মেঘারণ্যে

সরলতা (অক্টোবর ২০১২)

ভূঁইয়া মোহাম্মদ ইফতেখার
  • ২৫
  • ১৭
এক
মনে সুখ থাকলে নিজের জরাজীর্ণ বসতবাড়িটাও প্রাসাদতুল্য মনে হয়, আর ভ্রমণের স্বাদ জাগলে রেলওয়ের লক্কড়ঝক্কড় ট্রেনও উন্নত যান হিসেবে ধরা দেয়। এখানে যাত্রীদের বিনোদনের জন্য কোন মাধ্যম না থাকলে কি হবে, পাশেই জানালাটা খোলা আছে- প্রকৃতি, পরিবেশ ও লোকালয়ভেদে সেখানে একের পর এক দৃশ্যপট পাল্টে যাচ্ছে। এখানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা অপ্রতুল হলে কি হবে, ফ্যানের পাখাগুলো তো ঘুরছে, হোক সেটা ঢিমেতালে।
অবশ্য দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর এই পদ্ধতি অধরা যতটা সহজভাবে মেনে নিয়েছে, নিবিড় ততটা নয়। বারবার প্রতীককে গালাগাল দিচ্ছে আর বলছে- শালা, আর ট্রেন পাইলি না!
প্রতীক ভেবে পায় না নিবিড় মাঝে মাঝে এমন অযৌক্তিক আচরণ কেন করে। টিকেট করার সময় ট্রেন তো আর ডিসপ্লেতে থাকে না যে কোনটা কেমন দেখে নিবে। ও বলে- দেখ, আমি এর আগে আর এইদিকে যাইনি। টিকেট কাটার দিন কাউন্টারে বসা মামাটাকে বললাম দশ তারিখের চারটা টিকেট দিতে, সে এই ট্রেনের টিকেট ধরিয়ে দিলো। কিছু যে জিজ্ঞেস করব- সে সুযোগও দিলো না। কাউন্টারের মামাগুলিও একেকটা জিনিস রে ভাই- একেবারে চাইনিজ রোবট!”
বীথির আপাতত কোনদিকে কোন মনোযোগ নেই। হ্যান্ডব্যাগ থেকে নেইল পলিশ বের করে ও এখন নখের সৌন্দর্যচর্চায় ব্যস্ত, যেন সহসাই কোন এক ছেলে এসে ওর হাত ধরে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বসবে, নখে নেইল পলিশ না দেখলে ছেলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যাবে! চলন্ত ট্রেনে এই মেয়ে কীভাবে এতো নিখুঁতভাবে নেইল পলিশ দিচ্ছে সেটাও ভাববার বিষয়।
নিবিড় চিন্তা করতে থাকে, কাদের সাথে যে বের হলো ও! এক- পেটুক প্রতীক, যে খাওয়া ছাড়া আর কিছুই বুঝে না; দুই- বিউটিপার্লার বীথি, যে সাজুগুজু ছাড়া আর কিছুই বুঝে না; তিন- অদ্ভুত অধরা, যার কোন কিছুতেই কিছু বোঝা যায় না- প্রতিবন্ধী টাইপ। ওর এভাবে ওদের সাথে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারটা নিবিড়ের কাছে এখনও এক রহস্য। মেয়েটাকে গত কয়েকদিন কতোভাবে বলা হয়েছে, ও রাজী হয়নি। অথচ আজ সকালে হুট করে ফোন দিয়ে জানালো যে ও যাচ্ছে। এই রকম শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী মানুষ নিবিড়ের একদম পছন্দ নয়। সাব্বিরের যদি হঠাৎ করে দেশের বাড়িতে যাওয়াটা প্রয়োজন না হয়ে পড়ত তবে টিকেট ম্যানেজ হতো কোত্থেকে!
অধরা নিজেও কম রহস্যময় নয়। মেয়েটা এতদিন হয়ে গেলো ওদের চেনে, অথচ এ পর্যন্ত একবারও কাউকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেনি, বন্ধুরা যেটা সচরাচর করে। বীথিকে ‘তুমি’ আর অন্যদের ‘আপনি’- এ কিছু হলো!
ট্রেন চলছে ঐতিহাসিক গতিতে, সামনের ইঞ্জিনটা সম্ভবত রেলওয়ে জাদুঘর থেকে এনে লাগানো হয়েছে। কিংবা কে জানে ট্রেন আদৌ ইঞ্জিনে চলছে কি না।
এভাবে যাওয়ার কোনো মানে হয়? প্রতীকের উপর নিবিড়ের মেজাজ সপ্তমে চড়া। অথচ এ নিয়ে ওর কোন মাথা ব্যাথা আছে বলে মনে হচ্ছে না। ও নিশ্চিন্তে ‘প্রিংগেলস’ চিবোচ্ছে। এই সময়ে একটা স্টিক টানতে পারলে ভালো হত, কিন্তু ট্রেনে কি সেটা আদৌ সম্ভব? নিদেনপক্ষে সিগারেট তো টানাই যায়। ফেয়ার এন্ড লাভলী প্রতীক নন-স্মোকার। সুতরাং ওর কাছে সিগারেট থাকার কথা না।
ভ্রাম্যমাণ ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে সিগারেট কিনতে নিবিড় সীট ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। ঠিক তখনই অধরা বলে উঠে- শুনুন, স্মোক করাটা কি জরুরী?
