ইটের বৃত্ত

ক্ষোভ (জানুয়ারী ২০১৪)

ওয়াহিদ মামুন লাভলু
  • ১৭
  • ২৭
পিছন থেকে কে যেন জিজ্ঞেস করলো, কয়টা বাজে, ভাইয়া?
দেখলাম যে কালো বোরখা পরা, মাথায় ওড়না, লম্বা মত ফর্শা একজন মেয়ে।
আমি বললাম, দুঃখিত, আমার কাছে ঘড়ি নেই।
সে হাসতে হাসতে বললো, ও, আচ্ছা।
তার চোখ খুব সুন্দর। এক ইঞ্চি উঁচু হিলওয়ালা কালো স্যান্ডাল পরেছে সে। সুন্দর পায়ে চমৎকার মানিয়েছে।

পশ্চিম দিকে হেঁটে মিরপুর বার নাম্বার বাস স্ট্যান্ডের দক্ষিণে গিয়ে ম্যাক্সি-তে চড়লাম। একটা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজ-এ চাকরি করি। তেজগাঁও শিল্প এলাকায় ট্রাক স্ট্যান্ডের উত্তরে অফিস।

অফিসে যাওয়ার পর মিরপুর দেখা মেয়ের কথা বার বার মনে পড়ছিল। তাই তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করে বিকালে তার সঙ্গে দেখা হওয়ার জায়গায় গিয়ে ঘোরাঘুরি করতে লাগলাম। আশা করছিলাম, আবার তার দেখা পাবো। কিন্তু দেখা মিললো না।

রাতে বুয়া উদ্বিগ্নভাবে জানালো যে তার স্বামীর মানসিক অসুখটা অনেক বেড়েছে। তার জন্য ওষুধ কেনা খুব প্রয়োজন। অন্যদিকে ছেলেমেয়েদের শান্ত রাখাও দরকার।
বুয়ার মুখটা বিষণ্ণ ও সরলতাপূর্ণ। বয়স পঁয়ত্রিশ এর মত হবে। ফর্শা, লিকলিকে স্বাস্থ্য। অসুস্থ স্বামী এবং তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে তার সংসার। বস্তিতে থাকে।
সে বললো, আমার আর বাঁচতে ইচ্ছা করে না।
চমকে উঠলাম তার কথা শুনে। তাকে ওষুধ কেনার টাকা দিলাম। টাকা পেয়ে কৃতজ্ঞতায় তার চোখে পানি এসে গেল।

স্কুল জীবনের বন্ধু জাহাঙ্গীর, শফিক ও মানিকের সাথে মিরপুর বার নাম্বার বাস স্ট্যান্ডের কিছুটা পূর্বে একটা ভবনের তিন তলার এক রুমে মেসে থাকি। সকাল আটটায় অফিসে গিয়ে বাসায় ফিরতে রাত প্রায় দশটা বেজে যায়। এত ব্যস্ততার মধ্যেও রাতে ব্রিজ খেলি। এতে সারাদিনের কর্মব্যস্ততার ক্লান্তি দূর হয়ে মনে আসে আনন্দ।

পূর্বের মুক্ত জীবন থেকে বাঁধা ধরা চাকরি জীবনে পদার্পণ করে প্রথম দিকে নিয়ম মাফিক চলতে খুব কষ্ট হতো। অফিসে পৌঁছুতে যাতে বিলম্ব না হয় সেজন্যে আমার আগে কর্মজীবন শুরু করায় অভিজ্ঞ জাহাঙ্গীর ও শফিক লাল রং-এর একটা টেবিল ঘড়ি আমাকে কিনে দিয়েছিল। ভোরে সেই ঘড়ির অ্যালার্ম শুনে ঘুমটা অসম্পূর্ণ রেখেই বিছানা ছাড়তাম। তাই গাড়িতে ওঠার পর ঘুমে চোখ বুঁজে আসতো।

একদিন গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎ চেঁচামেচির শব্দে ঘুম ভাঙতেই দেখেছিলাম, ফার্মগেইট পার হয়ে অনেক দূর সেই মতিঝিল বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে চলে এসেছি। আঁতকে উঠে দ্রুত রিক্সা নিয়ে এফ.ডি.সি.’ র কিছুটা পূর্ব পাশ দিয়ে সাত রাস্তা হয়ে অফিসে যখন পৌঁছেছিলাম তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল।

আরেকদিন এভাবে চলে গিয়েছিলাম শাহবাগ। এখন এই জীবনেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি।

কয়েকদিন পর সকালে ম্যাক্সিতে চড়ে দক্ষিণ দিকে তাকিয়ে আছি। হঠাৎ চোখের কোনে আবছাভাবে দেখলাম যে হন্তদন্ত হয়ে এক মেয়ে ম্যাক্সিতে উঠলো। আমার পাশে বসার পর তার ব্যাপারে কৌতূহল জাগলো। তাকিয়ে দেখি পূর্বে দেখা সেই মেয়ে। আমি তটস্থ হলাম। চোখাচোখি হতেই সে জিজ্ঞেস করলো, কোথায় যাচ্ছেন?
আমি বললাম, অফিসে। আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
সে বললো, ফার্মগেইট।

