রং কী করে মানুষের জীবনে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে তা সন্দীপন বাবুর ঘটনাটা না জানলে কেউ বিশ্বাসই করবে না । এমন কী , আমি নিজেও জানি না । ঘটনাটা লেখা সম্ভব কি না , জানি না । তাও লিখছি । রং-এর খেলা , অর্থাৎ দোলযাত্রা ছিল সেই সময়ে ।আমাদের পায়ের বাড়িতে থাকতেন সন্দীপন বাবু । একজন হাল্কা মনের মানুষ । সর্বদা অন্যদের থেকে আলাদা । খোলামেলা ভাবে থাকতেন । সামাজিক কোনো গণ্ডি মানতেন না । একেবারে আমুদে । সেই মানুষের হল সবথেকে কঠিন রোগ । রোগটা এইরকম যে তিনি কদিন থেকে হয়ে পড়লেন একেবারে আলাদা । অর্থাৎ, সারাদিন তার মেজাজ খিটখিটে থাকত । বেশি কথা বলতে চাইতেন না । সর্বদা একা থাকতে চাইতেন । একা থাকতেই তিনি যেন আনন্দ পেতেন । কেউ তাঁর সাথে বলতে চাইলে, কথা তো হতই না , হতো কেবল রাগারাগি বা কথা কাটাকাটি । সর্বদা আমুদে থাকে লোকের কীভাবে এরকম হতে পারে , তা আমরা জানতাম না । কিন্তু এর চিকিৎসা কারও দ্বারা সম্ভব হচ্ছিল না । আমার বাবা তাঁকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তিনি বললেন,”যতদিন বাঁচব মাথা তুলে বাঁচব । এমন কোনো কাজ করব না যাতে কেউ বলতে পাবরে যে আমার জন্যই তো বেঁচেছেন ।” তার কয়েকদিন পরেই ছিল দোলযাত্রা । সঠিক দিনে আমরা রং খেলতে নেমে গেছি । আমাদের পাড়ার ক্লাবের সবাই । সেবারে আমাদের থিম ছিল- “প্রাকৃতিক রং” । অর্থাৎ , বিভিন্ন ফুলের অথবা পাতা থেকে তৈরী রং । তাই , আমরা রংগুলি একমাস থেকে তৈরী করে চলেছিলাম । সেইদিন সন্দীপন বাবুর শরীর আরও খারাপ । কিন্তু আমরা বাইরে আনন্দে রং খেলছি । তার আওয়াজ এসেছিল তাঁর কানেও । যে অবস্থায় লোকে পূর্ণ-বিশ্রামে থাকে, সেই সময়ে তিনিই একটি অভাবনীয় কাজ করেছিলেন । আমার মনে হয় তিনিই প্রথম যিনি রোগশয্যার সময়ে রং খেলতে লাফাতে লাফাতে বাইতে চলে এসেছিলেন । তাঁর স্ত্রীর প্রবল মানা করা সত্ত্বেও তিনি বাইরে এসে আমাদের সাথে রং খেলতে লাগলেন । এমন রোগে লোকে বিশ্রাম ছাড়া কিছু করতে চায় না । যেখানে , তিনি রং খেলতে চলে এলেন । সেইদিন পুরী দুপুর পর্যন্ত তিনি , আমাদের সাথে রং খেলেছিলেন । রং খেলার পর নাকি তাঁর শরীর আরও সুস্থ হয়ে উঠেছিল । জানি না , রং কী করে এমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিল যে তিনি সেই দিনের পরেই সুস্থ হন । চিকিৎসা কীভাবে হল তা আমার জানা নাই ?
০~০~০~০~০
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
ডা: প্রবীর আচার্য্য নয়ন
ঘটতে পারে এরকম ব্যাখ্যাতীত ঘটনা। যেটা রোগীর মনে দারুণ প্রভাব বিস্তার করে। খুব ভালো লাগলো
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।