নিবিড় অবাক হয়ে যায়। এই মেয়ে জানলো কি করে ও ধোঁয়া ওড়াতে যাচ্ছে? ও কি মনের কথা শুনতে পায় নাকি!

দুই
ধীরগতিতে চলা ট্রেনগুলো ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে প্রায়শই মাঝ পথে গিয়ে থেমে যায়। পরে নিকটবর্তী কোন স্টেশন থেকে ইঞ্জিন এনে পুনরায় যাত্রা শুরু করতে করতে দেখা যায় যাত্রীদের দুর্ভোগের আর সীমা থাকে না। নিবিড় ভেবেছিল ওদের সাথেও এমন কিছু হবে- ট্রেন বন-জঙ্গলে গিয়ে আটকে থাকবে। কিন্তু না, গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হলেও সেরকম কিছু হলো না।
শিহাব গাড়ি নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করছিল। ওদের দেখামাত্রই কাছে গিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়ে বলল- তোরা এসেছিস, আমি অনেক খুশি হয়েছি।
প্রতীক বলল- আরে, থাম থাম, এখনই এইসব ডায়লগ দিস না। এই কয়দিন তোকে যা জ্বালাব, খুশিরা দেখবি হাইওয়েতে চলা বাসের গতিতে ছুটে পালাবে!
পেছন থেকে বীথি বলল- আর ট্রেনের গরমে আমার মুখে ব্রণ উঠলে তোর খুশিরা প্লেনের গতিতে ছুটে পালাবে! বলেই মুখে ওয়েট টিস্যু ঘষতে লাগলো ও।
বীথির বলার ভঙ্গিতে কিছু একটা ছিল, শিহাব প্রথম দেখাতেই ওর প্রেমে পড়ে গেলো। ও যখন ভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং করতে ঢাকায় গিয়েছিল, তখন বীথি এই দলে ছিল না।
গাড়িতে সবার সাথে ভালোভাবে পরিচিত হবার অজুহাতে শিহাব বীথির সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলল, নিশ্চিত হয়ে নিলো ওর কোনো ছেলেবন্ধু আছে কি না। নেই বলে কিছুটা বিস্মিতও হলো। এমন সুন্দরী মেয়েদের পেছনে সাধারণত অনেক ছেলেই অডিশনের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে।
গাড়ি শহুরে রাস্তা ছাড়িয়ে একসময় নির্জন পাহাড়ি পথ ধরে। দিনের শেষ আলোয় পাহাড়ের বুকে লোমের মতো জেগে উঠা অরণ্য আর তার উপর জমে থাকা মেঘ ভালোলাগার এক ভিন্ন অনুভূতি জাগায় সমতলের যান্ত্রিকতা আর ব্যস্ততার মাঝে বেড়ে উঠা একদল তারুণ্যের মাঝে। নিবিড়ের চোখেমুখেই শুধু যন্ত্রণার ছাপ। যেন ঘুরতে বের হয়নি ও, যুদ্ধ করতে বের হয়েছে। অবশ্য এখানে আসার ব্যাপারটা ওর কাছে যুদ্ধে যাওয়ার অনুমতি নেওয়ার চেয়ে কম কঠিন ছিল না। বাবা কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না। ছাত্রজীবনে পড়াশোনার বাইরে সব কিছুই বাবার কাছে ফালতু কাজ। মর্ত্যের মানুষ মহাকাশে পৌঁছে গেছে, আর বাবা মাটির গভীরে গর্ত করে সেখানেই সারাজীবন কাটিয়ে দিতে চাইছেন। তাছাড়া সেঁজুতির সাথে ওর সম্পর্কের ব্যাপারটা নিয়ে ছোট চাচা আর ওদের পরিবারে এখনও ঝামেলা চলছে। পারিবারিক জটিলতাগুলো কেন যে দুরারোগ্য ব্যাধির মতো হয়- একবার আক্রান্ত করলে সহজে ছাড়তে চায় না।

তিন
উৎকট গন্ধটা নাকে যেতেই অধরার মনে হলো ও বমি করে দিবে। সিগারেটের গন্ধ তো এমন নয়, নিবিড় কি তবে...? অধরার বিশ্বাস হচ্ছে না।