ফার্মগেইট পৌঁছে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কোথায় পড়াশোনা করেন?
সে বললো, আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটিতে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি। কি চাকরি করেন আপনি?
বললাম, একটা প্রতিষ্ঠানে মার্চেন্ডাইজার হিসাবে আছি।
সে কিঞ্চিৎ হেসে বললো, আচ্ছা, আসি। আবার দেখা হবে, কথা হবে।
তার শেষের কথায় আমি অবাক হলাম।

রাতে জাহাঙ্গীর হাসতে হাসতে বুয়াকে বললো, আপা, অন্য রুমে আপনি তো কাজের ফাঁকে টেলিভিশনে নাটক দেখার সুযোগ পান। কিন্তু আমাদের রুমে তো টেলিভিশন নেই। তাই অন্য রুমে যারা থাকে তাদেরকেই আপনি বোধহয় আমাদের চেয়ে বেশি পছন্দ করেন, তাই না?
বুয়া বললো, আপনাদের রুমে আপনারা নিজেরাই যে নাটক করেন সেই নাটকই আমার কাছে টেলিভিশনের নাটকের চেয়ে বেশি ভালো লাগে।
আমরা বললাম, মানে?
আসলে আমরা চার বন্ধু যে খুব মজা করি বুয়া সেগুলোকেই বুঝিয়েছে। তার কথায় খুব আনন্দ পেলাম।

এক ছুটির দিনে সন্ধ্যার পর হেঁটে যাওয়ার সময় পিছনে কারো দ্রুত আসার শব্দ পেলাম। পাশাপাশি আসার পর তার দিকে তাকাতেই তাকে চিনলাম। সে বললো, আসসালামু আলাইকুম।
সালামের উত্তর দিয়ে ভাবলাম, পূর্বের দুই দিন সে সালাম দেয় নি, এখন সালাম দিল কেন? সে কি দুষ্টামি করছে? নিজেকে বোকার মত লাগলো।

আজ সে বোরখা পরেনি। শাদা একটা পোশাক পরেছে। মাথায় ওড়না। গলা ও বুক ওড়নায় আবৃত। খোঁপাটা উপরের দিকে উঁচু করে বাঁধা। তাকে খুব আকর্ষণীয় লাগছে।
সে রহস্যময় হাসি হেসে একটা প্যাকেট বাড়িয়ে দিয়ে বললো, আপনি বোধহয় এত ব্যস্ত থাকেন যে দোকানে যাওয়ার সময়টুকুও পান না। তাই আপনার জন্য একটা ঘড়ি কিনেছি।
তার কথা শুনে আমি তো হতবাক! মেয়ে হয়েও আগ বাড়িয়ে ঘড়ি দিতে চায় কেন? ব্যস্ত থাকার কথা বলে সে কি আমাকে উপহাস করলো?
সে আবার বললো, এটা না নেওয়ার মত স্বাধীনতা আপনার আছে। কিন্তু নিলে খুব মানসিক তৃপ্তি পাবো।
আমি নির্বাক হয়েই রইলাম।
সে পুনরায় বললো, ঘড়িটা নিলে নিজেকে যদি ঋণী মনে হয় তবে এর দামটা আমাকে না হয় পরে ফেরত দিবেন। প্লিজ, নিন। আর হ্যাঁ, ঘড়ি পরলে আপনার মত সুন্দর পুরুষকে কিন্তু আরো সুন্দর দেখাবে।
তার মধ্যে এমন এক আকর্ষণ শক্তি আছে যে বাধ্য হয়ে ঘড়ি নিতে নিতে বললাম, ঠিক আছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
সে বললো, না না, আমাকে আপনি করে বলবেন না। আমি তো আপনার অনেক ছোট। আমাকে নাম ধরে ডাকবেন। আমার নাম উর্মি।
এরপর সে বললো, আসি। ভালো থাকবেন।

মানিক আর আমার অফিস অনেক দূরে হওয়ায় একদিন আমরা আলোচনা করছিলাম যে তেজগাঁওয়ের ওদিকে বাসা নেওয়া যায় কিনা। এ কথা শুনে বুয়া বললো, আমাকেও আপনাদের সাথে ওখানে নিয়ে যাবেন।
অনাত্মীয় ও মহিলা হওয়া সত্ত্বেও আমাদেরকে সে এতটা বিশ্বাস ও নির্ভরযোগ্য ভাবে জেনে আমার চোখ পানিতে ভিজে উঠলো।

একদিন বুয়া নালিশ করলো যে বাড়িওয়ালার ছেলে নাকি অন্য কেউ যখন বাসায় থাকে না তখন এসে বুয়াকে কু-প্রস্তাব দেয়। শুনে আকাশ থেকে পড়লাম।

কয়েকদিন পর বুয়া আবার বললো যে সে সাড়া না দেওয়ায় পরদিন থেকে তাকে বাড়িওয়ালার ছেলে এ ফ্ল্যাটে রান্না করতে নিষেধ করেছে। সে নাকি রান্নার জন্য অন্য লোক ঠিক করে দেবে। ভাবলাম, বস্তিতে ময়লা আবর্জনাময় জায়গায় বাস করেও বুয়ার মনটা কত পরিষ্কার আর পরিচ্ছন্ন নিজ বাড়িতে থেকেও বাড়িওয়ালার ছেলের মনে এত ময়লা!

