ঐ দূর দিগন্ত পাড়ে, যেথা আকাশ মাটিতে কানাকানি, তেমনি করে হলো তোমার আমার জানাজানি, ঐ দূর দিগন্ত পাড়ে- জনপ্রিয় এই গানটা খুব মন দিয়ে শুনছিলাম। যেমন গানের কথা, তেমনি তার সুর। মনটা কেমন চাঙ্গা হয়ে গেল। এমন সময় ঝড়ের মতো ঘরে এসে ঢুকল বৈশাখী। সহপাঠীরা সবাই ওকে ডাকে কালবৈশাখী। কারণ ওর সব কথা আক্রমণাত্মক। এবারও ব্যতিক্রম হলো না। ঢুকেই সে বললো, আচ্ছা, তোরা মানুষ হবি কবে? সবাই ওর কথা শুনে ক্ষ্যাপা। তুহিনতো বলেই দিল- মুখ সামলে কথা বল বৈশাখী। তোর কি মনে হয়, আমরা মানুষ নই! -আরে হাত, পা থাকলে কেউ মানুষ হয় না। জ্ঞান বুদ্ধিও থাকতে হয়। - এখানে অজ্ঞানের কী দেখলি? -তোরা সবাই মিলে যে গানটা শুনছিলি তাতে কি বলেছে? সবাই একসাথে বলল- কেন কি বলেছে? বলেছে -ঐ দূর দিগন্ত পাড়ে, যেথা আকাশ মাটিতে কানাকানি - হ্যাঁ বলেছে, তো তাতে সমস্যাটা কোথায়? - ও, কোন সমস্যা নেই। তাহলে তোরাও দিগন্ত, আকাশ আর মাটির কানাকানির যুগেই আছিস। - দেখ, তুই কি বলতে চাস তা স্পষ্ট করে বল, এত প্যাঁচিয়ে বলার দরকার কি? - তোরা অযথা আমার উপর রেগে যাচ্ছিস। আমি ব্যাপারটা বুঝিয়ে বললেই তোদের লজ্জায় গাল লাল হয়ে যাবে। আধুনিক যুগের একটা সাধারণ মানুষও জানে যে আকাশ কখনও মাটির সাথে মিশে না। তাহলে দিগন্ত আসবে কিভাবে। আর তাছাড়া গোলাকার বস্তুর দিক কিভাবে ঠিক থাকে, যখন সেটা ঘুরতে থাকে। তোরা সবাই মিলে এ ধরণের একটা গান শুনে আনন্দ উপভোগ করছিস। অনেকটা কিছুদিন আগেও যেমন ইংরেজীতে অনুবাদ করতে হয়েছে একটা চিরন্তন সত্য- সূর্য পূর্ব দিকে উঠে, পশ্চিম দিকে অস্ত যায়; যেটা আসলে একটা চিরন্তন মিথ্যা। সূর্য কখনও উঠেও না, কোথাও ডোবেও না। তবু মানুষ সূর্যাস্ত দেখতে সাগরে যায়, এসব কি না জানার সমস্যা, না কি না মানার সমস্যা। সাধারণের কথা বাদই দিলাম। তোরাতো সমাজের উচ্চশিক্ষিত শ্রেণী। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তোরা কেন একই রকম ভুল করবি? বৈশাখীর কথায় সবাই চুপ। শুধু প্রজ্ঞা বলল- আসলে আমরা সবাই জানি। কিন্তু দীর্ঘদিনের অভ্যাসবশতঃ বারবার ভুল করি। বৈশাখী আমাদের সংশোধন করে দেয়। সত্যিইতো আমরাই যদি ভুল করি তাহলে সমাজের সাধারণ মানুষেরা কিভাবে শুদ্ধটা জানবে? তরু এতক্ষণ চুপ করেই ছিল। এবার সে মুখ খুলল। বলল- তাহলে কবি সাহিত্যিকেরা দিগন্তের কথা লিখবে না? - কেন লিখবে না? অবশ্যই লিখবে। তবে মরীচিকার কথা যেভাবে লিখে, ঠিক তেমনি এটা যে এক ধরণের দেখার সীমাবদ্ধতা সেভাবে লিখবে। কারণ সত্য প্রচারের দায় সবার।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
...সত্য প্রচারের দায় সবার...। ভাল। তবে বুদ্ধি বিবেচনা ছাড়াও মানুষের আর একটা জিনিস আছে- আবেগ। এটা না থাকলে সে আর মানুষ কিসের? আর ডাক্তার সাহেব বলেন তো বৈশাখী নিজে যে ভাবে এসে জ্ঞান দিয়ে গেল বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সেটা কি স্বাস্থ্যসম্মত? ভাল লিখেছেন। ভাল দেগেছে। শুভেচ্ছা রইল।
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন
...সত্য প্রচারের দায় সবার...। ভাল। তবে বুদ্ধি বিবেচনা ছাড়াও মানুষের আর একটা জিনিস আছে- আবেগ। এটা না থাকলে সে আর মানুষ কিসের? আর ডাক্তার সাহেব বেলেন তো বৈশািল।নিজে যে ভাবে এসে জ্ঞান দিয়ে গেল বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সেটা কি স্বাস্থ্যসম্মত? ভাল লিখেছেন। ভাল দেগেছে। শুভেচ্ছা রইল।
ধন্যবাদ ভাই মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন আপনার বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য। বৈশাখী হালে গজিয়ে উঠা অল্প বিজ্ঞান জানা মানুষের প্রতিনিধি একটা চরিত্র যারা বিজ্ঞানের শৈশবকে বার্ধক্য মনে করে।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।