অন্তঃসলিলা

ইচ্ছা (জুলাই ২০১৩)

অদিতি ভট্টাচার্য্য
  • ৩৫
  • ৬৯
শুভময় সকালবেলা বেশ আয়েস করে খবরের কাগজ নিয়ে বসেছিলেন। পায়ের কাছে সুইটি, চুপটি করে।
এমন সময় তপতী এসে বললেন, ‘একটু বাজারে যাবে? কয়েকট জিনিস আনতে হবে।’
শুভময় কাগজ থেকে মুখ না সরিয়েই বললেন, ‘উহুঁ এখন যেতে পারব না। আমাকে একটু পরেই বেরোতে হবে। এখন বাজারে গেলেই দেরী হয়ে যাবে।’
‘তোমাকে আবার কোথায় বেরোতে হবে?’
‘আছে দরকার আছে। ক’টা বাজল? যাই স্নানটা সেরে নিই,’ তপতীকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই শুভময় উঠে পড়লেন।
তপতী বেশ অবাকই হলেন।
আজকাল শুভময়ের ব্যস্ততা যেন একটু বেশীই বেড়েছে। অবসর গ্রহণের পর কখনো এতটা ছোখে পড়ে নি। সকাল বিকাল বেরচ্ছেন রোজ। ফিরছেনও দেরী করে। যখন বাড়িতে থাকছেন তখনো যেন অন্য কোনো জগতে বিচরণ করছেন। তপতী লক্ষ্য করেছেন বেশীর ভাগ সময়েই অন্যমনস্ক, যেন কি গভীর ভাবনায় মগ্ন।
শুভময় চক্রবর্তীকে যাঁরা অনেকদিন থেকে চেনেন না তাঁদের পক্ষে বোঝা শক্ত দু এক বছর আগেও শুভময় ঠিক কি রকম ছিলেন। তাঁর বাতিকের কথা সর্বজনবিদিত ছিল। তিনি পরপর দুবার হাত না ধুয়ে কোনো কিছু খেতেন না। ডেটল সাবান ছাড়া অন্য কোনো সাবানের প্রবেশ তাঁর বাড়িতে নিষিদ্ধ ছিল। কুকুর, বেড়াল থেকে শত হস্ত দূরে থাকতেন। যেসব বাড়িতে কুকুর, বেড়াল আছে সেসব বাড়িতে তিনি পারতপক্ষে জলগ্রহণ অবধি করতেন না। রাস্তার ধারের দোকান থেকে তেলেভাজা খাওয়া আর আত্মহত্যা করা তাঁর কাছে প্রায় একই ব্যাপার ছিল। এ হেন শুভময়ও বদলেছেন, অনেক পরিবর্তন হয়েছে তাঁর। এটা ঘটেছিল ওনাদের ছেলে দেবোপমের বিয়ের পর। তিয়াসার খুব কুকুর প্রীতি। তার বাড়িতে সে ছোটোবেলা থেকেই কুকুর দেখে অভ্যস্ত। এ বাড়িতে আসার কিছুদিন পরই সে একটা ল্যাব্রাডোর রিট্রিভারের বাচ্ছা নিয়ে এল। তার নাম রাখা হল সুইটি। এতে শুভময়ের কি প্রতিক্রিয়া হয়েছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সুইটির কি ক্ষমতা ছিল ঈশ্বরই জানেন শুভময় পালটে গেলেন, সুইটিকে পছন্দ করতে শুরু করলেন।
কিন্তু সে অন্য গল্প। আপাতত শুভময়ের ব্যস্ততা সবায়ের বেশ কৌতূহলের সৃষ্টি করেছে। শুভময়ের বাতিক কমেছে এতে বাড়ির সবাই খুশী বিশেষ করে তপতী কারণ ঠ্যালাটা তাঁকেই বেশী সামলাতে হত। কিন্ত এখনকার এই অতি ব্যস্ততার কারণও তাঁর অজানা। শুভময় এমনিতেই কম কথার মানুষ, কাজেই দু একবার জিজ্ঞেস করেও বিশেষ কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় নি।