রাতে সবাইকে ক্ষোভের সাথে বললাম, আমাদের জন্য রান্না আমরা কাকে দিয়ে করাবো সেটা আমাদের ব্যাপার। বাড়িওয়ালার ছেলেকে জানিয়ে দিলেই তো হয় যে আমরা বুয়াকে দিয়েই রান্না করাবো।
শফিক বললো, না না, তা বলা যাবে না। তাতে প্রশ্ন উঠবে যে তাকে দিয়েই রান্না করাতে আমরা এত আগ্রহী কেন।

বুয়াকে কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়া হলো। সে কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নিয়ে চলে গেল।

বুয়ার মত একজন অশিক্ষিত মানুষ ঘরে অসুস্থ স্বামী ও ক্ষুধার্ত সন্তানদেরকে রেখেও কাজ টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বাড়িওয়ালার ছেলের কু-প্রস্তাবে সাড়া দেয় নি। আমরা অনেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেও যেটুকু শিক্ষিত হতে পেরেছি বুয়া তা গ্রহণ না করেও আমাদের অনেকের চেয়ে বেশি আলোকিত।

তেজকুনিপাড়ায় একটা রুম নিলাম।

বুয়া আমাদের কাপড় লন্ড্রিতে দেওয়া ও আনা, বাজার করা এসবও করে দিত। একবার মানিকের জ্বর হলে ভোর রাতে টয়লেটে যেতে খাট থেকে ওঠার পর মেঝেয় ধপাস করে পড়ে গিয়েছিল। ওকে মেঝেতে শোওয়া অবস্থায় দেখে আমরা প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে ও কি সবাইকে কান্নার সাগরে ভাসাবে? আসলে অতিরিক্ত দুর্বলতার কারণে সাময়িকের জন্য এমন হয়েছিল। ওর কাপড় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বাথরুমে তা রেখে দিয়েছিল। বুয়াকে না বলা সত্ত্বেও সে নিজে থেকে কাপড় ধুয়ে দিয়েছিল। অথচ মা ও বোন ছাড়া সাধারণতঃ এ ধরণের ভালোবাসার পরিচয় আর কেউ দিতে চায় না।

আমাকে আর মানিককে বুয়া খুব পছন্দ করতো। কিন্তু সেই পছন্দের মূল্য দিতে পারলাম না।

আমরা যদি কোন বিপদের সম্মুখীন হই তবে বাবা-মা কিংবা ভাই-বোনকে তা জানাই উদ্ধার পাওয়ার জন্য। বুয়াও তার সমস্যাটার কথা জানিয়েছিল নিশ্চয়ই উদ্ধার পাওয়ার আশায়। কিন্তু আমরা কিছুই করলাম না দেখে সে হয়তো ভেবেছে যে তার কথা আমাদের কানেই পৌঁছে নি। তার কথা রুমের মধ্যে ছোটাছুটি করে বিফল হয়ে জানালা দিয়ে বের হয়ে রাস্তার ধুলিতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। আমাদের ফ্ল্যাট থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার পর বুয়া অন্য কোথাও কাজ জোগাড় করতে পারলো কিনা তাও তো খোঁজ নিলাম না! নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো।

তৎক্ষণাৎ মিরপুর বার নাম্বারের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। বস্তিতে গিয়ে বুয়াকে পেলাম। মলিন মুখে জোর করে হাসি ফুটিয়ে সে আমাকে অভ্যর্থনা জানালো।

আমার মেজ ভাই পাবনা মানসিক হাসপাতালে ডাক্তার হিসাবে কর্মরত। তিনি ঢাকায় এলে বুয়ার স্বামীকে তাকে দিয়ে দেখালাম। ওষুধপত্র ও কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো। তার অবস্থার উন্নতি হতে লাগলো। ধীরে ধীরে তিনি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে গেলেন।

জাহাঙ্গীর, শফিক ও মানিকের সাথে আলোচনা করে বুয়াকে একটা সেলাই মেশিন কিনে দিলাম। তার স্বামীকে একটা দোকান করে দিলাম। মিরপুর বার নাম্বার বাস স্ট্যান্ডের উত্তরে একদিন বেড়াতে গিয়ে একটা স্কুল চোখে পড়েছিল। ভাবছি বুয়ার সন্তানদেরকে সেখানে ভর্তি করে দেওয়া যায় কিনা।

