট রইল
নাঈম রেজা ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২ জানুয়ারী, ২০১৮
শুভেচ্ছা আর ধন্যবাদ রইল।
ভালো লাগেনি ২ জানুয়ারী, ২০১৮

২২ জানুয়ারী - ২০১৭ গল্প/কবিতা: ১১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "অবহেলা”
কবিতার বিষয় "অবহেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ এপ্রিল,২০২৪