সন্ধ্যেবেলা ড্রয়িংরুমে বসে তপতী একা একাই টিভি দেখছিলেন। টিভিটা চলছে বটে কিন্তু তপতীর মন মাঝে মাঝেই সেখান থেকে পালাচ্ছে। শুভময় বিকালবেলা আবার বেরিয়ে গেছেন, বলে গেছে ফিরতে দেরী হতে পারে।
দেবোপম, তিয়াসা ফিরল অফিস থেকে।
‘তোর বাবা তো সকালেও বেরিয়েছিল, আবার এখনো বাড়ি নেই। কোথায় যাচ্ছে বলে নি কিচ্ছু,’ তপতী ছেলেকে দেখে না বলে আর থাকতে পারলেন না।
‘মা তুমি অল্পতেই বড্ড টেনশন করো। কি হয়েছে বাবা বেরোচ্ছে তো? ভালোই তো বরং। মনটন ভালো থাকবে। সারাদিন বাড়িতে থাকতে কারুর ভালো লাগে? আর থাকলেই বরং এটা হয় নি কেন, ওটা করো নি কেন শুরু করবে,’ দেবোপম মাকে একদম পাত্তাই দিল না।
‘কিন্তু কোথায় যাচ্ছে তাতো বলছে না! এত ব্যস্তই বা কেন? সকালে দোকানে যেতে বললাম, গেল না, বেরোতে দেরী হয়ে যাবে বলে।’
‘কোথায় আর যাবে মা? কাছাকাছিই আছে কোথাও। বাবা তো বরাবরই মর্নিং ওয়াকে বেরোত আর সন্ধ্যেবেলাতেও বেরোত। তুমি এমন করছ না!’
তপতী বুঝলেন ছেলেকে বলা বৃথা, তাই চুপ করে গেলেন।
শুভময় কিন্তু সেদিন তাড়াতাড়িই ফিরে এলেন। শুভময়কে ঢুকতে দেখে সুইটি যথারীতি দৌড়ে এসে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে আর আনন্দ প্রকাশ করল। এ বাড়িতে শুভময়কেই সে সবচেয়ে বেশী পছন্দ করে।
তিয়াসা শুভময়কে দেখে খুশী খুশী গলায় বলল, ‘শার্টটার রঙ ডীপ হয়েছে বলে প্রথমে তুমি খুঁতখুঁত করছিলে বাবা কিন্তু শার্টটা তোমায় দারুন মানিয়েছে। যাই বলো তোমাকে কিন্তু এখনো বেশ স্মার্ট আর হ্যাণ্ডসাম লাগে বাবা!’
এই প্রশংসা বাক্য শুনে শুভময় মুখে কিছু বললেন না, মৃদু হেসে পুত্রবধূর দিকে তাকালেন। তারপর আড়চোখে তপতীকে এক ঝলক দেখে নিজের ঘরে ঢুকে গেলেন। পেছন পেছন সুইটি।
যদিও শার্টটা তিয়াসার কিনে দেওয়া এবং প্রশংসাটা তারই বাবার সম্পর্কে কিন্তু তাও দেবোপমের মনে সূক্ষ্ম ঈর্ষার উদ্রেক হল। সেও তো আজ তিয়াসার পছন্দ করা শার্ট পরে অফিস গেছিল, কই তখন তো তিয়াসা এত উচ্ছ্বসিত হয় নি! অবশ্য এ তো হবেই, আশ্চর্য আর কি! তিয়াসা আসার পর থেকে তার বাবা মা যে সব কিছুতে তিয়াসারই পক্ষ নেয় সে কি আর দেবোপম লক্ষ্য করে নি। হায় রে স্মৃতি! দেবোপম কি করে ভুলে গেল তিয়াসা তো তারই পছন্দ!
