সাই

বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী (সেপ্টেম্বর ২০১৪)

হাসান ইমতি
  • ১৫
ঢং ঢং ঢং .........
স্কুল ছুটির ঘন্টা শোনা গেল। বেথেনি এডুকেয়ার স্কুল, এই স্কুলে কো-এডুকেশন শিক্ষাব্যবস্থা হলেও একই ব্লকে আরেকটি মেয়েদের স্কুল থাকাতে এখানে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সংখ্যা বরাবরই কম। ঘন্টা শোনার সাথে সাথে স্কুলগেট সংলগ্ন নবম শ্রেণীর ক্লাসরুম থেকে হৈ চৈ করে বের হয়ে এলো ছাত্রের দল, ছেলেদের ভিড় কমে যেতেই বের হল আট দশ জন ছাত্রীর ছোট দলটি, এই ছাত্রীদের সাথে দেখা গেলো সোনালী ফ্রেমের চশমা চোখে ছোটখাটো আকৃতির একটি ছেলেকেও। স্কুলের খাতায় ছেলেটির নাম শামস রেদওয়ান, ডাক নাম সাই। লেখাপড়ায় সে বরাবর ভালো হলেও ক্লাশমেট ছেলেদের তুলনায় সে উচ্চতা, আকৃতি ও শারীরিক শক্তি তিন দিক দিয়েই পিছিয়ে আছে। এজন্য স্কুলে রসিকতা করে তাকে ডাকা হয় “বাইনো” নামে। “বাইনো” নামটির উৎপত্তির পেছনেও একটি গল্প আছে, একবার ক্লাসের বনি ওর মামার সুইজারল্যান্ড থেকে আনা হাইটেক বাইনোকুলার নিয়ে ক্লাসে আসে, এই বাইনোকুলার দিয়ে এক থেকে পাঁচ মাইল দুরের জিনিস পরিষ্কার দেখা যায়। ছোটখাট সাধারণ বাইনোকুলার ওরা আগেই দেখেছে কিন্তু এধরনের হাই পাওয়ার বাইনোকুলার ওদের কাছে এই প্রথম, এ নিয়ে সবার মধ্যে তাই তুমুল উত্তেজনা, ক্লাশ শুরুর তখনো আধা ঘন্টার মত বাকি, ক্লাসে উপস্থিত ছেলেরা জানালা দিয়ে বাইনোকুলারে চোখ রেখে দুরের জিনিসকে বড় ও কাছে এনে দেখছিল, ওদের নজর ছিল বিশেষত পাশের মেয়েদের স্কুলের গেটের দিকে, এমন সময় গার্লস স্কুলের সামনের রাস্তা দিয়ে স্কুলের দিকে হেঁটে আসতে দেখা গেল ছোট খাটো সাইকে, ওর পাশাপাশি হেঁটে স্কুলে যাচ্ছে গার্লস স্কুলের দুই মেয়ে, সাথে সাথে বাইনোকুলারে চোখ রেখে ক্লাসের সবচেয়ে দুষ্ট ছেলে বলে পরিচিত বান্টি চেচিয়ে বলল ঐ দেখ আমাদের আণুবীক্ষণিক প্রাণী বাইনো সাই আসছে, বরাবরের মত মেয়েদের সাথে, আমাদের স্কুলের মেয়েতে ওর আর পোষাচ্ছে না, বাইনো এখন গার্লস স্কুলের মেয়েদের স্কার্ফের নীচে মুখ ঢেকে স্কুলে আসছে, সাথে সাথে ক্লাসে হাঁসির রোল পড়ে গেল, এর খানিক বাদে সাইকে বরাবরের মত স্যার