খানিক ফেরা

কৈশোর (মার্চ ২০১৪)

তৌহিদুল ইসলাম তানিন
  • ৪২
বনেদি বাড়িকে ঘিরে কত বাহারি পত্র-পল্লবের সমাহার
এরই মাঝে কয়েকটি বড়সহ চোড়াড়ি ঘর ঠায় দাঁড়িয়ে
প্রতিটি প্রভাতে পরমানন্দে উব্দোলিত হতো পুরো বাড়ি

এত সব কারুকাজের মাঝে, প্রথম পৃথিবীর মুখ দেখা
আনন্দ অশ্রু সবার চোখে-মুখে অমোচনীয় রেখা কাটে
নয়নের মনি, যাদুর ধন, মানিক-রতন বাড়িতে একটাই

কে কোলে নিবে তা নিয়ে সর্বদা কাড়াকাড়ি লেগে যেত
নানা-নানুর আদর, কখনো মামা-খালাদের গালফুলানি
মায়ের সাথে সখ্যতা তো আরো অনেক অনেক আগেই

নানাকে ছেড়ে দাদার কোলে এসেই অসুখের ছড়াছড়ি
দাদী-চাচা-ফুফুরা ব্যাস্ত পানি পড়া, হাকিম-বৈদ্য নিয়ে
মানুষের মুখ দোষেই নাকি ছোট্ট মনির অসুখ নিশিদিন

দু’বছর পার হতেই অসুস্থ্য দাদাকে চিরবিদায় জানানো
এই বয়সেই সারাদিন দাদার কবরের পাশে শুয়ে থাকা
দাদার চেয়ার ও কবরই যেন কান্নার পরমাশ্রয় বণে রয়

একটু বড় হয়ে, মক্তবে আরবী ও স্কুলে সাধারন শিক্ষা
সন্ধ্যাতে, কুপি-হারিকেনের টিমটিমে আলোয় পড়াশুনা
সাথে সাথেই সব দুষ্টুমির পাঠ নিতেও কভূ ভুল হয়না

পুকুরে-খালে হৈ হৈ রৈ রৈ করে ডুব সাঁতারে মগ্ন থাকা
দৌড়ে গিয়েই আম, জাম, তেঁতুল, সুপারী গাছে ছড়া
কলার ভেলা বানিয়ে পানিতে সারাদিন ভেসে বেড়ানো

নিত্য ডাংগুলি, লাটিম, মার্বেল খেলায় ও এগিয়ে থাকা
আট বছরেই ফনিক্স সাইকেল নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু
সব ঋতুকে উপেক্ষা করে সারদিন মাঠে ঘুড়ি ওড়ানো

সরিষা ও গমের ক্ষেত মাড়ানো, সুমিষ্ট আখ ক্ষেতে গমন
শীতের রাতে গাছে চড়ে পাটকাঠিতে খেঁজুরের রস পান
৩ কি.মি. হেঁটে বাজার করা, ৬ কি.মি. হেঁটে মুড়ি ভাজা

প্রতি বৃহঃস্পতি, বই-খাতা ফেলে নানাবাড়িতে ভো দৌড়
শনিবার স্কুলে এসেই সবান্ধবে ফের বাতাবি লেবু আস্বাদন
স্কুলের পাশেই, খালের উপরে দীর্ঘ সাঁকোতে দৌড়ে চলা

সাড়ে দশ বছরে শহরে এসে, এসবে ছেদ পড়ে চিরতরে
যান্ত্রিক নিয়মের তোড়ে পড়ে, মধুর শৈশব হারিয়ে ফেলা
পরিমিত ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন-ই একমাত্র সহায়

টিভিতে এক্স-ফাইল, রবিনহুড ও ক্যাপ্টেন প্লানেট দেখা
পুরো কৈশোরটা এভাবেই গুটিকয়েক নিয়মে থমকে রয়
সে দুরন্তপনা, ডানপিটে স্বভাব কোথায় যেন হারিয়ে যায়

সোজা স্কুল, স্কুল থেকে বাসা আর মাঝের হাঁটা পথটাই
পুরোপুরি শান্ত ও সরল-সোজা কিশোর হয়ে বেড়ে ওঠা
দু’তিনটা বন্ধু নিয়ে বাকি সময়টুকু এগিয়ে চলা, সামনে
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
সেলিনা ইসলাম জীবন্ত হয়ে ধরা দিল কবিতার প্রতিটা শব্দ! বেশ সুন্দর লিখেছেন শুভকামনা রইল
ভালো লেগেছে জেনে অনুপ্রেরণা পেলাম। আপুনি, আপনার জন্য একরাশ শুভেচ্ছা
মিলন বনিক শিসবের এবং কৈশোরের সাথে পারিবারিক বন্ধনের ব্যাপারটা খুব ভালো ভাবে ফুটে উটেছে....ভালো লাগলো....
অনেক অনেক ধন্যবাদ, ভাইজান। আস্‌সালামু আলাইকুম
নাফিসা রহমান সুন্দর গদ্য কবিতা ..... ভালো লাগল
ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন আপুনি
মাসুম বাদল ভালো লিখেছেন। তবে কৈশোরকে প্রাধান্য দিলে আরো প্রাসঙ্গিক হতো...
আলহামদুলিল্লাহ্‌! ইনশা আল্লাহ্‌ ভবিষ্যতে আরো ভালো লিখার চেষ্টা করবো। যাজাকুমুল্লাহু খাইরান
রোদের ছায়া বেশ বেশ , একেবারে জন্ম থেকে শুরু করে কিশোর বেলার কথা জানা হল। বেশ ভালো।
ভালো লেগেছে জেনে আমার ও ভাল লাগলো, আপু। আস্‌সালামু আলাইকুম
সাদিয়া সুলতানা যেনো কবিতার সাথে গল্পচ্ছল! কিন্তু চোড়াড়ি ঘর শব্দটির মানে বুঝলাম না। বলবেন কি? শুভকামনা।
চোড়াড়ি ঘর মানে চৌচালা (চারটি চালবিশিষ্ট টিনের) ঘর। আস্‌সালামু আলাইকুম
ধন্যবাদ। শব্দটি শিখলাম। ওয়ালাইকুম আসসালাম।
সাখাওয়াৎ আলম চৌধুরী অসাধারণ পারিবারিক বর্ননায় চমৎকার কবিতা।
ধন্যবাদ, ভাইয়া। পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য শুকরিয়া। আস্‌সালামু আলাইকুম
ওয়াহিদ মামুন লাভলু সরিষা ও গমের ক্ষেত মাড়ানো, সুমিষ্ট আখ ক্ষেতে গমন শীতের রাতে গাছে চড়ে পাটকাঠিতে খেঁজুরের রস পান ৩ কি.মি. হেঁটে বাজার করা, ৬ কি.মি. হেঁটে মুড়ি ভাজা কৈশোর জীবনের মূল্যবান ঝোঁকের কথা ও সোনালী স্মৃতির কথা চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। খুব ভাল লাগল। শ্রদ্ধা জানবেন।
আমাদের মধুর শৈশব ও কৈশোর কোথায় যে হারিয়ে গেল! পড়ার ও মন্তব্য করার জন্য শুকরিয়া। আস্‌সালামু আলাইকুম

০১ জুন - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