স্বর্ণলতা

স্বপ্ন (জানুয়ারী ২০১৮)

reza karim
  • ১১
মাঠের মাঝখানে বিশাল বটগাছটার নিচে বসে স্বপ্ন দেখে রানা। পাশেই মেঠোপথ দিয়ে দলে দলে স্কুলে যায় ওরই বয়েসী ছেলেমেয়ে। সবার হাতেই বইখাতা। মেয়েরা চুলে ফিফতা বেধেঁ আর ছেলেরা তেলতেলে মাথায় চিরুনীর আঁচড় বসিয়ে কেমন সেজেগুঁজে হেঁটে যায়। সবার গায়েই একই রঙের জামা। পায়ে স্যান্ডেল। কেউই খালি পায়ে স্কুলে যায় না।

রানা নিজেকে ঐ দলের মধ্যে দেখতে পায়। হৈ চৈ করে সবাই মিলে স্কুলে যাচ্ছে। রাস্তার দু পাশে কখনো ফসলের মাঠ । কখনো বিল। বিলের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে মাটির রাস্তা। রোদেও আলোয় চকচক কওে পরিষ্কার পানি। রাস্তার দু পাশে লাফিয়ে পড়ে ব্যাঙ। কখনো ভুস কওে ভেসে ওফে মাছ। আবার ডুব দেয় পানিতে। সাদা বক বসে থাকে মগ্ন হয়ে। কখন ধরতে পারবে একটা মাছ। ফেলাফেলি খেলা খেলতে খেলতে এগিয়ে যায় ছেলেমেয়ের দল। ককের দিখে চোখ যেতেই সবাই একসঙ্গে ছড়া কাটে-
“ঐ দেখা যায় তালগাছ
ঐ আমাদের গাঁ
ঐখানেতে বাস করে
কানা বগীর ছা। ”

কেউ কেউ ঢিল ছোঁড়ে বকের দিকে। বক তখন অসহ্য একটা বিরক্তি নিয়ে উড়াল দেয়। কিছুদূর গিয়ে আবার নেমে পড়ে পানিতে। যে জায়গায় বকের হাঁটু পানি হয়। তারপর আবার মাছের জন্য প্রতীক্ষা। বক এমনভাবের বসে খাকে যেন একটা গাছ। নট নড়ন চড়ন। খাবারের খোঁজে তখন সে নিমগ্ন । যদি একটা পুঁটির দেখা মেলে।

স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা এগিয়ে যায়। সবার মুখেই হাসি। এদেও কারো চেহারায় বিষণœতার ছাপ দেখা যায় না। শুধু রানার বুকটা টিপটিপ করতে থাকে। সে শুনেছে স্কুলের মাস্টার বড়ই কড়া। পড়া না পারলে বেদম মারে। ওকেও কি মারবে? রানা ভঅবে যদি তাকে মারে। সে আর কখনো স্কলে যাবে না। হাতের বই গুলোর দিকে তাকিয়ে আশ্চর্য হয়। এােত বই সে কীভোবে পড়বে। ও আর চিন্তা করতে পাওে না। ছেলেমেয়েরা ওর নাম ধরে ডাকতে থাকে। চেয়ে দেখে সবাই হৈ হুল্লোড় করে বড়ই গাছ থেকে স্বর্ণলতা ছিঁড়ে নিচ্ছে। যে যার মতো প্যান্ট ও শার্টেও পকেটে ভরছে। এগুলো নাকি এক রকমের সেমাই । স্বর্ণলতা ছিঁড়তে গিয়েও ছেলেমেয়েরা ছড়া কাটছে।

“স্বর্ণলতা স্বর্ণলতা
ঊড়ই গাছের সই
আয়রে সকল ছেলেমেয়ে
স্বর্ণলতা হই।
স্বর্ণলতা পরগাছা তো
আমরা হবো ক্যান
হলে হবই না হলে না
করিস না ঘ্যান ঘ্যান। ”

ছড়া শুনে রানা অবাক হয়। পড়াশুনা করলে সেও তো অনেক কিছু জানবে। সবার মতো এভাবে ছড়া কাটতে পারবে।
একসময় স্কুলে পৌঁছে যায় ছেলেমেয়ের দল। এখানেও সেই হৈ চৈ। শিক্ষক না আসা পর্যন্ত চলে তাদের খেলাধূলা। কেউ খেলে ফুটবল। কেউবা ছোঁয়াছুঁয়ি। কেউ খেলে চোর পুলিশ। আর কেফবা খেলে এক্কাদোক্কা। ঘন্টা পড়তেই সবাই যার যার জায়গায় গিয়ে বসে পড়ে। সেই জায়গা নিয়েও কতো ঠেলাঠেলি। কতো খুনসুঁটি। রানা আজ নতুন এসেছে। তাই সবার চোখ আড়চোখে ওকেই দেখছে। শিক্ষক ওকে কাছে ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। এভাবে একটা একটা করে সবগুলো পিরিয়ড শেষ হয়ে গেলো। রানা খুব খুশি। আজ তার কতো বন্ধু।

বাড়িতে ফেরার পথে বৃষ্টি নামলো। ছেলেমেয়েরা আনন্দে চিৎকার করে ওঠলো। বৃষ্টি এলে যে এতো মজা হয় রানা হতা এতোদিন বুঝতেই পারে নি। কাদার মধ্যে পিচ্ছিল খাওয়া। হা করে বৃষ্টি খাওয়া। জামাকাপড় ভিজে চুপসে গেছে। বইখাতার কী বেহাল দশা। রানা বুঝতে পারে সবাই মিলে আনন্দ করায় অনেক মজা।