আসার আগমুহূর্তে দেখা গেল মেয়েদের সাথে ক্লাসে ঢুকতে, পেছন থেকে কয়েকজন একসাথে চেঁচিয়ে উঠলো ঐ দেখ “বাইনো” এসেছে । সাথে সাথে ক্লাসে আবার হাঁসির রোল পড়ে গেল, কিছু না বুঝতে পেরে সাইসহ মেয়েরা ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেল আর সেই থেকে ক্লাসের ছেলেদের কাছে স্থায়ীভাবে সাইর নাম হয়ে গেল “বাইনো”। শুধু নাম নয় ছোটখাট আকৃতি ও নরম স্বভাবের জন্য তাকে প্রায়ই পড়তে হত এরকম নানা বাঞ্চিত অবাঞ্ছিত সমস্যায় । স্কুল বাদেও পাড়া ও মহল্লায় সমবয়সীদের Ragging ছাড়াও আছে কিছু নাক উচু সমবয়সী মেয়েদের অবজ্ঞা। বাইরে কিছু বুঝতে না দিলেও সাই স্বভাবতই এতে মনে মনে কষ্ট পেত । ও এসব উপেক্ষা করে চলতে চাইত কিন্তু ও যতই এড়াতে চাইত ক্লাসের ছেলেরা তত বেপরোয়া হয়ে ওঠতো । গতকাল থেকে এর সাথে যোগ হয়েছে এক নতুন মাত্রা । গতকাল স্কুল বেঞ্চে বসতে গেলে পাশের ছেলেটি এগিয়ে এসে ওর বসার জায়গা দখল করে ফেললো, ও দ্বন্দ্বে না গিয়ে সরে পাশের বেঞ্চে বসতে গেলে একই কাণ্ড ঘটলো, ও যেই বেঞ্চে বসতে যায় পাশের ছেলেটি ওর জায়গা দখল করে ফেলে । শেষমেশ ও যখন কোন বেঞ্চেই বসতে পারলো না তখন বান্টি চিৎকার করে বললো আজ থেকে আর তোর জায়গা আমাদের বেঞ্চে হবে না, তুই ছেলে নামের কলঙ্ক, তুই এখন থেকে মেয়েদের সাথে ওদের বেঞ্চে বসবি, ওদের বেঞ্চে জায়গা না পেলে ওদের কোলে বসবি, বলে পাশের সারির মেয়েদের বেঞ্চ দেখিয়ে দিলো, বান্টির কথার সাথে সাথে ক্লাস জুড়ে তুমুল হাঁসির রোল পড়ে গেল। বান্টি আবারও বলতে শুরু করলো “স্যার বা মেয়েরা এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলে আমরা তোকে বসতে বলেছি এ কথা বললে তোর জান কবচ করে ফেলব, বলবি ভীরু কাপুরুষ বলে আমি সবসময়য় মেয়েদের স্কার্ফের নীচে মুখ লুকিয়ে থাকতে ভালোবাসি, গার্লস স্কুলের গেটে ফ্রী ডিউটি করতে গিয়ে আজ স্কুলে আসতে দেরী হয়ে যাওয়াতে সামনের বেঞ্চে বসার জায়গা পাইনি, আর আমার মেরুদন্ডে সমস্যার কারনে চোখের শক্তি খুব দুর্বল বলে পেছনের বেঞ্চে বসলে আমি কিছু দেখতে পাইনা, সেজন্য এখানে বসেছি”। বান্টির গায়ে হুল ফোটানো কথায় সারা ক্লাস বিশ্রীভাবে খিক খিক করে হাঁসতে লাগলো।