কাউকে বাহ্যত যতটা দেখা যায়, অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে যেটুকু উপলব্ধি করা যায়, আমাদের মনের জগতে তার তেমনই একটি প্রতিমূর্তি গড়ে ওঠে। সেখানে হঠাৎ কোন অনাকাঙ্ক্ষিত রূপ নজরে এলে মানুষ কিছুটা ধাক্কা খায়। অধরাও খেয়েছে। এখন বারবার মনে হচ্ছে এই সময়টায় ও এখানে না এলেই পারত। রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষ করে অন্যরা আড্ডায় মগ্ন। ওর কী দরকার ছিল অযথা বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করার? কখনও কখনও কিছু বিষয় অদেখা-অজানা থাকাই ভালো- এতে আত্মার প্রশান্তি।
অধরা ভুলে যেতে চায় সব, ভুলে যেতে চায় শহরে ওর ফেলে আসা দিনগুলো আর এই মুহূর্তটাকে। মানব শরীরে যদি একটা ‘ডিলিট’ অপশন থাকত, স্মৃতি থেকে সব মুছে দিত ও। স-অ-ব। নতুন করে আবার শুরু করত জীবনটা- এই মেঘ আর অরণ্যের রাজ্যে।
অলীক চিন্তাও মাঝে মাঝে আশ্বস্ত করে মনকে, বিশেষত মানুষ যখন সান্ত্বনা খোঁজে একাকীত্বে।

চার
সুন্দর স্বপ্নের মতোই সুন্দর সকাল।
শেষ রাতের দিকে বৃষ্টি এসে গুমোট আবহাওয়াটাকে শীতল করে দিয়ে গেছে। ধুইয়ে দিয়ে গেছে প্রকৃতিকে। স্নান শেষে চারপাশের বৃক্ষ-ফুল-লতাপাতা এখন যেন নবযৌবনা। পাশের জঙ্গল থেকে ধেয়ে আসছে এক ধরনের বুনো গন্ধ।
অধরা প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেয়। স্নিগ্ধ সকালের মাঝে যে এক ধরনের পবিত্রতা থাকতে পারে, সেটা ও ভুলেই গিয়েছিল। ঢাকার নাগরিক চার দেয়ালে ওর সকালগুলো শুরু হয় শোরগোল দিয়ে। সে শোরগোলের উৎস কেবল রিক্সার টুং-টাং নয়, গাড়ির পি-পিইপ নয়, কাকের কা-কা নয়, বরং মা’র চেঁচামেচি আর বাবার ঠুস-ঠাস শব্দ। অফিসে যাওয়ার আগে প্রায় প্রতিদিনই কোনো-না-কোনো বিষয় নিয়ে তাদের বিরোধ চলে। ঘুমভাঙা চোখে ছোট্ট পার্লামেন্ট হাউসে সরকারীদল ও বিরোধীদলের এই বাদানুবাদ দেখা ছাড়া অধরার বিশেষ কিছু করার থাকে না। কৈশোরে এই ব্যাপারগুলো ওকে অনেক পীড়া দিত, এখন অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছে। অন্য কোন মানসিক চাপে না থাকলে এসব এখন ওর কাছে টিভিতে দেখা একঘেয়ে ডেইলি সোপের মতোন।
অধরা বারান্দা ছেড়ে লনে নামে। বীথি ঘুম থেকে উঠেছে অনেকক্ষণ হলো। দাঁত ব্রাশ করতে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বাম গালে ছোট্ট একটা ব্রণের অস্তিত্ব দেখে ওর জ্ঞান হারানোর উপক্রম হয়েছিল। প্রতীকের সাথে এ নিয়ে কিছুক্ষণ হুলুস্থুল করে অবশেষে ফেসপ্যাক লাগিয়ে এখন মেডিটেশনে বসেছে। আধ ঘণ্টার আগে মেডিটেশন শেষ হবে না।
অধরা দৃষ্টি প্রসারিত করে। যেদিকে চোখ যায় কেবল সবুজ আর সবুজ। তার উপরে স্বচ্ছ নীল আকাশ, সেখানে ভাসমান মেঘের ভেলা। টিলার উপর গড়ে ওঠা বাংলোটার লনে দাঁড়িয়ে অধরার মনে হয় এমন একটি জায়গায়ই স্বপ্নে দেখেছিল ও, কয়েকদিন আগে। কোনো এক শীতের সকাল ছিল সেটা, উঁচু পাহাড়ের সীমানায় দাঁড়িয়ে মুগ্ধচোখে প্রকৃতি দেখছিল ও। হঠাৎ পেছন থেকে এক তরুণ এসে ওর গায়ে একটা শাল চড়িয়ে দেয়, পরম ভালোবাসায় দু’হাতে জড়িয়ে ধরে ওকে। সে তরুণের মুখাবয়ব কিছুতেই মনে করতে পারে না অধরা, কিন্তু সে যে ওর কাছের কেউ, আপন কেউ- তা ওর সংস্পর্শে যেতেই বুঝে গিয়েছিল ও।
স্বপ্নের সে তরুণ কি বাস্তবে কখনও ধরা দিবে, যে তার ভালোবাসার ছোঁয়ায় অধরার ম্লান জীবনটাকে নানা রঙে ভরিয়ে দিবে?
