ভাত মুখে দিয়েই লিয়াকত চুপ মেরে গেলো।
এবার ভ্রু কুঁচকে সে আস্তে আস্তে চিবুচ্ছে। মুখের ভিতর কি ভাত না বেহেস্তী কোন খাবার?
লিয়াকত দ্বিতীয় নলাটা মুখে দিলো। আবারো চুপ করে রইলো। এই নলাটাতো আগেরটার চেয়েও বেশী মজা! লক্ষণতো ভালো ঠেকছে না। মৃত্যুর চল্লিশ দিন আগে নাকি মানুষ কোন না কোন ভাবে মৃত্যুর পূর্বাভাস পায়। সে কি তবে মৃত্যুর পূর্বাভাস পেলো?
লিয়াকতের মনটা ভয় ও বিরহে আচ্ছন্ন হয়ে গেলো। হঠাৎ করে মৃত্যুর কথা মনে হলো কেন? তবে কি এমন মজার খাবারের মাধ্যমেই পরোয়ারদেগার তার মৃত্যুর আগাম বার্তা পাঠালেন? মাথা নীচু করে লিয়াকত ভাত খেতে থাকলো। চোখের পানি টপটপ করে পড়ছে। লিয়াকত আপন মনে ভাত গিলে যাচ্ছে। বিরহ ও আনন্দের সর্বোচ্চ মিলনের এক বিস্ময়কর দৃশ্য।
সে তার তিরিশ বছরের জীবনে এমন খাবার কোন দিন খায়নি। খাবারওতো বেশী কিছু না। বউ দুধের শর জমিয়ে জমিয়ে আজ ঘি করছিলো। ঘি বোতলে ঢালার পর কড়াইয়ে কিছুটা লেগে থাকে। সাথে থাকে ঘি এর পোড়া কালচে একটা প্রলেপ। এই ভাতে এমন মজা থাকার অর্থ কী?
সালেহা সারা দিন কাজের ফাঁকে গোসলের সময় পায়নি। মানুষটাকে ভাত দিয়েই গোসল করতে গিয়েছিলো সে। গোসল শেষে এসে দেখে খালি কড়াই সামনে নিয়ে ঝরঝর করে কাঁদছে। সালেহা খুব আস্তে করে মানুষটার পিঠের উপর একটা হাত রেখে মমতা মিশায়ে বল্লো, আবারো মৃত্যুর আগাম বার্তা পাইছো?
লিয়াকত কিছু বল্লোনা, নিরব কান্নার পরিমানটা আরো যেন উছলে উঠলো।
(চলবে)
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী নয়।।