এমন সময় ক্লাসে স্যারসহ মেয়েরা এসে পড়ায় সবাই চুপ করে গেল, সাই গুটিসুটি পায়ে শেষের একটি বেঞ্চে বসে পড়লো, বান্টি গলা নিচু করে হুমকি দিলো কাজটি ভালো করলি না সাই, তোর খবর আছে, আজ রাতেই বুঝতে পারবি আমাদের কথা না শোনার পরিনাম। সাই মেয়েদের মত ক্লাস শেষে স্যারের সাথে বের হয়ে গেল আর পরের ক্লাসে আবার স্যারের সাথে ঢুকল। তাই ক্লাসে আর তেমন কোন ঝামেলা হল না । ছুটির সময় বান্টি ও তার গ্রুপের ছেলেরা আবারও হুমকি দিলো আজ রাতে বুঝবি আমাদের কথা না শোনার ফল । ওদের কথা থেকে সাই কিছু আচ করতে পারলো না ওরা কি বোঝাতে চাইছে, সতর্ক হবার প্রয়োজন বুঝতে পারলেও ওরা কি করতে চাইছে বা কিভাবে সতর্ক হতে হবে বুঝতে পারলো না। দুরুদুরু বুকে সাই বাসায় ফিরে এলো ।

একবছর আগেও সাই বাবা মায়ের সাথে এক ঘরে ঘুমাতো, এখন সে একা ঘর পেয়েছে, রাতে ঘুমাতে যাবার সময় তার আবার বান্টির হুমকির কথা মনে পড়ে গেল, এখন গ্রীষ্মকাল, আবহাওয়া বেশ গরম, তবু সাই আজ তার ঘরের সব জানালা বন্ধ করে দিলো, নীল ডিম লাইট জ্বেলে সে শুয়ে পড়লো। মাঝরাতে সহসাই একধরণের শিরশিরে অনুভূতিতে ওর ঘুম ভেঙে গেলো। সাই ভয় পেয়ে গিয়ে তাড়াতাড়ি ঘরের লাইট জ্বেলে দিলো, একসারি পিঁপড়ে ওর স্কুল ব্যাগ থেকে বের হয়ে লাইন ধরে ওর বিছানা ও বিছানা থেকে শরীরে এসে পৌঁছেছে, ওর স্কুল ব্যাগ খুলে বুঝতে পারলো কেউ ওর ব্যাগের সাইড পকেটে একটি কাগজের ঠোঙ্গায় মোড়া পিঁপড়ের বাসা ঢুকিয়ে দিয়েছে, রাতে ও বই বের করার সময় ব্যাগের পাশের পকেটটি খোলেনি বলে বিষয়টি বুঝতে পারেনি, তখন পিঁপড়ের বাসাটি কাগজে মোড়া ছিল বলে পিঁপড়ে বের হতে পারেনি, ইতিমধ্যে পিঁপড়ে গুলো কাগজ কেটে বের হয়ে এসেছে, এটিই তাহলে বান্টি ও তার বন্ধুদের কারসাজি, এজন্যই ওরা হুমকি দিচ্ছিল। ব্যাপারটাকে খুব ছেলেমানুষি বলে মনে হল সাইর। এবার তাহলে এই পিঁপড়ের আপদ বাইরে ফেলে দিতে হবে ভেবে সাই একটি ঝাড়ু নিয়ে এলো, ঠিক তখনই কে যেন ওর মাথার ভেতর থেকে বলে উঠলো না, “সাই, এই কাজটি করো না, আমরা যেমন আছি তেমনই থাকতে দাও”, কোন ভাবনা বা অস্পষ্ট কথা নয়, সাই একদম পরিষ্কার শুনতে পেল কথাগুলো, যেন ওর পাশে দাড়িয়ে কেউ কথা বলছে, কিন্তু বন্ধ রুমে কোথাও কেউ নেই, ভুল শুনেছে ভেবে সাই আবারও পিঁপড়ে গুলোর দিকে অগ্রসর হতে গেল, এবার আবারও শুনতে পেল, “সাই, আমরা যা বলছি তোমাকে তাই করতে হবে, চেষ্টা করলেও তুমি আমাদের কথার বাইরে যেতে পারবে না, আমাদের কথা শুনলে তোমার কোন ক্ষতি হবে না, পিঁপড়ের মত দেখতে হলেও আমরা কিন্তু সত্যিকারের পিঁপড়ে নই, আমরা রূপান্তর মাত্রার প্রাণী, এখন পিঁপড়ের রুপ ধরে আছি বলে তোমার পাজী বন্ধুরা পিঁপড়ে মনে করে আমাদের তোমার ব্যাগে ভরে দিয়েছে” । প্রথমে ঘাবড়ে গেলেও সাইর খুব কৌতুহল হল ব্যাপারটি কি তা দেখার জন্য, সে প্রশ্ন করলো “রূপান্তর মাত্রা আবার কি ? তোমরা আসলে কি” ?

