সত্যায়িত

অসহায়ত্ব (আগষ্ট ২০১৪)

joy biswas
শোভন এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বি.বি.এ তে চান্স পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন।সন্দ্বীপের একটি ছোট গ্রামে তার বাড়ি।তার কঠোর অধ্যবসায় আজ তার এই সফলতা এনে দিয়েছে।তবে তার ভর্তি হওয়া নিয়ে জটিলতা অন্য সবার চেয়ে অনেকটা বেশিই হয়েছিল।

ভর্তির দিন খুব সকালেই সে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত।গুটিকয়েক শিক্ষার্থী এসে পৌঁছেছে মাত্র।শোভনের সাথে তার এক বন্ধু এসেছে।মাধ্যমিক,উচ্চ-মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সে এনেছে।শুধুমাত্র তার ছবিগুলো সত্যায়িত করা হয়নি।নোটিশবোর্ডে ছবির সাথে যে তা সত্যায়িত করতে বলা হয়েছে,তা তার দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছিল।চট্টগ্রাম শহরে সে এক প্রকার নতুন।তাই এখন সত্যায়িত করাও খুব সমস্যার ব্যাপার।সে তার বন্ধুকে কথাটা জানালো।তা শুনে বন্ধুটি বললো,"আরে এটা কোনো ব্যাপারই না।সামনে একটা স্ট্যাম্পের দোকান আছে।ওখান থেকে সিল,সই দুইটাই করা যাবে।"।বন্ধুর পরামর্শ মতো সে ২০ টাকা খরচ করে সিল,সই দু'টোই করিয়ে নিল।দোকানদার অতি বিজ্ঞের মত সিল মেরে সই করে দিলো।সেখান থেকে কাগজপত্র আর ছবি নিয়ে সে গেল ভর্তি অফিসে।
যিনি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের থেকে কাগজপত্র জমা নিচ্ছেন,তার পাশেই শিক্ষক গোছের একজন বসে আছেন।সমস্ত কাজকর্মের উপর চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন।শোভন যখন তার কাগজপত্র আর ছবি দিচ্ছে,তখন লোকটির চোখ আটকে গেল ছবিতে থাকা সিলের নামটিতে।তিনি শোভনকে জিজ্ঞেস করলেন,"ডাঃ মোজাম্মেল হক(সিলে যার নাম আছে) কি তোমার পরিচিত?"।শোভন বলল,"জ্বি"।তখন তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন,"কখন সত্যায়িত করলে ওনার কাছ থেকে?"।শোভন আবারও মিথ্যে উত্তর দিল।বলল,"গত পরশু"।তখন তিনি বললেন,"যে লোক গত বছর মারা গিয়েছেন,তিনি কিভাবে গত পরশু তোমার ছবি সত্যায়িত করলেন?।তিনি আমার আপন চাচা হন।তুমি কিভাবে তার সিল,সই পেলে বলো?"।তখন শোভন ভীতস্বরে সমস্ত কিছু খুলে বলল।সব শুনে তিনি শোভনকে বললেন,"এমনটা আর কখনো করবেনা।এবারের মতো ক্ষমা করলাম।কিন্তু মনে রেখো সবাই আমার মত নাও হতে পারে"।শোভন তার ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে কাগজপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে এল।বাইরে এসে তার স্বস্তি ও হতাশা মিশ্রিত দীর্ঘশ্বাস পরলো।তার মনে হল,কিছু নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় ফরমালিটিসের কাছে আমরা সত্যিই খুব অসহায়...।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ওয়াহিদ মামুন লাভলু মূল্যবান চিত্র তুলে ধরেছেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
নেমেসিস এই সত্যায়িত করবার বিষয়ে আমাদের অনেকেরই এমন তিক্ত-মধুর অভিজ্ঞতা আছে। আসলেই কী এটা খুব প্রয়োজনীয়!
হা হা!।এটি এখন জাতির অন্যতম প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
মহসিন মিজি চমৎকার গল্প পড়লাম। ভালো লাগলো। ধন্যবাদ লেখককে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য!
সাদিয়া সুলতানা যেদিন নিজে প্রথম সত্যায়িত করলাম, হাসি পেয়েছিল এই ভেবে যে, কত কষ্ট করে অন্যের সত্যায়িত করা কাগজ দিয়ে এই ক্ষমতা হলো আমার! ঠিক গল্প নয় গল্পচ্ছলে বিড়ম্বনা বলে গেলেন যেন। শুভকামনা।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য!
আখতারুজ্জামান সোহাগ সত্যায়িত করার এই ব্যাপারটা যে কত বিরক্তিকর তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। আমি এই কালচারের ঘোর বিপক্ষে। আমার প্রস্তাব হচ্ছে মূল ডকুমেন্টের সাথে ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে, যার কাছে জমা দেওয়া হবে সে-ই কপি ডকুমেন্টটা চেক করে স্বাক্ষর করে দেবেন। ধন্যবাদ লেখককে সুন্দর একটা বিষয় পাড়ার জন্য। শুভকামনা।
বলতে গেলে আমরা প্রায় সবাই "সত্যায়িত" এর বিপক্ষে।আপনার পরামর্শ যথেষ্ট সুচিন্তিত ও গ্রহণযোগ্য।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
Salma Siddika নিজে গিয়ে ছবি জমা দিলে সত্যায়িত করার আসলেই কি কোনো দরকার আছে? সুন্দর ছোট গল্প।
আমার বক্তব্য ও ঠিক এটিই যাকে আমি "অপ্রয়োজনীয় ফরমালিটিস" হিসেবে গল্পে উল্লেখ করেছি। অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
মালেক জোমাদ্দার "সত্যায়িত" চমত্কার লিখেছেন জয় দাদা । আমার লেখা পড়ার অনুরোধ থাকলো। শুভ কামনা।
হ্যাঁ।অবশ্যই পড়বো।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
শামীম খান পড়বি তো পড় একেবারে মালীর ঘাড়ে ! দারুন ঘটনা । সাবলীল লেখা । শুভেচ্ছা রইল ।
হা হা!। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
আফরান মোল্লা ভালো বলেছেন লেখক।নিরন্তর শুভকামনা।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

১৩ জুন - ২০১৪ গল্প/কবিতা: ৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