বৈরী চিকিৎসা পদ্ধতি

বৈরিতা (জুন ২০১৫)

ডা: প্রবীর আচার্য্য নয়ন
  • ১০
  • ৬০
মামা এলেন গ্রাম থেকে শহরে ডাক্তার দেখাবেন বলে। দীর্ঘদিন রোগে আক্রান্ত। বয়সের তুলনায় বেশি বুড়ো হয়ে গেছেন মনে হয়। দেশের বিখ্যাত ডাক্তারদের তালিকা জোগাড় করেছেন। আমাদের বাসায় থেকে ডাক্তার দেখাচ্ছেন। সেই সূত্রে আমার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয়। একজন রোগী হিসেবে যে সব সমস্যায় মামা পড়েছেন তার একটি হল বৈরী চিকিৎসা পদ্ধতি।

তিনি এলোপ্যাথ ডাক্তারদের দেখালেন। তারা প্রায় সকলেই প্রচুর পরীক্ষা করালো। কয়েকটা ল্যাবে প্রায় একই বিষয়ে একাধিকবার পরীক্ষা করিয়ে একেক রকম ফল পাওয়া গেল। তারচেয়ে বড় সমস্যা হল ডাক্তারের নির্বাচিত ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা না করালে তিনি ফল সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে আরেকবার করাতে বলেন। প্রেসক্রিপশনের ক্ষেত্রেও দেখা গেল একই গ্রুপের ঔষধ বিভিন্ন কোম্পানী বিভিন্ন নামে তৈরী করেছে। একেক ডাক্তার একেক কোম্পানীর ঔষধের নাম লিখছেন। মনে হচ্ছে তারা ডাক্তার নয় কোন কোম্পানীর ঔষধ বিক্রীর কাজ করছেন। বাইরে বেরুলে ঔষধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি দেখে তাদের ঔষধ দিয়েছে কি না। এরপর আছে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ব্যাথার ঔষধের সাথে গ্যাসের ঔষধ পর্যায়ক্রমে উচ্চ থেকে উচচতর শক্তিতে ব্যবহার করতে হয়। মাঝে মাঝে পত্রিকায় কোন কোন ঔষধের ভয়াবহতার সংবাদ থাকে। এছাড়া "কোন ঔষধ কেন খাবেন না" বইয়ে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রয়া ও ঔষধ সাম্রাজ্যবাদের কথা পড়ে মামার আরো খারাপ অবস্থা।

এবার মামা গেলেন হোমিওপ্যাথি পদ্ধতিতে। এরা এলোপ্যাথ পদ্ধতির ঘোর বিরোধী। সূক্ষ্মমাত্রার ঔষধ ব্যবহার করে রোগীকে সুস্থ করতে হয়। তাই হ্যানিম্যান বিপরীত পদ্ধতির চিকিৎসা ছেড়ে সদৃশ বিধানে রোগীকে সুস্থ করেছেন। ধৈর্য ধরে মামা হোমিও চিকিৎসা করালেন। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শে থেকেও দিন দিন অবস্থার অবনতি হতে থাকলো। একসময় ধৈর্য হারালেন কারণ বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকাগুলো যেভাবে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতির বিরুদ্ধে লিখছে তাতে একে কোন চিকিৎসায় বলা যায় না।

মামা ভাবলেন আগের দিনে কবিরাজরা আমাদের দেশে অসাধ্য সাধন করেছে। তাই তিনি আয়ুর্বেদ চিকিৎসকের কাছে গেলেন। তারা বেশ আশার বাণী শোনালেন। বললেন ভেষজ ব্যবহার করেই মানুষ প্রকৃত সুস্থতা লাভ করতে পারে। এরপর অনেক ঔষধ দিলেন। সাথে বিভিন্ন পথ্য। মামা ঘরকে রীতিমতো হরিতকী, বহরা, আমলকীর ভাণ্ডার বানিয়ে ফেললেন। কিন্তু না কাজ হলো না। এরপর ইউনানী, টোটকা চিকিৎসা পদ্ধতিও অবলম্বন করলেন। সবাই নিজেরটা ছাড়া অন্য সব পদ্ধতির বদনাম করলো। কিন্তু মামার অসুখ সারাতে পারলো না।