অধরার জানা নেই।
স্বপ্নের কথা ভাবতে ভাবতেই অধরার দৃষ্টি ছেলেদের রুমের দিকে গিয়ে আটকাল। প্রতীক সেখানে পুশ-আপ করছে আর শিহাব তার হিসাব। প্রতীক বেচারাকে বেশ কাহিল মনে হচ্ছে। যেই উদ্যমে শুরু করেছিল, দশ-বারোটা দিতেই তা শেষ। একেবারে কুপোকাত! নিবিড়কে কোথাও দেখা যাচ্ছে না, ও কি তবে এখনও ঘুম থেকে উঠেনি?
জবাব মিলল নাস্তার টেবিলে।
নিবিড় এলো সবার শেষে, নাস্তা করলো অনেকক্ষণ সময় নিয়ে। কিছুক্ষণের মাঝেই সবার বের হবার কথা- কাঁটাসুরের উদ্দেশ্যে। নিবিড়ের কারণে দেরী হয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ বিরক্ত হচ্ছে। সবার মাঝেই এখন ঘুরতে বের হবার তাড়া, এমন সময় কার ভালো লাগে একজনের অপেক্ষায় বিলম্ব করতে?
অধরার ব্যাপারটা অবশ্য আলাদা। এই অস্থির, অগোছালো, খিটখিটে মেজাজের ছেলেটার প্রতি ওর আলাদা একটা টান আছে। অধরা জানে না, সেটা ঠিক ভালোবাসা কি না। সব ভালোলাগা যে ভালোবাসাই হতে হবে এমন তো নয়। গত রাতের ব্যাপারটা নিয়ে ও অনেক ভেবেছে। মানুষ সাধারণত মাদক নেয় দুই কারণে- হয় সঙ্গদোষে, নয় আত্ম-যন্ত্রণার বশে। নিবিড়ের ক্ষেত্রে কোনটা? ওকে জানতে হবে।

পাঁচ
দৃষ্টিনন্দন প্রকৃতিরও একটা সম্মোহনী ক্ষমতা থাকে, এর আনাচে-কানাচে লুকিয়ে থাকে নানান গল্প, কখনওবা রহস্য। সে অনেককাল আগের কথা, সভত্য তখনও এতটা বিকশিত হয়নি। ওপারের আদিবাসি তরুণী মাথির সাথে এপারের বাঙালি যুবক নয়নের ছিল গভীর প্রেম। শ্রুতি আছে, নয়নের বাঁশির সুরে জাদু ছিল যার মন্ত্রবলে মাথি রোজ সকালে পানি নিতে চলে যেত চিনুন নদের ঘাটে। চিনুন নদের স্বচ্ছ জলের মতোই পবিত্র ছিল ওদের ভালোবাসা।
একদিন এই প্রকৃতিকে সাক্ষী রেখে ওরা বিয়ে করল। সমাজ এই বিয়ে মেনে নিলো না। শুরু হলো নির্যাতন। ওদের দুজনকে আলাদা করা হলো। তারপর নির্মমভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলো। মাথি আর নয়নের ভালোবাসার সুর ছিন্ন হলো সমাজপতিদের কঠিন সিদ্ধান্তের কাছে। সেই থেকেই এই স্থানের নাম কাঁটাসুর।
নামকরণ সম্পর্কিত প্রশ্নটা করেছিল বীথি, শিহাব উত্তর দিতে পারেনি বলে ওর আফসোসের শেষ নেই। মোবাইলের নেটওয়ার্ক এখানে ভালোভাবে কাজ করে না, নইলে উইকি ঘেঁটে ও ঠিক ঠিক সব বলে দিত। নিবিড়ের মুখে এই ইতিহাস শোনাটা অবশ্য কম বিস্ময়কর ছিল না। রুক্ষ মেজাজের একটা ছেলের যখন কোনো ভালোবাসার গল্প বলতে গিয়ে গলার স্বর নরম হয়ে আসে তখন বুঝতে হবে তার ওই রুক্ষতার কারণ ওই ভালবাসাই। কিছু বলা না হলেও অধরার সব জানা হয়ে গেল।
ওদিকে প্রতীক অনেকক্ষণ ধরেই বেশ চিন্তিত মুখে ঝোপঝাড়ের মাঝে কী যেন খুঁজতে খুঁজতে হঠাৎ গায়েব হয়ে গিয়েছিল। ফিরে আসতেই শিহাব জিজ্ঞেস করল- কিরে, কই গিয়েছিলি?