বাড়িওয়ালার ছেলের বিরুদ্ধে কিছু করার চেষ্টা করলাম না। সে ক্ষমতা আমাদের নেই। আমরাও চাকরি করতে এখানে এসেছি। তাই তার প্রতি শুধুমাত্র অনেক ঘৃণা রইলো। তাছাড়া পৃথিবীর প্রচলিত নিয়মে তাকে শাস্তি দিলে তা বরং কমই হবে। তিনটি সন্তান ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে দিশাহারা দক্ষিণ বঙ্গের এক গ্রামের কুঁড়ে ঘর হতে জীবিকার অন্বেষণে রাজধানী শহরে আসা বুয়াকে যে দুঃখ সে দিয়েছে তার জন্য তো এক ফোঁটা হলেও তার চোখের পানি পড়েছিল। কে জানে হয়তো ঐ এক ফোঁটা পানির কারণেই একদিন দুঃখকষ্টের জলোচ্ছাস তার দিকে ধেয়ে আসতেও তো পারে। হোক না, তাই হোক, তবে তাই হোক।

নিউমার্কেট থেকে পাঁচটা বই, একটা পারফিউম ও একটা ডিভিডি কিনলাম। একটা সিডিতে পছন্দের গান রেকর্ডিং করলাম। উর্মিকে এগুলো দেওয়ার জন্য একদিন মিরপুর গেলাম। কিন্তু তার দেখা পেলাম না। ভাবলাম, তার ঠিকানাটা না নিয়ে মস্ত বড় ভুল হয়ে গেছে।

পরদিন আবার গেলাম। তার দেখা পেয়ে উদ্বিগ্নতা থেকে মুক্ত হলাম। তার দিকে প্যাকেটটা এগিয়ে দিয়ে বললাম, তোমার জন্য ক্ষুদ্র গিফট।
সে মুখে বিস্মিত ভাব ফুটিয়ে বললো, আমাকে গিফট দিতে চান কেন?
আমি থতমত খেলাম। ওর এরূপ কথা আশা করি নি। বললাম, যদি আপত্তি থাকে তবে নিতে হবে না, থাক।
লজ্জা ও অপমানের হাত থেকে বাঁচার জন্য ওর চোখের আড়াল হতে পা বাড়াতে উদ্যত হলাম। সে খপ করে আমার হাত ধরে ফেলে বললো, দাঁড়ান।
তারপর প্যাকেটটা নিজে থেকেই নিল। বললো, আপনি এত লাজুক কেন? শেষে তো আমার সমস্যা হবে।
তার কথার কোন মর্ম উদ্ধার করতে পারলাম না।
সে আবার বললো, ইদানিং আপনার দেখা পাওয়া যায় না কেন?
বললাম, অফিসে যাতায়াতের সুবিধার্থে তেজকুনিপাড়ায় চলে গিয়েছি।
উর্মি জিজ্ঞেস করলো, আপনাদের বাড়ি কোথায়?
বললাম, পাবনা। তোমাদের বাড়ি কোথায়?
সে কিছুটা পূর্বদিকে এই রাস্তারই দক্ষিণ পার্শ্বে একটা তিন তলা বাড়ি দেখিয়ে বললো, ঐ বাড়িটা আমাদের। আরো দুইটা বাড়ি আছে।
মিরপুর থাকাকালীন বেশির ভাগ সময় এই রাস্তাটা ধরেই বাসা থেকে বাস স্ট্যান্ডে আসতাম। রাস্তাটার দুই পাশের বাড়িগুলির সামনে বেশ খানিকটা করে জায়গা খালি আছে। সেখানে ফুল গাছ এবং অন্যান্য গাছ লাগানো হয়েছে। এই রাস্তাটা বেশ নিরিবিলি থাকে।
জানতে চাইলাম, তোমরা কয় ভাই-বোন?
সে বললো, আমি বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান।

উর্মির অনুরোধে পরদিন বোটানিক্যাল গার্ডেনের ওখানে বেড়াতে গেলাম। অন্য দিন তাকে যে ধরণের বোরখায় দেখেছি সে তুলনায় আজ সে একটা সর্ট বোরখা পরেছে। তাছাড়া স্যান্ডালটাও খুব সুন্দর। তাই উর্মিকে আগের চেয়ে আরো কম বয়সী লাগছে।

বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে প্রবেশ করে বেশ কিছুটা হেঁটে গেলাম। তারপর পাশাপাশি বসলাম। তার চুলগুলি আলগা। তাই মাথায় ওড়না থাকা সত্ত্বেও পিঠের উপরে কোমড়ের কাছে ঘন ও লম্বা চুল দেখা যাচ্ছে।