সাই অবাক হয়ে লক্ষ্য করলো ও কথা বলল কিন্তু ওর গলা দিয়ে কোন স্বর বের হল না, নিজের গায়ে চিমঠি কেটে নিশ্চিত হল ও ঘুমিয়ে নেই বা স্বপ্ন দেখছে না, ওর অবাক হবার ব্যাপারটি বুঝতে পেরে সেই কন্ঠস্বরটি আবার ওর মনের ভেতর কথা বলে উঠলো, “সাই, তুমি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আমাদের সাথে তুমি যে কথা বলবে বাইরের কেউ তা শুনতে পাবে না আবার আমরা যাকে শুনাতে চাই সে ছাড়া আমাদের কথা আর কেউ শুনতে পারে না, যে বা যাকে আমাদের অস্তিত্ব বোঝাতে চাই সে ছাড়া আর কেউ আমাদের অস্তিত্ব বুঝতে পারে না” ।

সাই এই আলাপ চারিতায় কিছুটা সাহস ফিরে পেল, আবার জিজ্ঞেস করলো “তোমরা কোথা থেকে এসেছ, তোমরা কি কোন মহাজাগতিক প্রাণী” ?

সেই কণ্ঠস্বর আবারও উত্তর করলো, “তোমরা মানুষরা নিজেদের খুব বুদ্ধিমান ভাবলেও তোমরা আসলে সাধারণ বুদ্ধিমত্তার প্রাণী, তোমরা নতুন বা অদ্ভুত কিছু দেখলে ভুতপ্রেত বা অজানা মহাজাগতিক প্রাণীর ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়ে পিঠ বাঁচাতে চাও, পৃথিবীকে মহাবিশ্বের অংশ ধরলে মানুষ সহ তিন পর্যায়ের মহাজাগতিক প্রাণী আছে, মানুষ মাঝামাঝি পর্যায়ের প্রাণী, মানুষের আগে আছে খুবই নিম্ন পর্যায়ের কিছু প্রাণী, আরকেটি পর্যায়ে আছে আমাদের মত অত্যন্ত উন্নত পর্যায়ের প্রাণী, ভুত বলে আসলে তেমন কিছু নেই বা পৃথিবীতে অদ্যাবধি কোন মহাজাগতিক প্রাণী বা এলিয়েন আসেনি, নিম্ন পর্যায়ের মহাজাগতিক প্রাণীদের ভেতর অত্যন্ত হিংস্র কিছু প্রজাতি থাকলেও তারা তাদের বুদ্ধিমত্তা বা জ্ঞানের অভাব হেতু নিজেদের গ্রহের বাইরে খুব একটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি, আর উচ্চ পর্যায়ের প্রাণী যে স্তরে আছে তারা পৃথিবীর পর্যায়ের একটি গ্রহ বা মানুষদের নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না, তাদের আগ্রহ আছে আমাদের বিষয়ে কিন্তু তারা আমাদের ঘাটাতে সাহস পায় না, আমরা কিন্তু পৃথিবীর বাইরের কোন প্রাণী নই, আমরা রূপান্তর মাত্রার প্রাণী, আমরা তোমাদের সাথে পৃথিবীতেই থাকি।

তাহলে এলিয়েন, ফ্লাইং সসার ইত্যাদি নিয়ে এতো গুজব, এতো জল্পনা কল্পনা, এসব কিছু কি ভিত্তিহীন ? সাইর জড়তা কেটে গেছে, সে স্বাভাবিক গলায় প্রশ্ন করলো ।