পরের দিন শনিবার। দেবোপম, তিয়াসার ছুটি। সকাল থেকে তাই রান্নাবান্না, কাজকর্মের তেমন তাড়া নেই। কিন্তু শুভময়ের রুটিনের কোনো পরিবর্তন নেই। তিনি স্নান টান করে জলখাবার খেয়ে যথারীতি বেরিয়ে গেলেন। তখনো তপতীদের খাওয়া শেষ হয় নি।
‘বাব্বা কি তাড়া! আবার গুনগুন করে গানও গাওয়া হচ্ছে,’ তপতী বেশ বিরক্ত আজ।
‘গান গাইছিল বাবা? কি গান?’ খাওয়া থামিয়ে তিয়াসার হঠাৎ প্রশ্ন।
‘রবীন্দ্রসঙ্গীত, যদি তারে নাই চিনি গো।’
‘কি গান জেনে তোমার কি হবে? আর তার সঙ্গে বাবার বেরোনোর কি সম্পর্ক?’ দেবোপম এতক্ষণ এসবে কান না দিয়ে খবরের কাগজে ডুবে ছিল, এবার আর না বলে পারল না।
‘আছে সম্পর্ক। মনের সঙ্গে,’ বলল তিয়াসা, ‘আমরা কখন কি করছি তা দিয়ে আমাদের মানসিক অবস্থা সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যায়। আমাদের মন যখন উৎফুল্ল থাকে তখন আমরা ব্রাইট কালারের জামাকাপড় বাছি, ডিপ্রেসড থাকলে ডাল কালারের। তেমন গানও। আমি কিছুদিন আগে একটা লেখা পড়ছিলাম এই নিয়ে।’
‘চমৎকার! কে কি লিখল আর তুমিও তা বেদবাক্য বলে মেনে নিলে! কত লোক কত কিছু লিখছে সব মানতে গেলে বেঁচে থাকা মুশকিল হবে, বুঝলে? সুইটি আসার পর প্রথম প্রথম বাবা কি বিরক্ত ছিল। বাড়িতে ঝামেলা লেগেই থাকত। এখন সব ঠিক আছে, বাবাও ব্যস্ত আছে কিছু নিয়ে, তোমাদের তাও পোষাচ্ছে না,’ দেবোপম বেশ রেগেই যায়।
তখনকার মতো তপতী, তিয়াসা দুজনেই চুপ করলেন। কিন্তু শুভময়ের ব্যস্ততার কারণ না জানা পর্যন্ত যে তপতীর শান্তি নেই তা বলাই বাহুল্য।
রবিবার সন্ধ্যেবেলা। শুভময় তখনো ফেরেন নি। দেবোপমও বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারতে গিয়েছিল।
ফিরে এসে নিজে থেকেই তপতীকে বলল, ‘একটু আগে সুরজিৎকাকুর সঙ্গে দেখা হল। বললেন বাবা নাকি অনেকদিন ওনাদের সঙ্গে গল্প করতে যায় না,’ তারপরেই তপতী টেনশন আরো বাড়তে পারে ভেবে হালকা সুরে বলল, ‘আমার মনে হয় বাবা আমাদের পুরোনো পাড়ার আড্ডায় যাচ্ছে। কিছুদিন আগে ওই রমেনজেঠুরা এসে খুব ধরেছিল না।’
দিন কাটতে থাকে। শুভময় মনে হয় তপতীর কৌতূহল বাড়িয়ে দিয়ে মজা পান।
সেদিন তপতীর দিদির বাড়ি পুজো ছিল, উনি সারাদিন ওখানেই ছিলেন। সন্ধ্যেবেলা বাড়ি ফিরলেন।
বাড়ির বহুদিনের পুরোনো পরিচারিকা রমা দরজা খুলে দিয়ে বলল, ‘দাদাবাবু তো একটুকুন আগেই বেইরে গেল।’
তপতী কিছু না বলে মুখ গম্ভীর করে ভেতরে ঢুকলেন।
তিয়াসা বাড়িতেই ছিল, তপতী ফিরেছে বুঝতে পেরে দৌড়ে এসে বলল, ‘আজও বেরোবার সময় বাবা গুনগুন করে গান গাইছিল।’
‘অ্যাঁ?’
