ফুল, পাথর ও সবুজ শ্যাওলার গল্প

ঈর্ষা (জানুয়ারী ২০১৩)

আহমেদ সাবের
  • ৪৭
  • ১৫
বৈশাখের খররোদ্রে, আকাশ ছোঁয়া মায়ের পাঁজর থেকে
একটা চাঙ্গড় খসে, দ্বিখণ্ডিত হয়ে ছিটকে পড়লো তারই পায়ের নীচে;
তারপর গড়িয়ে গেলো শ্যামল উপত্যকার দুটো ভিন্ন ঠিকানায় -
সুনামিতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া দুই সহোদরের মতো।

বৃষ্টির নিষাদ, নিষ্করুণ বল্লম ফোটাল ওদের গায়ে।
বন্যার অশান্ত পানিতে শ্বাস-রুদ্ধ হয়ে
ওরা একে অন্যের দিকে চেয়ে থাকলো অনুকম্পায়;
দৈবগ্রহে তবু, ওরা টিকে গেলো বর্ষার নিষ্ঠুর ছোবল।

শরতের স্বর্ণাভ রোদে ওরা খিল খিল করে হেসে উঠলো ঝর্না হয়ে;
হেমন্তের উদাসী হাওয়া ওদেরকে মনে করিয়ে দিলো মায়ের কথা।
বিচ্ছিন্ন দ্বীপে দাঁড়িয়ে ওরা নীরবে দু ফোটা অশ্রু ফেললো মায়ের জন্যে,
মাকড়সার জালের মতো বয়ে যাওয়া কাকচক্ষু-জল স্রোত-ধারায়।

অবশেষে, হেমন্তের সিঁড়ি বেয়ে পাহাড়ে নেমে এলো শ্বেত ভাল্লুক।
গাছ গাছালির বেড়াজাল ফাঁকি দিয়ে এক টুকরো নরোম আলো
এতটুকু উষ্ণতার পরশ বুলালো একটা পাথরে; আর
আরেক খণ্ড বন্দী হয়ে থাকলো হিমের নিষ্করুণ কারাগারে।

দেখতে দেখতে পয়মন্ত পাথরের গা ঘেঁষে
শীতের শাসনকে উপেক্ষা করে মেলা বসালো পাহাড়ী ফুলের রঙ্গীন সম্ভার।
পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া পথচারীরা পরম আগ্রহে
উপভোগ করলো ফুল আর পাথরের অপার্থিব সৌন্দর্য।

আর, শীতের জঠরে বন্দী বর্ণহীন পাথরে, শ্যাওলার আস্তরণ পড়ে
সেটা সবুজ থেকে সবুজতর হতে থাকলো দিনে দিনে।