উর্মি জিজ্ঞেস করলো, আপনারা কয় ভাই-বোন?
ওর কথার জবাব দিতে গিয়ে জনসংখ্যা বিস্ফোরণের বিষয় মনে পড়লো। তাই কাচুমাচু মুখে বললাম, নয় ভাই এক বোন।
সে আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো, খুব ভালো তো! আপনারা নিশ্চয়ই অনেক আনন্দে থাকেন। নিজেদের ভিতরে মনের জোরও বিরাজ করে। অন্যদিকে এই দেখুন না, আমি একা। নিজেকে এতিমের মত লাগে।
বললাম, তাই?
সে বললো, হ্যাঁ। আর আল্লাহ্‌ও মানুষের বৃদ্ধি পছন্দ করেন।
আমি বললাম, কিন্তু ভাই-বোন কম হলে তো সচ্ছলতা থাকে।
সে বললো, আল্লাহ্‌ যদি সচ্ছলতা না দেন তবে সন্তান কম নিয়ে সচ্ছলতা আনা যায়? এটা তো আল্লাহ্‌র সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাওয়ার মত। মানে, আল্লাহ্‌ যা পছন্দ করেন তার বিপরীত কাজ করে সচ্ছলতা আনার চেষ্টা করা।
আমি বললাম, তাই তো! এখন তো মনে হচ্ছে আমারও অনেকগুলো সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা রাখা উচিৎ।
সঙ্গে সঙ্গে সে বাধা দিয়ে বললো, না না, আপনাকে বেশি সন্তান নিতে বলি নি।
বললাম, কেন?
সে বললো, তাহলে তো ফলশ্রুতিতে ভোগান্তিটা . . . . ।
বললাম, থামলে কেন? ভোগান্তিটা . . . . মানে?
দ্রুত সে হাসি লুকিয়ে বললো, কিছু না।

এরপর উর্মি বললো, অফিসে যাওয়ার সুবিধার জন্য আপনি বাসা পরিবর্তন করেছেন। এরপর তো শুভ কাজের পদক্ষেপ ফেলবেন। তখন আপনি সাত সমুদ্র তের নদীর পারের দূরত্বের ন্যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাবেন। কখনো কোন ঝড় এসে যদি আমাদের দুইজনকে দুই দিকে ঠেলে দেয়, তাহলে! এই আমার ভয়। তাই সে রকম কিছু হওয়ার আগেই আমাদের বন্ধনটা সুদৃঢ় ও স্থায়ী হোক এটা আমার একান্ত ইচ্ছা। তাই আপনার আপত্তি না থাকলে আগামীকালই আপনার সাথে এক সূতায় গ্রথিত হতে চাই।
আমি বললাম, উর্মি, তুমি হয়তো গ্রামে তেমন যাও নি। তাই দেখ নি। কিন্তু আমি গ্রামের মানুষ। সেখানে কত বাবা-মাকে দেখেছি টাকার অভাবে সন্তানদেরকে স্কুলে পাঠাতে পারে না। পেটের তাগিদে শিশু বয়সেই হাতে রিক্সার হ্যান্ডেল, মাথায় ইট ভাটার মাটির বোঝা চাপে। ফলে কত কিছু জানার এবং উপভোগের সুযোগ থেকে তারা বঞ্চিত হয়। আমি তাদের জন্য কিছু করতে চাই। এ জন্য অগাধ টাকার প্রয়োজন। ফলে আমাকে কঠোর শ্রম দিতে হবে। তাই তোমার মত স্বর্গীয় ফুলকে আমার জীবনের সাথে জড়ানোর অদম্য ইচ্ছা জাগলেও আমার অমসৃন জীবন পথে তোমাকে টানলে নিষ্ঠুরতা হবে।
সে বললো, আর মহত্ত্বের পর্দা তুলে ইচ্ছাকে ঢেকে রেখে আপনার ভালোবাসার কাঙ্গালিনীকে ফিরিয়ে দিলে খুব উদারতা হবে?
সে আবার বললো, এতে আপনার লাভই হবে। বাবার ধন-সম্পদ তো আমারই হবে। আমি সবকিছু নিয়ে আপনার কর্মে সামিল হবো।
বিরক্ত হয়ে বললাম, এ কথাটি কেন বললে? এখন আপত্তি নেই বললে তুমি তো ভাববে যে ধন-সম্পদের লোভে তা বলেছি।
জিহ্বায় কামড় দিয়ে সে বললো, ছিঃ ছিঃ, তা ভাববো কেন? আপনার সাথে কথা শুরু হওয়ার আগে থেকেই আপনাকে দেখেছি। আপনাকে আমি কি চিনি না? আমি ভাববো, আমার অনুভুতিকে মূল্য দিতে এবং আপনার মানসলোকে দিবা-রাত্রি উদয় হই বলে তা বলেছেন। আমি কি ভুল বললাম?
বললাম, না। কিন্তু পরিবারের সবাইকে বাদ দিয়ে?
সে বললো, হ্যাঁ। কারণ আব্বু-আম্মুকে জানালে তারা বলবেন, ঢাকায় যার বাড়ি নেই তাকে পরিবারের একজন বানাবো না। আপনার বাবা-মা বলবেন, ঢাকাইয়া উশৃংখল মেয়ে জীবনটা ছারখার করে দেবে, বাবা। কিন্তু আমি কি উশৃংখল?
আমি বললাম, না।
সে বললো, আপনিও গৃহহীন নন। অথচ এসব বলে তারা আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের ব্যাপারে অন্যরকম সিদ্ধান্ত নিবেন আর পস্তানোর বেলায় দুঃখ ভোগ করবো আমরা?
বললাম, মানে?
সে বললো, নদী তার গভীর হতে উৎসারিত নিজস্ব গতিতে মোহনার পথে ছুটে চলে। তার পথ পরিবর্তন করে দিলে অনেক বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়। উপরন্তু যে স্থানে মোহনার দেখা পাওয়ার কথা ছিল তা না পেয়ে অন্যখানে পায়। ফলে মিলনের স্বাদটাই মধুর না হয়ে তেতো হয়ে যায়। কোন উপায় না পেয়ে তেতো স্বাদটা তো নদীকেই বাধ্য হয়ে গ্রহণ করতে হয়, বড় নদী অথবা সাগরকেও। কাজেই জীবন আমাদের, সিদ্ধান্তও আমরা নিব। পরবর্তীতে তাদেরকে অবহিত করলে তারা আশা করি খুশীই হবেন এই ভেবে যে তাদের ঝক্কি-ঝামেলা আমরা লাঘব করেছি।
আমি বললাম, আচ্ছা, ঠিক আছে।

