মাকে কথা দিয়েছিলাম

মা (মে ২০১১)

Sujon
  • ২০
  • ১৯
ছোটবেলায় যখন বুঝে-না বুঝে বাজে কোনো অন্যায় করে ফেলতাম, মা এসে দুমদুম করে দুই-চার ঘা লাগিয়ে দিতেন। ব্যস ফুরিয়ে যেত। কিন্তু ভেতরটা ফালাফালা হয়ে যেত যখন মা কোনো কিছু না বলে গম্ভীর মুখে ঘুরে বেড়াতেন, দূরে দূরে থাকতেন, কাছে ঘেঁষতে চাইলেও পাত্তা দিতেন না। বুঝতে পারতাম যে এবারের অপরাধটা মায়ের সহ্যসীমা ছাড়িয়ে গেছে, মাকে হয়তো খুব আঘাত দিয়ে ফেলেছি। মা কষ্ট পাচ্ছেন আমার জন্য এ কথা মনে এলেই বুকের ভেতরটা দুমড়ে-মুচড়ে যেত। আঁচল ধরে মায়ের পেছনে পেছনে ঘুরতাম, ঘ্যান ঘ্যান করে মাফ চাইতাম...মা ও মা আর করবো না, মাফ করে দাও, সত্যি বলছি আর ভুল হবে না কোনোদিন। অভিমান অল্প হলে মা মাফ করে দিতেন, কোলে তুলে নিতেন, আমি আবার নিশ্চিন্ত হয়ে উড়ে যেতাম খেলার সাথীদের মাঝে। অভিমান খুব কড়া হলে, মা তখনও মুখ ফিরিয়ে থাকতেন, দু’একবার ঝাঁকুনি দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিতেন। আমিও নাছোড়বান্দার মতো মায়ের পিছুপিছু যেতাম রান্নাঘরে, কলতলায়, মা যেদিকে যেতেন সেদিকেই। মনে পড়ে একদিন ছোট ভাইটাকে রাগের মাথায় মেরে পেয়ারা গাছের নিচে ফেলে দিয়েছি, মা এসে চিলের মতো ছোঁ মেরে গ্যাদাভাইটাকে কোলে তুলে নিয়ে প্রচণ্ড এক চড় বসালেন আমার গালে। ভেবেছিলাম শাস্তি হয়ে গেছে, আবার চলে যাই দুষ্টুমি করতে। কিন্তু ফিরে এসে দেখি মায়ের মুখ তখনও থমথমে, ছোট ভাইটা থেকে থেকে কেঁদে উঠছে। আমি খিদে পেয়েছে বলে মায়ের কাছে যেত চেষ্টা করি, মা মুখ ঝাঁমটা দিয়ে চলে গেলেন। বুঝতে পারলাম এবারের অপরাধ আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। পরের ঘন্টাখানেক ঘ্যান ঘ্যান করে মায়ের মাথা ধরিয়ে ফেললাম, কিন্তু মাফ পেলাম না। এক পর্যায়ে অসহ্য হয়ে মা বলে ওঠেন, ‘ কাকে মা ডাকিস তুই? তোর কোনো মা নেই। তোর মা মরে গেছে। আর কোনোদিন আমাকে মা ডাকবি না।’ আমার মা নাই, আমার মা মরে গেছে—সেই কথাটা আমার কচি বুকে একটা প্রলয় ঘটিয়ে দিল।
মনে পড়ে পেয়ারা গাছের নিচে হাত-পা ছড়িয়ে, গড়াগড়ি দিয়ে কেঁদে ছিলাম সেই দিন। কান্নার আওয়াজে পাড়া-প্রতিবেশীরা চলে আসেন, কিন্তু মায়ের অভিমান ভাঙতে ভাঙতে সেই সন্ধ্যা।
আজ এত বছর পরে আবার সেইভাবে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছা করছে।