“সে তো কেবলই বললাম তোমরা মানুষরা খুব সাধারণ বুদ্ধিমত্তার কল্পনাপ্রবন প্রাণী, কোন ঘটনার সত্যিকার কারন বের করতে না পেরে আজগুবি গল্প ফেঁদে বস, পৃথিবীতে এলিয়েনের আগমন, ফ্লাইং ইত্যাদি তোমাদের উর্বর কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয় ।

যদি তাই হয় তবে মানুষেরা তাহলে তোমাদের কথা জানে না কেন বলত ? সাই আবারও পাল্টা প্রশ্ন করলো সেই কণ্ঠস্বরকে।

“কারন আমরা না চাইলে কেউ আমাদের সম্পর্কে কিছুই জানতে পারবে না। আমরা তোমাদের আশপাশেই আছি । তোমরা আমাদের সবসময়য় দেখ কিন্তু আমাদের সম্পর্কে কিছুই জানো না। তোমাদের জানার দৌড় খুব সীমিত, জানার প্রক্রিয়াও খুব শ্লথ, ভুলে ভরা, তোমাদের অজানা থেকেই অজ্ঞতার শুরু, এই অজ্ঞতা থেকেই তোমরা নিজেদের সৃষ্টির সেরা জীব বল, মানুষ আসলে প্রাথমিক পর্যায়ের সাধারণ একটি প্রাণী” ।

“তোমরা রূপান্তর মাত্রার প্রাণীরা আসলে দেখতে কেমন, পিঁপড়ের মত, এখন যেমন দেখতে পাচ্ছি” ? সাই প্রশ্ন ছুড়ে দিলো সেই রহস্যময় কণ্ঠস্বরকে।

মৃদু হাঁসির শব্দ শোনা গেল, সেই সাথে উত্তর ভেসে এলো, “আমাদের রূপান্তর মাত্রার প্রাণীদের কোন নির্দিষ্ট আকৃতি নেই, আমরা যখন যে আকৃতি ইচ্ছে ধারণ করতে পারি। বিপুল আমাদের ক্ষমতা, মানুষ থেকে শুরু করে অন্য যে কোন প্রাণী, এমনকি জড়বস্তুর যেমন ইট, কাঠ, পাথর বা আলো হাওয়ার আকৃতিও ধারণ করতে পারি আমরা। তাই আমাদের রূপান্তর মাত্রার প্রাণী বলা হয় । তোমরা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রূপে আমাদের দেখ, দেখেছ কিন্তু কখনো বুঝতে পারোনা”।

“তাহলে এখন আমি কি করে বুঝতে পারছি, তোমরা নিজে থেকে আমাকে বুঝতে দিচ্ছ তাই” ? আবার প্রশ্ন রাখলো সাই ।

“হ্যা, ঠিক তাই, আমরা নিজে থেকেই তোমার কাছে আত্মপ্রকাশ করেছি, তুমি কি আমাদের এই আচরনের কারন বুঝতে পারছ” ?

“না, কারন হিসাবে তো অনেক কিছুই অনুমান করা যায়, হতে পারে তোমাদের নিজস্ব কোন ব্যাপার, হতে পারে কোন কারনে আমার স্কুলের ছেলেদের থেকে আমাকে বাঁচাতে চাইছ তোমরা । সঠিক কারণটি নাহয় তোমাদের কাছ থেকেই শুনি । কেন আমাকে তোমরা তোমাদের পরিচয় জানাচ্ছ” ?