প্রতীক কনিষ্ঠা উচিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে লাগল।
শিহাব বলল- মানে কী!
প্রতীক বলল- মানে আর কিছুই না- প্রকৃতি দিয়েছিল ডাক, প্রাকৃতিক বস্তু প্রকৃতিতেই থাক।
শিহাব বলল- চমৎকার! পরিবেশ দূষণের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
নয়ন আর মাথির গল্প শোনার পর থেকে বীথি যে কিছুটা চুপচাপ হয়ে গিয়েছিল তা কেউ খেয়াল করেনি। কেউ হয়ত কখনও জানবে না স্কুল জীবনে ও একটি ছেলেকে খুব ভালোবেসেছিল। ওর জীবনের প্রথম এবং বিশুদ্ধ প্রেম ছিল সেটা। কিন্তু সেই ছেলে ওর চেয়েও দ্বিগুণ সুন্দরী ওরই এক বান্ধবীর কারণে ওকে প্রত্যাখ্যান করেছিল।

ছয়
কাঁটাসুর থেকে ফেরার পথে পাহাড়ি ঝরনার বরফশীতল পানিতে অনেকক্ষণ গা ভিজিয়েছিল বলেই কিনা, নাকি সেঁজুতিকে হারানোর যন্ত্রণাটা ভেতরে ভেতরে আবার প্রকট হয়ে উঠেছিল বলেই- সে রাতে নিবিড়ের গা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর এলো।
সকালের দিকে জ্বর নামল, কিন্তু শরীর চলাচলের উপযোগী হলো না। এইদিকে আজও সবার বের হবার কথা। কিন্তু নিবিড়কে ফেলে ওরা কী করে যায়?
নিবিড় বলল- আমার জন্য কাউকে এতো দরদ দেখাতে হবে না, আমার টেককেয়ার আমি নিজেই করতে পারি। কথাটা ইচ্ছা করেই রূঢ়ভাবে বলল ও, যাতে সবাই বিরক্ত হয়ে ওকে একা রেখে চলে যায়। কিন্তু তারপরও ওদের ভাবভঙ্গিতে দ্বিধাদ্বন্দ্ব দেখা গেল। শেষমেশ অধরা থেকে গেল বলেই বাকিরা বের হতে পারল।
অধরার থেকে যাওয়ার ব্যাপারটা নিবিড়ের কাছে বিরক্তিকর ঠেকল। অসুস্থতার সময় মানুষের মন বড্ড বেয়াড়া হয়ে যায়, নানা চিন্তায় মগ্ন হয় মস্তিষ্ক। দুশ্চিন্তা জীবনের যন্ত্রণাগুলোকে প্রবল করে তোলে, মানুষ অসহায়বোধ করে। তবুও কেন যেন সেসব নিয়ে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে মানুষ। অধরার কারণে নিবিড়ের সে ভাবনায় ছেদ পড়ছে। একটু পরপর এসে খাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করে জ্বালাতন করছে ও। বলছে, রাত থেকে কিছু খাননি, শরীর দুর্বল হয়ে যাবে।
নিবিড় কপাল কুঁচকে বলছে, দুর্বল হলে হোক, তাতে আপনার কি?
অধরা বলছে, অন্য কিছু করে আনব?
নিবিড় কিছু না বলে পাশ ফিরে শুয়ে রইল।
ঘন্টা দেড়েক পর এক বাটি নুডুলস এনে নিবিড়ের সামনে রাখল অধরা। নিবিড় বিস্মিত না হয়ে পারল না। এই মেয়ে জানল কী করে যে ওর নুডুলস খেতে ইচ্ছে করছিল? নিবিড় ভালো করেই জানে বাংলোর রসুইঘরে নুডুলস থাকার কথা নয়, বাজারও বেশ দূরে। এই অপরিচিত জায়গায় শুধু ওর জন্য নুডুলস আনতে অধরা অতো দূরে গিয়েছিল, নাকি বাংলোর কাউকে দিয়ে আনিয়েছে? কেন ও নিবিড়কে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছে? এই পৃথিবীতে ও যে বড় গুরুত্বহীন! প্রতীকের ক্ষেত্রে যেমন ওর বাবা একটু পরপর ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করেন- কোথায় আছিস?, মা জানতে চান- খেয়েছিস কি না?, প্রেমিকা বলে- তোমাকে অনেক মিস করছি! -ওর কথা জানার জন্য তো এভাবে কেউ ব্যাকুল হয় না এখন। সেঁজুতি হতো, তাকেও ও হারিয়েছে।
নিবিড় কোমল স্বরে বলল- নুডুলস কোথায় পেলেন?
অধরা বলল- সেটা জানা লাগবে না। তাড়াতাড়ি খেয়ে নিন, শরীর খারাপ করবে।
বলল, আপনি কি টেলিপ্যাথি জানেন নাকি!