হঠাৎ কোথায় যেন হারিয়ে যায় তার সব বন্ধু। সেই সাথে বইগুলোও উধাও হয়ে যায়। তার সামনে বৃষ্টিতে ভিজে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে চিৎকার করতে থাকে একপাল বকরি। বেপারির ডাকে সে সম্বিত ফিরে পায়। কল্পলোক থেকে সে বাস্তবতায় ফিরে আসে। ‘নবাবের পুত’ বলে গালি দেয় বেপারি। সেই সাথে ঠাশ করে পড়ে একটা চড়। রানার কচি গাল মূহুর্তেই লালে লাল হয়ে যায়। চোখ দুটো যেন বর্ষার ভরা পুকুর। বৃষ্টির পানি আর চোখের পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। মনের সব স্বপ্ন মুছে বকরির পাল ছুটিয়ে দেয় বেপারির বাড়ির দিকে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ছবি আনসারী golpoTa valo laglo . sei mayabi gramer chirichena chitro . boker bornonaswornolotar choRa valo legeche . tobe kichu banan somsya roye gelo . valo thakben .
ম নি র মো হা ম্ম দ বক তখন অসহ্য একটা বিরক্তি নিয়ে উড়াল দেয়। কিছুদূর গিয়ে আবার নেমে পড়ে পানিতে। যে জায়গায় বকের হাঁটু পানি হয়। তারপর আবার মাছের জন্য প্রতীক্ষা। বক এমনভাবের বসে খাকে যেন একটা গাছ। নট নড়ন চড়ন। খাবারের খোঁজে তখন সে নিমগ্ন । যদি একটা পুঁটির দেখা মেলে।ভালো লেগেছে. . আমার কবিতায় আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলাম
মাইনুল ইসলাম আলিফ তার সামনে বৃষ্টিতে ভিজে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে চিৎকার করতে থাকে একপাল বকরি। বেপারির ডাকে সে সম্বিত ফিরে পায়। কল্পলোক থেকে সে বাস্তবতায় ফিরে আসে। ‘নবাবের পুত’ বলে গালি দেয় বেপারি। সেই সাথে ঠাশ করে পড়ে একটা চড়। রানার কচি গাল মূহুর্তেই লালে লাল হয়ে যায়। চোখ দুটো যেন বর্ষার ভরা পুকুর। বৃষ্টির পানি আর চোখের পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। মনের সব স্বপ্ন মুছে বকরির পাল ছুটিয়ে দেয় বেপারির বাড়ির দিকে। গল্পের শেষটা ছোট গল্পের মতোই হয়েছে।শেষ হয়েও হইল না শেষ।অসাধারণ।শুভ কামনা আর ভোট রইল।আমার কবিতায় আমন্ত্রণ।
মোস্তফা হাসান প্রকৃতি নৈসর্গ বর্ণনায় আপনার দক্ষতা মন জুড়িয়ে দেয়। আরো লিখবেন। শুভকামনা। আমার লেখা স্বপ্ন-আয়না গল্পটি পড়লে খুশি হব।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি চোখ দুটো যেন বর্ষার ভরা পুকুর। বৃষ্টির পানি আর চোখের পানি মিলে একাকার হয়ে যায়। মনের সব স্বপ্ন মুছে বকরির পাল ছুটিয়ে দেয় বেপারির বাড়ির দিকে। ....// শেষ ভালো যার সব ভালো তার.....খুব ভালো গল্প....শুভ কামনা রইলো....সময় করে আসবেন আমার পাতায়....
প্রজ্ঞা মৌসুমী সেবার মাছ ধরার বর্ণনায় মুগ্ধ হয়েছিলাম, এবার স্বর্ণলতার বর্ণনায়।সত্যি বাংলার সহজ-সরল প্রকৃতি কত মায়াময়। ভালো লেগেছে গল্পের শেষ। কয়েকটা ভুল বানান ছাড়া গল্পটা ছিল চমৎকার।
বালোক মুসাফির শিক্ষা এবং সামাজিক সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত একটি শিশুর গল্প। এমন একটি শিক্ষামূলক গল্প লিখার জন্য ধন্যবাদ।
মৌরি হক দোলা খুব সুন্দর গল্প.... ভালোলাগা ও শুভকামনা নিরন্তর...
গল্পটি আসলেই সুন্দর। শুভকামনা লেখকের জন্য।
সুমন আফ্রী ছোট্ট কিন্তু অসাধারণ। ভালো লাগলো। শুভকামনা লেখকের জন্য। আমার পাতায় আমন্ত্রণ..

১৪ নভেম্বর - ২০১৫ গল্প/কবিতা: ৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

বিজ্ঞপ্তি

“ফেব্রুয়ারী ২০২৫” সংখ্যার জন্য গল্প/কবিতা প্রদানের সময় শেষ। আপনাদের পাঠানো গল্প/কবিতা গুলো রিভিউ হচ্ছে। ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ থেকে গল্প/কবিতা গুলো ভোটের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং আগামি সংখ্যার বিষয় জানিয়ে দেয়া হবে।

প্রতিযোগিতার নিয়মাবলী