তারপর হাজিরা দেখলেন, কেউ বলল মেয়াদী বাণ মেরেছে। বাণ কাটালে সুস্থ হয়ে যাবে। বিভিন্ন ধর্মীয় চিকিৎসার প্রায় সবই করলেন। সুস্থ হলেন না। সবাই বললো আয়ু শেষ হয়ে গেছে। আর আশা নেই। পার্শ্ববর্তী দেশে উন্নত চিকিৎসা হয় । সেখানে গেলে তারাও একই কথা বললেন। ক্যান্সার শেষ পর্যায়ে চলে গেছে। মাস দুই মাস ঘুরে ফিরে কাটানোর পরামর্শ দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু মামা হাল ছাড়লেন না। শুরু করলেন পড়াশোনা। শেষে অঙ্কুরিত গম খেয়ে মামা বেশ সুস্থ হয়ে উঠলেন। আর চিকিৎসা পদ্ধতির বৈরিতা কিংবা বিভিন্ন পদ্ধতির চিকিৎসকদের বৈরিতা দেখে মর্মাহত হলেন। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন কবে যে চিকিৎসকরা মানুষ হবে।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক বেশ ভালো লাগলো পড়ে । ভোট রইলো । রইলো শুভেচ্ছাও ।
ধন্যবাদ ভাই কবিরুল ইসলাম কঙ্ক আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি খুব ভালো লিখা এ কথা বলতে দিধা নাই......গম আর অঙ্কুরিত গমের মধ্যে ক্যালোরী ভিটামিন এবং শরকরার ভিন্নতা হেতু এমনটি হতেও পার...অনেক ধন্যবাদ আপনাক.........
ধন্যবাদ ভাই খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
এশরার লতিফ দারুন লিখেছেন, শেষমেষ কিনা অঙ্কুরিত গম খেয়ে সুস্থ হলেন.
ধন্যবাদ ভাই এশরার লতিফ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
শামীম খান ভাল লাগলো লেখাটি , সুন্দর , গোছানো । শুভ কামনা রইল ।
ধন্যবাদ ভাই শামীম খান আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
Fahmida Bari Bipu হা হা। খুব ভাল লাগল আপনার লেখা। চমৎকার। যদিও আপনি নিজেও চিকিৎসক, দেখবেন যেন চিকিৎসকদের হাতে নাস্তানাবুদ না হতে হয়। আমদের দেশে বর্তমানে এই অবস্থাই চলছে। ভোট রইল।
ধন্যবাদ ফাহমিদা বারী আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
জুন ভালো লেগেছে।কথাগুলো সত্য।এখনো আমাদের দেশে ঐ ভাবে চিকিৎসা পেশার উন্নতি হয় নি, প্রয়োজন ছিল। শুভ কামনা।
ধন্যবাদ ভাই জোনাইদ আহমেদ আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
গোবিন্দ বীন ভাল লাগল,পাতায় আমন্ত্রন রইল।
ধন্যবাদ ভাই Gobindo Bin আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
মোঃ সাইফুল ইসলাম আপনি খুব ভালো লেখেন।এর আগেও আপনার একটি সুন্দর তথ্য সমৃদ্ধ একটি লেখা পড়েছিলাম।
ধন্যবাদ ভাই মোঃ সাইফুল ইসলাম আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
পারভেজ রাকসান্দ কামাল ভাল লাগল...ভোট দিয়ে গেলাম। আমার পাতায় আমন্ত্রণ রই...
ধন্যবাদ ভাই পারভেজ রাকসান্দ কামাল আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য
দীপঙ্কর বেরা এটাও একটা বিষয় । ভাবনার । ভাল লাগল
ধন্যবাদ ভাই দীপঙ্কর বেরা আপনার চমৎকার মন্তব্যের জন্য

২০ অক্টোবর - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৩৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