আমরা গেটের দিকে হাঁটতে লাগলাম।

ওর সাথে একটু মজা করতে ইচ্ছা জাগলো। তাই বললাম, উর্মি, প্রথম দিন তুমি আমাকে ‘ভাইয়া’ বলেছিলে। তাহলে তো তুমি আমার ‘আপামণি’। আগামীকাল থেকে আমরা একে অপরের কি হবো?
লজ্জা পেয়ে সে বললো, জানি না।
চিন্তিতভাবে বললাম, আচ্ছা, আগামীকাল থেকে যে সম্পর্ক স্থাপিত হবে সেই সম্পর্কের প্রকৃতি বা ধরণটা কি?
ভ্রু কুঁচকে সে বললো, বন্ধুত্ব!
বললাম, আমার মাথায় যা আসে নি, তোমার মাথায় তা এল কিভাবে?
সে বললো, আপনি এখনো বালক আছেন, তাই।
বললাম, কিন্তু তুমিই তো বলেছিলে যে তুমি আমার চেয়ে অনেক ছোট! আর বালক হলে তার সাথে স্থায়ী বন্ধন তৈরী করতে চাচ্ছো কেন? তাছাড়া সম্পর্কটা যদি বন্ধুত্ব হয় তবে ‘আপনি’ বলাটা বেমানান লাগে। কাজেই আগামীকালের জন্য অপেক্ষা না করে তুমি আমাকে এখন থেকেই তো . . . .।
উর্মির ঠোঁট প্রসারিত হলো। মুখাবয়ব রক্তিম হয়ে উঠলো। ওর দিকে ঝুঁকলাম উত্তর শোনার জন্য। আমার দিকে তাকিয়ে সে কৃত্রিমভাবে চোখ রাঙিয়ে ধমকের সুরে বললো, চু-প।
আমি হাসতে লাগলাম।

পরদিন উর্মি এল লাল একটা শাড়ি পরে। ম্যাচ করা ব্লাউজ। ওর অবয়ব থেকে লাবণ্য যেন চোখ-মুখ ঠিকরে বের হয়ে আসতে চাচ্ছে।

বিয়ে সম্পন্ন হলে আমরা যখন একা হলাম তখন তার দিকে তাকাতেই লজ্জা আমাকে আঁকড়ে ধরলো।

এই সুন্দর মেয়ে আমার স্ত্রী! শরীরের মধ্যে শিহরণ অনুভব করলাম। তার হাতটা তুলে নিয়ে একটা আংটি পরিয়ে দিলাম। বাহু দুটো ধরতেই যেন কেঁপে উঠলো সে। তার চোখের দিকে তাকালাম। সেও ভীরু নয়নে তাকালো। কয়েক মুহূর্ত পর দৃষ্টি নামিয়ে নিল। তার মুখের অপূর্ব সুষমায় অভিভূত হয়ে গেলাম।

দিনের আলো কমে আসছিল দেখে বুঝলাম, অনেক সময় পার হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে আবিস্কার করলাম, আমি চিৎ হয়ে শুয়ে আছি আর উর্মি আমার বাম বাহুতে মাথা রেখে আমার দিকে কাত হয়ে শুয়ে আছে।

রাতে উর্মিকে ওদের বাড়িতে পৌঁছে দিতে মিরপুর গেলাম। বাড়ির রাস্তাটায় সামনা-সামনি দাঁড়ালাম। ওর মুখটা পূর্ণিমার চাঁদের মত জ্বল জ্বল করছে।

ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কয়েক কদম আগালাম। ওকে ওখানে রেখে আসাকে প্রাণটা রেখে নিষ্প্রাণ দেহে চলে আসার মত লাগলো। তাই পিছনে তাকালাম। দেখলাম উর্মিও ফিরে তাকিয়েছে। আমি তার দিকে এগিয়ে গেলাম।
উর্মি বললো, কিছু বলবে?
আমি বললাম, বাবা-মাকে খুব তাড়াতাড়ি বিয়ের ব্যাপারটা জানিয়ে দিও।
সে বললো, আচ্ছা।

এরপর বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও উর্মির কোন খবরাখবর না পাওয়ায় আশ্চর্য হয়ে এক বিকেলে মিরপুর গেলাম। গাড়ি থেকে নামার পর রোডের এক জায়গায় ইটের বৃত্ত চোখে পড়লো। একজনকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় সে সবকিছু খুলে বললো।

গার্মেন্ট-এর কর্মচারীদেরকে সারা মাস পরিশ্রম করিয়ে যে বেতন দেওয়া হয় তা বাসা ভাড়া, খাওয়া এবং আনুষঙ্গিক খরচ মেটানোর পর প্রায় নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই বাড়িতে ফেলে আসা গরিব পিতা-মাতা এবং আদরের ছোট ভাই-বোনদের মলিন মুখ মনে পড়লে তাদের জন্য টাকা পাঠাতে প্রাণ কাঁদলেও তা না পেরে দুঃখে চোখের পানি বিসর্জন দেওয়া ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। তখন পৃথিবীতে জন্ম নেওয়াটাই বৃথা মনে হয়। ধীরে ধীরে এই দুঃখ ক্ষোভে রূপ নেয়। সেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনরত কর্মচারীরা কয়েকদিন আগে দক্ষিণ দিক থেকে যাত্রী নিয়ে আসা গাড়ি ভাংচুর শুরু করলে সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ বাধ্য হয়ে গুলি ছোঁড়ে।

কর্মচারীরা হকি স্টিক ও লাঠি দিয়ে গ্লাসে আঘাত করলে ভাঙ্গা গ্লাসের টুকরো লেগে গাড়ির ভিতরের একজনের গলার কাছে কেটে রক্ত বের হলে তা দেখে সেই গাড়িতে চড়ে মিরপুর আসা অন্য যাত্রীদের মত এক ছাত্রীও ভয়ে ও আতঙ্কে প্রাণ বাঁচানোর জন্য সেই সময় গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে নিরাপদ জায়গায় যাচ্ছিলো। কিন্তু নিরাপদ জায়গায় পৌঁছার পূর্বেই মেয়েটির মাথায় গুলি লাগার সাথে সাথে বৃত্তটির জায়গায় সে লুটিয়ে পড়ে। রক্তে লাল হয়ে যায় ঐ জায়গাটা। সঙ্গে সঙ্গে তার মৃত্যু ঘটে।

মেয়েটির নাম এবং তার বাড়ি কোথায় তা লোকটি জানে কিনা জিজ্ঞাসা করায় লোকটি যা বললো তা শুনে আমার মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো। স্থান, কাল ভুলে বৃত্তটার কাছে বসে পড়লাম। বৃত্তটার ভেতরে হাত বুলাতেই উর্মির স্পর্শ পেলাম যেন।

জীবন বাঁচাতে কর্মচারীরা জীবিকার তাগিদে গার্মেন্ট-এ চাকরি করতে এসেছে। কিন্তু জীবিকাই যেখানে জীবনকে গ্রাস করছে সেখানে জীবনের মূল্য কোথায়?

মিরপুরে আমি এত দেরীতে না এসে যদি সর্বনাশা দিনটার পূর্বের যে কোন দিন এসে উর্মির সাথে দেখা করে তার কিছুটা সময় আমি কেড়ে নিতাম তবে সর্বনাশা দিনের ঐ দুর্ঘটনার মুহূর্তের পূর্বে উর্মির জীবনে সংঘটিত ঘটনাগুলির সংঘটন কালের হের ফের বা পরিবর্তন হয়তো ঘটে যেত আমার আসার ঘটনাটা সংঘটিত ঘটনাগুলির ভিতরে ঢুকে পড়ায়। ফলে গুলির মুহূর্তের আগে বা পরে উর্মির হয়তো ঘটনাস্থলে আসা ঘটতো কিংবা আদৌ আসাই হতো না। ফলে উর্মিকে হয়তো আমি হারাতাম না। ইস, কেন যে এত দেরী করে এলাম! মাথার চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে হলো আমার।

উর্মির সাথে ঘনিষ্ঠতা হওয়ার পূর্বে কদাচিৎ মনে সংশয় জাগতো যে আমি কি পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবিষ্যতে কর্ম সম্পাদন করতে পারবো? উর্মি তার প্রেম আমাকে দিয়ে আমার মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছিল যে পারবো। কিন্তু উর্মি তো এখন নেই!