“এই জনবহুল পৃথিবীর খুব কম মানুষকে আমরা আমাদের সত্যিকার পরিচয় দেই, প্রতি একশ কোটিতে একজন মানুষ আমাদের সত্যিকার পরিচয় জানে। আমরা জানিয়েছি বলেই তারা আমাদের কথা জানে। তুমি সেই গুটিকয় মানুষের একজন। সাধারণ মানুষের থাকে ছয়টি রিপু বা প্রবৃত্তি, কারো কারো ইন্টুইশন ও ভবিষ্যৎ বলার প্রবণতা থাকে। কিন্তু তারাই আমাদের কথা জানে যাদের কমপক্ষে নয়টি বা তার চেয়ে বেশী রিপু বা প্রবৃত্তি থাকে। তোমার স্কুলের ছেলেদের তোমাকে বিরক্ত করা সামান্য একটি বিষয়, এরকম ঘটনা অহরহই ঘটে, এজন্য আমরা তোমার কাছে আসিনি, ওরা যখন তোমার ব্যাগে পিঁপড়ে ঢুকিয়ে দেবার কথা ভাবল আমরা তখন ওদের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করেছি, পিঁপড়েয় রুপান্তরিত হয়ে গিয়েছি, আমরা নিজে থেকেও তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারতাম কিন্তু তাতে তোমার ক্ষতি হবার সম্ভবনা ছিল। এখন আমরা সরাসরি তোমার কাছে আসিনি বা তুমিও আমাদের নিজে থেকে নিয়ে আসোনি, তাই আমাদের এই যোগাযোগের দায় এখন বর্তাবে তোমাদের স্কুলের দুষ্ট ছেলেদের উপর। তোমাকে ওদের আলাদা করে কোন শাস্তি দিতে হবে না, এখন থেকে ওরা প্রতি রাতে ভয়ংকর সব দুঃস্বপ্ন দেখতে থাকবে। ওদের কেউ আতঙ্কে পাগল হয়ে যাবে, এমনকি কারো কারো মৃত্যুও হতে পারে”।

“মানুষের ছয়টি রিপু বা প্রবৃত্তির কথা তো আমরা জানি, বাকি রিপু বা প্রবৃত্তিগুলো কি” ? আবার প্রশ্ন করলো সাই ।

বাকি রিপু বা প্রবৃত্তিগুলো হল ইন্টুইশন বা ভবিষ্যৎ বলার ক্ষমতা, অন্যদের মনের কথা বোঝার ক্ষমতা এবং রুপান্তরিত হবার ক্ষমতা । এই ক্ষমতা গুলোর কারনেই আমাদের তোমার কাছে আসা । এছাড়াও আরও রিপু বা প্রবৃত্তি আছে ।

“কিন্তু আমার মধ্যে ঐসব ক্ষমতা থাকলে আমি সেটা বুঝতে পারছি না কেন” ? আবারও অবাক হয়ে জানতে চাইল সাই।

“কারন তোমার ক্ষমতা এখনো বিকশিত নয়, সুপ্ত অবস্থায় আছে, তোমার বয়স সদ্য ১৫ বছর পূর্ণ হয়েছে তাই আমরা তোমার কাছে এসেছি, ১৮ বছর পূর্ণ হবার সাথে সাথে তুমি তোমার এই ক্ষমতাগুলো বুঝতে ও কাজে লাগাতে পারবে । তখন তুমি আমাদের একটি অংশকে তোমার নিয়ন্ত্রণে পাবে”।

“কি করে বুঝবো তোমাদের কথা সত্যি, আমি কেন এরকম হলাম, আমি কি সাধারণ মানুষ নই ? নয়টি ছাড়া বাকি রিপু বা প্রবৃত্তিগুলো কি কি” ? আবারও জানতে চাইল সাই ।

“আমাদের কথা যে সত্যি তা সময়ে তুমি নিজেই বুঝতে পারবে, তোমার ভেতর মানুষের সব ক্ষমতা মানে রিপু বা প্রবৃত্তি আছে, আর নয়টি রিপুর পরবর্তী রিপু বা প্রবৃত্তিগুলো সম্পর্কে নিজ থেকে তোমাকে কিছু বলতে আমাদের পর্ষদের পক্ষ থেকে বারণ আছে, তবে তুমি যদি জানতে চাও তবে বলা যাবে, এর পরের তিনটি রিপু বা প্রবৃত্তি হল স্বপ্ন নিয়ন্ত্রণ, ইচ্ছেমৃত্যু ও অমরত্ব”।

