দীর্ঘ দু’শো বছর মাতৃগর্ভে থেকে
প্রতিনিয়ত একটু একটু করে অনেকরকম স্বপ্নে ইনস্টল হয়ে
অথৈ জল-কাদা ঘেঁটে তারপর জন্মালে ;

আমি আর গাইবো না সেই জয়ধ্বনি,
যে ধ্বনি সর্প হয়ে আপন মাঝে আপনি তোলে বিষের ফণী।
আমি আর করবো না রাও নিন্দাবাদে,
যেখানে নিন্দুকেরাই থাকে সবার জিন্দাবাদে।

আজিকার এই সংগ্রাম
বলিদান,রক্ত গঙ্গা, বেদন ।

আজিকার এই পুড়ে যাওয়া
ক্ষত- বিক্ষত বাংলা মায়ের কোল ।

স্বাধীনতা, স্বাধীনতা, বারেক ফিরে চাও!
বাংলা মায়ের ইজ্জত নিয়ে কোথায় চলে যাও?
তোমার জন্য বাংলা’র মানুষ করেছে কত কষ্ট,
প্রাণ দিয়েছে যুদ্ধে যাঁরা; শহীদ-বীরশ্রেষ্ট।

রুধিরসিন্ধু মন্থন-জাত অমৃতসম হে স্বাধীনতা,
তুমি তো ছিলে শত-সহস্র বৎসরের শোষিত দলিত
বাঙ্গালির মনে বাষ্প-লাভার মত !
তুর্কি মোঘল পাঠান বর্গি ব্রিটিশ পাকি’ যত
তব সমাধি রচিতে সচেষ্ট ছিল অক্লান্ত-অবিরত !

ছোট ছোট শিশু আর ছোট ছোট ফুল,
ছোটরাও বড়োদের, হয় সমতুল।
ছোট ছোট কচিপাতা, নব কিশলয়,
ক্রমে ক্রমে পর্ণ রূপে পরিণত হয়।

মায়ের আর্তনাদ, শব্দহীন চিৎকার থামাতে চায় ওরা
কালো রাতের সার্চ লাইটে, সীসা-পিতলের বুলেটে
অধিকারের অস্তিত্বে আঘাত, ঝাঁঝরা বুক স্বাধীনতার স্বপ্ন আঁকা
নিষ্পাপ লালের চাঁদর গায়ে হাসি মুখে ঢাবির ছাত্ররা,

হানাদারের দল খেয়ে যায় কদু,
লাথি মেরে মেরে ধরে নেয় বধূঁ, জ্বালায় ঘর-বাড়ি।
জাগে জনগণ হাতে নেয় গান,
বাদ যায় না নাবালক- প্রাণ !

আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি
হে পৃথিবী
আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি।

এই যে সুনীল গ্রহ এর স্বাধীনতা
মুষ্টিমেয় ধরে রাখে সমস্ত ক্ষমতা।।

যার সূর্য সন্তান
শহিদ হয়েছেন
৫২ ই ভাষার দাবিতে ।
রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই -
ভালোবাসি সেই প্রত্যয়
যার বুকে অঙ্কুরিত ছিল

এখানে আমার বাবার কবর
এখানে আমার কাকা রুদ্র সেন
এখানে অনেকের ঘনিষ্ঠজন অনেক
এটা সমস্ত বাঙালির শোকের তীর্থ

তুমি দেখতেই পাওনা আমার আকাশটা
যেখানটায় ঘিরে থাকে কেবল মন খারাপের মেঘ
অভিমানী গোপন কান্না'র বৃষ্টি; এক খরস্রোতা নদী বয়ে যায়
দূর থেকে দূর......

শরীরের শেষ রক্ত বিন্দুটিও
ঢেলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।
জীবন যায় যাক
তবুও দ্বিধা নেই মনে

স্বাধীনতা এ যেন সকাল বেলার
মিষ্টি সোনা রোদের ছোঁয়া,
স্বাধীনতা এ যেন দুপুর বেলার
অলস সময় মাখা সুখের মায়া।