‘হ্যাঁ। আজও রবীন্দ্রসঙ্গীত। ভালোবাসি ভালোবাসি, এই সুরে কাছে দূরে জলে স্থলে বাজায় বাঁশি,’ থেমে থেমে বলল তিয়াসা।
তপতী আর কিছু না বলে এক গ্লাস জল ঢকঢক করে খেয়ে ফেলে ওখানেই একটা চেয়ারে ধপ করে বসে পড়লেন।
বোমাটা ফাটল পরেরদিন সন্ধ্যেবেলা। শুভময় সেদিন বাড়িতেই, নিজের ঘরে নিবিষ্ট মনে বই পড়ছেন। দেবোপম তিয়াসা ফিরল অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে।
‘বাবার এত ব্যস্ততা কিসের জন্যে জানো? বাবা কি কাণ্ড করেছে শুনবে?’ দেবোপমের গলায় বিস্ময়, উত্তেজনা সব কিছু রয়েছে।
‘কি কাণ্ড করেছে?’ তপতীর গলা কেমন যেন শুকিয়ে গেল।
‘বাবা একটা গানের ব্যাণ্ডে জয়েন করেছে। সবাই বাবাদের সমবয়সী। কাল রবীন্দ্রমঞ্চে প্রথম শো ছিল। ব্যাণ্ডের নাম চিরহরিত। বাবা চিরহরিত-এর একজন মেইন ভোকালিস্ট। আজ অফিস থেকে ফেরার সময় অয়নের সঙ্গে দেখা। আমাকে এই মারে তো সেই মারে। বলে বাবা এত ভালো গান করে, গানের ব্যাণ্ডে আছে এসব কথা আমি ওদের কেন কখনো বলি নি। কি করে বলি যে আমিই জানতাম না আমার বাবা ব্যাণ্ডে গান গায়! কাল নাকি ভালো লোক হয়েছিল। সবাই খুব অ্যাপ্রিশিয়েটও করেছে বাবাদের এই বয়েসে এই এনার্জি, এই এফর্টকে।’
তপতী শুধু যে বাকশক্তিরহিত তা নয়, বোধহয় চিন্তাশক্তিরহিতও। কি বলবেন কিছুই যেন বুঝে উঠতে পারছেন না। ইতিমধ্যে এসব কানে যেতে শুভময় ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছেন। তপতী বসে বসেই দেখলেন আগে না জানার অভিমান ভুলে ছেলেও বাবাকে খুব উৎসাহ দিচ্ছে, ব্যাণ্ড সম্পর্কে নানান কথা জিজ্ঞেস করছে, কারা আছে, কবে তৈরী হল ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তিয়াসার তো খুশীর সীমা নেই। সে ফোন করে তার পরিচিত সবাইকে চিরহরিত-এর কথা জানাতে ব্যস্ত। সুইটি কি বুঝছে বলা মুশকিল, কিন্তু সেও বার দুয়েক ঘেউ ঘেউ করে আর লেজ নেড়ে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে তার আনন্দ প্রকাশ করেছে। ব্যতিক্রম শুধু তপতী। তিনি একটা কথাও বলেন নি।
আস্তে আস্তে সবই জানা গেল। মাস কয়েক আগে এক ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে মধ্যপ্রদেশ বেড়াতে গিয়ে এক ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ। তিনিও একই সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন, বাড়িও খুব দূরে নয়। ব্যাণ্ড তৈরী এনারই পরিকল্পনা। কথাপ্রসঙ্গে সঙ্গীতপ্রীতির কথা শুভময়ও জানিয়েছিলেন। এরপর ফোন নম্বর বিনিময় হওয়া, তারপর ফিরে এসে আবার যোগাযোগ এবং আস্তে আস্তে চিরহরিত-এর পত্তন।
প্রাথমিক উচ্ছ্বাসপর্ব শেষ হলে তপতী উঠলেন, নিজের ঘরে গেলেন। এবার সঙ্গে শুভময়ও।
তপতী গম্ভীর মুখে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হঠাৎ এত গানের ইচ্ছে যে?’
‘হঠাৎ তো নয়। গান তো বরাবরই ভালোবাসি। স্কুলে, কলেজে গাইতামও। তার পরেও। কিন্তু কেউ যদি সব ভুলে যায় তো আমি কি করব?’