উহু, কাউকে খুব ভালো করে জানার জন্য টেলিপ্যাথি লাগে না। মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলেই হয়।
কিন্তু কেউ কাউকে খেয়াল করে কখন, যখন তার প্রতি তার ভালোলাগা থাকে? আপনার কি আমার প্রতি কোন ভালোলাগা আছে? প্রশ্নটা করেই হঠাৎ চমকে গেল নিবিড়, এ কি জানতে চাইছে ও!
অধরা জবাব দিলো না, মৃদু হেসে চলে গেল।
নিবিড় ফ্রেশ হবার জন্য ওয়াশ রুমে গেল। ফিরে এসে দেখল ওর অগোছালো বিছানাটা কে যেন গুছিয়ে দিয়ে গেছে, ওর মোবাইল মানিব্যাগসহ অন্যান্য টুকিটাকি জিনসগুলো এখানে-ওখানে পড়ে ছিল, এখন টেবিলে গুছিয়ে রাখা হয়েছে।
নুডুলস খেতে খেতে ও ভাবে, অধরা কেন করছে এইসব? কেন ও বারবার এইসব করে ওকে সেঁজুতির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, যে আর কখনোই ফিরে আসবে না ওর জীবনে। নিবিড়ের চোখ ছলছল করে উঠে। ওর মনে হয় সেঁজুতি ওর পাশে বসে আছে, ফিসফিস করে বলছে- ছিঃ! কাঁদছ কেন নিবিড়? জানো না ছেলেদের কাঁদতে নেই!
নিবিড় তাড়াতাড়ি চোখ মুছে।

সাত
অধরা এমনিতেই চুপচাপ ধরনের মেয়ে, কিন্তু আজ যেন ওকে আরও বেশি নীরব মনে হচ্ছে। অথচ এই দিনটায় এমনটা হবার কথা নয়। সবাই আদিবাসি পল্লীতে অনেকটা সময় কাটাল, ওদের মার্কেট থেকে নানান জিনিসপত্র কিনল। অধরা কিছুই নিলো না, এমনকি ছুঁয়েও দেখল না, অন্যমনস্ক হয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে রইল।
নিবিড় ভাবল, এর মাঝে কি এমন কিছু হয়েছিল যাতে ও অভিমান করতে পারে? মনে পড়ল না।
অধরার ক্লান্তি লাগছিল, বিকেলে বাংলোতে ফেরার পরই ঘুমিয়ে পড়ল ও। সন্ধ্যার দিকে যখন ঘুম ভাঙল তখন প্রকৃতির আলো-আঁধারিতে রুমটা আচ্ছন্ন হয়ে আছে। অধরা সুইচ চাপল কিন্তু লাইট জ্বলল না। কী হয়েছে জানতে অধরা যেইনা বাইরে বের হলো ওমনি বাঁশির প্যা-পো আর আলোকে ভরে উঠলো চারপাশ। নিবিড়, প্রতীক, শিহাব, বীথি- সবাই সমস্বরে বলে উঠলো- হ্যাপি বার্থডে টু ইউ!
প্রতীক পুডিংটা সামনে এগিয়ে দিয়ে বলল- ইয়ে অধরা, আসলে হয়েছে কি, এতো স্বল্প সময়ে কেক ম্যানেজ করতে পারিনি, পুডিং চলবে তো?
ওর প্রতি বন্ধুদের ভালোবাসা দেখে অধরার চোখে পানি চলে এলো।
বীথি বলল- কি ব্যাপার কাঁদছ কেন তুমি? পুডিং পছন্দ হয়নি?
অধরা চোখ মুছতে মুছে বলল- না না, পছন্দ হবে না কেন! অনেক পছন্দ হয়েছে, অ-নে-ক!
রাতের খাবারেও ছিল বিশেষ আয়োজন। সুগন্ধি চালের ভাত, বিশেষভাবে বানানো শুঁটকি ভর্তা, সাতকড়া দিয়ে গরুর মাংস ভুনা।
খাওয়া শেষে অধরা যখন রুমে ঢুকতে যাবে এমন সময় নিবিড় পেছন থেকে ডাক দিয়ে বলল- শুনুন...
