সারমেয়র কান্না শুনে ধড়মড়িয়ে জেগে উঠি,
গভীর ঘুম ধূম হয়ে জমাট অন্ধকারে মিশে গেল।
কপালের প্রতিটি ভাঁজে বিপদের সম্ভাবনা জাগে,
হায়! আমি কোথায়? ভয়ে বুক অসার হয়ে আসলো।
হাত দিয়ে দু’চোখ কচলে নিয়ে তাকাই আবার,
এটা স্বপ্ন বা বিভ্রম নয়তো? না, এ যে বাস্তব;
সত্যাসত্য যেখানে দোস্তের মত গলা জড়াজড়ি করে...
মাথার উপর সিলিং, পায়ের নিচের মেঝে উধাও!
নিজেকে আবিষ্কার করলাম খোলা আকাশের নিচে।
পায়ের নিচে ভেজা নরম মাটি, সোঁদা গন্ধ পাচ্ছি।
গাঢ় আঁধার কাটিয়ে চারপাশটা দেখার বৃথা চেষ্টা করলাম,
একবার আকাশ-পাতাল কাঁপিয়ে চিৎকার দিলাম,
কোন সাড়া নেই, আমি একা লোকালয়ের বাইরে।
উলূকের মত ভয়ার্ত বড় বড় চোখে রাত জাগলাম।
অন্ধকার কেটে গিয়ে ধূসরতায় পূর্ণ হল চারপাশ ক্রমশ।
দিন না রাত বুঝা গেল না, তবে আবছা দেখতে পাচ্ছি।
শূন্যতায় পরিপূর্ণ সারাটা, সসেমিরায় তাকালাম যতদূর দৃষ্টি যায়;
যদিও পথ নেই, তবুও হাঁটা শুরু করলাম, জানি না যাচ্ছি কোথায়।
দূরে এক নাম না জানা মৃত বৃক্ষ দেখে এগিয়ে যাই,
চলার পথে হঠাৎ হুমড়ি খেয়ে পড়লাম;
কর্দমাক্ত হলাম, ঘৃণা ভরা একটা অনুভূতি পন্নগের মত মস্তিষ্কে বেয়ে উঠল।
কিসে হোঁচট খেলাম? খুঁজে বের করে ত্রাসে পাথর হয়ে গেলাম।
এ যে শবাধার, কিন্তু কার? লাশ নেই, শূন্য পড়ে।
মাথার উপর অভ্র অভদ্রের মত ডেকে উঠলো।
বাজ দৃষ্টিতে দেখলাম চারপাশে পড়ে আছে শূন্য শবাধার,
কোথাও কোথাও উপড়ে পড়ে রয়েছে সমাধি ফলক।
এখন দৌড়াতে শুরু করলাম, লক্ষ্য সেই মৃত বৃক্ষ।
পৌঁছে দেখি তার পাশ দিয়ে রক্ত বৈতরণী যাচ্ছে বয়ে,
তার তীরে কিছু লোক বসে আছে মাথা নুয়ে।
কাছে যেতেই তারা শ্বব্যবহার করলো, “কেন এসেছো এখানে?
তোমার তো এখনও সময় হয়নি; যাও ফিরে যাও,
তোমার এখনও অনেক পাপ করা আছে বাকি।
ছেড়ে যাও এ সপ্তম নরক এখুনি।”
এরা যে মৃতের দল বুঝতে বাকি রইলো না আমার।
তাদের লাল চোখের আভায় রক্তিম চারপাশ,
তাদের গলিত পচা অবয়ব দেখে সংবিত্তি হারালাম।
জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি সেই পূর্ব অবস্থানেই; ধীরে উঠে বসলাম।
এই মুহূর্তে হাসি পাচ্ছে আবার কাঁদতেও ইচ্ছে করছে -
নরক ছেড়ে এখন আমি পুরনো সেই গোরস্থানে
লৌকিকতাহীন এ জায়গা, যেখানে আমার মত গোরখোদক
জ্যান্তদের জোর করে পুঁতে ফেলে মাটির গভীরতম পরতে।
কষ্ট পেলাম জানতে পেয়ে,নরকের চেয়েও খারাপ এই বাস্তবতা...
সশরীরে নরক ভ্রমণে গিয়ে।
০৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১১
গল্প/কবিতা:
৬ টি
বিজ্ঞপ্তি
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
-
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
-
তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।
আগামী সংখ্যার বিষয়
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