মা তো সেই কবেই চলে গেছেন। কিন্তু একটা দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন আমাদের কাঁধে, মাকে কথা দিয়েছিলাম—মা, ঘুমাও তুমি শান্তিতে, আমরা জেগে আছি লাখো ছেলে। তোমার শুরু করা কাজটি শেষ না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। কথাই সার, আজ পর্যন্ত পারলাম না মাকে দেয়া কথাটির মর্যাদা রক্ষা করতে। মা কি আর সব জানেন না? আমার মা সব জানেন। ঠিকই দৃষ্টি রাখছেন এই অভাগা সন্তানগুলোর উপরে, দেখতে পাচ্ছেন কীভাবে আমরা সরে এলাম মায়ের দেখানো পথ থেকে। সেই অভিমানেই কি মা প্রতিনিয়ত আরও দূরে যাচ্ছেন আমাদের কাছ থেকে? আমাদের স্বপ্ন থেকে, চিন্তা-চেতনা থেকে। চাইলেও কেন আজকাল আর মায়ের মুখটা মনে করে পারি না আগের মতো?
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
বিন আরফান. দুমদুম = ঠাস ঠাস // মাকে কথা দিয়েছিলাম—মা, ঘুমাও তুমি শান্তিতে, আমরা জেগে আছি লাখো ছেলে। = এই লাইনটি গল্পের সাথে সামঞ্জস্য নয়. যেহেতু গল্পটি নিজ মা বা মানুষ মাকে নিয়ে সেখানে তার লাখ সন্তান হবেনা. ৪-৫ জন দিলে বেশি ভালো হত. চালিয়ে যান. লিখতে লিখতে সব ঠিক হয়ে যাবে. শুভ কামনা রইল.
Sujon যারা আমাকে কমেন্টস্ করেছেন তাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কারণ, অনুপ্রেরণা মানুষকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে!!!!!!!!!!!!!!!
মোঃ আক্তারুজ্জামান এক কথায় অসাথারণ লিখেছেন! অনেক ভালো লেগেছে|
খন্দকার নাহিদ হোসেন অনেক কঠিন কথা বলে ফেলেছেন একটা ছোট্ট লেখায় - আজ পর্যন্ত পারলাম না মাকে দেয়া কথাটির মর্যাদা রক্ষা করতে। আপনার লেখার হাত ভাল। আগামী মাসে আসল গল্প চাই। আমিও একমত, শুধু এটুকুই কবিতা হলেও অসুবিধা নেই!
Sujon আসলে "মা" বলতে এখানে স্বাধীনতা কে বুঝাতে চেয়েছি। মা তার সন্তানকে যেমন ভালোবাসে, সন্তানেরও উচিত তার মায়ের ভালোবাসার মূল্য দেওয়া, কিন্তু আমরা তা পারছি না। আর এ জন্যই মা প্রতিনিয়ত দূরে সরে যাচ্ছেন আমাদের কাছ থেকে।
sakil ভালো লেগেছে . চেষ্টা করলে আপনি ভালো কিছু লিখতে পারবেন আশা করি . আপনার জন্য শুভকমনা রইলো .
মামুন ম. আজিজ কিছু বলার নেই। লেখক ই ভালো জানেন তিনি কি লিখেছেন। সাহিত্য এত সহজ কর্ম নয় এতটুকু বুঝি।
আহমেদ সাবের একটা অনেক কঠিন কথা বলে ফেলেছেন একটা ছোট্ট লেখায় - আজ পর্যন্ত পারলাম না মাকে দেয়া কথাটির মর্যাদা রক্ষা করতে। আপনার লেখার হাত ভাল। আগামী মাসে আসল গল্প চাই।
ফাতেমা প্রমি আমার আম্মুও এরকম অভিমান করেন-তাই পড়তে গিয়ে আম্মুকে মনে পড়ল..বেশ ভালো লিখেছেন,তবে ঠিক যেন গল্প হলো না..আরো সুন্দর সুন্দর লেখা লিখুন,অনেক শুভকামনা রইলো..

১৯ জানুয়ারী - ২০১১ গল্প/কবিতা: ১৮ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