অধরা পেছন ফিরল।
নিবিড় শাড়ীর প্যাকেটটা ওর সামনে এগিয়ে দিয়ে বলল- এটা আপনার জন্য- আপনার বার্থডে গিফট।
অধরা অপ্রস্তুত হয়ে গেল। নিবিড় প্যাকেটটা টেবিলে রেখে চলে যাচ্ছিল, আশেপাশে কেউ ছিল না দেখে অধরা সুযোগটা কাজে লাগাল। বলল- গিফটের জন্য থ্যাংকস। তবে পারলে ওই বাজে জিনিসগুলো খাওয়া ছেড়ে দিয়েন, আমার জন্য এই বার্থডে তে সেটাই হবে সবচাইতে বড় গিফট।
নিবিড় এক মুহূর্তের জন্য কি ভেবে নিয়ে বলল- অবশ্যই, চেষ্টা করব।

আট
রাত গভীর থেকে গভীরতর হয়।
অধরার ঘুম হয় না।
ও বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়।
এই যে এই সুন্দর দিনগুলো- কালকের পর আর থাকবে না এইসব। ও আবার ফিরে যাবে সেই বদ্ধ পৃথিবীতে। যেখানে রোজ রোজ সেই এক- বাবা-মার কলহ, পাশের ফ্ল্যাটের সেই সাইকো ছেলেটার বিরক্তিকর ফোনকল, ওকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করার হুমকি। সেদিন সকালেও ফোন দিয়েছিল, বলেছিল- অধরা যদি আজই ওকে বিয়ে না করে তাহলে ও একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে। অধরা ভীষণ ঘাবড়ে গিয়েছিল। ওই ছেলের ঠিক নেই- এর আগেও একবার ব্লেড দিয়ে হাত কেটে হসপিটালে থেকে এসেছে। ওর বাবা তখন অধরাদের বাড়িতে এসে যা-তা শুনিয়ে গেছেন। সেই থেকেই অধরাকে সতর্ক করে দিয়েছে ওর বাবা-মা। ওই ছেলেকে নিয়ে ভুলেও যেন ওর সাথে জড়িয়ে আর কোন কথা শুনতে না হয়। অধরা ফোনটা বন্ধ করে বাসাতেই রেখে এসেছে। ওই ছেলে কিছু করে বসেনি তো সত্যি সত্যি? তাহলে তো ওর সর্বনাশ হয়ে যাবে। তাছাড়া ও বাড়ি ফিরবেই বা কী করে? ও যে সেখান থেকে পালিয়ে এসেছে।
অধরা আকাশের দিকে তাকায়। একটু আগেও সেখানে ভরা পূর্ণিমা ছিল, চাঁদের আলো মোমের মতো গলেগলে পড়ছিল আকাশজুড়ে। এখন অসীম আঁধার, কালো মেঘের আড়ালে লুকানো চাঁদ।
জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলোও কি এভাবে হারিয়ে যায়...বিষণ্ণতার আড়ালে?

নয়
স্টেশনে যাওয়ার জন্যে সবাই প্রস্তুত, শুধু অধরার দেখা নেই।
বীথি জানালো- ও রেডি হচ্ছে।
প্রতীক ফিক করে হেসে দিয়ে বলল- এই কয়দিন তোর সাথে থাকতে থাকতে ওকেও কি তোর ভাইরাসে পেয়েছে নাকি- রেডি হতে এতো সময় নিচ্ছে!
বীথি মুখ শক্ত করে প্রতীকের দিকে তাকিয়ে রইল।
অধরা দৃশ্যমান হলো অবশেষে। ওর দেরি হবার কারণ এতক্ষণে বোঝা গেল। নিবিড়ের দেওয়া মনিপুরী সিল্কের নীলরঙা শাড়ীটা পরেছে ও। তার সাথে মিলিয়ে কপালে টিপ, কানে ঝুমকা আর হাতে চুড়ি। এতকিছু মিলাল কীভাবে ও? ভীষণ সুন্দর লাগছে অধরাকে, মনে হচ্ছে সবুজ প্রকৃতির মাঝে এক নীল অপরাজিতা। নিবিড় কি তবে এতদিন ওকে ঠিকমতো খেয়াল করেনি?
সবাই প্রস্তুত হয়। অধরা ধীরে ধীরে এগুয়। গাড়িটা এখন স্টার্ট না নিলেই হয়। কোন একটা বাঁধা আসুক, সবাই থেকে যাক এখানেই, চিরদিনের জন্য।
কিন্তু না, তেমন কিছুই হয় না, গাড়ি ঠিকই ছুটে চলে পাহাড়ি পথ পেছনে ফেলে। সহসা এল ঝলক হাওয়া এসে উড়িয়ে দিয়ে যায় অধরার খোলা চুল। এ হাওয়া বিদায়ী হাওয়া নয় তো!

দশ
আবার সেই ট্রেন। আবার সেই মুখোমুখি বসে থাকা মানুষগুলো। তবে এবার এসি কামরা। তবুও অধরার অস্থির লাগে, দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়। ও সীট ছেড়ে বাইরে বের হয়ে আসে। একটা নিরিবিলি জায়গা খুঁজে বের করে। ট্রেনের খোলা দরজা দিয়ে বাইরে তাকায়। এতক্ষণ বারবার মনে হচ্ছিল কোন একটা বাঁধা আসবে, নষ্ট ঘড়ির কাঁটার মতো সময়টা এখানেই স্থির হয়ে যাবে। কিন্তু সেরকম কিছুই হলো না।
সুন্দর করে সেজে নিবিড়ের হাত ধরে ও পাড়ি দিতে চেয়েছিল মহাকাল। তা আর হলো কই!
