ছারাবিবি দেশলাই খুজে পাচ্ছেন না । মাগরিবের আজান হয়ে গেছে বেশ কিছুক্ষন আগে। দোতলা বাড়ীর চারিদিকে বেশ কয়েকটা নারিকেলের গাছ। নারিকেল পাতার প্রান্তে সূর্যাস্তের শেষ আলো লেগে আছে সামান্য।

অ্যাপ্রোন পরা একজন আমাদেরকে ইশারা করে ঘরে ঢুকতে বললো। রুনু আমার চেয়ে অনেক শক্ত। রুনু আগে আগে চলল, আমি পেছন পেছন। দরজার কাছে এসে আমার পা ভারী হয়ে এলো। বললাম,
‘রুনু আমি পারব না, তুই দ্যাখ্‌’।

উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় গত কয়েক দিন ধরে ঢাকার একটি কর্মজীবী হোস্টেলে অবস্থান করছেন সফিক আহমেদ।

কালো ফিতার ক্যাসিও ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে এক ঝটকা মেরে শোয়া থেকে উনি উঠে বসলন। আরে বাবা! আড়াইটা বাজে!
নিজে নিজেই তীব্র আফসোসের সুরে বললেন। তিনটায় প্রথম টিউশনি। দৌড়ে চলে গেলেন টিউবওয়েল পাড়ের দিকে। ‘আমার ভাগ্য নির্ঘাত ভাল’!

গল্পের শুরুতেই অর্পনা আর আবীরের মধ্যে বন্ধুত্বটা ঠিক কবে থেকে যে হয়েছিল সেটা হয়তো ওরা নিজেরাও জানে না। খুব আবছা আবছা মনে আছে অর্পনার ক্লাশ ওয়ানের বিস্কুট দৌড় প্রতিযোগিতায় হেরে গিয়ে খুব কাঁদছিলো ও।আবীর বিস্কুট দৌড়ে ফার্স্ট হয়েছিল। তখন অর্পনার কান্না দেখে ছোট্ট আবীর নিজের প্রাইজের হলদে রঙের টিফিনবক্সটা অর্পনার
হাতে তুলে দিয়ে বলেছিল ,কাঁদিস না ,এই নে ...তোর কাছে রাখ,আমার মানেই তো তোর।

মাঝরাতে খসখস শব্দে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেল। শীতের রাত। ভয়ানক নিস্তব্ধতা। ঠাণ্ডা যাতে না আসে সেজন্য দরজা-জানালা আগেই বন্ধ করা ছিল। ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছিলাম না। ভুল শুনেছি বোধ হয়। চোখ বুজে ঘুমনোর চেষ্টা করলাম। আবার খসখস শব্দ পরিস্কার শুনতে পেলাম। ভয়ানক আতঙ্ক এসে গ্রাস করল আমাকে।

সারাদিন ঘরের কাজ করে। পরিবারের সবার সেবা যত্ন শেষ করে। রাতে যখন মিথিলা পরী আর নুরীকে ঘুম পড়াতে যায়? মেয়ে দুটো মায়ের গলা জড়িয়ে ধরে আবদার করে বলে " মা একটা গল্প বল না প্লিজ" মিথিলা'র একেবারে গল্প বলতে ইচ্ছে হয় না। রাজ্যের ক্লান্তি এসে শরীরে ভর করে।

সন্ধ্যা প্রায় নেমেই গেছে। স্টেশনের বেঞ্চির তলে। রেললাইনের স্লিপারের নিচে। বস্তির ঝুপড়ি ঘরগুলোতে। ঠিকরে ঠিকরে অন্ধকার ঢুকছে। হনহন করে, ভনভন করে। একটু পর আবার হুইসেল বেজে উঠল।

ঝরঝর বৃষ্টি। প্রতিদিনই বর্ষা। বৃষ্টি অরিপের খুব প্রিয়। আর অপি তো বৃষ্টি বলতেই পাগল। বৃষ্টির পানিতে ঢাকা আজ জলঢাকা । ঢাকার রাস্তায় পানিতে আটকে পরেছে অনেক গাড়ী। অরিপ ও অপির গাড়ীটিও আটকে পরেছে বৃষ্টির পানিতে ।

অনেকদিন ধরে শরীরটা বেশি ভালো নয়, বাড়ির চৌকাট ছাড়া আর কোথাও যাওয়া হয় না। এক রাতে ঘুমানোর সময় মা’কে বলি,