তপতী তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে শুভময়কে দেখছেন। শেষ কথাটা যে তাঁকে উদ্দেশ্য করে বলা বুঝতে অসুবিধে হল না। স্মৃতিশক্তির ওপর বিশেষ অত্যাচারও করতে হল না। চোখের সামনে ভেসে উঠল এক টুকরো ছবি। তখন সবে দুজন পরিণয় সূত্রে বাঁধা পড়েছেন, কোনো প্রগলভ নিভৃতে শুভময়ের গলায় ‘ভালোবেসে সখি নিভৃত যতনে…….।’ মনে পড়া মাত্রই মুখের ভাব একটু হলেও বদলাল। কিন্তু শুভময় তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছেন বলে তপতী দ্রুত নিজেকে সামলে নিলেন।
‘আমাদের মতো সাধারণ সাংসারিক লোকের জীবনে শখই বলো আর ইচ্ছেই বলো – সব ফল্গু নদীর মতো, অন্তঃসলিলা,’ বললেন শুভময়, ‘কর্তব্য, দায়িত্ব সবের নীচে চাপা পড়ে থাকে। কখনো খোঁড়াখুঁড়ি করলে তবেই জেগে ওঠে।’
‘তা খোঁড়াখুঁড়িটা কে করল শুনি? আমি তো কোমর বেঁধে কোদাল হাতে নেমেছিলাম বলে মনে পড়ে না,’ তপতীও পিছু হটবার পাত্রী নন।
‘কোদাল হাতে নামার কি দরকার? কারুর সামনে অন্য কারুর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলে কোদালের থেকে ঢের বেশী কাজ হয়।’
‘আমি আবার কার প্রশংসা করলাম?’ এবার তপতী অবাক।
‘মনে করে দেখো। গতবার দুর্গাপুজোয় নাটক দেখে তুমি পরিমলবাবুর প্রশংসা করো নি? এই বয়েসেও আপনি দেখালেন বটে, এত ভালো অভিনয় ইত্যাদি ইত্যাদি। তখনই আমি ভেবেছিলাম আমাকেও কিছু করে দেখাতে হবে।’
‘বাবা! তখনই তুমি ঠিক করে ফেলেছিলে! কিন্তু আমাকে না বলার কারণ?’
‘সারপ্রাইজ! গানের ইচ্ছে তো বরাবরই ছিল। যোগাযোগ হয়ে গেল মধ্যপ্রদেশ বেড়াতে গিয়ে। তারপর এতদিন কত কাণ্ডের পর তৈরী হল আমাদের ব্যাণ্ড চিরহরিত। নামটা কেমন হয়েছে বলো তো? শরীরের বয়স নিয়ে কে আর মাথা ঘামায়? মনটা ইয়ং থাকলেই হল। কি বলো?’
‘তা তো বটেই,’ তপতীর মুখে এছাড়া আর কথা জোগায় না।
শুভময় যে একেবারে স্টেজে গান গাইতে উঠে যাবেন এ উনি স্বপ্নেও ভাবেন নি। তাও আবার ব্যাণ্ডে!
‘আরো সারপ্রাইজ আছে বুঝলে? সামনে সপ্তাহে আমরা একটা কম্পিটিশনে যাচ্ছি। বাংলা গানের ব্যাণ্ডের কম্পিটিশন। তার জন্যে একটু অন্য রকম ড্রেস দরকার।’
‘কম্পিটিশনে যাচ্ছ তোমরা? তার জন্যে আবার অন্যরকম ড্রেসও দরকার?’ তপতীর বিস্ময় যেন আর শেষ হচ্ছে না।
‘আরে দেখো না পপ সিংগার, ব্যাণ্ডের গায়ক টায়করা কি রকম চকরাবকরা ঝকমকে সব জামাকাপড় পরে? ছেলের ঘরে দেখো নি কত সব দেশী বিদেশী গায়কদের ছবি টাঙানো ছিল? সেই রকম। এই দেখো,’ শুভময় খুব সাবধানে একটা ব্যাগের মধ্যে থেকে বার করলেন বিচিত্র রঙবেরঙের একটা পাঞ্জাবী।
‘কেমন হয়েছে এটা? এটাই পরব। বহুদিনের ইচ্ছে ছিল বুঝলে এরকম একখানা পাঞ্জাবী পরে স্টেজে উঠে বেশ জমিয়ে গান গাইব।’
‘বলিহারি ইচ্ছে!’ বলে তপতী রাতের খাওয়ার ব্যবস্থার তদারকি করতে রান্নাঘরের উদ্দেশ্যে প্রস্থান করলেন।
বললেন বটে কিন্তু তাঁর ঠোঁটের কোনে এক চিলতে পশ্রয় আর খুশীর হাসি শুভময়ের চোখ এড়াল না।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
রনীল আর হ্যাঁ, সুচিত্রা ভট্টাচার্য এর কথা মনে করিয়ে দিলেন। নিয়মিত আপনার লেখা পাব এমনটা আশা করছি...