দৃষ্টি আকর্ষণঃ আইজ্যাক অসিমভ থেকে শুরু হয়ে তার অনুসারী দেশী বিদেশী বহু লেখক অনুসৃত ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে ওঠা
মহাজাগতিক প্রাণী নির্ভর একঘেয়ে কল্পবিজ্ঞান কাহিনী থেকে বের হয়ে এলো সাই । ভিনগ্রহের কোন প্রাণী বা এলিয়েন নয়, তাদের পৃথিবীতে আগমন নয়, মহাজগতের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণীর বসবাস এই পৃথিবীতেই, পৃথিবী থেকেই তারা নিয়ন্ত্রণ করছে সমগ্র মহাবিশ্ব, কিন্তু তারা সাধারণ মানুষ নয়, তারা রূপান্তর পর্যায়ের প্রাণী, মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হল, তাদের পাশেই যে রয়েছে এই অসীম শক্তিমান প্রাণী তারা ঘুণাক্ষরেও তা জানে না, তাহলে প্রশ্ন আসে এই রূপান্তর পর্যায়ের প্রাণী আসলে কি ?

সাধারণ মানুষের থাকে ছয়টি রিপু বা প্রবৃত্তি, রূপান্তর পর্যায়ের প্রাণীদের থাকে নয় থেকে পনেরটি রিপু বা প্রবৃত্তি । আবার প্রশ্ন আসে সেগুলো তাহলে কি ?

সেগুলো হল ইন্টুইশন ও ভবিষ্যৎ বলার ক্ষমতা, অন্যদের মনের কথা ও চিন্তাধারা বোঝা ও নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা, রূপান্তর ক্ষমতা, স্বপ্ন নিয়ন্ত্রন, ইচ্ছামৃত্যু ও অমরত্ব ।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মিলন বনিক খুবই সুন্দর ভবিষ্যত কল্পনাপ্রসূত একটি কাহিনী...খুব ভালো লাগলো...
ভালো লাগেনি ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
সাদিয়া সুলতানা ভাল লাগা অার শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
ধন্যবাদ বন্ধু, এটি একটি বৃহৎ ভাবনার শুরু, একটি ব্যাপক বিস্তৃতি ধারন করছে এই প্রেখাপট, পাঠক ভালোলাগা পেলে এই সিরিজের আরও লেখা আসতে পারে কারন ...
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
ওয়াহিদ মামুন লাভলু চমৎকার ভাবনার গল্প। খুব ভাল লাগল। শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
ধন্যবাদ বন্ধু, এটি একটি বৃহৎ ভাবনার শুরু, একটি ব্যাপক বিস্তৃতি ধারন করছে এই প্রেখাপট, পাঠক ভালোলাগা পেলে এই সিরিজের আরও লেখা আসতে পারে কারন ...
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
দীপঙ্কর বেরা Besh laglo. Kolponar golpo.
ধন্যবাদ বন্ধু, এটি একটি বৃহৎ ভাবনার শুরু, একটি ব্যাপক বিস্তৃতি ধারন করছে এই প্রেখাপট, পাঠক ভালোলাগা পেলে এই সিরিজের আরও লেখা আসতে পারে কারন ...
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
শামীম খান The story could extend more and dissolve the matters related to ragging.Any way I enjoyed the story very much.All the best for the writer.
ভালো লাগেনি ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
Thanks bro, it could be the starting a wide theme , if the reader group allow it may be a series ...
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
একনিষ্ঠ অনুগত দারুণভাবে এগুচ্ছিল গল্প। হঠাৎ করেই যেন শেষ হয়ে গেল। যাইহোক অনেক ভালো লেগেছে।
ভালো লাগেনি ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
ধন্যবাদ বন্ধু, এটি একটি বৃহৎ ভাবনার শুরু, পাঠক ভালোলাগা পেলে এই সিরিজের আরও লেখা আসতে পারে কারন একটি ব্যাপক বিস্তৃতি ধারন করছে এই প্রেক্ষাপট ...
ভালো লাগেনি ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

১৯ আগষ্ট - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৩৪ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