সিডনী ১৬ ডিসেম্বর, ২০১২

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
জালাল উদ্দিন মুহম্মদ আর, শীতের জঠরে বন্দী বর্ণহীন পাথরে, শ্যাওলার আস্তরণ পড়ে সেটা সবুজ থেকে সবুজতর হতে থাকলো দিনে দিনে। ------- // সৌন্দর্যের আবেদনময় আলোকচ্ছটা । সাধুবাদ সাবের ভাই।
ভালো লাগেনি ২৪ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ জালাল উদ্দিন মুহম্মদ । শুভেচ্ছা থাকলো।
ভালো লাগেনি ২৬ জানুয়ারী, ২০১৩
তাপসকিরণ রায় লেখার সুন্দর ধারাবাহিকতায় কোথাও কোথাও এক দুটি শব্দ ও ভাব নিয়ে ভাবছিলাম।কবিতার নাম খানি কিন্তু বড় আধুনিক--গদ্য কবিতার ভাব ভাবনায় আপনি বেশ এগিয়ে আছেন বুঝতে পারলাম।প্রবাসী লেখককে আন্তরিক ধন্যবাদ।
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ তাপসকিরণ রায়। "কোথাও এক দুটি শব্দ ও ভাব নিয়ে ভাবছিলাম" - ভাবনাটা যদি কবিতার কোন অসামঞ্জস্যতা নিয়ে হয়, জানালে অত্যন্ত খুশী হবো। লেখকের দৃষ্টিতে অনেক সময় অনেক কিছু এড়িয়ে যায়। ভালো থাকবেন।
ভালো লাগেনি ২৩ জানুয়ারী, ২০১৩
মোঃ আক্তারুজ্জামান ছোট বেলা দেখতাম লাঙ্গলের ফলায় আটকে অদ্ভুত রকমের শব্দ তুলে আমনের ক্ষেতে উঠে আসতো মস্ত এক একটা চাঙ্গর| বাবার চেহারাটা হয়ে উঠতো মলিন| আমরা কাঠের বড় মুগুর দিয়ে তা ভেঙ্গে গুড়ো করতাম| আমাদের সেই অজপাড়া গাঁওয়ের মাটি মানুষের চাঙ্গরের সাহিত্য পাতায় এত সুন্দর স্থান পাওয়া দেখে অবাক হয়েছি| সাবের ভাই-ই পারেন এমন অভিভূত করতে, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ|
ভালো লাগেনি ২১ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ মোঃ আক্তারুজ্জামান ভাই। ভালো থাকবেন।
ভালো লাগেনি ২১ জানুয়ারী, ২০১৩
সানোয়ার রাসেল শ্যাওলা পড়া পাথরটার কথা পড়েই কেমন যেন শীত শীত লাগছে।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ সানোয়ার রাসেল। শুভাকামনা রইলো।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৩
পন্ডিত মাহী মনের মাঝে সেই দৃশ্যকল্প দেখতে পেলাম, যেমনটি কবি দেখেছেন। এ কবিতা একেবারেই আলাদা কিছু, একবারেই ভেতরে গেঁথে যাওয়ার মত... আর গিয়েছেও তো।
ভালো লাগেনি ১৭ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ মাহী । শুভাকামনায়।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৩
ভাবনা অবশেষে, হেমন্তের সিঁড়ি বেয়ে পাহাড়ে নেমে এলো শ্বেত ভাল্লুক। গাছ গাছালির বেড়াজাল ফাঁকি দিয়ে এক টুকরো নরোম আলো এতটুকু উষ্ণতার পরশ বুলালো একটা পাথরে; আর আরেক খণ্ড বন্দী হয়ে থাকলো হিমের নিষ্করুণ কারাগারে। ------ অতুলনীয় কবিতা ।
ভালো লাগেনি ১৬ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ ভাবনা। শুভেচ্ছা সহ।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৩
নিরব নিশাচর অনেক কঠিন কবিতা... তবে কবিতার বক্তব্য সুগভীর
ভালো লাগেনি ১৬ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ নিরব। আর একটু সরব হওয়া দরকার। অনেক শুভকামনা।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৩
ধীরে ধীরে সব হবে সবের ভাই...
ভালো লাগেনি ২১ জানুয়ারী, ২০১৩
মামুন ম. আজিজ সুকঠিন প্রান্তরে হেঁটে গেলো গভীর শব্দমালা
ভালো লাগেনি ১৬ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ মামুন। শুভেচ্ছা সহ।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৩
নৈশতরী পরিণত হাতের পরিণত লিখা ভেতর থেকে ভালো লাগলো... অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানবেন...।
ভালো লাগেনি ১৫ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ নৈশতরী। কেমন আছ? তোমাকে আজকাল বেশ নীরব মনে হচ্ছে। তোমার কল্যান কামনা করি।
ভালো লাগেনি ১৮ জানুয়ারী, ২০১৩
রনীল ম্যাক্সিম গোর্কির একটা ছোট গল্প পরেছিলাম অনেক আগে- "মানুষের জন্ম"... খুব সাধারণ গল্প, কিন্তু লেখনী পরে শিরশির করছিল শরীর... আপনার কবিতাটি পড়ে সেই গল্পটির কথা মনে পড়ে গেল... দৈবগ্রহ- শব্দটির মানে কি? প্রথম পাথরটিকে যদি পয়মন্ত বলা হয়, তবে দ্বিতীয় পাথরটিকে কি বলা যায় এখানে?
ভালো লাগেনি ১৫ জানুয়ারী, ২০১৩
ধন্যবাদ রনীল । দৈবগ্রহে মানে ভাগ্যক্রমে। পয়মন্ত মানে ভাগ্যবান। অন্য পাথর তার উল্টোটা হবে - ভাগ্যহীন বা অপয়া।
ভালো লাগেনি ১৫ জানুয়ারী, ২০১৩

০৭ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ৩৫ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