বুকের ভিতরটা খা খা করে উঠলো। সামনের সবকিছু দুলছে বলে মনে হলো। ক্লান্তি এসে ভর করলো। কোনক্রমে উঠে একটা দোকানের সামনের বেঞ্চিতে গিয়ে বসলাম।

অনেকক্ষণ পর একটা কণ্ঠে সংবিৎ ফিরে পেলাম। আমাকে বললো, বাবা, অমন করে কাঁদছো কেন?
দেখলাম, বৃদ্ধ একজন মহিলা দাঁড়িয়ে আছেন।

আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ আব্দুর রউফ খুবই হৃদয়বিদারক গল্প। অমানবিকতার কারণে সৃষ্ট ক্ষোভের আগুনে নিঃশেষ হয়ে গেল নিরপরাধ এক মেয়ের জীবন। খুবই মূল্যবান ও বিবেককে জাগ্রত করার মত গল্প। খুব ভালো লেগেছে।
ভালো লাগেনি ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
আপনার মূল্যবান মন্তব্য পেয়ে খুব অনুপ্রাণিত হলাম ভাই। ভালো লাগা জানানোর জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমার সালাম, শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানবেন।
ভালো লাগেনি ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
পারভীন সুন্দর গল্প। উর্মির করুন পরিণতিতে খুব খারাপ লাগল।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ১১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
রতন কুমার প্রসাদ আশপাশের অমানবিকতা, গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা ও বক্তব্য সম্বলিত অসাধারণ একটি গল্প। খুব ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ৩০ জানুয়ারী, ২০১৪
আপনার সুচিন্তিত, মূল্যবান, উৎসাহব্যঞ্জক ও চমৎকার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। আমার শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ৩০ জানুয়ারী, ২০১৪
এশরার লতিফ চমৎকার গল্প, খুব ভালো লাগলো।
ভালো লাগেনি ২৬ জানুয়ারী, ২০১৪
ভাল লাগা জানানোর জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবসময় ভাল থাকবেন। আমার সালাম ও শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ২৭ জানুয়ারী, ২০১৪
মিলন বনিক একেবারে পৃংখানুপুংখ বিশ্লেষন আর দীর্ঘ হলেও ধারাবাহিকতায় একটুও বেগ পেতে হয়নি...খুব ভালো লাগলো ওয়াহিদ ভাই....
ভালো লাগেনি ২৬ জানুয়ারী, ২০১৪
আপনার অসাধারণ, খুব উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ভাল থাকবেন। আমার শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ২৬ জানুয়ারী, ২০১৪
মোঃ আক্তারুজ্জামান আমাদের চারপাশ সুন্দর করে তুলে ধরেছেন, অনেক ভাল লাগল।
ভালো লাগেনি ১৯ জানুয়ারী, ২০১৪
আপনার চমৎকার, যথাযথ মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। খুব অনুপ্রাণিত হলাম। ভালো থাকবেন। আমার শ্রদ্ধা ও সালাম জানবেন।
ভালো লাগেনি ১৯ জানুয়ারী, ২০১৪
কবিরুল ইসলাম কঙ্ক ভালো লাগলো। পত্রিকা http://pratichchhabi.blogspot.in/ দেখুন ।
ভালো লাগেনি ১৫ জানুয়ারী, ২০১৪
ভালো লাগা জানানোর জন্য এবং পত্রিকার ওয়েবসাইট-এর জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আমার শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ১৫ জানুয়ারী, ২০১৪
এফ, আই , জুয়েল # গল্পের শুরু ও সমাপ্তিটা অনেক চম?কার । ভাব ও এর কাব্যিক বর্ননা অনেক মনোরম হয়েছে । ধন্যবাদ ।।
ভালো লাগেনি ১৪ জানুয়ারী, ২০১৪
আপনার চমৎকার, বিশ্লেষণধর্মী এবং সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। আমার সালাম জানবেন।
ভালো লাগেনি ১৫ জানুয়ারী, ২০১৪
ঐশিকা বসু খুব সুন্দর একটা দরদী গল্প উপহার পেলাম। ধন্যবাদ ওয়াহিদ উদিন।
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৪
গল্পটি পড়ার জন্য এবং অসাধারণভাবে মূল্যায়ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। আমার শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ১৫ জানুয়ারী, ২০১৪
মোঃ মহিউদ্দীন সান্‌তু সহানুভূতি, ভালোবাসা, ক্ষোভ ও ব্যাথার সংমিশ্রনে চমৎকার একটি গল্প, বেশ লিখেছেন, শুভকামনা রইল।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৪
আপনার বিশ্লেষণাত্মক চমৎকার মন্তব্যে খুব অনুপ্রাণিত হলাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন। আমার শ্রদ্ধা জানবেন।
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৪

১৮ আগষ্ট - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ২৭ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