এটা বড্ড বেশী হয়ে গেল। সবে তো আঁকিবুকি কাটতে শুরু করেছি। নিয়মিত লেখা? চেষ্টা করব অবশ্যই।
রনীল লেখকের দেখার চোখ আছে বলতেই হচ্ছে। খুব ঝরঝরে লেখনী। অকারনে প্যাঁচানো হয়নি, আবার সুক্ষ অব্জারভেশনগুলো খুব দক্ষতার সাথে তুলে ধরেছেন।
অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্যে। আপনাকে পাঠক হিসেবে পায়ে ভালো লাগল। হ্যাঁ অকারণ প্যাঁচানো লেখা আমার দ্বারা হয় না।
রীতা রায় মিঠু কি চমৎকার লেখার স্টাইল, এত ছোট একটা মেয়ে, এমন সুন্দর কি করে লিখো?
আপনাদের উৎসাহ, অনুপ্রেরণাই আমাকে লিখতে সাহায্য করে। বলুন যেন আরো অনেক ভালো লিখতে পারি। দিদি, আপনি এত ব্যস্ততার মধ্যেও সময় বার করে পড়েছেন এই আমার কাছে অনেক। অনেক ধন্যবাদ।
মোহসিনা বেগম এত সুন্দর গল্প অনেকদিন পড়িনি---- ---- সুদক্ষ হাতের ছোঁয়া !
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমার লেখা সার্থক।
মাহাদী সাগর হ্যা..........ভাল হয়েছে।
সূর্য সুলিখিত এবং সুগঠিত গল্প। প্রায় শেষ অবধি চমকটা গোপনই ছিল। অনেক ভালো একটা গল্প বলতে কোন দ্বিধা নেই।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে :) ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল।
খন্দকার আনিসুর রহমান জ্যোতি চমৎকার কাহিনী বিন্যাস.....লেখারটাও পাকাপোক্ত.....অকে ধন্যবাদ অদিতি আপনাকে...........
আপনাত জানাই অনেক ধন্যবাদ। খুব ভালো লাগছে যে আপনি পড়েছেন।
Lutful Bari Panna চমৎকার সারপ্রাইজ তো। দারুণ লাগল গল্পটা। চিরহরিৎ মনের হরিৎ বাসনা।
ভাল লাগল আপনাকে আমার গল্পের পাঠক হিসেবে পেয়ে। অনেক অনেক ধন্যবাদ :)
শাহ্‌নাজ আক্তার গল্পের শেষ দিকে শুভময়ের চমকটা কিন্ত দারুন হয়েছে , তপতীর সাথে আমার ও বিস্ময় যেন আর শেষ হচ্ছে না। খুব ভালো লাগলো অদিতি দি , ভালো থাকবেন |
শুনে আমারো খুব ভালো লাগছে। এটাই তো একজন লেখনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন আপনিও :)
amar ami গল্প কেমন হয়েছে বলতে পারছিনা কারণ আমি গল্প পড়তে গিয়েও আমার কিছু ইচ্ছের কথা ভুলতে পারছিলাম না, যেগুলো খুরাখুরি সম্ভব নয় ছেলে নই বলেই হয়ত (মেয়েদের কোনো কিছুই তাদের উপর নির্ভর করে না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই) আর তাতে পশ্রয় বা সাপোর্টই বা কে দিবে !...তবে গল্পটা পড়তে গিয়ে ভালোলাগায় আর সপ্নে ডুবে ছিলাম কিছুক্ষণ....
তবে গল্পটা পড়তে গিয়ে ভালোলাগায় আর সপ্নে ডুবে ছিলাম কিছুক্ষণ.... ধরে নিচ্ছি গল্পটা ভালো লেগেছে। আর তাতেই আমি খুশী। অনেক ধন্যবাদ :)

০১ ফেব্রুয়ারী - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৬ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