অধরা সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিলো।
আলতো করে কপালের টিপটা খুলল, তারপর সেটা ছুঁড়ে ফেলে দিলো বাইরে।
কানের ঝুমকা দুটো খুলল, ছুঁড়ে ফেলে দিলো।
একে একে হাতের চুড়িগুলো খুলল, সবগুলো ছুঁড়ে ফেলে দিলো যতটা দূরে ফেলা যায়।
এরপর দরজার হাতল দুটো ধরে মুখসহ শরীরের অর্ধেকটা সামনে এগিয়ে দিলো। যেইনা হাত ছেড়ে দিতে যাবে ওমনি পেছন থেকে একটি হাত এসে ওর হাত শক্ত করে ধরে ফেলল, এক হেঁচকা টানে ভেতরে নিয়ে এলো ওকে।
নিবিড় বলল- আশ্চর্য, কী করছিলেন যাচ্ছিলেন এটা!
অধরা হু-হু করে কেঁদে উঠল, নিবিড়কে জড়িয়ে ধরে এই প্রথম ‘তুমি’ সম্বোধন করে বলল- আমি আর ফিরে যেতে চাই না নিবিড়, আমি জীবনের এই সরলতার মাঝেই বাঁচতে চাই। তুমি কি সময়টাকে এখানে স্থির করে দিতে পারো?
নিবিড় জবাব দিতে পারল না। এমন পরিস্থিতিতে একটি বিপর্যস্ত মেয়েকে কী বলে সান্ত্বনা দিতে হয় তা ওর জানা নেই।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
আশিক বিন রহিম apurbo sundor akti golpo..vhaiya.. annayer birudde gorje uthuk apnar kom, joy hok kobi-o kolomer
ম্যারিনা নাসরিন সীমা এক টানে পড়ে ফেললাম চমৎকার আবেগি একটা গল্প । বরাবরের মত লেখা ঝরঝরে । নিয়মিত হও আরও অনেক ভাল করবে ।
Rashadul Islam লেখা টা অসম্ভব ভালো হয়েছে ইফতি.. Liked it.. hope to see your writing more.. :)
মোঃ আক্তারুজ্জামান এই সাত সকালে মুগ্ধ করা একটা গল্প পড়ে খুব ভালো লাগলো| "আশ্চর্য, কী করছিলেন যাচ্ছিলেন এটা"- আমারও প্রায় লেখায়-ই এই রকম অস্বস্তিকর ত্রুটি থাকেই| অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো তোমার জন্য|
ধন্যবাদ আক্তার ভাই।
মৃন্ময় মিজান খুব ভাল একটা গল্প পড়লাম। তবে আমি পড়েছি উল্টোদিক থেকে। ফ্লাশ ব্যাকের মত। এতেও মজা আছে। মাঝে মাঝে এভাবে পড়ে দেখো ঠকবে না....
ঠিক আছে, ব্যাপারটা মাথায় রাখলাম ভাইয়া।
তান্নি গল্পের বর্ননায় একটা চমৎকার শিল্প আছে,যেটা সহজেই চোখে পড়ে এবং মনে আচড় কাটতে পারে অবলীলায়। অনেক ভালো লিখেন আপনি এটা স্বীকার না করে উপায় নেই। চালিয়ে যান। সাফল্যের রাঙ্গা সূর্য আলো ছড়াবেই। প্রাণঢালা শুভেচ্ছা রইলো।
এশরার লতিফ সাবলীল বর্ননা, ত্বরণময় ঘটনাপ্রবাহ, শুভকামনা ।
অষ্টবসু bes bhalo laglo jibanmukhi ei galpa..subecha railo
Lutful Bari Panna বর্ণনাগুলো দুর্দান্ত, যেটা তোর বেশীরভাগ গল্পেই থাকে। এই গল্পে আলাদা করে ভাল লাগল একটা চলামান জীবনকে টেনে আনা এবং কোন পরিণতি না দেয়া। ঠিক আমাদের জীবনটা যেমন- কখনোই গল্প শেষ হয় না চলতে থাকে। আর এর মধ্যেই খুব মোটা দাগে না করে হাল্কা ফ্লাশব্যাকের মত একএকজনের ইতিহাসটুকু তুলে আনার কারুকাজটা মুগ্ধ করল। লেখালেখিতে থামিস না কখনো- এটুকুই বলব শুধু।
কৃতজ্ঞতা মামা। লেখালেখিতে থামবো না- নিশ্চিত থাকো, মাঝে মাঝে Kitkat বিরতি নেব শুধু।

০৩ ফেব্রুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