আমাকে স্কুলে হেঁটে যেত । সঙ্গে কখনও বন্ধুরা থাকব আবার কখনও একা । চারিদিকে ভিড়ের মাঝে এই আধা শহরে অনেক কোলাহলের মাঝে এক ভিখারিকে প্রায়ই টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে দিতাম । ও প্রথম দিকে চাইত - বাবু । দু-টাকা দিয়ে যাও । দুদিন ধরে কিছু খাইনি । আমি অত বুঝতাম না । বাবা বলত – ওরা সব কাজ না করার তাল । ফোকটে পেয়ে গেল আর কষ্ট করার দরকার কী ? তাই আমি ওদের ফুটো পাত্রে পয়সা দিতাম না । কিন্তু যেতে আসতে দেখি তাই মায়া লাগে । দিলাম দশ টাকা । আমিও জানি আবার সেও জানে এইভাবে দশ দশ জুড়ে ওর বেশ চলে যাবে । তা হোক আমি দিলাম ভালো হবে ভেবে । আরও অনেক ভিখারি আছে, তাদেরকেও দিতে গেলে আমি ফতুর হয়ে যাবো । তবুও কিছুদিন বাদে বাদে দিতাম । তবে তার অবস্থা দেখতাম আরো খারাপ । গন্ধের শেষ নেই । শীত গ্রীষ্ম বর্ষায় বেঁচে আছে । এক বছর কেটে গেল । আমি অন্য ক্লাসে । সেই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি । সেই ভিখারিটা বলল-বাবু দু-টাকা দিয়ে যাও । এক সপ্তাহ ধরে কিছু খাইনি । এক বছরে এদের না খাওয়ার মেয়াদ পাঁচদিন বেড়েছে । টাকা দেওয়ার মূল্য কিন্তু কমল । বাস ভাড়া বাড়ার জন্য আর টিফিন বাঁচিয়ে দশ টাকা দেওয়া গেল না । পাঁচ টাকা দিলাম । কিন্তু আর ক’দিন এভাবে চলবে ? মানুষের এই অসহায়তা কেন ? ভিক্ষা করে যদি ভালই মিলে তাহলে অবস্থা পাল্টায় নি কেন ? কেন আজও অসহায় । পাঁচ-দশ টাকায় কিছু আদৌ হয় কিনা জানি না ! কিন্তু ভারতের এই লক্ষ লক্ষ ভিখারির মধ্যে কেউ এরকম ভাবে কয়েক টাকা পায় , কেউ বা তাও না । এত অসহায়তায় মানুষ সত্যিই আর মানুষ নেই । আমার স্কুল পাল্টে গেল । অন্য স্কুল যাওয়ার পথে আরো বেশি এই রকম অসহায়তা দেখে আর মন তেমন ভাবে না । সবাইয়ের মত আমার চোখ সয়ে গেছে । সেই বৃদ্ধ হয়তো আজও বলছে – বাবু , কতদিন খাই নি । দু একটাকা সাহায্য করবেন ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।